Powered By Blogger

Thursday, May 16, 2024

প্রশ্নের উত্তরঃ "বাবা আই = বাবাই"

বিশ্বজিৎ এর বিশ্বরূপ দর্শন ও বিশ্বজয়!! (৫) আর্টিকেলে শ্রীশ্রীবাবাইদাদা সম্পর্কে আমার জানা একটা তথ্য পরিবেষণ করেছিলাম। সেখানে একজন ইষ্টপ্রাণ গুরুভ্রাতা শ্রীশ্রীবাবাইদাদার সম্পর্কে ঐ রকম তথ্য পরিবেষণের কারণে তার তীব্র আপত্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। আমার জানা বিষয়ে ভুল থাকতেই পারে। কোনও তথ্য সম্পর্কে কারও আপত্তি থাকতেই পারে কিন্তু সেই আপত্তি যেন তথ্য পরিবেশকের প্রতি রাগ, ঘৃণা, তাচ্ছিল্য, অপমানে পর্যবসিত না হয়। আর অবশ্যই যেন আপত্তির পক্ষে বলিষ্ঠ যুক্তিপূর্ণ মতবাদ থাকে। আর আমরা কেন কোনও তথ্য সম্পর্কে সন্দেহ থাকলে জানার মনোভাব নিয়ে মত বিনিময় করি না? অহং মত্ততাই বিনাশের কারণ।

যাই হ'ক এখানে প্রথমে আমি ঐ পাঠকের (Debangshu Sharma) মন্তব্যটা তুলে দিলাম। পরে পাঠকের এই মন্তব্যের উত্তরে আমার ঐ তথ্য সম্পর্কে বিশ্লেষণ মূলক যে উত্তর আমি দিয়েছিলাম তা' আমি আমার সমস্ত বন্ধুদের জন্য এখানে তুলে দিলাম।

* Debangshu Sharma. দাদা জয়গুরু জানবেন। পূজ্যপাদ বাবাইদাদার নামের এরকম funny পরিবেষন আগে শুনিনি। পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রী বড়দা বেশির ভাগ কথা বাঙলাতেই বলতেন হঠাৎ বাবা আই এটা তো হিন্দীর মত শোনায়। পৃ বাবাইদাদার জন্ম 1968 সালে এবং পরমদয়াল তখনও নরলীলা করছেন পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা তখন বলছেন বাবা অর্থাৎ পরমদয়াল আই মানে এসেছেন। বাঃ । যুক্তি ছন্নছাড়া। পরমদয়াল বলেছেন যদি আমরা তাঁর কথামতো চলি তবে দশ হাজার বছর তাঁর আসা লাগবে না____এর পর বাবা আই। দাদা এই সৎসঙ্গ পরমদয়ালের সাধের এখানে আমরা তাঁকে মাথায় নিয়ে জীবনবৃদ্ধির সাধনা করি দয়া করে অন্যের কাছে উপহাসাস্পদ করে তুলবেন না।

* Prakash Biswas. আপনিও আমার 'জয়গুরু জানবেন'। আপনি লিখেছেন বাবাইদাদার নামের এরকম funny পরিবেষণ আগে শোনেননি। তার মানে শ্রীশ্রীবড়দা সম্পর্কে অনেক কিছুই শুনেছেন আর অনেক কিছুই জানেন। আচ্ছা আপনি শ্রীশ্রীবড়দার খুব ঘনিষ্ট তাই না? বড়দার সঙ্গে সবসময় থাকতেন ঘরে বাইরে? বড়দা কখন কোথায় কি বলতেন সব আপনি বড়দার সঙ্গে থেকে থেকে শুনতেন? আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে আপনি শ্রীশ্রীবড়দার ছায়া সঙ্গী ছিলেন। ধরেই নিলাম আপনি বড়দার ছায়া সঙ্গী ছিলেন তাহ'লে এটা নিশ্চয়ই জানেন আপনার কথানুযায়ী “শ্রীশ্রীবড়দা বেশীরভাগ সময়ই বাংলা ভাষায় কথা বলতেন” তাহ'লে আমার জিজ্ঞাস্য----- যেহেতু আপনি ‘বেশীরভাগ’ শব্দটা ব্যবহার করেছেন----- শ্রীশ্রীবড়দা বেশীরভাগ বাংলা বললেও কমভাগ তাহ'লে অন্য ভাষায় কথা বলতেন, তাই তো? তা সেই বেশীরভাগ বাংলা ছাড়া কমভাগ কোন ভাষায় কথা বলতেন তা আপনার জানা আছে নিশ্চয়ই? কি তাই তো? নিশ্চয়ই হিন্দিতে বলতেন না; তাই না? তা’হ’লে কি কোনও গ্রাম্য আঞ্চলিক ভাষায় কমভাগ কথা বলতেন? আর “বড়দা বেশীরভাগ বাংলায় কথা বলতেন'” কথাটা কি মানানসই হ'লো? শ্রীশ্রীবড়দা তো বাঙালি ছিলেন নাকি? তা' বাংলায় কথা বলবেন এতে আর বিতর্ক কোথায়? বেশীরভাগ কেন বলছেন ? সব সময় বাংলায় বলতেন এটা কেন বলছেন না? বাংলায় কথা বলতেন এটা তো understood!? 'বাবা আই' কথাটা হিন্দির মত শুনতে বলেই আর বড়দা বাংলা বলতেন বলেই এই 'বাবা আই' কথাটা বলা তাঁর পক্ষে অসম্ভব; তাই তো? আপনার এই কথাটা তাহ'লে খুব যুক্তিপূর্ণ? আপনার কথামত শ্রীশ্রীবাবাইদাদা ১৯৬৮তে জন্মেছেন তাহ'লে তখন পর্যন্ত কতবছর শ্রীশ্রীবড়দা দেওঘরে অবস্থান করছেন আর দেওঘর তখন বিহার বর্তমানে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের মধ্যে পড়ছে আর ওখানকার ভাষা কি ছিল? আমার যদি ভুল না হয় বাবাইদাদার জন্ম সময় পর্যন্ত বড়দার দেওঘরের বুকে অবস্থানের সময় ২২বছর আর দেওঘরের সরকারী ভাষা ছিল হিন্দি আর ইংরাজি। এই দীর্ঘ ২২বছরে বড়দার মুখ দিয়ে একটা হিন্দি শব্দ (আপনার কথা অনুযায়ী হিন্দি শব্দ, অন্য কোনও আঞ্চলিক ভাষা হ’তে পারে) বেরিয়ে আসা কি খুবই আশ্চর্য্যের? আর বড়দা কি কখনো হিন্দি বলেননি? তাহ’লে আপনার যুক্তি অনুযায়ী ‘কমভাগ’ হিন্দি ভাষা প্রয়োগ না হওয়ার কোনও যুক্তিপূর্ণ কারণ আছে কি?

আপনি লিখেছেন শ্রীশ্রীবাবাইদাদা যখন জন্মেছেন তখনও পরমদয়াল নরলীলা করছেন আর এই সময় শ্রীশ্রীবড়দার বলা 'বাবা আই' অর্থাৎ বাবা এসেছেন কথাটা অযৌক্তিক ও ছন্নছাড়া তাই তো দেবাংশুবাবু? আচ্ছা দেবাংশুবাবু আজ আপনি যে বাবাইদাদাকে দেখছেন সেই বাবাইদাদার সঙ্গে ঠাকুরের কোনও সাদৃশ্য খুঁজে পান? খুব মোটাভাবে বলি ঠাকুরের মুখের সঙ্গে বাবাইদাদার মুখের আশ্চর্য মিল আর কারও মধ্যে খুঁজে পান? আজকের এই আশ্চর্য মুখের মিল কি সেদিন সেই ছোট্ট শিশুর মুখের মধ্যে আর কেউ খুঁজে পেয়েছিল? পেয়েছিল কিনা জানি না। শ্রীশ্রীবড়দা পেয়েছিলেন। আপনি লিখেছেন "পরমদয়াল বলেছেন, যদি আমরা তাঁর কথামতো চলি তবে দশ হাজার বছর তাঁর আসা লাগবে না____এর পর বাবা আই"? এই কথা ঠাকুর কোথায় বলেছেন তা’ আমার জানা নেই। তিনি আর আগামী দশ হাজার বছরের মধ্যে আসবেন না এমন সরাসরি নিজের সম্পর্কে কথা নিজে বলেছেন তা আমার জানা নাই থাকতে পারে। কারণ এত বিশাল তাঁর সাহিত্য ভান্ডার তার কোথাও হয়তো মটকা মেরে পড়ে আছে এই অমোঘ বাণী যা আমার নজরে পড়েনি । না পড়াই স্বাভাবিক। তাই আমি আপনার এই কথার বিরোধিতা করবো না। তবে যেটা আমি জানি, যেটা আমি লিখেছি আমার ঐ লেখায়, সেটা বলি, ঠাকুর বলেছেন, "যা দিয়ে গেলাম আগামী দশ হাজার বছর আর কিছু লাগবে না"। সেটাকে আমরা ঘুরিয়ে অন্তর্নিহিত অর্থ ক’রে নিই যে অর্থাৎ তিনি আর আগামী দশ হাজার বছর আসবেন না। কেন? কারণ কি? এখন ঘোর কলির যুগ চলছে। এই যুগ পরিবর্তন হ'য়ে প্রবেশ করবে আর একটা যুগে অর্থাৎ সত্য যুগে। অর্থাৎ যুগ পরিবর্তনের একটা নীল নকশা চাই। এই যে পরিবর্তন তার সূচনা শুরু হ'য়ে গেছে ঠাকুরের আবির্ভাবের মধ্যে দিয়ে অর্থাৎ ঠাকুরের ব'লে যাওয়া জন্ম বিজ্ঞান ও জীবন বিজ্ঞান অর্থাৎ বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার যে বিজ্ঞান সেই বিশেষ জ্ঞানের মধ্যে দিয়ে। এই জন্ম বিজ্ঞান ও জীবন বিজ্ঞানের যে নীল নকশা ঠাকুর দিয়ে গেছেন এর পরে আর কিছু লাগবে না আগামী দশ হাজার বছর। কিন্তু যেটা লাগবে সেটা হ'ল এই, যে Transitional period-এ আমরা দাঁড়িয়ে আছি এখান থেকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য, এই ঘোর কলি যুগ থেকে সত্য যুগে মানবজাতি তথা গোটা সৃষ্টিকে প্রবেশ করানোর জন্য লাগবে শুধু মহান নেতৃত্ব। আর এই নেতৃত্বটাই দেবেন ঠাকুর স্বয়ং। আর তা’ তাঁর কথামত রেতঃ শরীরে সুপ্ত থেকেই তিনি নেতৃত্ব দেবেন। যেমন তিনি থাকাকালীন শ্রীশ্রীবড়দার মধ্যে সুপ্ত ছিলেন, যেমন এখন আছেন শ্রীশ্রীদাদার মধ্যে, আগামীতে শ্রীশ্রীবাবাইদাদার মধ্যে সুপ্ত থেকে তিনি দেবেন সেই মহান নেতৃত্ব। রেতঃ শরীরে তিনি যে সুপ্ত থাকবেন আর ঠিক সময়েই আত্মপ্রকাশ করবেন তার জন্য চাই উপযুক্ত শ্রেষ্ঠ আধার। আর সেই ভয়ংকর তেজের আধারকেই দেখতে পেয়েছিলেন এ যুগের পরমভক্ত হনূমান ঠাকুরের কুকুর জগন্নাথের সেই চকা আঁখির দৃষ্টির অধিকারী শ্রীশ্রীবড়দা তাঁর তৃতীয় এবং ঠাকুরের চতুর্থ পুরুষ সেই ছোট্ট শিশুর মুখের মধ্যে আর তাই তিনি সেই মুখ দর্শন করেই আনন্দের আতিশয্যে চকিতে বলে ফেলেছিলেন,"বাবা আই" অর্থাৎ বাবা এসেছে।

