Powered By Blogger

Thursday, September 5, 2019

সত্যানুসরণ ও কিছু কথা


চিন্তা হরণ শ্যামলদা একটা লেখা পোষ্ট করেছিলেন। লেখাটার নীচে লেখা ছিল 'সত্যানুসরণ'। লেখাটা হ'লো, " কৃতঘ্ন ও বিশ্বাসঘাতক অনেকটা অনেক সময়েই নিজেই সর্বনাশে সাবাড় হয়।" লেখাটা চোখে পড়তেই মনে হ'লো এই লেখাটা তো সত্যানুসরণে নেই। তাহ'লে কোথায় পেলেন চিন্তা হরণ দা? কৌতুহলবশতঃ আমি চিন্তা হরণদাকে প্রশ্ন করলাম সেই পোষ্টে। দীক্ষিত-অদীক্ষিত তামাম পাঠককুলের জানার ও সুবিধার জন্য
আমার প্রশ্নটা এবং তার পরবর্তী চিন্তা হরণ শ্যামল দা ও নির্মল সেন দার মন্তব্য এবং আমার তাদের সেই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষণমূলক কথন এখানে তুলে দিলাম।

প্রকাশ বিশ্বাসঃ "এই কথাগুলি সত্যানুসরণ গ্রন্থের? কোথায় পেলেন? কত পাতায় যদি বলেন তাহ'লে একবার দেখে নিতে পারি। আপনি শিওর যে এই কথাগুলি সত্যানুসরণ গ্রন্থের? কোথাও ভুল হচ্ছে না-তো? কোথাও গন্ডগোল হচ্ছে না-তো? দেখুন সত্যানুসরণ গ্রন্থ সম্পর্কে যেন কোনও ভুল ধারণার জন্ম না হয় দীক্ষিত-অদীক্ষিত পাঠক মহলে। একটু দেখে নিন।"

চিন্তা হরণ শ্যামলঃ জয়গুরু দাদাভাই ---"সত্যানুসরণ"৭৭ পৃষ্টার -'এই কৃতঘ্নতা ও বিশ্বাসঘাতকতাকে যে বা যারা প্রশ্রয় ও পোষণপুষ্ট করে---------"আপনি এ লাইনের পর থেকে পড়ালে পরবর্তী লাইনে পেয়ে যাবেন ---'জয়গুরু আশা করি পড়বেন, পাবেন ---

নির্মল সেনঃ জ্ঞাতার্থে "অকৃতজ্ঞতা" ....কৃতঘ্ন ও বিশ্বাসঘাতকতা অনেকটা অনেক সময়েই নিজেই সর্বনাশে সাবাড় হয় ---- আর এই প্রশ্রয়ী ও পুষ্টিপ্রদাতারা ব্যষ্টিসমষ্টির ধর্ম ও জাতির চিরদিনই সর্বনাশ করে থাকে। (পৃঃ ৭৭) জয়গুরু।

নির্মল সেনঃ  যে হেতু বড় পন্ডিত তোমাকে প্রশ্ন করেছে? সেহেতু আমি উত্তর দিলাম! জয়গুরু

 চিন্তা হরণ শ্যামলঃ ঠিক দিয়েছেন, দাদা, আমি খুবই আনন্দিত হয়েছি, জয়গুরু।

এই পর্যন্ত শেষে আমি ভেবেছিলাম এর কোনও উত্তর দেবো না।

কিন্তু পরবর্তী সময়ে মনে হ'ল প্রায় সময় এই ধরণের ঠাকুরের নাম দিয়ে বাণী চোখে পড়ে। সবার মধ্যে না হ'লেও কিছু মানুষের মধ্যে যারা ঠাকুরের বই টই পড়ে, ঠাকুরের গ্রন্থ Study করে তাদের মধ্যে এই নিয়ে সংশয় তৈরী হয়। এই বাণীটা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে, সংশয় তৈরী হবে আর এদের উত্তরে চুপ ক'রে থাকলে পাঠকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হবে ও মানুষ বিভ্রান্ত হবে। তাই ভাবলাম এই নিয়ে একটু চর্চা করা যেতেই পারে। যাই হ'ক আমি তখন চিন্তা হরণ শ্যামল-দাকে যা লিখেছিলাম সেই লেখা নতুন-পুরাতন দীক্ষিত-অদীক্ষিত মানুষের সুবিধার্থে এইখানে তুলে দিলাম।

