Powered By Blogger

Monday, July 31, 2017

হিন্দমোটর সৎসঙ্গ কেন্দ্রের নব আনন্দে পথ চলা ও ইষ্টপ্রাণতা, ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠা ও ইষ্টস্বার্থরক্ষা??? (৫)

হিন্দমোটর সৎসঙ্গ কেন্দ্রের ১৪-০৫-২০১৭ রবিবার ভদ্রকালী মহিলা ক্যাম্প থেকে নব আনন্দে (!?) পথ চলা শুরু হওয়ার মধ্যে দিয়ে এলাকায় যে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে দীক্ষিত-অদীক্ষিত মানুষের মনে সেই প্রতিক্রিয়া স্বরূপ হিন্দমোটরের গুরুভাইবোনেদের কাছে আমার জিজ্ঞাস্য, মনে পড়ে আপনাদের ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ঘটনাটা? একটু মনে করিয়ে দিই। আমরা ভদ্রকালী অঞ্চলের গুরুভাইবোনেরা মিলে একটা সমবেত সৎসঙ্গের আয়োজন করেছিলাম স্থানীয় বড় ক্লাব শিবাজি স্পোর্টিং’-এর হলঘরে এবং অর্চনা দত্ত মা হিন্দমোটর মন্দিরে গিয়ে তা জানিয়ে অনুষ্ঠানের তারিখ লিপিবদ্ধ করে এসেছিল। তখনও পর্যন্ত ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্রের জন্ম হয়নি। যথারীতি ঋত্বিক রতন সরকারদা কয়েকজন গুরুভাইকে নিয়ে এসেছিলেন সেইদিনের অনুষ্ঠানে। সেদিনের অনুষ্ঠানে হিন্দমোটর থেকে আগত গুরুভাইবোনেরাই গান, কীর্তন, বক্তৃতা করেছিলেন, ভদ্রকালীর কেউ একজনও কোনও কিছু করেনি। আর ছিল শ্রদ্ধেয় ঋত্বিক মণীলাল চক্রবর্তীদা ও ঋত্বিক সুজিত দাস দা। সেদিন ভদ্রকালীতে বহুদিনপর আয়োজিত সমবেত ঐ বিশেষ সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে রতন সরকারদার নেতৃত্বে সৎসঙ্গ দেড়ঘন্টা ছাড়িয়ে দুঘন্টা হয়ে গেছে এই অজুহাতে হৈ হৈ করে হঠাৎ উঠে দাঁড়িয়ে হিন্দমোটর থেকে আগত সবাই তাদের স্ত্রীদের উঠিয়ে নিয়ে অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে গেছিল অনুষ্ঠান শেষ হবার আগেই। মুহূর্তের মধ্যে সৎসঙ্গ বন্ধ হয়ে গেল। তখন বাইরের একজন আমন্ত্রিত শিল্পী গান গাইছিলেন। এরকম বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখে তিনি গান থামিয়ে চুপ করে বসে রইলেন। অপমানে আর গাইলেন না। অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন ঋত্বিক মণিদা। ঋত্বিক মণিদা আর ঋত্বিক সুজিতদা হতভম্ব হয়ে চুপ করে রইলেন। রতন সরকারদারা দোতলা থেকে নেবে নীচে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কি করেছিলেন সেই ঘটনা বা দৃশ্য মনে আছে কিনা আপনারা গুরুভাইরা যারা সেদিনের অনুষ্ঠানের সাক্ষী ছিলেন তারা জিজ্ঞেস করুন রতনদাকে। যাবার সময় ব'লে গেলেন অর্চনা মাকে যে অর্চনা মা নাকি তাদের ডেকে এনে অপমান করেছেন। আগে জানলে তারা আসতেন না। তবে মন্দিরে গেলে অর্চনা মাকে তারা মজা দেখাবেন। আমরা বুঝলাম না রতনদাদের আগে কি জানানো হয়নি আর অর্চনা মাকে তারা কি মজা দেখাবেন!!!!!!!! আমাদের