এই যে ছোট্ট শিশুর মুখের মধ্যে শ্রীশ্রীবড়দা তাঁর প্রিয়পরমের মুখাবয়ব দেখতে পেয়ে আনন্দে ব’লে ফেলেছিলেন ‘বাবা আই’ যা আজও দেওঘরের আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়ায় আমার এই অকৃত্রিম সহজ সরল লেখার মধ্যে আপনি ছন্নছাড়া যুক্তি দেখতে পেলেন, দেখতে পেলেন Funny পরিবেষণ ও উপহাসের বস্তু কিন্তু দুর্ভাগ্য দেখতে পেলেন না সেই Transitional period- এর Transcendental condition কে। দেখতে পেলেন না ঠাকুরের প্রতি শ্রীশ্রীবড়দার অকৃত্রিম ভালোবাসার তীব্র অনুভূতির বহির্প্রকাশ। দেখতে পেলেন না পিতার প্রতি সন্তানের ভালোবাসার অন্তহীন আকুলতা, দেখতে পেলেন না স্রষ্টার প্রতি সৃষ্টির নাড়ীর অন্তঃসলিলা টানের তীব্র কম্পন। দেখতে পেলেন না পিতাকে কোনোদিনই না হারানোর আকুল ব্যথা, দেখতে পেলেন না সন্তানের বুকের মধ্যে পিতার জন্য জমে থাকা ভালোবাসার পাহাড়, দেখতে পেলেন না ভগবানের জন্য ভক্তের কপোল বেয়ে গড়িয়ে পড়া বিয়োগ ব্যথার প্রেমাশ্রু। ঠাকুরকে বা ঠাকুর সম্পর্কে কোনও কথা বলার সময় সর্বসমক্ষে শ্রীশ্রীবড়দা কোনোদিনই বাবা বলেননি; বলতেন, ঠাকুর আর সেই ঠাকুর সম্পর্কে শ্রীশ্রীবড়দার বোধ কতটা গভীর, কতটা তীব্র, কতটা মর্মবিদারক, কতটা প্রশ্নশূন্য সেটা ঠাকুরের তিরোধানের পর তাঁর রচিত ‘তোমার রঙ্গে হৃদয় আমার রাঙা............” গানটার মধ্যে অনুভূত হয়। সেই গানটা এতটাই মর্মস্পর্শী, এতটাই হৃদয় বিদারক যে এই গানটা যে কেউ গাইতে পারে না, যার তার জন্য নয়। অনুভূতির উচ্চ মার্গে যে পৌছোয়নি তার পক্ষে এই গান গাওয়া সম্ভব নয় আর তাই এই জন্যই এখন আর এই গান সম্ভবত সৎসঙ্গে গাওয়া হয় না। আপনি জানেন কিনা জানি না, ধরে নিচ্ছি হয়তো জানেন হনুমানের রামের বিয়োগ ব্যথার কথা। প্রভু রামই যে শ্রীকৃষ্ণ সেটা ভক্তপ্রবর শ্রীশ্রীহনূমান জানতেন। হনূমানজী বলেছিলেন, “শ্রীনাথে জানকীনাথে অভেদঃ পরমাত্মনি। তথাপি মম সর্বস্বঃ রামঃ কমললোচনঃ”। তাই রামের প্রতি তাঁর তীব্র টান শ্রীকৃষ্ণকে বাধ্য করেছিল রাম রূপে দর্শন দানে। হনুমানের সেই মিলনের তীব্র টান, সেই সুরত কে বুঝবে দাদা? আপনি না আমি? তাই সেই টানের আচমকা এক হ্যাঁচকা টানে ছোট্ট শিশুর মুখে আজকের ঠাকুর ভক্ত হনূমান শ্রীশ্রীবড়দা দেখতে পেয়েছিলেন বাবার মুখাবয়ব!!! আর তাই হঠাৎ চকিতে বলে উঠেছিলেন, “বাবা আই”। এখানে শ্রীশ্রীবড়দার মধ্যে তাৎক্ষণিক ভগ্নাংশ ঘটিত সময়ের ব্যবধানে পরিস্থিতি পরিবেশ অনুযায়ী মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছিল। তখন সেই সময় মুখের ভঙ্গী কেমন হবে , শরীর কি ভাষায় কথা বলবে, মুখের ভাষায় বা তখন কি হবে , গলার স্বরের মাত্রা কতটা উচ্চ বা নিম্নগ্রামে বাঁধা থাকবে সবটাই তাৎক্ষণিক ঘটনার ঘনঘটার উপর নির্ভর করে। দাদা এমন কোনও পরিস্থিতির কখনো সম্মুখীন হয়েছেন? আচমকা প্রতিক্রিয়া কখনো ভেবে চিনতে হয়না, যুক্তির ধার ধারে না। সেখানেও যারা যুক্তি খোঁজে সেই যুক্তিই ছন্নছাড়া আরও ভালোভাবে বললে ভালো হয় লক্ষ্মীছাড়া।
আচ্ছা দেবাংশুবাবু আপনি কোনওদিন শোনেননি আপনার পরিবারের মধ্যে বা অন্য কোথাও ‘অমুকে একেবারে অমুকের মত দেখতে হয়েছে’? অমুক এসেছে? মানুষের মনের মধ্যে যখন কোনও কারণে চূড়ান্ত আনন্দ হয় তখন সেই আনন্দের অভিব্যক্তি কিভাবে প্রকাশ পাবে তাৎক্ষণিক সেই মুহূর্তের পরিস্থিতি ও পরিবেশের ঘটনাবলির উপর নির্ভর করে।

আপনি লিখেছেন সৎসঙ্গ পরমদয়ালের সাধের। এখানে আপনারা ঠাকুরকে মাথায় নিয়ে জীবনবৃদ্ধির সাধনা করেন তাই অনুরোধ করেছেন দয়া করে যেন সৎসঙ্গকে অন্যের কাছে উপহাসাস্পদ ক’রে না তুলি। আপনার কাছে বাবাইদাদা সম্পর্কে করা আমার উক্তি উপহাস ব’লে মনে হয়েছে। আপনি বাবাইদাদাকে এত ভালোবাসেন যে আমার এই কথায় আপনার এতটা গাত্রদাহ হ’লো? এতটা উত্তেজিত হ’য়ে পড়লেন যে ‘Funny, ছন্নছাড়া, উপহাস ইত্যাদি নানা বিশেষণ সহযোগে আক্রমণে নেবে পড়লেন? আপনি ইংরেজিতে funny শব্দ ব্যবহার করেছেন। Funny-র অনেক মানে হয়। ‘ছন্নছাড়া , উপহাস’ ইত্যাদির মত Funny-র বদলে বাংলা শব্দ লিখলে আমার বুঝতে সুবিধে হ’তো আপনি কতটা নীচে নেবেছেন উত্তেজিত হ’য়ে। আমি বাবাইদাদা সম্পর্কে কোনও অসম্মানজনক কটূক্তি করেছিলাম কি যে পুরো লেখার মধ্যে কোনও পজিটিভ কিছুই পেলেন না, পেলেন একেবারে তীব্র নেগেটিভ? আর গায়ের ঝাল মিটিয়ে নিলেন মন ভরে। শ্রীশ্রীঠাকু্র, শ্রীশ্রীবড়দা ও শ্রীশ্রীবাবাইদাদার জন্য আপনার প্রেম এত গভীর , এত তীব্র , ঠাকুরকে মাথায় নিয়ে সৎনামের পাল মাথায় তুলে দিয়ে সৎসঙ্গের ছত্রছায়ায় জীবনবৃদ্ধির সাধনা এতটাই গতিময় হ’য়ে উঠেছে যে অনুভূতি ও উপলব্ধির উচ্চ চূড়ায় ব’সে নিম্নের সব কিছু শশ্মান ব’লে মনে হচ্ছে , বোধ হচ্ছে সবেতেই ঘোর কালো অন্ধকার। হ্যাটস অফ আপনাকে জীবনবৃদ্ধির সাধকপুরুষ! প্রিয়জনের প্রিয়র বর্ণনা ও প্রশংসায় যার গাত্রদাহ হয় সেখানে স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহ জাগে প্রিয়কে ভালোবাসার নয়তো প্রিয় সাধনার সম্মন্ধে।
শেষ।
( লেখা ১৭ইমে, ২০১৭)

