প্রবন্ধঃ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ!

আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজীর ভাষণ শুনলাম। মোদীজি আজ বাংলায় এসেছেন দু'দিনের সফরে। তিনি তাঁর ভাষণে বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতির কথা বললেন, বললেন বাংলার কৃতি সন্তানদের কথা। শুনলাম। বাংলার আরও অনেক কৃতি সন্তানদের নামের সঙ্গে একই সারিতে শুনলাম চৈতন্য মহাপ্রভুর নাম! কিন্তু শুনলাম না বাংলা তথা বিশ্বের বিস্ময় শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণের নাম!!!!!! রামকৃষ্ণ মঠের কথা বললেন, করলেন ছোটবেলার স্মৃতিচারণ কিন্তু তাঁর নাম বললেন না উদার উদাত্ত ভাবে! আমি বলছি না তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে সযত্নে এড়িয়ে গ্যাছেন। না, তা নয়! প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা-সম্মান বোধ-জ্ঞান নিঃসন্দেহে উচ্চমার্গীয়। আসলে এমনটা হয়। উচ্চস্তরের অনুষ্ঠানের উচ্চতায় এমনটা হয়। তবে মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ ও তাঁর পূর্বরূপেদের সঙ্গে একই আসনে অন্য মহাত্মাদের নাম যখন উচ্চারিত হয় তখন ভাবি আরও কত হাজার কাল অপেক্ষা করতে হবে এই বোধের জন্ম নিতে যে মহাত্মা আর পরমাত্মার আসন এক নয়; এক আসনে, একই সারিতে পরমাত্মার সঙ্গে মহাত্মাদের বসানো যায় না, যায় না নাম উচ্চারণ করা! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি আকাশের চাঁদের সঙ্গে তুলনা ক'রে বাংলার মাটিতে জন্ম নেওয়া বহু চাঁদের নাম বললেন, স্মরণ করলেন শ্রদ্ধাভরে। বললেন, আকাশে একটা চন্দ্র কিন্তু বাংলার আকাশে ঈশ্বরচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র, শরৎচন্দ্র, সুভাষচন্দ্র, বিপিনচন্দ্র ইত্যাদি বহু চন্দ্র উদ্ভাসিত! ভালো লাগলো তাঁর এই উন্নত বোধের বহিঃপ্রকাশ! বাংলার মাটি উর্বর মাটি, কৃষ্টি-সংস্কৃতির বিস্ময়কর ভূমি! সেই বাংলার বিস্ময়কর মাটির বিস্ময়কর সন্তান যাঁকে বলা হয় The greatest phenomenon of the world, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়, সেই সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়কর সন্তান ছিলেন বাঙালি আর প্রধানমন্ত্রীজির বলা বাংলার আকাশের চন্দ্রের আর এক চন্দ্র শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র! যাঁর নাম আজ হয়তো মুখে আসছে না প্রধানমন্ত্রীর কিন্তু সেদিন বেশী দূরে নয় যেদিন শুধু ভারত নয় গোটা পৃথিবী শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে তাঁর নাম, নত হবে তাঁর শ্রীচরণতলে! সেদিন সমাগত! হয়তো আমরা দেখে যেতে পারবো না, আগামী প্রজন্ম কিছুটা আভাষ পাবে কিন্তু দেখতে পাবে না আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পৃথিবী তার জন্য করছে অপেক্ষা। আসুন আমরা বোধের ঘর পরিষ্কার করি। ( লেখা ১১ই জানুয়ারী'২০২০)