শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হলেন The Greatest phenomenon of the world! কথাটা কেন বললাম? এর সত্যতা কোথায়? এর সত্যতা জানতে হ'লে ঠাকুরকে জানতে হবে, ঠাকুরের জীবন দর্শন সম্পর্কে গভীরভাবে অনুসন্ধান করতে হবে। ঠাকুরের বুকের গভীরতার কাছে লক্ষ সমুদ্রের সম্মিলিত গভীরতা তুচ্ছ হ'যে যায়! আর এই গভীরতা জ্ঞানের গভীরতা! তাই তাঁকে জানা বা বোঝা আমাদের মত সাধারণ মানুষের কাজ নয়। এই কাজ ঈশ্বরকোটি পুরুষের কাজ! কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের মত মানুষ তাঁর শেষ জীবনে যেখানে ঠাকুরের শ্রীহস্ত লিখিত একমাত্র গ্রন্থ 'সত্যানুসরণ' পড়তে পড়তে তিন তিনবার ব'লে উঠেছিলেন, এই লেখকের বয়স কত!? যেখানে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত বিজ্ঞানী ভারতের অন্যতম রত্ন সি বি রমনের বিজ্ঞান গবেষণার সহকারী ফিজিক্সে গোল্ড মেডেলিস্ট বিজ্ঞানী ও সমস্ত শাস্ত্রে শাস্ত্রজ পন্ডিত শ্রদ্ধেয় শ্রী কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য যিনি কেষ্টদা নামে পরিচিত সেই মহাপ্রাণ ভক্তকে ঠাকুর বলেছিলেন ভাঙাচোরা মানুষ; বলেছিলেন "কেষ্টদা আপনার মত একজন ভাঙাচোরা মানুষ নিয়ে আমি এত কান্ড করলেম যদি একটা গোটা মানুষ পেতাম তাহা'লে গোটা দুনিয়ার ঘেটি ধরে দেখিয়ে দিয়ে যেতাম কিন্তু তা আমার আর হ'লো না"; সেখানে আমাদের মত মানুষদের জায়গা কোথায় সামান্য একটুও যার বুদ্ধি আছে, একটুখানি হ'লেও যার চোখকান খোলা সেই বুঝতে পারবে। আমি যা বুঝি তা বলি, তা হ'লো কেষ্টদার মত মানুষ যদি ঠাকুরের কাছে ভাঙাচোরা মানুষ হয় তাহ'লে এটা বুঝতে হবে কেষ্টদা ভাঙাচোরা হ'লেও একটা ছোট্ট হ'ক আর বড় হ'ক একটা পার্টিকেল অর্থাৎ একটা ছোট্ট হ'লেও দানা বা টুকরো আর আমরা হলাম ডাস্ট, একেবারে গুঁড়ো পাউডার; সামান্য বসন্তের ফুরফুরে হওয়ায় কোথায় উড়ে যাবো তার ঠিক ঠিকানা নেই! তাই বলি ঠাকুরকে বোঝা আমাদের মত মানুষের কাজ নয়: এই কাজ ঈশ্বরকোটি পুরুষের কাজ! ঠাকুরকে বুঝতে হ'লে সর্বপ্রথমে শ্রীশ্রীবড়দাকে বুঝতে হবে, শ্রীশ্রীবড়দাকে বুঝতে হ'লে শ্রীশ্রীদাদাকে বুঝতে হবে, শ্রীশ্রীদাদাকে বুঝতে হ'লে শ্রীশ্রীবাবাইদাদাকে বুঝতে হবে আর শ্রীশ্রীবাবাইদাদাকে বুঝতে হ'লে শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে বুঝতে হবে! তবেই যদি শ্রীশ্রীঠাকুরকে বোঝা যায়! আর তাও তাঁর দয়া ছাড়া সম্ভব নয়!
যাই হ'ক, এরকম অনেক উদাহরণ আছে। তাই শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে জানতে হ'লে গভীর অধ্যয়নের ব্যাপার যা রত্নদের কাজ। কথায় আছে, রতনে রতন চেনে-------!
প্রশ্ন হচ্ছে, এই কথা কেন বললাম?