বিচিত্রা ২

ডিম খাচ্ছো খাও, পেট কাটতে কেন যাও!?
বাঁচতে যদি চাও, বাঁচিয়ে রেখে খাও।।
যার দেখানো পথে শুরু হ'ল পথ চলা
তার পিঠেই মারো ছুরি, ধরো টিপে গলা!?
দিনের শেষে যখন আঁধার নামবে দু'চোখে
দেখবে তুমি পড়ে আছো ঘরের এককোণে
নড়া নেই চড়া নেই, নেই চলা, নেই বলা 
একা পচা গলা যেন একটা মাংস পিন্ডের দলা।
ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠা আর ইষ্টস্বার্থরক্ষা
নয় যার তার কর্ম, একে তাকে ধোঁকা দিয়ে
ক'রো না ইষ্টের নামে নক্কা ছক্কা!!
হিংসা যদি তুমি না ছাড়তে পারো
তবে বন্ধু "হিংসাকে হিংসা করো"।।
প্রেম প্রেমকে ডেকে আনে যেমন
হিংসা হিংসাকে ডাকে তেমন।
তাই গুরুভাই সাবধান!
ইষ্টপ্রেমে দু'হাত তুলে হও মাতাল!
রসাতলে যায় যাক চারপাশ, যাক পাতাল!!
প্রেমে গভীরতা নেই, বোধ জাগে কি?
তাহ'লে কি হ'লো?
তাই মুখে রাধা রাধা বলো।
All react

Tuesday, May 14, 2024

বিচিত্রা ১

"যদি সাধনায় উন্নতি লাভ করতে চাও,
তবে কপটতা ত্যাগ কর"।-----
শ্রীশ্রীঠাকুর।

"প্রিয় বিতরণ করে যেইজন
সেইজন সেবিছে ঈশ্বর"।-----শ্রীশ্রীবাবাইদাদা।

"কপটতার ধার ধারী না,
আত্মপ্রতিষ্ঠা আর আত্মস্বার্থপ্রতিষ্ঠাই
আমার জীবনের লক্ষ্য হউক।"------ইষ্টপ্রাণতার উপাসক।

"সংহতিতে ভাঙন ধরাও,
লন্ডভন্ড ক'রে দাও,
ছেদক ছড়িয়ে দাও,
ইষ্টকে আয়ের উপকরণ ক'রে নাও
আর লুটেপুটে খাও।"------জীবনবৃদ্ধি সাধনার সাধক।

তোমার দেখানো পথেই চলবো
তোমার বুকে লাথি মেরে।
বাঃ! বন্ধু বাঃ!!
বন্ধু! পুরুরা আজও আছে;
কিন্তু আলেকজান্ডাররা আজ আর নেই।
সত্যকে স্বীকার করার সৎ সাহস নাই
অথচ ইষ্টপ্রতিষ্ঠার ডঙ্কা বাজায়!?
মিথ্যার উপর দাঁড়িয়ে সত্যকে প্রতিষ্ঠা!?
বাহবাঃ! বাহবাঃ!! আহা কি মজা!!!
কপট বাপের আকাট পোলা!
চোরের মায়ের বড় গলা!!
ধার ক'রে চলবো
আর রাজার হালে থাকবো!!
চেহারায় দারোগা আর চরিত্রে রোগা!!
অনিষ্টের বর্ম পড়ে ইষ্টের নিশান উড়ায়!
সত্যের মুখে কালি মাখিয়ে মিথ্যার মিশন ছড়ায়!!
মনকে ক'রে নিয়ে সাথী
বিবেকের বুকে মারো ক'ষে লাথি!
দয়াল একপাশে অন্যপাশে ভয়াল!
অমৃতের পুত্র আমি জেনো বিষ কয়াল!!
পৃথিবীর যেখানে শেষ সেখানে 'সৎসঙ্গ' শুরু।
ঠাকুরের বলাগুলি বলার জন্যে,
করার জন্যে নয় গুরু!?
ঠাকুর আমার আয়ের উপকরণ;
তাই ঠাকুর আমার দারু।
দারুর নেশায় মত্ত আমি
ধার ধারি না কারু।
পুরোহিতের মন্ত্রঃ ওঁ প3 নমঃ!
প3=প্রণাম, প্রণামী, প্রসাদ!!
ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠা আর ইষ্টস্বার্থরক্ষা?
ভাই গুরু; লোহে গরম হ্যায়, 
লাগা দো হাতোড়া!!

( লেখা ১৫ই মে, ২০১৭)










































All reactions

Monday, May 13, 2024

প্রবন্ধঃ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে তৈরী মিম ও সৎসঙ্গীরা।

 সম্প্রতি একটা পোষ্ট ভীষণভাবে ভাইরাল হ'য়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সংগীতশিল্পী লীর ( পুরো নাম মনে নেই)-র গানের অনুষ্ঠান মঞ্চে অপ্রকৃতিস্থ নাচের ভংগীতে প্রবেশের দৃশ্যের সঙ্গে বিখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে মিম বানিয়ে প্রচার করা হচ্ছে।


সোশাল মিডিয়ায় মমতার ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট করা নিয়ে পোষ্টদাতার বিরুদ্ধে নোটিস জারি করলো কলকাতা পুলিশ। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়েও সোশাল মিডিয়ায় ঐ একই ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট দেখা গেল। গায়ক লীর ( পুরো নাম মনে পড়ছে না) গানের অনুষ্ঠান মঞ্চে এই অদ্ভুত এক  ভঙ্গিমায় প্রবেশের দৃশ্য উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে দারুণ প্রভাব ফেলেছিল। সেটাকে নিয়ে মিম বানানো হয়েছে। এর আগে আরও অনেককে নিয়ে এই একই নাচের ভঙ্গিতে পোষ্ট মুখ পালটে পালটে দেখা গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এটা আধুনিক সভ্যতার অঙ্গ। ব্যঙ্গ ক'রে কথা বলা, ছবি আঁকা ইত্যাদি সব উর্ব্বর মস্তিষ্কের প্রোডাক্ট। এই সংস্কৃতি ছোটোলোকদের জন্য নয়, ছোটলোকেরা, মূর্খেরা এর মর্মার্থ বুঝবে না। এইসব উচ্চমার্গের জ্ঞানী, পন্ডিত, বুদ্ধিজীবীদের ব্যাপার।
আর, উচ্চমার্গের ব্যাপার উচ্চমার্গে অবস্থানকারী কোনও কোনও ক্ষমতাবান ব্যক্তির গায়ে বুমেরাং হ'য়ে যখন ফিরে আসে তখন তাদের ইজ্জতে লাগে। আর তখনি 'টেক অ্যাকশান' ব'লে রেড অ্যালার্ট জারী হ'য়ে যায়। তার আগে বা পরে কোনও সম্মানীয় বিখ্যাত জনপ্রিয় ব্যাক্তিদের নিয়ে কার্টুন বা ব্যঙ্গ চিত্র, ক্যারিকেচার বা মিম তৈরী ক'রে কুৎসা, নিন্দা, চরিত্র হনন হ'লে প্রশাসন সক্রিয় হওয়া দূরের কথা ঐ ব্যাপারে নাক গলায় না, তখন সেটা ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ব্যাপার, শিল্পের ব্যাপার, উচ্চমার্গের কৃষ্টি-সংস্কৃতির ব্যাপার।

এর আগে একবার প্রয়াত প্রখ্যাত চিত্রপরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ আর প্রখ্যাত রেডিও জকি, অভিনেতা এবং উপস্থাপক মীরকে নিয়ে এরকম একটা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। ঋতুপর্ণ ঘোষ আহত হয়েছিলেন তাঁর দূর্বলতাকে নিয়ে ক্যারিকেচার করার জন্য। কিন্তু ঋতুপর্ণ ঘোষের ব্যক্তিগত আঘাত লাগা অনেকের পছন্দ হয়নি, তারা মীরের পক্ষ অবলম্বন করেছিল।

কারও ব্যক্তিগতভাবে আঘাত লাগতেই পারে, সে এর জন্য মানসিক ব্যালান্স হারাতেই পারে কিন্তু যার জন্যে সে আঘাত পেল বা মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হ'লন ভিতরে ভিতরে সে ব্যাপারে কার্টুন বা ব্যাঙ্গ চিত্র, ক্যারিকেচার বা মিম তৈরিকারীর কোনও প্রতিক্রিয়া নেই, নেই কোনও হেলদোল। সে সৃষ্টির নেশায় মশগুল। তা সে সৃষ্টি বা অনাসৃষ্টি যাই-ই হ'ক।

এই সমস্ত উচ্চমার্গের শিল্পকলা যেমন মিম, ক্যারিকেচার, কার্টুন বা ব্যঙ্গ চিত্র এগুলি বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, সেলিব্রিটিদের মুখের আদল, বিশেষ কোনো লক্ষ্যনীয় অভ্যাস ইত্যাদি বিষয়বস্তু নিয়ে ক্যারিকেচারের মাধ্যমে যে সৃষ্টি হয় তা নিছক নির্মল হাসির উদ্রেক করার জন্য করা হ'য়ে থাকে। এখন এর উন্নত রূপ মিম। এরকম কার্টুন আমরা আগে প্রতিটি সংবাদপত্রে আগে দেখতে পেতাম। চন্ডী লাহিড়ী, কুট্টি ইত্যাদি ব্যক্তিত্বদের কার্টুন আমরা দেখেছি। যেমন, একজন মোটা ও অন্যজন মুটকি গায়কগায়িকার কার্টুন বানিয়ে তা'তে ক্যাপশান ছিল "গান ধরেছে মোটা, তান ধরেছে মুটি, কে গাইছে, কেমন গাইছে? গাইছে মোটামুটি" এরকম বেশ বুদ্ধিদীপ্ত মজার কার্টুন দেখেছি সেই কুট্টি নাকি চন্ডীলাহিড়ীর কার্টুন বা ব্যঙ্গ চিত্র তা আজ আর মনে নেই। আর একটা ছিল, ঘোড়ার গাড়ি চড়ে আসা যাত্রীর সঙ্গে ভাড়া নিয়ে দর কষাকষির সময় গাড়োয়ানের সেই বিস্ময়কর মজার হাসি ও আনন্দের ব্যাংগত্মক উক্তি, " ইশ-স-স-স আস্তে আস্তে কন, ঘোড়ায় শুনবো আর হাসবো। আস্তে কন, আস্তে কন দাদা!" 
যাই হ'ক, কার্টুন বা ব্যঙ্গ চিত্র, ক্যারিকেচার, মিম মানুষের নিছক মজার বিষয়, হাসির বিষয় হ'লেও এর আড়ালে যে নিষ্ঠূর মানসিক সফিস্টিকেটেড যন্ত্রণা লুকিয়ে আছে সেটা আক্রান্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের বোঝা সম্ভব নয়। আবার অনেকে হয়তো এতে যন্ত্রণা পান না, আনন্দ পান। এই পাওয়া না-পাওয়া, সহ্য করা বা না-করতে পারা কিংবা এই মাধ্যমকে নিজের ফেভারে কাজে লাগানো ইত্যাদি মানসিক অবস্থানের ওপর নির্ভর করে। আর নেগেটিভ ভাবে হ'লেও এই শিল্পকলা জনপ্রিয়তার প্রতিফলনে কাজ করে।