প্রকাশ বিশ্বাসঃ চিন্তা হরণ শ্যামলদা আপনার পোষ্টটা দেখে আপনাকে কয়েকটা প্রশ্ন করেছিলাম। স্বাভাবিকভাবেই একজন ঠাকুরের অনুগামী হিসাবে ঠাকুরের একজন অনুগামীর কাছে এই প্রশ্নটা রেখেছিলাম। প্রশ্নটা রেখেছিলাম এই কারণেই যে আপনার পোষ্টটা আমায় চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল আর ভেবেছিলাম যেহেতু আপনি নামে চিন্তা হরণ তাহ'লে নিশ্চয়ই আমার এই চিন্তা হরণ ক'রে আমাকে সংশয় থেকে মুক্তি দেবেন, আমাকে সবুজ ক'রে দেবেন। কিন্তু দেখলাম আপনি নির্মল সেনকে বাধাই দিয়েছেন, জানিয়েছেন বাহবা তার পোষ্টের জন্য এবং আপনি লিখেছেন আপনি খুব আনন্দিত হয়েছেন। অতএব ধ'রেই নিতে পারি আমার সম্পর্কে করা তার উক্তিতেও আপনি আনন্দ পেয়েছেন এবং তার ভাষা, ব্যবহার, কথা সবকিছুর গুণগ্রাহী। আর মানুষের কথা, ভাষা, ব্যবহার মানুষের চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলে। নির্মল সেনের ক্ষেত্রেও তাই। যাই হ'ক এটা আপনার ব্যক্তিগত বোধ ও রুচির ব্যাপার। সেখানে আমার কিছু বলার থাকতে পারে না।
আপনার কথামত আমি আমার উদ্দেশ্যে করা আপনার কমেন্ট পড়লাম। ভেবে দেখলাম আপনি কোন 'সত্যানুসরণ'-এর কথা বলছেন? ঠাকুরের 'সত্যানুসরণ' নামে কি অনেক গ্রন্থ আছে? অনেক প্রকাশক আছে? এখন দেখা যাক রহস্যটা কোথায়। তাহ'লে কি বাঁদরের তৈলাক্ত বাঁশে ওঠা নামার অঙ্কের (২ফুট উঠলে ৩ফুট নেবে যায়) মত 'সত্যানুসরণ' গ্রন্থের পৃষ্ঠা সংখ্যা ঠাকুর প্রদত্ত/অপ্রদত্ত বা ঠাকুর অনুমোদিত/অননুমোদিত বাণীর ভারের তারতম্যে মাঝে মাঝে ওঠা নামা করে!?
ক্রমশঃ।

