তাই বলি, দইয়ের স্বাদ কি আর ঘোলে মেটে!? সব দেখে, বুঝেও নেতাজী ঠাকুরকে গুরুপদে বরণ ক'রে নিতে পারেননি। পারেননি নিজের পিতামাতার গুরুকে চিনতে। শ্রদ্ধা ভক্তি অবশ্যই তিনি করতেন ঠাকুরকে কিন্তু জীবনের দাঁড়া হিসেবে তাঁকে জীবনে গ্রহণ ক'রে উঠতে পারেননি, স্থান দিতে পারেননি জীবনের কেন্দ্রে। ঠাকুরের ফটো অবশ্যই রেখেছিলেন ঘরে কিন্তু হৃদ মাঝারে রেখে উঠতে পারেননি। নেতাজীর মত মানুষ যাঁর পিতামাতা ঠাকুরের দীক্ষিত ছিলেন তাঁর ঠাকুরকে প্রশ্নশূন্য ও দ্বিধাহীন চিত্তে জীবনের কেন্দ্রে বসাতে সময় হ'লো না এর থেকে দুর্ভাগ্য আর কি হ'তে পারে!? নেতাজী বিবেকানন্দের অনুগামী ছিলেন কিন্তু আমরা কোথাও পাই না তিনি রামকৃষ্ণের অনুগামী ছিলেন! বিবেকানন্দ ছিলেন নেতাজীর আধ্যাত্মিক ধ্যান জ্ঞান। বিবেকানন্দের আধ্যাত্মিক চেতনায় তিনি মগ্ন ছিলেন। ঠাকুর রামকৃষ্ণকে তিনি ভক্তি শ্রদ্ধা করতেন একথা সত্য কিন্তু বিবেকানন্দ ছিলেন নেতাজীর চলার পথের প্রেরণা। তাঁর সমগ্র জীবন জুড়ে ছিলেন বিবেকানন্দ আর তাঁর দর্শন। ঠাকুর রামকৃষ্ণ জান্তেই হ'ক আর অজান্তেই হ'ক নেতাজীর কাছে ছিল গৌণ; মুখ্য ও প্রধান ছিল বিবেকানন্দ!
আর, নেতাজীর যখন জীবনী বা ইতিহাস লেখা হয়েছে বা এখনও হয় কোনও ঐতিহাসিকের লেখায় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সঙ্গে নেতাজীর যে কোনোকালে কোনও সম্পর্ক ছিল বা তাঁর পিতামাতার যে গুরু ছিলেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সেরকম কোনও গুরুত্বপূর্ণ খবর কখনও কোনোদিন গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হ'তে দেখা যায়নি!!!! নেতাজীর পরিবারের কাউকে বা তাঁর অন্যান্য ভাইদের মুখেও কখনও কোথাও শোনা যায়নি The greatest phenomenon of the world শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের নাম বা প্রচার বা তাঁদের শ্রদ্ধেয় পিতৃদেব মাতৃদেবের আরাধ্য দেবতা ছিলেন পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র! ইদানিং সৎসঙ্গের বা শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিয়ে অনুষ্ঠিত কোনও কোনও সেমিনারে নেতাজীর পরিবারের উত্তরসূরিদের কাউকে কাউকে কদাচিৎ দেখা যায় বক্তা হিসেবে, দীক্ষিত ভক্ত হিসেবে নয়। যদিও আমার জানা নেই যে নেতাজীর উত্তরসূরিদের কেউ ঠাকুরের দীক্ষিত কিনা। নেতাজি তিন তিনবার ঠাকুর দর্শনে এসেছিলেন কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাঁকে চিনতে পারেননি। হয়তো বা ঠাকুর রামকৃষ্ণের প্রতি তাঁর অকাট্য অস্খলিত টান যদি থাকতো বিবেকানন্দকে ছাপিয়ে তাহ'লে হয়তো ঠাকুর রামকৃষ্ণের নবরূপ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে জীবনে পেতেন। স্বাধীনতার উত্তাল হাওয়া তাঁকে মাতাল ক'রে ছুটিয়ে নিয়ে বেরিয়েছিল! নেতাজি মাকে ভীষণ ভালোবাসতেন, তাই মায়ের কথামত তিনি ঠাকুর দর্শনে এসেছিলেন কিন্তু দেশমাতৃকার টান তাঁর এত প্রবল ছিল যে পরমপিতার টান তাঁর কাছে গৌণ হ'য়ে গেছিল আর গৌণ হ'য়ে গেছিল বলেই নেতাজীর মত প্রবল ব্যক্তিত্বপূর্ণ মানুষ শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গ লাভে বঞ্চিত হয়েছিল! তামাম দেশবাসীর দুর্ভাগ্য তিনি যদি ঠাকুরকে তাঁর পিতামাতার মত দ্বিধাহীন চিত্তে জীবনের কেন্দ্রে বসাতেন তাহ'লে দেশ আজ ল্যাংড়া হ'য়ে পঙ্গু হ'তো না! তিনি ঠাকুরের কাছে এলেন, ঠাকুরকে দেখলেন কিন্তু জানলেন, বুঝলেন কিনা জানি না কিন্তু একথা সত্য তিনি নিজের জীবনে ধরলেন না ঠাকুরকে, ঠাকুরের জীবন দর্শনকে! এই ফাঁক তাঁকে ফাঁকির ফাঁকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে আমাদের থেকে, ভারতবাসীর থেকে কোথায় কোন অন্ধকারে যে নিয়ে গিয়ে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি ক'রে দিয়ে গেল যা আজও আমাদের ব'য়ে নিয়ে বেড়াতে হচ্ছে!!!!!!!! ঠাকুরকে যদি তিনি গ্রহণ করতেন, জীবনের কেন্দ্রে বসাতেন, তাঁর নির্দেশ মত চলতেন, নিজেকে পরিচালিত করতেন দেশ সেবায়, দেশের কাজে, স্বাধীনতার লড়াইয়ে, প্রশ্নশূন্য চিত্তে তাঁর শ্রীচরণে সমর্পণ করতেন নিজেকে পিতামাতার পথ অনুসরণ ক'রে তাহ'লে দেশ তথা বিশ্ব এক দেশ তথা বিশ্বনেতাকে পেত আর গোটা পৃথিবীতে নতুন যুগের সূচনা হ'তো যা আজ বি-রা-ট ক্ষতিতে পরিণত হ'লো!!!!! নেতাজীর মত মানুষেরা যদি ঠাকুরকে চিনতে না পারেন তাহলে তার ক্ষয়ক্ষতি তো পরবর্তী প্রজন্মকে বইতে হবে যা ব'য়ে চলেছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম আজও!!!!!! আজও দেশের বিশিষ্ট মহান ব্যক্তিত্বরা সেই ট্র্যাডিশন সমানে ব'য়ে চলেছে!!!!!!----------প্রবি।
( লেখা ২৭শে জানুয়ারী'২০২০)
No comments:
Post a Comment