যাই হ'ক মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি কে কিভাবে এই কার্টুন কাণ্ড বা মিমকে গ্রহণ করবেন সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সোশাল মিডিয়ায় মমতাকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট দেখে নোটিস জারি কলকাতা পুলিশের এটাও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। কারও ভাবমূর্তি, কারও চেহারা নিয়ে যদি মজা করা স্বাধীনতা হয় তাহ'লে রাষ্ট্রপ্রধানের ভাবমূর্তি নিয়ে, চেহারা নিয়ে, চরিত্র নিয়ে মজা মস্করা করা শিল্পের নামে সেক্ষেত্রে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ এটাও তাদের অধিকারের মধ্যে পড়ে। আবার প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদিজীর পোষ্টাদাতাকে প্রশংসা করা সেটাও তাঁর একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাঁর উচ্চ মানসিকতার ব্যাপার বা সহ্য শক্তির ব্যাপার কিংবা এই ধরণের পোষ্টকে প্রশ্রয় দানের ব্যাপার বা রাজনৈতিক ফয়দা লাভে সঠিক বা বেঠিক সিদ্ধান্ত যে কোনও একটা হ'তে পারে আর তা একান্তই ব্যক্তিগত।

এখন প্রশ্ন, পোস্ট ঘিরে কেন অতি সক্রিয় কলকাতা পুলিশ? কেন নীরব মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? কেন সরব প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই ভিডিওটি দেখে অনেকেই খুবই আনন্দিত এবং একই সঙ্গে দুঃখিত।

যাই হ'ক, কিছুদিন আগে The greatest wonder, greatest phenomenon of the world শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়েও এই নাচের ভিডিওর ওপর মিম করা হয়েছিল। বিশ্বজুড়ে সৎসঙ্গীদের পক্ষ থেকে বা 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান থেকে কোনও প্রতিবাদ আসেনি। যদিও হিন্দু ভগবান বা ঈশ্বরের ওপর বা কোনও ধর্ম গুরুর ওপর কুতসা হ'লে কোনও প্রতিবাদ দেখা যায় না হিন্দুদের পক্ষ থেকে। হয়তো একটু বসন্তের হাওয়ার মত মৃদু নড়ে উঠে আবার স্থির হ'য়ে যায়। এটা হিন্দুদের ক্ষেত্রে সহনশীলতার পরিচয় বলা হ'য়ে থাকে। আবার বিভিন্ন ইউটীউবের ভিডিওয় দেখা যায় এই হিন্দুরাই আবার হিন্দু ধর্মগুরু শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রচন্ড উগ্রতার সঙ্গে বিরোধীতায় সামিল। তবে সেখানেও সৎসঙ্গীরাও প্রচন্ড মাত্রায় সহনশীল। তবে এ সহনশীলতা অনন্ত, অসীম যা আবার অস্তিত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে অনেক সময় বিপদের কারণ হ'য়ে থাকে। কিন্তু মুসলমানদের ক্ষেত্রে রসুলের ওপর কটুক্তি রসুল ভক্তেরা সহ্য করতে পারে না। এটা রসুলের প্রতি, তাদের প্রিয়পরমের প্রতি ভক্তির পরিচয়, ভালোবাসার পরিচয়, প্রেমের পরিচয়। রসুলকে নিয়ে কোনরকম কটু কথা, অসম্মানজনক, অশ্রদ্ধাজনক কোনওরকম উক্তি তারা শুনতে রাজী নয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কখনও কখনও এই যে তীব্র ভক্তি, রসুলকে নিয়ে কখনও কখনও এই তীব্র ভক্তি, তীব্র অসহিষ্ণুতা ভয়ের ও ক্ষতির কারণ হ'য়ে দাঁড়ায়। এই অতিরিক্ত তীব্র সহিষ্ণুতা ও তীব্র অসহিষ্ণুতা দু'টোই ঈশ্বর বা ভগবান বা পুরুষোত্তমের প্রতি অপমান ও দুঃখের বিষয়।
এই প্রসঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বললেন, "স্পষ্টবাদী হও, কিন্তু মিষ্টভাষী হও। সত্য বল, কিন্তু সংহার এনো না। বীর হও, সাহসী হও কিন্তু তাই ব'লে হিংস্র হ'য়ে বাঘ, ভাল্লুক সেজে ব'সো না। তেজ মানে ক্রোধ নয়কো, বরং বিনয় সমন্বিত দৃঢ়তা। অন্যায় ক'রো না, কিন্তু অন্যায়কে প্রশ্রয় দিও না। নিজের প্রতি অন্যায়কে সহ্য কর, কিন্তু অন্যের প্রতি অন্যায়ের প্রতিবাদ ক'রো" ইত্যাদি নানাভাবে তিনি মূল কথা ব'লে গেছেন। 

কিন্তু এই যে তিনি প্রেমের কথা, ভালোবাসার কথা বারবার ব'লে গেছেন সেই ভালোবাসার কথা, প্রেমের কথার মধ্যে তিনি প্রতিবাদের কথাও ব'লে গেছেন। ব'লে গেছেন বিভিন্ন রকম ভাবে, ছড়ার মাধ্যমে, কথোপকথনের মাধ্যমে ব'লে গেছেন। সেই মূল কথার মধ্যে তিনি এও বলে গেছেন প্রেম ভালোবাসা যদি থাকে একটা প্রতিবাদও তো থাকবে। তিনি বলছেন যে বিদ্রোহ ভালো না, বিপ্লব ভালো, অমৃতবর্ষী বিপ্লব, বাঁচা ও বাড়ার বিপ্লব, ভালোবাসার বিপ্লব, প্রেমের বিপ্লব, তো সেই প্রতিবাদ মিষ্টি ভাবে হ'তে পারে, দৃঢ়তার সঙ্গে, বিনয় সমন্বিত দৃঢ়তার সঙ্গে যেটাকে  মানে তেজকে অনেকে ক্রোধ মনে করে, তা নয়, তেজ আর ক্রোধ এক নয়, বিনয় সমন্বিত দৃঢ়তার কথা ঠাকুর যে বললেন, সেই বিনয় সমন্বিত দৃঢ়তার সঙ্গে, যারা ঠাকুরকে নিয়ে মিম তৈরী করেছে, ওরকম একটা নাচের ভঙ্গিতে যে মঞ্চে প্রবেশ করছে তাঁর শরীরের মধ্যে বিশ্বব্রহ্মান্ডের যিনি মালিক, সৃষ্টিকর্তা, জীবন্ত ঈশ্বর যিনি তাঁকে যিনি নাচ করছেন তাঁর শরীরের সংগে সেঁটে দিয়ে ম্যাচ খাইয়ে, ঠাকুরের মুখাব্যব তার মুখের মধ্যে বসিয়ে দিয়ে মিম তৈরী করা হচ্ছে। সেটার বিরুদ্ধে মিষ্টি ভাবে হলেও বলা যেতে পারে, আমার ভালো লাগছে না, আমার পছন্দ হয়নি এটা খুব দৃঢ়তার সঙ্গে, গাম্ভীর্যের সঙ্গে এই মিষ্টি প্রতিবাদটুকু করা যেতে পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে এই যে মূল কথা বলে গেছেন, এই মূল কথার মধ্যে যে প্রেম, ভালোবাসা তার সঙ্গে বারবার বলেছেন এই যে হিংসা করো না, হিংসাকে হিংসা করো, সেই হিংসা করার মধ্যে প্রেম থাকে, ভালোবাসা থাকে, দৃঢ় মজবুত চরিত্র থাকে, একটা প্রতিবাদী কন্ঠ থাকে, একটা ভয়ংকর ভালোবাসার একটা তীব্র বহির্প্রকাশ থাকে, যে বহির্প্রকাশের মধ্যে তারও বাঁচাবাড়ার কথা থাকে, তুমিও বাঁচো, আমিও বাঁচি। আমরাও বাঁচি, তুমিও বাঁচো কিন্তু তোমার স্বভাব, তোমার কথা বলা, তোমার চরিত্র, তোমার অপমান, অশ্রদ্ধা করার অভিসন্ধি তা বন্ধ করো। এ কথাও বলা যেতে পারে মিষ্টি বলিষ্ঠ ভাবে কোনরকম শারীরিক বা মানসিক আঘাত না করেও। কিন্তু সেক্ষেত্রে এই কথার প্রতিফলনও দেখা যায় না সৎসঙ্গী বা অন্য কারও মধ্যে।
অতএব হয় ক্যারিকেচার, কার্টুন বা ব্যাঙ্গ চিত্র বা মিম ইত্যাদির মাধ্যমে এই আনন্দ, মজা বা দুঃখ, যন্ত্রণা উভয়ই মেনে নাও নতুবা উন্নতমানের শিল্পসৃষ্টির মাধ্যমে নিছক আনন্দ, মজা পাওয়ার নামে কিংবা নির্মল হাসির উদ্রেক করার জন্য বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, সেলিব্রিটিদের মুখের আদল, বিশেষ কোনো লক্ষ্যনীয় অভ্যাস ইত্যাদি বিষয়বস্তু নিয়ে কার্টূন বা ব্যাঙ্গ চিত্র, ক্যারিকেচার বা মিম তৈরীর মাধ্যমে যে যন্ত্রণাদায়ক সৃষ্টি হয় তা বন্ধ হ'ক। নতুবা সব সহ্য হ'ক। সব সহ্য হ'ক। মানে, ভাঁড় মে যায় অন্যের দুঃখ, যন্ত্রণা, আঘাত। নিপাত যাক আনন্দ ও মজা লাভের বিরোধীরা।

তাই সহ্য কর, সহ্য কর, সহ্য কর!!! ঐ যে পুরুষোত্তম ঠাকুর রামকৃষ্ণ ব'লে গেছেন বাংলা বর্ণমালায় তিনটে বর্ণ আছে। ঐ তিনটে শ, ষ ও স-এর মূল প্রকৃত অর্থ সহ্য করো, সহ্য করো, সহ্য করো। আসুন আমরাও সহ্য করি।