ফেসবুকে এখন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে অনেক ছবি, লেখা বা উক্তি, বাণী দেখতে পাই। দেখতে পাই সেইসব লেখা, উক্তি বা বাণী কার তার উল্লেখ থাকে না। আবার ভক্তদের মধ্যেও দেখতে পাই পারস্পরিক ঝগড়া বিবাদ। এছাড়া আছে ঠাকুরকে নিয়ে নোংরা কুৎসিৎ সমালোচনা আর গালিগালাজ। এই গালিগালাজ যারা করে তাদের সম্পর্কে কিছু বলার নেই আমার; কারন এ হয়ে এসেছে সব যুগে, সব কালে। এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। শুধু বলতে পারি রতনে যেমন রতন চেনে ঠিক তেমনি কথায় আছে, শুয়োরে চেনে কচু।
যাই হ'ক এবার আসি আসল কথায়।
ফেসবুকে একটা ঠাকুরের মানুষ হ'য়ে ওঠা সম্পর্কিত লেখা পড়লাম। এখনো পর্যন্ত সেই লেখাটা ৫৭ জন লাইক করেছেন কিন্ত অবাক লাগে এটা কার উক্তি কেউ একজনও জানতে চাইলেন না। এরকম বক্তার নাম বিহীন উক্তি প্রকাশে স্বাভাবিকভাবেই বক্তব্যের গুরুত্ব হারিয়ে যায়। যিনি লেখাটা পোস্ট করেছেন তার কাছে জানতে চেয়েছি এটা কার উক্তি তিনি জানেন কিনা? জানলে উল্লেখ করুন। আমি যতদূর জানি ঐ মহান উক্তি আচার্যদেব শ্রীশ্রীদাদার।
এছাড়া কত জন কত গুরুত্বপূর্ণ লেখা ফেসবুকে পোস্ট করে কিন্তু তা'তে কোনো মতের আদান প্রদান দেখতে পাই না! দেখতে পাই শুধু জয়গুরু আর জয়গুরু! অথচ ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হলেন বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়; The greatest phenomenon of the world!!!!!!!! ঠাকুরের আজ বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি শিষ্য! আর ফেসবুক পারস্পরিক মত বিনিময় এবং গোটা বিশ্বের কাছে পৌঁছে যাওয়ার শক্তিশালী এক মাধ্যম! কিন্তু আশ্চর্য সেই শক্তিশালী মাধ্যমের সুযোগ নিতে আমরা অপারগ! আজ ঠাকুরের কোটি কোটি শিষ্য অথচ সেই বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়ের বলে যাওয়া নানা বিষয় নিয়ে যখন কেউ কেউ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করে বা লেখা প্রকাশ করে তখন সেখানে সেই কোটি কোটি শিষ্যদের মধ্যে থেকে শুধু ভেসে আসে জয়গুরু আর জয়গুরু! এতে কি ধ'রে নেওয়া যেতে পারে? কোয়ালিটির অভাব, কোয়ান্টিটির প্রাদুর্ভাব!? দুটোরই প্রয়োজন আছে।
এবার এমন কোনও বিষয় নেই যা ঠাকুর বলে যাননি বা তাঁর মতামত দিয়ে যাননি! যেখানে গোটা পৃথিবীর বলা শেষ সেখান থেকে 'সৎসঙ্গ'-এর শুরু! বিশ্বের সমস্ত বিস্ময়ের সম্মিলিত বলা শেষ হ'লে তারপর সেখান থেকে শুরু হবে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়ের বলা! যেখানে যে যে বিস্ময় যে বিষয় সম্পর্কে কোনো কিছু বলে যেতে পারেননি বা কোনও ইঙ্গিত দিয়ে যেতে পারেননি বা অসম্পূর্ণ বলে গেছেন সেখানে সেই বিষয় সম্পর্কে আলোকবার্তা দিয়ে গেছেন বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় রক্ত মাংস সংকুল জীবন্ত ঈশ্বর পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র!!!!!! অথচ আমরা লক্ষ লক্ষ ফেসবুক ব্যবহারকারী ঠাকুরের অনুগামীরা জয়গুরু ছাড়া আর কিছু পারি না বা বলি না! আর যদি বলিও একে অপরকে গালাগালি করি, ভক্তির পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে একে অন্যের নিন্দা, কুৎসা ক'রে কুৎসিৎ মন্তব্য করি, ঠাকুরের বিরাট ভক্ত সেজে ঠাকুরের আত্মজদের বিরুদ্ধে বিদ্রুপ করি আর ঠাকুরের প্রিয় পরম আত্মজদের সম্পর্কে অকথ্য কুকথ্য সমালোচনা করে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে ঠাকুরকে কালিমালিপ্ত করি আর প্রতিযোগিতা করি কে কত বড় ভক্ত! ঠাকুরকে ব্যবসার, আয়ের উপকরণ বানিয়ে সমস্ত কিছু লন্ডভন্ড ক'রে দিয়ে বোকা সরল সাধাসিধে মূর্খ বেকুব লেখাপড়া না জানা অক্ষর জ্ঞানহীন অশিক্ষিত ও তথাকথিত শিক্ষিত কিচ্ছু না করা ভক্তদের ধর্মভীরুতার ও আলগা ঠুনকো ভক্তির সুযোগ নিয়ে তাদের বোকা বানিয়ে ধান্দাবাজ লোভী কপট কিছু মানুষ সৎসঙ্গীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি ক'রে কায়েমী স্বার্থ বজায় রাখার জন্য মরিয়া হ'যে উঠেছি! সাধারণ ভক্ত এই অসাধারণ শয়তানদের চালাকি কোনোদিনই বুঝতে পারবে না ঠাকুরের জন্য হাতেকলমে কিছু না করার ও অতি ভক্তির কারণে। আর এক ধরণের ভক্ত আছে যারা তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে ঠাকুর প্রেমের, ঠাকুর ভক্তির ফোয়ারা ছোটায়!!!!
বিশ্বের সমস্ত বিস্ময়দের বলে যাওয়ার মধ্যে যেখানে যেখানে লখিন্দরের বাসর ঘরের সরু চুলের মত যে ছিদ্র আছে সেই ছিদ্র এবার ভরাট করে দিয়ে গেছেন তিনি, অসম্পূর্ণতা সম্পূর্ণ করে দিয়েছেন এবার ঠাকুর! এ বোঝে সে, প্রাণ বোঝে যার! কিছু না ক'রে পাওয়ার বুদ্ধি যাদের তাদের দিয়ে আর যাই হ'ক তাঁকে, তাঁর মিশনকে বোঝা যায় না, যাবেও না কোনওদিন, কোনও জন্মেও। তিনি কি দিয়ে গেছেন তা বোঝার জন্য আগামী পৃথিবী অপেক্ষা করছে। অপেক্ষা করছে নেতাজি, দেশবন্ধু ইত্যাদি কোয়ালিটি ম্যানদের নেবে আসার অপেক্ষায়!!!!!! কারণ কোয়ান্টিটির সঙ্গে সঙ্গে কোয়ালিটির অপেক্ষা করছে 'সৎসঙ্গ' তথা গোটা বিশ্ব!!!!!!!
( লেখা ৮ই জানুয়ারী ২০১৯)
No comments:
Post a Comment