প্রকাশ বিশ্বাসঃ  চিন্তা হরণ শ্যামলদা, এবার আসি ঠাকুরের 'সত্যানুসরণ' গ্রন্থ প্রসঙ্গে আলোচনায়। আপনার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ভেবেছিলাম রহস্যের সমাধান হ'তে পারে কিন্তু যখন দেখলাম আপনি নির্মল সেনের কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের সমর্থক তখন ইচ্ছেটা মরে গেছিল। ভেবেছিলাম সবার সঙ্গে সব আলোচনা নয়। যাই হ'ক পড়ে ভাবলাম আমার আগের করা বক্তব্যের একটা মধুরেন পরিসমাপ্তির প্রয়োজন আর সেই প্রয়োজন বৃহত্তর স্বার্থে। তাই আবার লিখতে বসলাম বৃহত্তর পাঠককুলের জন্য।
যাই হ'ক, যে 'সত্যানুসরণ' গ্রন্থ আমার কাছে আছে সেই গ্রন্থের পৃষ্ঠা সংখ্যা তো ৭১। ৭৭ নম্বর পৃষ্ঠা কোথায় পেলেন!? এর অর্থ আপনার কাছে যে 'সত্যানুসরণ' গ্রন্থ আছে তার পৃষ্ঠা সংখ্যা আপনার কথানুযায়ী ৭৭পৃষ্ঠা তো আছেই তারও অধিক আছে। আচ্ছা আপনার কাছে যে 'সত্যানুসরণ' গ্রন্থ আছে তার পৃষ্ঠা সংখ্যা কত? আপনার জ্ঞাতার্থে ও আলোচনার সুবিধার্থে এবং দীক্ষিত-অদীক্ষিত পাঠককুলদের সুবিধার্থে আরও একটা তথ্য এর সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছি আমার কাছে আরও একটা 'সত্যানুসরণ' গ্রন্থ আছে যার পৃষ্ঠা সংখ্যা ১১০। তাহ'লে দেখা যচ্ছে তথ্যানুযায়ী আপাতত 'সত্যানুসরণের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩। এর থেকে স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যাচ্ছে তাহ'লে আরও 'সত্যানুসরণ' গ্রন্থ থাকতেই পারে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই 'সত্যানুসরণ' গ্রন্থগুলির প্রকাশক কে বা কারা? যে কোনও ব্যাক্তি বা যে কোনও স্বঘোষিত প্রতিষ্ঠান কি নিজের বা নিজেদের ইচ্ছামত ঠাকুরের নাম দিয়ে ঠাকুরের গ্রন্থ ছাপাতে পারে বা ছাপাবার অধিকার বা স্বত্বাধিকার আছে? এই সমস্ত গ্রন্থের Authenticity কোথায়? কোন গ্রন্থের মধ্যে ঠাকুরের বাণীর যথার্থতা অর্থাৎ Genuineness খুঁজে পাওয়া যাবে? সাধারণ আম ভক্তের কথা বাদ দিলাম; গবেষকরা কাকে প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসাবে গুরুত্ব বা স্বীকৃতি দেবে ব'লে আপনার মনে হয়? গবেষকদের কাছে কোন প্রকাশকের গ্রহণযোগ্যতা গুরুত্ব পাবে?
ক্রমশঃ।

প্রকাশ বিশ্বাসঃ চিন্তা হরণ শ্যামলদা, এবার আসি প্রকাশকের কথায়। আমার কাছে ৭১ পৃষ্ঠার যে 'সত্যানুসরণ' গ্রন্থ আছে তার প্রকাশক ঠাকুরের মূল কেন্দ্র 'সৎসঙ্গ দেওঘর-এর 'সৎসঙ্গ পাবলিশিং হাউস' সৎসঙ্গ, দেওঘর, ঝাড়খন্ড আর আমার কাছে আরও যে বহু পুরানো একটা সত্যানুসরণ' গ্রন্থ আছে সেটার প্রকাশক অন্য। একজন ব্যাক্তি তার প্রকাশক। সেই ব্যাক্তি বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল-এর শুভ্রা প্রেস থেকে বইটি মুদ্রণ করেন ও ১৯৭৮ সালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১১০ পাতার বইটি তিনি প্রকাশ করেন। এখন আমার খুব জানার ইচ্ছা, দাদা আপনার কাছে যে বইটি আছে সেই বইটির প্রকাশক ও মুদ্রক কে? কি তার প্রামাণিকতা ও যথার্থতা? কে সেই ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান যিনি বা যার ঠাকুরের গ্রন্থের ওপর এই বিধি সঙ্গত অধিকার আছে, কর্তৃত্ব করবার অনুমতি আছে, প্রামাণিক গ্রন্থ বা মতের ওপর প্রভুত্ব করার অধিকার আছে? কে এই বিধিসঙ্গত ক্ষমতাদান বা প্রাধিকার অর্পণ করলো সেই ব্যাক্তিকে বা সেই প্রতিষ্ঠানকে যে সে বা সেই প্রতিষ্ঠান ঠাকুরের গ্রন্থের ওপর ইচ্ছামত তার বা তাদের ব্যক্তিগত প্রভাব প্রয়োগ ক'রে ঠাকুরের গ্রন্থ প্রকাশ করবে? মূল কেন্দ্র বহির্ভূত ক্ষমতার উৎস এই সমস্ত প্রকাশকগণ কার থেকে সেই অধিকার বা অনুমতি লাভ করেছিল? Authentication বা প্রমাণীকরণ ছাড়া কোনও গ্রন্থের মূল্য গবেষকদের কাছে নেই এবং তাঁরা তাদের গবেষণার ক্ষেত্রে গ্রহণ করেন না বা আদৌ মূল্য দেন না। যাই হ'ক আমি আমার তথ্য ও তত্ত্বের উপর ভিত্তি ক'রে আপনার সঙ্গে এই বিষয় শেয়ার করলাম। আপনি গ্রহণ ও বর্জন দুই-ই করতে পারেন আপনার ইচ্ছানুযায়ী; এই বিষয়ে আমার কোনও বক্তব্য বা আপত্তি নেই।
ক্রমশঃ।

