আসুন ঈশ্বরের সৃষ্টির সবকিছুকে ভালোবাসি, ভালোবেসে ধন্য হ'ই। ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে খাটি আনন্দ লাভ করি। মানুষকে ভালোবাসার মধ্যে যে আনন্দ সেই আনন্দ পৃথিবীকে মুঠোয় পাওয়ার মধ্যেও নেই। একমাত্র সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিকে ভালোবাসার মধ্যে প্রকৃত আনন্দ লুকিয়ে রয়েছে। আপনি আমি যতই বলি ভালো আছি প্রকৃতপক্ষে কেউই ভালো নেই, আনন্দে নেই। সবটাই নেশাখোরের নেশার বস্তু গলাদ্ধকরণ করার সাময়িক ভালো থাকা ও আনন্দে থাকার মত। মিথ্যের মুখোশ পড়ে আমরা সমাজে বাস করছি সবাই। যে আনন্দে সুখ নেই, শান্তি নেই, ভালোবাসা নেই, প্রেম, দয়া, মায়া, শ্রদ্ধা, সম্মান ইত্যাদি জীবনীয় কিছুই নেই ; আছে শুধু অশ্রদ্ধা, অপমান লাঞ্চনা গঞ্জনা ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে ধ্বংস হওয়া আর নিভে যাওয়া সেই মিথ্যে আনন্দের মধ্যে বেকুব অপদার্থ নেশাখোরের মত ডুবে থেকে আমরা ভেজাল আনন্দের ঢেকুর তুলছি আর পথকুক্কুরের মত ল্যাজ নাড়াচ্ছি। আপাদমস্তক আমরা একজন নেগেটিভ মানসিকতা সর্বস্ব অমানুষ।
সবসময় নেগেটিভ মানসিকতা মানুষকে নিরানন্দময় জীবনের অধিকারী ক'রে তোলে। কামনা বাসনা থাকবে না কেন? জীবন যখন আছে তখন তাকে ভোগ করার অধিকারও আমার আছে। ভোগ আমরা করি কই, করি তো ভোগকে উপ-র সঙ্গে জড়িয়ে নিয়ে। জীবনে ত্যাগ করার কিছুই নেই। জীবন থেকে ত্যাগ করার যদি কিছু থাকে তাহ'লে তাহ'ল শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের কথামতো মল, মূত্র আর বায়ু ছাড়া আর কিছুই নয়। এছাড়া ত্যাগ ব'লে কিছু নেই। সবটাই ভোগের ব্যাপার। ভোগ করারও আর্ট আছে। ভারসাম্যহীন ভোগ ভোগ নয়। আর ত্যাগ মানে শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, "ভোগের বস্তু নিকটে রাখিয়া ত্যাগের নামই ত্যাগ।" ভোগের বস্তু রোজগার করার ক্ষমতাই নেই, ত্যাগ তো দূর কি বাত। কামনা বাসনা আমার আছে। আর সে কামনা সে বাসনা ঈশ্বরকে ভালোবাসার কামনা, ইশ্বরকে পাওয়ার বাসনা। আর সে কামনা সে বাসনা পূরণ হয় তখনি যখন মানুষ মানুষকে ভালোবাসে, তার সৃষ্টির চারপাশের সবকিছুকে প্রেম করে। আর তখনি প্রকৃত আনন্দ লাভ করে মানুষ। বৃথা অলীক কোনও আনন্দের পিছনে ছুটে জীবনকে জটিল ও দুর্বিষহ ক'রে তোলার কোনও মানে হয় না। যেমন খেয়ে আনন্দ তার চেয়ে বেশী আনন্দ খাইয়ে, নিজে বড়ো হ'য়ে যেমন আনন্দ তার চেয়ে বড় ও বেশি আনন্দ কাউকে জীবনে বড় হ'তে সাহায্য করে। নিজে সুখী হওয়ার আনন্দের চেয়ে অন্যকে সুখী দেখতে পাওয়া, অন্যের মুখে হাসি দেখতে পাওয়া, অন্যকে হাসিখুশি দেখতে পাওয়া ইত্যাদির মধ্যে যে আনন্দ সেই আনন্দ আর কোথায় আছে? বাচ্চাদের ভালোবাসার মধ্যে যে আনন্দ সেই আনন্দ লুকিয়ে আছে ঈশ্বরকে ভালোবাসার মধ্যে। যা ভাবলে, যা চিন্তা করলে, যে কর্ম করলে মন আনন্দ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয় সেই ভাবা, সেই চিন্তা, সেই কর্ম যতই লাভজনক হ'ক না করাই মঙ্গলের। কারণ এইধরনের আনন্দ নেশা করার আনন্দের মত সাময়িক ও জীবন বিধ্বংসী। তাই আনন্দ করবো তো পরমানন্দ করবো। আর পরমানন্দ আছে ভালোবাসার মধ্যে। আর ভালোবাসার সমুদ্র হচ্ছে পরমপিতা জীবন্ত ঈশ্বর। তাকে গ্রহণ করতে হয় জীবনে আর সেই ভালোবাসার সমুদ্রে দিতে হয় ডুব, ডুব দিয়ে স্নান ক'রে পবিত্র, স্নিগ্ধ, পরিচ্ছন্ন হ'তে হয়। আর ভালোবাসার জলে আপাদমস্তক অর্থাৎ শরীর-মন-আত্মা সিক্ত হ'য়ে উঠলে তবেই ভালোবাসা যায় সৃষ্টিকর্তার সমস্ত সৃষ্টিকে। আর সেইখানেই লুকিয়ে আছে প্রকৃত আনন্দ লাভের তুক, চাবিকাঠি। নতুবা সবটাই মিথ্যা, ফাঁকিবাজি। --------প্রবি।
No comments:
Post a Comment