Sunday, May 12, 2024

প্রবি সমাচার ১৩

"হুগলির দাউদ ইব্রাহিম' হুব্বা শ্যামলের জীবন এবার পর্দায় নিয়ে আসছেন ব্রাত্য বসু! গ্যাংস্টার হুব্বা শ্যামলের ভূমিকায় অভিনয় করতে চলেছেন বাংলাদেশের অভিনেতা মোশারফ করিম।"
এইটা সংবাদপত্রের হেডিং, আমার নয়।
খবরটা কি সত্যি!? হুব্বা শ্যামলরাও তাহ'লে চলচিত্রের বিষয় হ'তে পারে!? হয়তো পারে। ব্রাত্য বসুর মতন স্বনামধন্য নাট্যকার, পরিচালক, অভিনেতা যখন হুব্বা শ্যামলকে নিয়ে ছবি করার কথা ভেবেছেন তাহ'লে তখন নিশ্চয়ই হুব্বা শ্যামলের মধ্যে কিছু আছে তা নাহ'লে হুব্বাকে নিয়ে কেউ ভাবতে যাবে কেন তাও আবার ব্রাত্য বসুর মত সেন্সেটিভ শিল্পী মানুষ, মন্ত্রী মানুষ। ব্রাত্য বসু তো আর হুব্বা শ্যামলের মতো হুব্বা নয়। তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা (?) অভিনেতা ব'লে কথা ব্রাত্য বসু! ব্রাত্য বসু তো আর ব্রাত্য নন সমাজের কাছে।
যাই হ'ক ব্রাত্য বসুর সুবিধার জন্য জানিয়ে রাখি এই হুগলিতে অনেক ডনের আবির্ভাব ঘটেছে হুব্বা শ্যামলের আগে এবং তারা তাদের সময়ের সেরা গ্যাংস্টার। সবার নাম এই মুহূর্তে মনে নেই। অনেকদিন এইসব খবরের কোনও চর্চা নেই টিভি রেডিওতে বা মানুষের মুখে মুখে। হঠাৎ ব্রাত্য বসুর দৌলতে এদের মতো মানুষদের চর্চা আবার সামনের সারিতে চলে এলো! তাই যে কটা নাম এইমুহুর্তে মনে পড়ছে ব্রাত্য বসুর জন্য জানিয়ে রাখি। যদি শিল্প সৃষ্টির কোনও কাজে লাগে। হুব্বা শ্যামলের জীবনের সঙ্গে জড়িত বিশেষ কোনও সিচুয়েশনের জন্য কাজে লাগে।
প্রথমে বলি, কোন্নগড়ে হুব্বা শ্যামলের আগে যে ত্রাস ছিল সে টারজান নামে ছিল খ্যাত! কোন্নগড়ের আর এক প্রভাব প্রতিপত্তিশালী ক্ষমতাধর মানুষের নাম রমেশ! কোন্নগড়ের আগের স্টেশন হিন্দমোটরে ছিল নব্বই দশকের ত্রাস নির্মল! এই নির্মলের প্রতিপক্ষ আর এক ভয়াবহ ভয় ছিল নারান সাহা। হিন্দমোটরের আগের ষ্টেশন উত্তরপাড়া। সেই উত্তরপাড়ার গড ফাদার ছিল নিমাই নাগ! এমনিভাবে উঠে আসবে একের পর নাম হুগলির ইতিহাসের পাতা থেকে। ব্রাত্য বসুর পক্ষে রসদের অভাব হবে না। শুধু অনুরোধ রইলো তাদের নিয়েও আগামীতে ছবি তৈরি করুন পরিচালক ব্রাত্য বসু। এদের জীবনেও অনেক নাটকীয় ওঠাপড়া আছে। আছে অনেক সুখ দুঃখের গল্প এবং তাদের কারও কারও জীবনেও আছে মূল্যবোধের অনালোকিত ছোঁয়া!!!!
আর এছাড়া টেলিভিশন মিডিয়ার কাছে অনুরোধ মনে হয় এবিপি আনন্দই হবে, আপনাদের সান্ধ্যকালীন যে আলোচনার আসর বসে সেই আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারী বিশিষ্টজনেদের মধ্যে একদিনের অনুষ্ঠানে ব্রাত্য বসুও ছিলেন। সেদিনের সিপিএমের ৩৪বছরের রাজত্বের অবসানের জন্য সান্ধ্য আলোচনা সভায় নাট্যকার ও অভিনেতা হিসেবে পরিচিত ব্রাত্য বসুর (সেদিন কোনও দলের নেতার স্বীকৃতি ছিল না তার) হৃদয় নিংড়ানো অপূর্ব দরদ উত্তোলিত অত্যন্ত স্পর্শকাতর বক্তব্য যদি সেই অনুষ্ঠান আয়োজক আবার তুলে ধরেন অত্যন্ত কৃতজ্ঞ থাকবো। আমি সেই বক্তব্য লিখে রেখেছিলাম কিন্তু আজ সেই লেখা কাগজ খুঁজে পাচ্ছি না প্রয়োজনের সময়! সেই ভাষণ শুনে অত্যন্ত আবেগপ্রবন হ'য়ে পড়েছিলাম। খুব ইচ্ছা হয়েছিল সেদিন ব্রাত্য বসুকে জড়িয়ে ধরার, তার স্পর্শ পাবার। কিন্তু তা আর হ'য়ে ওঠেনি, হ'য়ে ওঠেনি ইচ্ছাপূরণ। যদি কেউ পারেন প্লিজ আমায় দেখাবেন একবার অন্তত একবার! আমি মিলিয়ে দেখে নিতে চাই সেদিনের সেই আলোচনার টেবিলের খোলামেলা সহজ সরল সৎ আদর্শ প্রাণ ব্রাত্য বসুর সঙ্গে আজকের তৃণমূল প্রার্থী ও নেতা-অভিনেতা পরিচালক ব্রাত্য বসুর সঙ্গে!!!!!
কিন্তু আজ মনে হয় ব্রাত্য বসুর সঙ্গে আর এই দেখা হওয়া যেমন সম্ভব নয় ঠিক তেমনি সম্ভব নয় হুগলী জেলার আরও নামী দামী গ্যাংস্টারদের নাম মনে রাখা। একটু কষ্ট করলেই নাম মনে এসে যাবে যদিও কিন্তু এই যাদের নাম আমি এখানে দিলাম তাদের প্রতি একটু ব্রাত্য বাবু সুবিচার করবেন এই অনুরোধ রইলো।
( লেখা ১৩ই মে, ২০২১ )

কবিতাঃ তুমি প্রভু, তুমি মহান।

আপনারে নেতা বলে নেতা সে নয়
লোকে যারে নেতা বলে নেতা সে হয়।
নেতা বলে আমি নাতা দ্যাখ আমারে চেয়ে
লোকে বলে চিমসা পেটে জমেছে চর্বি
আমাপা খেয়ে খেয়ে।
নেতা বলে আমারে দেখে লাগে না তোর ভয়!?
যাক ভোট পাকাবো ঘোট দেখবি ক্ষয় কারে কয়।
লোকে বলে দ্যাবতা তুমি গোর লাগি পায়
ভুল যদি কিছু ব'লে থাকি ক্ষ্যামা তাই চায়।
আজ আমি রাজা দিব ভোট তোমারে
কাল তুমি হবে রাজা তখন কে চেনে কারে?
জিতলেও তুমি নেতা হারলেও তুমি
নেতায় নেতায় নেতাতুতো ভাই
তলেতে তলেতে যোগ তব পদ চুমি।
আঁটি হ'য়ে রবো পড়ে আমে দুধে যাবে মিলে
নেতায় নেতায় নেশাতে ডুবে আমারে খাবে গিলে।
তাই বলি নেতা তোমায় শতকোটি পেন্নাম
আভুমি সালাম তোমায় তুমি প্রভু তুমি মহান।
( লেখা ১৩ই মে। ২০২২ )