অনুষ্ঠানের আয়োজক গুরুভাইয়েরা রতনদারা সবাই চলে যাচ্ছে দেখে তাদের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই অজ্ঞতাবশতঃ প্রসাদ দিয়েছিলেন। সেদিন রতনদারা সবাই ভুলে গেছিলেন যে রাস্তার দুপাশের পথ চলতি লোক, দোকানদার ও ক্রেতা সবাই মিলে হাঁ করে দেখছে সাদা জামা কাপড়ে সুসজ্জিত ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ভক্তদের। রাস্তার আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা এই অদীক্ষিতরা জড়ো হয়ে দেখছে, ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সাদা জামা কাপড় পরিহিত ভক্তেরা চীৎকার চেঁচামেচি করছেন আর প্রসাদের প্যাকেট নিয়ে নর্দমায় ফেলছেন, রাস্তায় পা দিয়ে মাড়াচ্ছেন, নীচে গায়ক স্বরূপ ঘোষ ও খোল বাদক তড়িৎ দাশগুপ্তের (দুজনেই) স্কুটারের সীটে আলুরদম মাখিয়ে দিচ্ছেন, যেহেতু তারা তাদের অনুসরণ করে অনুষ্ঠান থেকে উঠে আসেনি। তার কিছুক্ষণ পর রতনদারা সবাই চলে গেলেন কিন্তু তারা জানতে পারলেন না ঐ সময় রাস্তার দর্শকবৃন্দ আপনাদের সম্পর্কে কি কি কটূক্তি করেছিল। এই কটূক্তি ও সমালোচনা চলেছিল কয়েকদিন। লজ্জায় বেরোতে পারিনি, যেতে পারিনি ঐ রাস্তায় কয়েকদিন। দেখা হলেই শুনতে হতো ব্যঙ্গ বিদ্রুপ। এখন আর অত মনে নেই; তবুও যা মনে আছে তালো, “ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের হিন্দমোটর শাখা আর ভদ্রকালী শাখার মধ্যে লড়াই বেধেছে। রাজনৈতিক দলের গোষ্ঠী দ্বন্ধের মত সৎসঙ্গে সৎসঙ্গীর গোষ্ঠীদ্বন্ধ। এরা আবার বাঁচার কথা আর বাড়ার কথা বলে।আর বাড়ার কথাবলার সময় অতি উৎসাহী কিছু যুবক কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করতো। আপনি ঋত্বিক হয়ে সেদিন এটা কি করে করেছিলেন আর আজই বা কি করে নব আনন্দে পথ চলার এমন কাজ করলেন যা আগামী আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদাকে আঘাত দিল, অপমান করলো? বাবাইদাদার আশীর্বাদপূত ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্রকে উপেক্ষা করার, ভাঙার মত ঘৃণ্য কাজে নিজেকে জড়ালেন কেন রতনদা? কি অপরাধে আপনারা এমন করলেন? গত ১৯ মাস ধরে ভদ্রকালীর গুরুভাইবোনেরা বাবাইদাদার আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে এই বিরাট অঞ্চলে প্রাণপাত করে বেড়াচ্ছে ঠাকুরকে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবার জন্য আর তার ফলে দীক্ষার জন্য যে জমি তৈরি হচ্ছে তাতে তো অনুষ্ঠান পরবর্তী সময়ে আপনাদের দীক্ষা দিতে সুবিধা হচ্ছে। অনেক মানুষ দীক্ষা নেবার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠছে আর আপনারা আপনাদের পাঞ্জার অধিকারে তাদের ঠাকুরের সৎনামে দীক্ষিত করার সুযোগ পাচ্ছেন; তাই নয় কি? আমরা দীক্ষা