(পূর্ব প্রকাশের পর)
হিন্দমোটরের
গুরুভাইদের কাছে আমার আবেদন ও অনুরোধ আপনারা জিজ্ঞেস করুন হিন্দমোটরের ঋত্বিক রতন সরকারদাকে, তিনি কেন, কিসের জন্য এমন দিগ্বিদিক জ্ঞান শূন্য
হ’য়ে হিন্দমোটর থেকে ভদ্রকালীতে লম্ফ দিয়ে ঝম্প মারলেন?
উনি তো ঋত্বিক? উনি এমন করলেন কেন?
আপনারা জিজ্ঞেস করুন উনাকে, উনার মনে পড়ে
কিনা, আজ থেকে ৭ বছর আগে ২০১১ সালে ভদ্রকালী শিমুলতলায় দুর্গা
মঞ্চে আমরা ভদ্রকালীর কয়েকজন গুরুভাইয়েরা সৎসঙ্গের আয়োজন করেছিলাম। তখন ‘ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্র’-এর জন্ম হয়নি। ২০১১-এর
অনেক আগে থেকেই ভদ্রকালী এমনকি হিন্দমোটরের বিভিন্ন জায়গায়ও এই আজকের ১৯ মাসের মত ‘বিশেষ সৎসঙ্গ-এর আয়োজন করেছিলাম; সেখানে কয়েকটাতে
উনিও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু ২০১১-এর ২৫শে ডিসেম্বর শিমুলতলার অনুষ্ঠান আয়োজনের সময়
উনি স্বর্গীয় জয়নাথদাকে ধমকে বলেছিলেন, ভদ্রকালী শিমুলতলায়
সৎসঙ্গ আয়োজন করার জন্য হিন্দমোটর সৎসঙ্গ কেন্দ্র থেকে permission নিয়েছিলেন? অথচ ভুলে গেছিলেন তিনি যেদিন জয়নাথদা,
সুকুমারদা, দেবনাথদারা হিন্দমোটর মন্দিরে
গিয়েছিলেন সৎসঙ্গ আয়োজনের তারিখের কথা জানাতে তখন উনি তাদের বলেছিলেন আপনাদের ইচ্ছামত
তারিখ ঠিক করলে হবে না, সৎসঙ্গ আয়োজন করলে হবে না;
উনারা যেদিন ডেট দেবেন সেদিন সৎসঙ্গ করতে হবে। উনাদের সেদিনের উদ্ধত
ব্যবহারে জয়নাথদারা চলে আসেন আর ঐ নির্দিষ্ট দিনেই সৎসঙ্গ হয়। তারপরে কে বা কারা হিন্দমোটর
থেকে ঋত্বিক শ্রদ্ধেয় মণিলাল চক্রবর্তীদাকে ফোনে বারণ করেন বারবার, উনি যেন ভদ্রকালী শিমুলতলার ঐ অনুষ্ঠানে না আসেন, পৌরোহিত্য না করেন। ফোন ক’রে বলা হয়েছিল,
কয়েকজন মোদো, মাতাল, লম্পট মিশনারি ঐ সৎসঙ্গের আয়োজক যাদের আমরা মন্দির থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি।
সেদিন এই কথাগুলি যাজক রথীন্দ্রনাথ দাস মহাশয় যিনি শিমুলতলার ঐ সৎসঙ্গের সঙ্গে যুক্ত
ছিলেন তিনি বলেছিলেন আমাদের। আর এখন সেই যাজক রথীন্দ্রনাথ দাস যিনি ঐ সেদিনের মোদো,
মাতাল, লম্পট, মিশনারি
আখ্যা পাওয়া, মন্দির থেকে তাড়িয়ে দেওয়া একজন যাকে ডেকে দেওঘর
থেকে বাবাইদাদার আশীর্বাদ নিয়ে ফিরে এসে প্রথম ভদ্রকালীর আশীর্বাদের বিষয় জানিয়ে বলেছিলাম,
আপনি এই ভদ্রকালী অঞ্চলের একজন মাত্র পাঞ্জাধারী যাজক আপনি এই বাবাইদাদার
আশীর্বাদপূত ‘ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্র’-এর সামনে থেকে কেন্দ্রকে এগিয়ে নিয়ে যান। কিন্তু তিনি সৎসঙ্গ গুলিতে আসতেন,
সামনে বসতেন, কীর্তনে নাচতেন, ঠাকুরের কথা বলতেন পরমুহূর্তেই সৎসঙ্গ শেষে কখনও কখনও সৎসঙ্গ চলাকালীন বাইরে
বেরিয়ে এসে যারা বাইরে দাঁড়িয়ে গোয়েন্দাগিরি করতো কি হচ্ছে ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্রের
সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে তাদের কাছে বলতেন ‘এটা কি সৎসঙ্গ হচ্ছে না
যাত্রা হচ্ছে? নিজে যখন অনেক সময় নিয়ে ঠাকুরের কথা ব’লে নেবে এলেন মঞ্চ থেকে তখন সৎসঙ্গের দেড় ঘন্টা অনেক আগেই পার হ’য়ে গেছে আর তিনি বলছেন, ‘দেড় ঘন্টার বেশী সৎসঙ্গ
করছে এটা কি জলসা হচ্ছে? কখনো বলছেন, ‘বিশেষ সৎসঙ্গ’ আবার কি? কোথায় কেন্দ্র? কে দেখেছে প্রকাশদাকে বাবাইদাদা
আশীর্বাদ করেছে? একা একা গিয়ে প্রকাশদা আশীর্বাদ নিয়ে এলো?
