Powered By Blogger

Thursday, January 12, 2023

প্রবন্ধঃ কৃষ্ণ ও ১১৭৬।

এই বিষয়টা এখন গণেশের দুধ খাওয়া বা ফটোতে বিভুতির নামে ছাই ঝ'রে পড়ার মত বেশ জনপ্রিয় হ'য়ে উঠেছে। আর তা উঠছে ও উঠেছে ফেসবুক ও তা ব্যবহারকারীদের দৌলতে। যে যেদিকে পারছে পোষ্ট ক'রে চলেছে ১১৭৬ কৃষ্ণ!!!!! আর সৎসঙ্গীরাও মেতে উঠেছে এই নতুন তালে! কখন যে কি হয়, কখন যে শয়তান করোনা ও ওমিক্রণ নতুন নতুন নামে আবার কখন যে শয়তান ভগবান সেজে '১১৭৬ কৃষ্ণ' ও অন্যান্য অনেক বিচিত্র নামে আবির্ভূত হ'য়ে অসহায় মানুষকে মারার জন্য ও বাঁচাবার নামে আক্রমণ ক'রে বসবে তা কেউ জানে না।
যেমন করোনা নিয়ে, করোনার ফাস্ট, সেকেন্ড, থার্ড ঢেউ নিয়ে গোটা বিশ্ব তোলপাড় হ'য়ে গেল ও হ'য়ে চলেছে ক্রমাগত মাঝে মাঝে বিরতি দিয়ে দিয়ে। রাজনৈতিক ফয়দা বা ব্যবসায়ীর অর্থনৈতিক ফয়দা কিম্বা সত্যি সত্যিই জীবাণু হ'ক কি না হ'ক-------- এই কথা বললাম এইজন্য যে করোনার সত্যতার পক্ষে বিপক্ষে নেটদুনিয়া আজ শতধা বিভক্ত; আর সাধারন মানুষ জল থেকে তুলে ডাঙ্গায় ফেলে রাখা শ্বাসকষ্টে ছটফট করা মাছের মত বিরাট হা ক'রে শ্বাস নিতে চাইছে বাঁচার জন্য-------- একটা সামান্য জীবানু পারমাণবিক শক্তিধর বিজ্ঞানে চরম উন্নত রাষ্টগুলোর কানের নীচে ক'ষে এক থাপ্পড় বসিয়ে দিয়ে বুঝিয়ে দিল, 'রাখ তোর ------- পরমাণু অস্ত্র! বেশী হম্বিতম্বি করিস না চার অক্ষর! ঐসব --- ফেলাইন্যা অস্ত্র তোর পকেটে বা প্যান্টের নীচে বেঁধে রাখ। এ তো শুধু মাত্র --- নমুনা দেখালাম। এ তো ------- সবে প্রি টেষ্ট করলাম! এখনও শালা টেষ্ট বাকী রে চার অক্ষর!!!! এতেই শালা কুপোকাত তোরা --------- শক্তিধর দেশগুলো! এক ছোবলেই শালা ছবি ক'রে দিলাম তোদের গোটা বিশ্বকে! আর বাকী আছে ফাইনাল! আর ফাইনাল!? ফাইনালে তো এমন মারবো, এমন মারবো শালা ছোবল মারা ছক্কার দাপটে বল মাঠে তো দূর কথা আস্মানেই হারিয়ে যাবে ঐ ব্রজদার গ্যাস বুলির বেলুনের মতো! মার ছক্কা, মার ছক্কা, মার ছক্কা ব'লে এলো তেড়ে এলো ব'লে শালা। তখন তোদের কোনও তেত্রিশ কোটি অমূর্ত দেবদেবী বা যত ধর্মীয় জগতের আধ্যাত্মিক মহাত্মা তো দূরের কথা তোদের পরমাত্মা পুরুষোত্তম জ্যান্ত ভগবান, জীবন্ত ঈশ্বর রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ এবং