Thursday, May 9, 2024

প্রবন্ধঃ শ্রীশ্রীঠাকুর ঈশ্বর, জীবন্ত ঈশ্বর।

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র যে জীবন্ত ঈশ্বর তা প্রমাণ করতে শাস্ত্রের দ্বারস্থ হ'তে হবে কেন? তাঁর প্রশান্ত মহাসাগরের মত বিশাল অভূতপূর্ব সাহিত্য ভান্ডার কি যথেষ্ট নয় তিনি কে? শাস্ত্র অধ্যয়ন করার চেয়ে তাঁর বিশাল সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করলে কি প্রকৃত শিষ্য হওয়া যায় না? প্রায় সময়ই প্রায় সবাইকে দেখি সংস্কৃত শ্লোক আউড়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের ঠাকুরত্ব বা ঈশ্বরত্ব তুলে ধরে তাঁদের বক্তৃতায়, লেখায়। তার মানে দাঁড়ালো ঐ শ্লোক যদি স্বীকৃতি দেয় তিনি ঈশ্বর তবে তিনি ঈশ্বর নতুবা তাঁর ২৪ হাজার বাণী ও হাজারো বিষয়ের ওপর কথোপকথন সমৃদ্ধ যে বিশাল অভূতপূর্ব ব্যাখা পূর্বক সাহিত্য সেই সাহিত্যের, সেই আলোচনার, সেই ব্যাখ্যার কোনও মূল্য নেই। অর্থাৎ জীবন্ত ঈশ্বরের মানব জীবনের জন্য দীর্ঘ ৮০বছরের অভূতপূর্ব রহস্যময় জীবনের অবদানের কোনও মূল্য নেই। ইদানীং প্রায় সবাইকে দেখি তাঁদের বক্তৃতায়, লেখায় বেদ, পুরাণ, মহাভারত ইত্যাদি থেকে শ্লোক উদ্ধৃত ক'রে ঠাকুর বিরোধী সমালোচকদের কাছে, নিন্দুকদের কাছে প্রমাণ করার চেষ্টা করে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ঈশ্বর, ভগবান। তিনি ঈশ্বর কি ঈশ্বর নন তার প্রমাণের কি দরকার? যারা বিকৃত প্রশ্ন ক'রে ক'রে ছড়িয়ে দিচ্ছে ফেসবুক জুড়ে তাদের বালখিল্য অসাড় প্রশ্ন, তার উত্তরে শাস্ত্রের শ্লোক, মহাভারত গ্রন্থের কোন খন্ডে কি বলা আছে, কোন মনিষী কি বলেছেন সেসব তুলে ধ'রে প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা চালাবার কোনও দরকার নেই। প্রশ্নের স্ট্যান্ডার্ড দেখে বোঝা যায় তারা আই কিউ লেবেলের কোন স্তরে বিচরণ করে। তাই বালখিল্য প্রশ্নকারীদের প্রশ্নের ও বটতলার ইউটিউবারের উত্তর দেওয়ার অর্থ নিজেকে ওদের লেবেলে নাবিয়ে আনা ও শ্রীশ্রীঠাকুরকে অপমান করা। আর যদি প্রশ্নের পিছনে যুক্তি থাকে তাহ'লে নিশ্চয়ই উত্তর দিন। আর, তিনি ঈশ্বর কিনা তা প্রমাণ দিতে হবে তা ঠাকু্র তো নিজেই চাননি। তার চেয়ে তিনি যা যা ব'লে গেছেন সেই বলে যাওয়া কথাগুলির ওপর অধ্যায়ন ও অধ্যাপনা হ'ক, চর্চা হ'ক, গবেষণা হ'ক, তলিয়ে দেখা হ'ক করার বা আচরণের ভিতর দিয়ে, এইটাই তো ছিল তাঁর চাওয়া, তাই নয় কি? তিনি যা বলে গেলেন সেই বলে যাওয়া কথাগুলিকে যখন আমি জানলাম তখন সেই জানাগুলিকে নিয়ে
Exmine ও experiment-এর মধ্যে দিয়ে যাওয়া হ'ক, তারপর যে ফল বেরিয়ে আসবে সেটাই হবে আমার অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি, আর তাই-ই জ্ঞান। আর সেই জ্ঞানের ওপর দাঁড়িয়েই তো দুনিয়াকে রুল করবো, তাই নয় কি? জ্ঞানই তো শক্তি। জ্ঞানই তো সেই ডানা যার সাহায্যে আমি স্বর্গ ব'লে যদি কিছু থেকে থাকে সেখানে পৌঁছে যাবো এবং স্বর্গ ব'লে ও রামরাজ্য বলে যদি কিছু থাকে বা ছিল সেই স্বর্গে যাবার জন্য, সেই রামরাজ্য পুনরায় গড়ে তোলার জন্য তার প্রাণপাত করবো। তাই নয়কি? ঈশ্বরকে একমাত্র সর্ব্বজ্ঞ বলে। আর বিশ্বের কোনও পন্ডিত বা মহাপন্ডিতকে বলে না। তাঁরা যে কোনও একটা দিককে পরিপূরণ করতে পারে কিন্তু সবটা পারে না। জীবন্ত ঈশ্বরকে অন্তর্যামী বলা হয়, কিন্তু অন্তর্যামী আখ্যা তাঁর মহিমাকে, তাঁর বিশালত্বকে খাটো করে, ছোটো ক'রে দেখা হয়। অন্তর্যামী একটু চেষ্টা করলেই যে কেউ হ'তে পারে এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। মায়েরা তাঁদের সন্তানের ক্ষেত্রে স্বভাবগত ভাবেই অন্তর্যামী। কারণ সে ১০মাস তার শরীরের মধ্যেই তাকে লালনপালন করেছে তারপর জন্মের পর নিজের হাতে তাকে প্রতিটি মুহূর্ত পর্যবেক্ষণ ক'রে ক'রে বড় ক'রে তুলেছে দীর্ঘ কষ্টকর পথ পাড়ি দিয়ে। তাই সেই মা স্বভাবগতভাবেই স্বভাবসিদ্ধ অন্তর্যামী। এরকম যে কেউ একটু চেষ্টা করলেই যে কোনও বিষয়ে অব্জার্ভেশনের মধ্যে দিয়ে অন্তর্যামী হ'তে পারে। কিন্তু ইচ্ছে করলেও, শত চেষ্টা করলেও, হাজারবার পন্ডিত মহাপন্ডিত হ'য়ে জন্মালেও তাঁরা সর্ব্বজ্ঞ হ'তে পারবে না। ঈশ্বর অর্থাৎ জীবন্ত ঈশ্বর এক ও একমাত্র সর্ব্বজ্ঞ, এ ছাড়া আর কেউ সর্ব্বজ্ঞ নয়। এইযে সর্ব্বজ্ঞত্ব বীজের অধিকারী যিনি তাঁকে Fullfiller the best অর্থাৎ সর্ব্বোত্তম পরিপূরণকারী আর, অন্তর্যামীদের, মহাত্মাদের Fullfiller the great অর্থাৎ মহাপরিপূরণকারী বলা হয়। তাই যিনি ঈশ্বর, সর্ব্বজ্ঞ, যিনি পরমাত্মা তাঁর বিচার করবেন, তাঁর স্বীকৃতি দেবেন যিনি অন্তর্যামী, মহাত্মা? যিনি Fullfiller the great তিনি বিচার করবেন Fullfiller the best-এর!? সন্তান বিচার করবেন পিতার? যারা জীবাত্মা, যারা অশ্লীল, অশ্রাব্য ভাষায় কটু কথা, নোংরা কথা বলছে তারা বিচার করবে পুরুষোত্তম পরমপিতার? পিতার পিতৃত্ব যেমন পিতার পরিচয় ঠিক তেমনি ঠাকুরের ঠাকুরত্ব বা ঈশ্বরের ঈশ্বরত্ব ঠাকুরের বা ঈশ্বরের পরিচয়। যেমন শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, শ্রীশ্রীরামচন্দ্রের সমগ্র জীবনটাই তাঁর বাণী। শ্রীশ্রীরামচন্দ্র থেকে শ্রীশ্রীঠাকুর এরা সবাই হলেন জীবন্ত চলমান শাস্ত্র। তাঁরা জীবন্ত ঈশ্বর ও জীবন্ত বেদ। এই বিষয়টা বুঝতে হ'লে Examine ও Experiment-এর মধ্যে দিয়ে যেতে হবে মানুষকে।
Exmine ও experiment-এর মধ্যে তফাৎ কি?"examine বলতে বোঝায় কোনো কিছু যেমন আছে বা সেটা নিজের ইচ্ছামত পরিবর্তিত হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করা। experiment বলতে বোঝায় কিছু পরিবর্তন করা, (সাধারণত একটি নির্দিষ্ট উপায়ে) এবং সেই পরিবর্তনগুলির প্রভাব পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করা।" শ্রীশ্রীঠাকুরকে চিনতে হ'লে, বুঝতে হ'লে, জানতে হ'লে এরকমভাবে সৎসঙ্গীদের এগিয়ে যেতে হবে। তবে নলেজ অর্থাৎ জ্ঞান করায়ত্ত হবে। ঠাকুর কে তা চিনতে, বুঝতে ও জানতে পারবে।



শ্রীশ্রীঠাকুর Knowledgeকে ভেঙে Know আর Ledge ক'রে বললেন Know মানে জানা আর Ledge মানে To draw near অর্থাৎ নিকটে আনা। অর্থাৎ যেটা জানলাম অর্থাৎ একটা Clue পেলাম সেটাকে examine ক'রে ক'রে experiment-এর মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে অর্থাৎ বাস্তবভাবে গবেষণাগারে পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে, গবেষণা করতে করতে যে অজানাটা আমার নিকটে এলো অর্থাৎ আমার কাছে জানাটা সম্পূর্ণরূপে সুক্ষ ভাবে ( Ins and outs) ধরা দিল, উন্মুক্ত হ'লো ফলে একটা অভিজ্ঞতা হ'লো, হ'লো বিরাট উপলব্ধি আর সেই যে বিরাট অভিজ্ঞতা, বিরাট উপলব্ধি হ'লো সেইটাই হ'লো সেই বিষয়ে (সম্পূর্ণ ) জ্ঞান অর্থাৎ
( Complete) Knowledge. Knowledge itself complete. তাই আলাদা ক'রে কমপ্লিট শব্দ ব্যবহার করতে হয় না, তবুও আমরা করি অভ্যাসবশত।

ঈশ্বর কলঙ্কিত হন তখনি যখন শাস্ত্র দিয়ে তাঁকে ও তাঁর কথাকে প্রতিষ্ঠা করতে হয়। ঈশ্বর তো প্রতিষ্ঠত হয়েই আছেন। কে তাঁকে প্রতিষ্ঠা করবে? জীবন্ত ঈশ্বর তিনি নিজেই যে জীবন্ত বেদ, তিনিই যে জীবন্ত শাস্ত্র এ কথা ভুলে যায় মানুষ। আটবারের মধ্যে ৬ বারই এসেছেন তিনি ভারতে তথাপি তাঁর মুখের কথা ও তাঁর নিখুঁত জীবন চলনার পরিবর্তে তাঁর সৃষ্ট সন্তান দ্বারা রচিত শাস্ত্রজ্ঞান দিয়ে তাঁকে পরিমাপ করতে হবে, তাঁকে স্বীকৃতি দিতে হবে এর থেকে অপমান ও লজ্জার আর কিছু নেই সৃষ্টিকর্তার।

জ্ঞানী, পন্ডিত, মহাপন্ডিত, যোগী, ধ্যানী, মহাত্মা অনেকেই শ্রীশ্রীঠাকুরকে চিনেছিলেন, বুঝেছিলেন কিন্তু পরমাত্মা ব'লে গ্রহণ করেননি তাঁকে। এর জন্য অজস্র উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। একটা দু'টো উদাহরণ দিলেই পরিষ্কার হ'য়ে যাবে ব্যাপারটা। যেমন বিদ্যাসগরের কাছে স্বয়ং জীবন্ত ঈশ্বর গিয়েছিলেন তাঁকে দেখতে, কথা বলতে। কিন্তু বিদ্যাসাগর অতি সাধারোন রামকৃষ্ণের গভীর জ্ঞান দেখে মুগ্ধ হ'য়ে গিয়েছিলেন কিন্তু তাঁকে জীবনে গ্রহণ করেননি। আবার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ এক জীবনে দু'দুবার জীবন্ত ঈশ্বরের উপস্থিতির সন্ধান পেয়েছিলেন কিন্তু তাঁকে গ্রহণ করতে পারেননি। একজন শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণ, অনুজন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। আর, যারা শ্রীশ্রীঠাকু্রের সংস্পর্শে এসেছেন, সঙ্গ করেছেন, তাঁর সম্পর্কে বড় বড় জ্ঞান গম্ভীর ভাষণ দিয়েছেন, উপলব্ধি প্রকাশ করেছেন যা ঠাকুর থাকাকালীন হয়েছে এবং এখনও চলছে কিন্তু জীবনে তাঁকে গ্রহণে অসমর্থ হয়েছে এমন বহু বিখ্যাত ব্যক্তি আছেন। তাদের পোঁছে কে? তাঁদের জ্ঞান যে অসাড় দিনের শেষে সেটা প্রমাণ হয়।


আমি তাঁর এমনই শিষ্য তাঁকে বোঝার জন্য আমাকে শাস্ত্রের দ্বারস্থ হ'তে হবে। কেন? মহাভারতের কোন শ্লোকে ভীষ্ম কি বলেছে সেই রেফারেন্স দিয়ে আমাকে খুঁজতে হবে তিনি পুরুষোত্তম কিনা, তিনি জীবন্ত ঈশ্বর কিনা? কেন? শ্রীশ্রীরামচন্দ্র থেকে কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণকে কোন বেদ, কোন শাস্ত্র প্রতিষ্ঠা দিয়েছে? সাধারণ মানুষের কথা ছেড়ে দিলাম তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা অহংকারী বেদজ্ঞ, শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিতরা তাঁকে অপদস্ত করেছেন। তিনি যতবার এসেছেন ততবার তিনি লাঞ্ছিত, অপমানিত হয়েছেন, তিনি যতবার এসেছেন তাঁকে হত্যা করার জন্য ততবার চেষ্টা করা হয়েছে। কোন শাস্ত্র গ্রন্থ, কোন শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত তাঁকে রক্ষা করার গার্ড ওয়াল হ'য়ে দাঁড়িয়েছিলেন?