প্রকাশ বিশ্বাসঃ চিন্তা হরণ শ্যামলদা, আপনি বা আপনারা যা ইচ্ছা তাই ভাবতে পারেন, বলতে পারেন, করতে পারেন এই স্বাধীনতা সকলের আছে এবং ঈশ্বর এই স্বাধীনতা সকলকেই দিয়েছেন। আর এই স্বাধীনতার প্রয়োগও দেখতে পাই আপনাদের করা পোষ্টে। আপনারা ঠাকুরের আত্মজদের বিরুদ্ধে কতটা নোংরা ভাষা প্রয়োগ করতে পারেন, নোংরা আচরণ করতে পারেন এবং পরস্পর পরস্পরকে সমর্থন ক'রে এই নোংরা কাজে ঝড় তুলবার আহ্বান দিতে পারেন তাও দেখছি। আর তাই ভাবি ঠাকুরের পরমপ্রিয় আত্মজদের যারা ছাড় দেয় না তো বাকীরা কোন ক্ষেত কা মূলী!? কিন্তু এটা জেনে রাখুন ইতিহাসবিদ ও গবেষকদের কাছে 'কোন ক্ষেত কা মূলী' এই তকমা চলবে না। তাঁরা চাইবেন তাদের গবেষণার জন্য Authentication, চাইবেন Genuineness-এর ভিত, চাইবেন Authorized version of the 'Sathyanusaran' which is called 'The pursuit of Truth. সেখানে নির্মল সেনদের গালাগালি খাটবে না, খাটবে না মূল কেন্দ্র বহির্ভূত ক্ষমতার উৎস কপট চাতুরিদের প্রকাশনার!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

প্রকাশ বিশ্বাসঃ আর, Nirmal Senদের মত অসহিষ্ণু, অসভ্য, রুচিহীন মানুষদের উদ্দেশ্যে শুধু এই কথায় বলতে পারি উনার সঙ্গে আমার কোনও কথা বলার রুচি নেই। কারণ আমি Chinta Haran Shyamolদার পোষ্টের উপরে কিছু আগ্রহ প্রকাশ করেছিলাম, উনাকে (নির্মল সেন) বা উনার কোনও পোষ্ট বা বক্তব্য বিষয়ে কোনও মন্তব্য করিনি। অথচ উনি আমাকে (আমি উনার না পরিচিত, না ফেসবুক বন্ধু) অপমানজনক মন্তব্য ক'রে উনার শিক্ষা, রুচি ও জীবনের মান ও শৈলীর পরিচয় দিয়েছেন। তাই, আমি না উনি কে বড় পন্ডিত আর কে বড় লেন্ডিত সে আলোচনা বা তর্কে যেতে রুচিতে বাধলো। জানি না উনি বৈধ সৎসঙ্গী কিনা!!!!!!!!! তবে এটা বুঝেছি ঠাকুরের জীবন, ব্যবহার, বলা, কথা ও ঠাকুরের সৎসঙ্গের শিক্ষা, রুচি ইত্যাদির কোনও কিছুর সঙ্গেই উনার (আমাকে ও অন্যান্য জায়গায় করা মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে উনার যে জীবন দর্শনের বহির্প্রকাশ হয় তার সঙ্গে) সঙ্গে মেলে না শুধু নয়, ঠাকুরের মানুষের একেবারে বিপরীত।
শেষ।

No comments:

Post a Comment