আশীর্বাদ নিতে হ’লে সবাইকে নিয়ে যেত দেওঘরে?
কিন্তু কে বোঝাবে কাকে? দেওঘর থেকে ফিরে
এসে যাকে প্রথম ডেকে বলেছিলাম এই আশীর্বাদের কাহিনী সে যদি রাত জেগে রামায়ণ পড়ার পর
বলে, ‘সীতা কার বাপ?’ তাহ’লে কার কি করার আছে? যাকে বলেছিলাম আশীর্বাদ ঘটনাচক্রে
হয়েছে, আশীর্বাদ আনবার জন্য কেউ যায়নি।
যাই হ’ক, এখন যদি রতনদাকে কেউ বলে ভদ্রকালীতে ‘ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্র’-এর জন্ম হওয়া সত্ত্বেও
উনার নেতৃত্বে হিন্দমটোর সৎসঙ্গ কেন্দ্র কি ক’রে সেখানে সৎসঙ্গ
আয়োজন করে? উনি ভদ্রকালীতে হিন্দমোটর সৎসঙ্গ কেন্দ্রের পরিচালনায়
সৎসঙ্গ আয়োজনের জন্য ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্র থেকে permission নিয়েছিলেন? কথাটা কি খুবই ভুল এবং অযৌক্তিক হবে?
এতে কি উনি রেগে যাবেন? আচ্ছা ঋত্বিক রতনদা
হঠাৎ ১৯ মাস পর ভদ্রকালীতে সৎসঙ্গ করার জন্য ক্ষেপে উঠলেন কেন? হিন্দমোটর মন্দিরের বয়স তো অর্ধ শতাব্দীরও বেশী তা এতবছর কেন মনে হয়নি ভদ্রকালীর
মানুষদের জাগাতে হবে, মন্দিরমুখী করতে হবে? সেখানে তো বাবাইদাদার আশীর্বাদে ১৯ মাস ধ’রে প্রতি
মাসের শেষ রবিবার এবং মাঝে অন্য আরও বিশেষ কোন দিনে পরিকল্পিতভাবে বড় বড় সৎসঙ্গের আয়োজন
হয়ে আসছে। শ্রদ্ধেয় ঋত্বিক রতনদা তো এসব খবর সব জানেন তা’ সত্ত্বেও ভদ্রকালীতে কি উদ্দেশ্যে, কেন ও কোন যুক্তিতে
সৎসঙ্গ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করলেন? উনি একজন ঋত্বিক হ’য়ে এবং অন্য একটা কেন্দ্রের (হিন্দমোটর কেন্দ্র) দায়িত্বে থাকা কর্মী হ’য়ে অন্য আর একটা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী বা কর্মীদের না জানিয়ে,
আলোচনা না ক’রে, অনুমতি না নিয়ে সেই কেন্দ্রে গিয়ে হিন্দমোটর সৎসঙ্গ কেন্দ্রের নামে পাবলিকলি
সৎসঙ্গ ক’রে আসলেন? হিন্দমোটর ও জেলার
আধিকারিকরা সবাই মিলে ভদ্রকালীতে ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্রকে অন্ধকারে রেখে কি ক'রে ইষ্টপ্রতিষ্ঠা ও ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠা ক’রে
আসলেন? এটাকে কি বলে? এইভাবে কি ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠা
ও ইষ্টস্বার্থরক্ষা হ'লো? যে নিয়ম
রতনদা চালু করেছিলেন সেই নিয়ম ভেঙে দিলেন রতনদা নিজে? কেন?