আর, একটা কথা আছে ব্যতিক্রম। আ্রর ব্যতিক্রম ব্যতিক্রম। বড় বড় শাস্ত্রজ্ঞ, বেদজ্ঞ ও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত সমাজের মাথারা, তথাকথিত শিক্ষিতরা তাঁকে সমস্ত যুগেই তাঁদের পুঁথিগত বিদ্যার ওপর ভর ক'রে বই পড়ে মোটা মোটা বই হ'য়ে তাঁকে পরীক্ষা করতে চেয়েছে। তাঁদের জ্ঞানের কাছে পরাস্ত হ'য়েও শুধুমাত্র সূক্ষ্ম ও অনমনীয় ইগো বোধের কারণে তারা তাঁকে গ্রহণ করতে পারেননি। তিনি যতবার এসেছেন ততবার কোনও তথাকথিত জ্ঞানী, পন্ডিত, বিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ কোনও প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি তাঁর পরম ভক্ত হননি। তাঁর পরম ভক্ত হয়েছে সাধারণ, অত্যন্ত সাধারণ মানুষ। প্রহ্লাদ, হনূমান, অর্জুন, আনন্দ, মেরী ম্যাগডালিন, সেন্ট পল, ওমর, আবু বকর, নিত্যানন্দ, বিবেকানন্দ এবং সর্বশেষ শ্রীশ্রীবড়দা কেউই সমাজের উচ্চপর্যায়ের প্রতিষ্ঠিত কোনও বিজ্ঞাপিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন না প্রথম দিকে। তাঁরা সবাই ছিলেন অত্যন্ত সাধারণ পর্যায়ের মানুষ। কেউই তাঁরা সমাজের বিখ্যাত ব্যাক্তি ছিলেন না। শুধুমাত্র প্রভুর প্রতি অস্খলিত, অচ্যুত, অটুট ও প্রশ্নাতীত ভক্তি, ভালোবাসা, প্রেম, নিষ্ঠা দিয়ে, নিজের জীবন সম্পূর্ণ রূপে প্রভুর পায়ে উৎসর্গ ক'রে দিয়ে প্রভুর স্বপ্ন, প্রভুর ইচ্ছাকে একমাত্র তাঁদের স্বপ্ন, তাঁদের ইচ্ছা ক'রে নিয়ে সারাজীবন নিজের জীবনের সমস্ত ব্যক্তিগত স্বপ্ন, ব্যক্তিগত ইচ্ছাকে পাশে সরিয়ে রেখে জীবন কাটিয়ে দিয়েছিল। তাই আজ আজ যুগে যুগে পৃথিবীর বুকে কোটি কোটি মানুষের বুকে দাগ তাঁরা এঁকে দিয়েছেন। তাঁরাও হ'য়ে গেছেন প্রভুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কাছে ভগবান। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে সম্মান, শ্রদ্ধা, ভক্তি, ভালোবাসা, প্রেমের দাগ এঁকে দিয়েগেছেন। তাই মানুষ আজও কলি যুগের শেষে এসেও প্রহ্লাদ, হনূমান, অর্জুন, আনন্দ, উপগুপ্ত, মেরী ম্যাগডালিন, ওমর, আবু বকর, নিত্যানন্দ, বিবেকানন্দ ও শ্রীশ্রীবড়দা ভোলেনি। তাঁরা প্রভুর পাশে তাঁদের স্থান ক'রে নিয়েছেন।


আর, আমি কোন গ্রন্থ পড়বো? কোন গ্রন্থকে আগে প্রাধান্য দেব? ধর্ম জগতে যদি আমি বিচরণ করি, ঈশ্বর আরাধনার সঙ্গে যদি নিজেকে যুক্ত রাখি তাহ'লে আমি কোন গ্রন্থ আগে পড়বো? ঈশ্বরের গ্রন্থ আগে পড়বো নাকি তাঁর ভক্তদের গ্রন্থ আগে পড়বো? যখন ঈশ্বর মানুষ রূপে এসে নিজের মুখে বাঁচা-বাড়ার কথা ব'লে গেলেন সেগুলি পড়বো নাকি পুরাণ, বেদ, উপনিষদ পড়বো? শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, শ্রীশ্রীরামচন্দ্রের সমগ্র জীবনটাই উৎকৃষ্ট বাণী। তাঁর সমগ্র জীবনকে অনুসরণ ক'রে চললে কোন শাস্ত্র গ্রন্থই পড়ার দরকার পড়ে না। তারপর শ্রীশ্রীকৃষ্ণের গীতা, শ্রীশ্রীবুদ্ধের ত্রিপিটক, শ্রীশ্রীযীশুর বাইবেল, শ্রীশ্রীমহম্মদের কোরান,শ্রীশ্রীমহাপ্রভুর চৈতন্য চরিতামৃত, শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের কথামৃত এবং সর্বশেষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের শুধুমাত্র সত্যানুসরণ গ্রন্থ (২৪হাজার বাণী ও কথোপকথন সমৃদ্ধ সমগ্র গ্রন্থের কথা বাদ দিলাম,) পাঠ করলেই পরম সত্যকে জানা যায় এবং অনুসরণ ক'রে চললে জীবন শৈশব থেকে বার্ধক্য পর্যন্ত পরম সার্থকতায় ভরে যায়। সাধারণ মানুষের জন্য আর কিছু লাগে না। আর যারা উচ্চপর্যায়ের শিক্ষাবিদ, গবেষক তাঁদের কথা বাদ দিলাম তাঁরা তাঁদের মতো পড়ুক, জানুক, বুঝুক তামাম শাস্ত্র গ্রন্থ কিন্তু জীবন্ত ঈশ্বরকে পরীক্ষা করার নামে সাধারণ আম ভক্তকূলকে যেন বিভ্রান্ত না করেন। তাই বুঝি শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র গান গেয়ে বললেন,

আমি বেদ বিধি ছাড়ি বেদনা হারি
হরিনাম সদা গাহিরে
হয় হোক মম লক্ষ জনম
তাহে কোনো ক্ষতি নাই রে।।
ঘনাম্বু নিন্দিত শান্ত সুনীল

মূর্তি যেন ভুলি নাকো তিল
নিত্য নৃত্য করে যেন মোর
চিত্ত যমুনা পুলিনে রে।।
সন্ধা আমার বন্ধা হোক

তাহে নাহি কোনো শোক
তর্পণ জল অর্পণ বিনা
রোধুক পিতৃ লোক
ঘোষুক জগতে নিন্দা খ্যাতি

তোষুক রোধুক স্বজন জ্ঞাতি
আমি কিছুতেই বিমল ভাতি
ভুলিতে নারিব ভাইরে।।

ক্ষুব্দ পরান চাহে গোবিন্দ নামামৃতে সদা ভাসিতে
মুগ্ধ মানসে আত্ম ভুলিয়ে হরি হরি বলে নাচিতে হরি বোল_ _ _
চাহে নাকো আর শৌর্য বীর্য
চাহে না পরান বিশাল রাজ্য
ধর্ম অর্থ কাম সকলি ত্যাজ্য
মোক্ষের মুখে ছাইরে।।


শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র তিনি কি বলতে চাইলেন এখান থেকে পরিস্কার হ'য়ে যায়।



এখন প্রশ্ন হ'তে পারে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র তাহ'লে কে?



তিনি কি মুনি? ঋষি? সাধক? ধর্মগুরু? দীক্ষাগুরু? পন্ডিত? মহাত্মা? মহাপুরুষ? কবি? সাহিত্যিক? শিল্পী? গীতিকার? গায়ক? নাট্যকার? অভিনেতা? শিক্ষাবিদ? চিন্তাবিদ? গণিতজ্ঞ? শিক্ষক? ইঞ্জিনিয়ার, আইনজ্ঞ, ডাক্তার? বিজ্ঞানী? জ্যোতিষী? সমাজসেবী? সমাজ সংস্কারক? বিপ্লবী? নেতাজী? দেশপ্রেমী? মানবপ্রেমী? কি তিনি? কে তিনি?

মাঝে মাঝে ঠাকুরকেই জিজ্ঞেস করি কে তুমি ঠাকুর!?
তুমি মানুষ? তুমি দেবতা?? তুমি ঈশ্বর???

আমার প্রশ্নের উত্তরটা আমিই দিচ্ছি! আমার বোধ বুদ্ধি দিয়ে তাঁকে স্টাডি ক'রে যা বুঝেছি তাই আমি এখানে তুলে ধরছি। তা' কারও ভালো লাগতে পারে, নাও লাগতে পারে। তা'তে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। যারা শুনছেন তারা গ্রহণ করতে পারেন আবার বকোয়াস ব'লে ডাস্টবিনে ফেলে দিতে পারেন। তবে সবচেয়ে বড় ডাস্টবিন কিন্তু আমাদের মন। ডাস্টবিনে ফেলার আগে মনের ডাস্টবিন পরিষ্কার ক'রে আমার কথাগুলিকে সংশ্লেষণ ও বিশ্লেষণের মধ্যে দিয়ে বিচার ক'রে তারপর যদি মনে হয় ডাস্টবিনে ফেলে দেবেন।

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন একজন মানুষ। সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ!
তিনি হ'লেন একজন বিস্ময়। বিস্ময়ের বিস্ময় সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়!
তিনি হ'লেন আদর্শ। আদর্শের আদর্শ সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ!
তিনি হ'লেন পুরুষ। সর্বশ্রেষ্ঠ পুরুষ! উত্তম পুরুষ!! পুরুষোত্তম!!!