দেবার অধিকারী নই। আমরা সাধারণ দীক্ষিতরা দীক্ষার জন্য জমি তৈরি করে দিতে পারি মাত্র। এর কি কোনও মূল্য নেই? যত মূল্য, গুরুত্ব আপনাদের পাঞ্জাধারীদের? ভুল বলে থাকলে বলবেন ভুল সংশোধন করে নেবো। তিনতলা হিন্দমোটর মন্দির নিয়ে, এতবড় হিন্দমোটর অঞ্চল নিয়ে মন ভরছে না? রতনদারা হিন্দমোটর সৎসঙ্গ কেন্দ্র থেকে হিন্দমোটর অঞ্চলে ঠাকুরের যে কাজ করছেন হিন্দমোটর অঞ্চলের সেই কাজে এসে কোনোদিন অন্য কোনও কেন্দ্র কি নাক গলায় বা গলিয়েছে না-কি কোদাল চালায় বা চালিয়েছে? এমন কোনও ঘটনা দেখাতে পারবেন রতনদারা? একটা কেন্দ্রের অঞ্চলে গিয়ে কেন্দ্রকে অন্ধকারে রেখে আর একটা কেন্দ্র প্রকাশ্যে মাইক লাগিয়ে সেই কেন্দ্রের নাম ঘোষণা করে সৎসঙ্গের আয়োজন করতে পারে? কেন, কি বুদ্ধিতে এমন করলেন রতনদারা? এতদিন কেন করেননি? ১৯ মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পর কেন এই সিদ্ধান্ত নিলেন? কেনওহিন্দমোটর সৎসঙ্গ কেন্দ্র’-এর বয়স অর্ধশতাব্দী পার হয়ে যাবার পর মনে হল মন্দির দূরবর্তী অঞ্চলে গিয়ে যাজনের মাধ্যমে মানুষকে মন্দিরমুখী করতে হবে? কেন মানুষকে ইষ্টমুখী করার কথা মাথায় আসেনি বা আসেনা? ভদ্রকালীতে বাবাইদাদার আশীর্বাদ প্রাপ্ত হওয়ার অনেক আগে থেকেই ভদ্রকালীতে বড় বড় সৎসঙ্গের আয়োজন হয়ে এসেছে তখন আপনারা বা হিন্দমোটর সৎসঙ্গ কেন্দ্র কোথায় ছিল রতনদা? হঠাৎ এমন পদক্ষেপ কেন? একে কি বলা হবে? এটা কি সংহতিতে ভাঙন ধরানো নয়? সংহতিতে ভাঙন ধরানোর ব্যাপারে ঠাকুর কি বলেছেন রতনদারা জানেন তো না-কি জানেন না? তাহলে জেনে রাখুক রতনদারা ঠাকুর কি বলেছেন। ঠাকুর বললেন, “সংহতিতে যে বা যারা ভাঙন ধরায় তারা ছেদক।তা’ ‘হিন্দমোটর সৎসঙ্গ কেন্দ্রঠাকুরের কথা অনুযায়ী ছেদকআখ্যা পেল না? তাহলে কি ধরে নিতে হবে হিন্দমোটর অঞ্চলের সমস্ত গুরুভাইবোন ছেদকআখ্যা পেয়ে গেল? শ্রীশ্রীবাবাইদাদার নাম ভাঙিয়ে ভদ্রকালী অঞ্চলে এসে হিন্দমোটর সৎসঙ্গ কেন্দ্রের ইষ্টপ্রাণতা, ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠা, ইষ্টস্বার্থরক্ষার নামে সংহতিতে ভাঙন ধরাবার জন্য কোদাল চালাবার সিদ্ধান্ত কার? এই সিদ্ধান্ত কি দেওঘরের? এই সিদ্ধান্ত কি জেলার? এই সিদ্ধান্ত কি মন্দিরের? মন্দির কি কারও একার পৈতৃক সম্পত্তি যে যা ইচ্ছা তাই করবে আর তার দায় বইবে সমস্ত গুরুভাইবোনেরা? যাই হক ঋত্বিক রতনদার নেতৃত্বে মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত কিছু গুরুভাই ভদ্রকালীতে ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্রকে ভাঙার জন্য, সংহতিতে ভাঙন ধরানোর কাজে যে নেতৃত্ব দিলেন ইতিহাস তার সাক্ষী হয়ে রইলো। একটু ভেবে দেখবেন ঠাকুর কি ভাবে নেবেন এই সমস্ত কীর্তিকলাপ?
ক্রমশঃ


No comments:

Post a Comment