সর্ব্বশেষ বিশ্বের সমস্ত বিস্মের বিস্ময়, সর্ব্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় যাকে বলিস সেই অনুকূল বাবাও তোদের সৎসঙ্গীদের বাঁচাতে পারবে না। শুধু অসহায় হ'য়ে তোদের দিকে চেয়ে চোখের জল ফেলবে, কাঁদবে নীরবে! যেমন এখন কাঁদছে। আর, চোখের জল ফেলা বা কাঁদা সবটাই তোদের তোদেরই অপদার্থতা, বেঈমানি, নেমকহারামির কারণে। এক হিম শীতল যুগ মৃত্যুপুরী নাবিয়ে আনবো শালা, দেখতে থাক ----------রা!
তাই মন ব'লে ওঠে হঠাত এই বিপর্যস্ত বিধ্বস্ত প্রায় বিষন্ন পৃথিবীতে ১১৭৬ কৃষ্ণ ব্যাপারটা কি? কে বলবে? কে উত্তর দেবে? যারা পোষ্ট করছে তারা? যারা শেয়ার করছে তারা? যারা প্রচার করছে তারা? যারা ফোকটে পাওয়ার নেশায় পোষ্ট ক'রে চলেছে আল বাল ছাল; তারা? কারা?
এই পোষ্টের বিষয় কি সেটাই জানতে চাই। কেউ জানাবে কি? কে বা কারা হটাৎ কৃষ্ণের লেজ গজিয়ে দিল এবং এর উৎস বা উদ্দেশ্যই বা কি? তবুও ১০৮ সংখ্যা থাকলে না হয় নতুন ভক্তের নতুন ভক্তির চুলকানি সম্পর্কে একটা ধারণা করতে পারতাম। শ্রীকৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম (১০৮টি নাম) ব'লে একটা বিষয় আছে। কিন্তু ১১৭৬!? কি এটা!? মুসলমানদের ধর্ম্মজগতে একটা পবিত্র সংখ্যা আছে তা হ'লো ৭৮৬। ইসলাম ধর্ম্মে গুরুত্বপূর্ণ নাম্বার এটা। কিন্তু হিন্দুধর্ম্মে ১১৭৬ কোথা থেকে এলো? হিন্দুধর্ম্মে এর মানে বা গুরুত্ব কি? এই সম্পর্কে কোনও ধারণা কেন কেউ তুলে ধরছে না? যারা ছড়ালো এবং ছড়ানো জিনিসে যারা মেতে উঠলো তাদের বক্তব্যই বা কি? ধর্ম এবং ঈশ্বর ও ঈশ্বরের জীবন্ত রূপ কি সস্তা হ'য়ে গেছে? কি বলেন প্রকৃত ধর্ম্ম অনুরাগী ও জীবন্ত ঈশ্বর বিশ্বাসীরা। আর সৎসঙ্গীরাই বা কেন এতে ধেই ধেই ক'রে মেতে উঠলো!? পুরো জগতটাই চার অক্ষর!? না ক'রে ও দু'নম্বরী ধ্যানধারণার উপর দাঁড়িয়ে পাওয়া মানুষদের জগত!? নিশ্চয়ই না। তবে তারা কোথায়!? কোথায় এর বিরুদ্ধে ধর্ম্মীয় জনমত!? অন্তত সৎসঙ্গীরা তো এর থেকে দূরে থাকুক। আসলে সৎসঙ্গীরা কি শুধুই নামে সৎসঙ্গী!? কামে!? করোনা গাড়িতে সফর করতে করতে দেখতে পাবো আগামীতে অপেক্ষা করছে খ্রিষ্টানদের জন্য, বৌদ্ধদের জন্যও এরকম একটা নম্বরযুক্ত আশ্চর্য!
ঠিক আছে তাই-ই হ'ক।
( লেখা ১৩ই জানুয়ারী ২০২২)

No comments:

Post a Comment