তিনি হ 'লেন তমসার পার অচ্ছেদ্যবর্ণ ইষ্টপ্রতীকে আবির্ভুত মহান পুরুষ!

শ্রীশ্রীঠাকুর হ'লেন একজন নেতা। নেতার নেতা বিশ্বনেতা! ওয়ার্ল্ড লিডার!

শ্রীশ্রীঠাকুর হ'লেন বিপ্লবী! হ্যাঁ বিপ্লবী! তিনি হ'লেন অমৃতবর্ষী বিপ্লবের দিশারী!

তিনি হ'লেন বাঁচা-বাড়ার অনুকূল ভাবধারায় সারা দেশ তথা বিশ্বকে ভাসিয়ে দেওয়ার পথিকৃৎ!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন বিশ্বজুড়ে সমস্ত মত ও পথের সর্ব্বোত্তম পরিপুরণকারী!

তিনি হ'লেন একজন বৈদ্য। বৈদ্যের বৈদ্য পরম বৈদ্য!
শ্রীশ্রীঠাকুর হ'লেন বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানীর বিজ্ঞানী পরম বিজ্ঞানী!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন একজন শিক্ষক, টিচার! ওয়ার্ল্ড টিচার!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন শেষের শুরু! যেখানে বিশ্বের জ্ঞান ভান্ডার শেষ অর্থাৎ কাব্য, দর্শন, সাহিত্য, আইন, প্রকৌশলবিদ্যা, বিজ্ঞান ইত্যাদি শেষ সেখান থেকে শুরু তাঁর বলা!

তিনি হ'লেন কারণপুরুষ। সমস্ত কারণের কারণ পরমকারুণিক তিনি!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হলেন আত্মা। সমস্ত আত্মার আত্মা পরমাত্মা!

জীবাত্মা মহাত্মায় পরিণতি লাভ ক'রে অবশেষে যে পরমাত্মায় লীন হ'য়ে যায় সেই পরমাত্মা হলেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র!

তিনি হ'লেন সবার স্বামী। জীবনস্বামী! জীব জগৎ জীবন কারণ করুণাময় স্বামী!

শ্রীশ্রীঠাকুর হ'লেন গুরু। গুরুর গুরু মহাগুরু! পরমগুরু! বিশ্বগুরু! জগতগুরু!

এই বিশ্বে যত ধর্মের যত দেবদেবী আছে সমস্ত দেবদেবীর আধার হ'লেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র! যেমন সূর্য আর সূর্যের কিরণ!

শ্রীশ্রীঠাকুর যদি হন সূর্য তেত্রিশ কোটি দেবদেবী হ'লো তাঁর কিরণ!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র-ই হ'লেন ব্রহ্মা! তিনিই হ'লেন বিষ্ণু! তিনিই জীবন্ত মহেশ্বর!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন বাইবেলে কথিত In the beginning there was sound, and sound was GOD!- এর সেই সাউন্ড! অর্থাৎ একই সঙ্গে শব্দ ও শব্দের প্রাণ হ'লেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র!

শ্রীশ্রীঠাকুর হ'লেন সৃষ্টি-স্থিতি-লয় এই তিনের মূল মরকোচ!
তিনিই ভগবান! তিনিই ঈশ্বর!! তিনিই আল্লা!!! তিনিই গড!!!!
শ্রীশ্রীঠাকুর হ'লেন স্বয়ং রক্তমাংসসংকুল জীবন্ত নারায়ণ!
তিনি অর্থাৎ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র-ই হ'লেন সেই ওঙ্কার ধ্বনি!
তিনি হ'লেন ওঙ্কার ধ্বনির প্রাণ যে রাধাস্বামী সেই রাধাস্বামী হ'লেন তিনি!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রই হলেন বিশ্বজুড়ে সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলি এই চার যুগে আবির্ভুত মুনি, ঋষি, যোগী, ধ্যানী ও লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি সাধক ও ভক্তকুলের আরাধ্য জীবন্ত ঈশ্বর রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মোহাম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ-এর যুগোপযোগী নবরূপে আবির্ভুত কলিযুগের শেষ অবতার অর্থাৎ স্বয়ং অবতারি পুরুষ!!!
তিনি হ'লেন ঈশ্বর, সৃষ্টিকর্তার মনুষ্য রূপে আট আটবার আবির্ভুত রূপের সর্বশ্রেষ্ঠ পূর্ণ চন্দ্রের ন্যায় পূর্ণ রূপ!

তিনি সর্বশক্তিমান! তিনি সর্বব্যাপী! সর্বভূতে বিরাজমান!
তিনি সর্বনিপুণ! তিনি সর্বজ্ঞ! সর্ববেত্তা! সর্ববিদ্যাবিশারদ!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন সমস্ত অস্তিত্বের অস্তিত্ব পরম অস্তিত্ব!
তিনি সমস্ত উৎসের উৎস পরম উৎস!
তিনি হ'লেন সমস্ত গন্তব্যের পরম গন্তব্য স্থল!
তিনিই হ'লেন ডিভাইন ডিক্টেশন-এর কলাকার!
শ্রীশ্রীঠাকুর হ'লেন সেই মুনি ঋষি যোগী ধ্যানী যখন ধ্যানস্থ অবস্থায় যে আকাশবাণী প্রাপ্ত হয়, সাড়া পায়, ঈপ্সিত বস্তু লাভ করে সেই আকাশবাণী, সেই সাড়া বা সেই ঈপ্সিত বস্তুর দানকারী ব্যক্তি!
তিনিই ওঙ্কার ধ্বনি! তিনিই ব্রহ্ম! পরম ব্রহ্ম! তিনিই কুল অর্থাৎ এই মহাকাশে যত লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি গ্রহ নক্ষত্র নিয়ে আমাদের যে ব্রহ্মান্ড সেই ব্রহ্মাণ্ডের বাইরে লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি গ্রহ নক্ষত্র নিয়ে আরও একটা ব্রহ্মান্ড, তার বাইরে আরও একটা, আরও একটা, আরও একটা এমনিভাবে কোটি কোটি ব্রহ্মান্ড সমূহ ( যা বিজ্ঞানীরা কল্পনা করেছেন মাত্র) নিয়ে অন্তহীন বিশাল যে ব্যাপ্তি, যে বিস্তৃতি, যে কুল সেই কুলের যিনি মালিক, যিনি সৃষ্টিকর্তা, যিনি----সেই যখন 'ছিল না'-র অস্তিত্ব ছিল, অর্থাৎ সেই যখন কোনও কিছুই ছিল না তখনও তিনি ছিলেন অর্থাৎ ছিল সেই অস্তিত্ব অর্থাৎ সাউন্ড বা শব্দ 'ওঙ্কার', শব্দের প্রাণ 'রাধাস্বামী' আর সেই তিনি অর্থাৎ 'রাধাস্বামী' হ'লেন রক্তমাংসসঙ্কুল জীবন্ত সৃষ্টিকর্তা, জীবন্ত কুলমালিক, পরব্রহ্ম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র!!!

তিনিই একমাত্র উপাস্য! তিনিই পূজ্য!
তিনিই এক ও একমাত্র আরাধ্য দেবতা! ঈশ্বর! আল্লা! গড বা যে যে নামেই তাঁকে ডাকুক না কেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন সেই রহস্যময় অস্তিত্ব!!!!!!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন অখন্ডমন্ডলাকারে ব্রহ্মাণ্ডের পর ব্রহ্মান্ড জুড়ে যিনি পরিব্যাপ্ত তাঁর জীবন্ত রূপ!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন অজ্ঞানতার অন্ধকারে ঢাকা পড়ে থাকা বিশ্বজুড়ে মানুষের বন্ধ চোখ জ্ঞানের কাঠি দিয়ে খুলে দেবার এক ও একমাত্র নিখুঁত মানুষ!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন সেই চেতন পুরুষ যিনি স্বর্গ-মর্ত-পাতাল তিন লোক জুড়ে চেতনার নিদর্শন স্বরূপ পরিব্যাপ্ত!

শ্রীশ্রীঠাকুর ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন কোটি কোটি ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা কোটি কোটি ব্রহ্মার উৎপত্তি স্থল! যেখান থেকে জন্ম নিয়েছে কোটি কোটি ব্রহ্মা ও ব্রহ্মান্ড!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন সেই নারায়ণ আর নারায়ণ মানে হ'লো বিশাল বিস্তৃতি! অর্থাৎ শ্রীশ্রীঠাকুর হ'লেন সেই বিশাল বিস্তৃতি! আর নারায়ণের নাভিপদ্ম বা নাভিদেশ মানে সেই বিশাল বিস্তৃতির মধ্যবিন্দু বা কেন্দ্রবিন্দু! আর সেই মধ্য বা কেন্দ্রবিন্দুকে বিজ্ঞানে বলা হয় সেন্ট্রাল জোন! যেখান থেকে সব কিছুর সৃষ্টি! চরম পরম উৎস! শ্রীশ্রীঠাকুর হ'লেন সেই চরম পরম উৎস!!! সেই সেন্ট্রাল জোন। সেই চরম পরম উৎসের, সেই সেন্ট্রাল জোনের আধার!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন সেই বাইবেলে কথিত রক্তমাংসসঙ্কুল 'ঈশ্বর পুত্র' হ'য়েও ঈশ্বর! সর্বশক্তিমান পরমকারুণিক সর্ব্বানুস্যুত ব্যাপ্ত প্রাক প্রথমবাক সর্ববস্বর্গ সর্ব্বহৃদয় প্রাণনপরিমল অদ্বিতীয় জীবন্ত ঈশ্বর! জীবন্ত রক্তমাংস সঙ্কুল নররূপী ঈশ্বর! সৃষ্টিকর্তা!!
সেই চরম পরম উৎস রক্তমাংসসঙ্কুল জীবন্ত ঈশ্বরকে জানাই আভুমি হৃদয় কম্পিত শত-লক্ষ-কোটিকোটি প্রণাম!