কিসের জন্য? রতনদা তো জানেন ‘আপনি আচরি ধর্ম, পরেরে শেখায়’? ঠাকুর কি বলছেন, “মুখেতে আছে, ব্যবহারে নাই, সেই শিক্ষার মুখে ছাই“ তাই তো? ভুল বললাম? অন্যায়
করলাম ব’লে? ভদ্রকালীতে সৎসঙ্গ করার
মধ্যে দিয়ে বাবাইদাদার আশীর্বাদকে পদাঘাত ক’রে একজন ঋত্বিক
হ’য়ে বাবাইদাদাকে চরম অপমান করলেন না? রতনদার বিবেক কি বলে? আমার কথায় রাগ না ক’রে একটু বিবেকের বুকে কান দিয়ে শুনুক রতনদা, বিবেক
কি বলছে। সত্যি কি ইষ্টপ্রতিষ্ঠা, ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠা ও
ইষ্টস্বার্থরক্ষা হ’লো ভদ্রকালীতে বাবাইদাদার আশীর্বাদকে পা
দিয়ে মাড়িয়ে বাবাইদাদার আশীর্বাদপূত কেন্দ্রকে উপেক্ষা ক’রে,
তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ক’রে সৎসঙ্গ ক’রে? আচ্ছা রতনদা বা অন্যান্য যারা যারা ওখানে ঐ
অনুষ্ঠান আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তারা ভদ্রকালীতে সৎসঙ্গ ক’রে প্রমাণ করলেন না যে তারা ‘ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্র’
মানেন না? ভদ্রকালীতে সৎসঙ্গ ক’রে আসার পর ঐ অঞ্চলের প্রতিক্রিয়া নিয়েছিলেন কি আয়োজকরা? উনার ভদ্রকালীর অনুগামীরা উনাকে জানায়নি সৎসঙ্গ ক’রে আসার পর কি প্রভাব পড়েছে ভদ্রকালীর ঐ অঞ্চলে? সত্যি কথা রতনদাকে কে বলবে? সুব্রতবাবুরা তো নব
আনন্দে পথ চলাতে মাতোয়ারা। পিছনে কে কি বলছে তার ধার ধারে কে? আমি বলবো শুনবেন? গ্রহণ করা আর না করা আপনার ব্যক্তিগত
ব্যাপার।
আপনারা
সৎসঙ্গ ক’রে আসার পর সত্যিই ব্যপক সাড়া পড়েছে ভদ্রকালীর ক্যাম্প সংলগ্ন অঞ্চলে। সেটা
কিসের সাড়া? চায়ের দোকানে বসে চা খেতে খেতে, মাঠের মধ্যে বসে, ক্লাবে ক্যারাম বা তাস খেলতে
খেলতে, ঘরে টিভিতে খেলা, সিরিয়াল দেখতে দেখতে, রাস্তার উপরে দোকানে
জিনিস কিনতে কিনতে, পথ চলতে চলতে পথ চলতি মানুষ বলছে,
“হিন্দমোটর সৎসঙ্গ কেন্দ্র আর ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্রের মধ্যে লড়াই
লেগেছে। হিন্দমোটর সৎসঙ্গ কেন্দ্র ভদ্রকালী সৎসঙ্গ কেন্দ্রের...............মেরে দিয়ে
গেছে। এই সেই দল যারা কয়েক বছর আগে ভদ্রকালী শিবাজি স্পোর্টিং
ক্লাবে ভদ্রকালীর গুরুভাইবোনেদের দ্বারা আয়োজিত সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে ক্যাচাল ক’রে গেছিল। নিজেদের মধ্যে মিলমিশ নেই, খালি
গুরুপ বাজি, ............ আবার বড় বড় জ্ঞান ঝাড়ে; দুটো লবীর লড়াই। একটা বাবাইদাদা আর একটা অশোক দাদার লবী, যেমন মুলায়ম সিং আর অখিলেশ সিং বাপবেটার লড়াই তেমনি লবী!!!! ইত্যাদি নানারকম
কমেন্ট।“ গালাগালিগুলি লিখতে পারলাম না। তাই ডট ডট দিলাম।
শুনতে শুনতে চোখ, মুখ, কান লাল হ'য়ে যাচ্ছিল, মাথা গরম হ'য়ে যাচ্ছিল। সেইসময় মাথা ঠান্ডা রাখা
খুব কঠিন ব্যাপার। ঠাকুরের দয়ায় বাবাইদাদার আশীর্বাদে বাবাইদাদার আমাকে বলা কথাগুলি
এই কঠিন মুহূর্তে মনে মনে আউড়ে আউড়ে নিজেকে শান্ত রেখেছিলাম। এই ঘটনা আমাকে শিখিয়েছে
আচার্য্য পরম্পরা কেন প্রয়োজন আমাদের জীবনে!!! এই ঘটনা আমাকে শেখালো প্রতীক গুরু পরম
পূজনীয় শ্রীশ্রীবাবাইদাদার মধ্যে রেতঃ শরীরে কিভাবে সুপ্ত থেকে তিনি কঠিন সময়ের কঠিন
মুহূর্তে হাত ধ'রে পার ক'রে দেন!!!!
জয়গুরু।
No comments:
Post a Comment