Powered By Blogger

Sunday, February 19, 2023

প্রবন্ধঃ কিছু কথা।

সৎসঙ্গী গুরুভাইবোনেরা সাবধান! সৎসঙ্গী নাম নিয়ে ঢুকে পড়ছে সৎসঙ্গীদের ঘরে ঘরে ছদ্মবেশী শয়তান! ঢুকে পড়ছে কেন্দ্রে, মন্দিরে, সৎসঙ্গে, উৎসবে-অনুষ্ঠানে! চতুর্দিকে সৎসঙ্গের নামে, উৎসবের নামে সৎসঙ্গীদের কাছে কালেকশনে নেবে পড়ছে তারা! এখন চতুর্দিকে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের প্রচুর দীক্ষিত, লক্ষ লক্ষ দীক্ষিত। এই সুযোগে নেবে পড়েছে সুযোগ সন্ধানী দল ভক্ত সেজে। খুব মিষ্টি মানুষ তারা! শয়তানের হাসি ভগবানের চেয়েও মিষ্টি! একথা মনে রেখো তোমরা!! অভিজ্ঞতার উপর দাঁড়িয়ে বললাম একথা। আমার মনে হ'লো তাই বললাম একথা। বদনাম হচ্ছে ঠাকুরের, বদনাম হচ্ছে সৎসঙ্গের! বদনাম হচ্ছে সাধারণ ভালো ইষ্টপ্রাণ প্রকৃত সৎসঙ্গী গুরুভাইবোনেদের! সেইসবের ধার ধারে না তারা। তাদের এক ও একমাত্র লক্ষ্য সাধারণ সৎসঙ্গী। সাধারণ ভাঙাচোরা সৎসঙ্গীরা এদের শিকার! সাধারণ সৎসঙ্গীরা অর্ঘ্য সংগ্রহকে সরল মনে নেয়। ঠাকুরের প্রতি ভক্তি ভালোবাসা ও দুর্বল হৃদয়ের কারণে তারা অর্ঘ্য দেওয়াকে পবিত্র কাজ হিসেবে নেয়! আর সেই সুযোগ নেয় ধান্দাবাজ অর্থলোলুপ চরিত্রহীন কামুক প্রকৃতির সৎসঙ্গী নামধারী কপট ভন্ড মানুষ। এরা মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে ঢুকে পড়ে অন্দরমহলে! এরা সাধারণ সৎসঙ্গীদের খুব প্রিয় হয়। আমাদের মত স্পষ্ট কাঠখোট্টা সৎসঙ্গীরা সাধারণ মানুষের মন জয় করতে পারে না। আমরা সমালোচিত ও নিন্দিত হ'ই। আর তা হ'ই এদের কারণে। এদের প্রভাব অত্যন্ত প্রবল সাধারণ সৎসঙ্গীদের উপর। এদের অসাধারণ সম্মোহনী শক্তি! এরা সাধারণ সৎসঙ্গীদের প্রিয় হবার জন্য সৎসঙ্গীদের সমস্ত রকমের দুর্বলতা, দোষ, ভুলকে সমর্থন করে, প্রশ্রয় দেয় ঠাকুরের নানারকম ভুলভাল কথা ব'লে। এরা কথায় পটু ও চতুর হয়। তাই এরা জানে কোন কথার সমর্থনে, কোন কথার প্রশ্রয়ে সাধারণ সৎসঙ্গীদের মন জয় করা যায়। আর তাছাড়া দুর্বল মন ও হৃদয়ের মানুষ সবল হৃদয়ের মানুষের থেকে দূরে থাকতে ভালোবাসে। তারা ভালোবাসে বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে সুড়সুড়ি দেওয়া কথাবার্তা। তাই তারা তাদেরই পছন্দ করে যারা তাদের সব কথায় সায় দেয়, সমর্থন করে। ভন্ড কপট ধান্দাবাজ ব্যবসায়ী মনোভাবাপন্ন ভক্তমন্ডলী সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ সরল বোকা দুর্বল ধর্মভীরু বৃত্তিভোগী রিপু তাড়িত ভক্তকে স্পষ্টবাদী ইষ্টমাতাল খোলা মনের ভক্তপ্রাণের বিরুদ্ধে ভুল বুঝিয়ে ফায়দা তুলে নেয়, নেয় আখের গুছিয়ে! ইষ্টভৃতি, অর্ঘ্য, প্রনামীর টাকা সংগ্রহ করার জন্য এরা মুখ্য ভূমিকা নেয়। সাধারণ ভক্তমন্ডলী ইষ্টভৃতি, অর্ঘ্য, প্রনামীর টাকা ভক্তিভরে সরল বিশ্বাসে এদের হাতে তুলে দেয়। তারপর এরা খোঁজও নেয় না টাকা যথাস্থানে পৌঁছেছে কিনা। খোঁজ নেবার প্রয়োজনও বোধ করে না এরা। কারণ ঠাকুরের প্রেমের কথা, ইষ্টপ্রাণতার বাহারী চমক সাধারণ ভাঙাচোরা সৎসঙ্গীদের মোহমুগ্ধ ক'রে রাখে! সেই মোক্ষম সুযোগকে হাতিয়ার ক'রে ইষ্টকে, ঠাকুরকে আয়ের উপকরণ হিসেবে কাজে লাগিয়ে রোজগার করা এই সমস্ত কপট ভন্ড ভক্তমন্ডলী রমরমা ব্যবসা ফেঁদে বসেছে! এরা সরল সাদাসিধা ভাঙাচোরা সৎসঙ্গীদের মুর্গা বানিয়ে আজ তাদের কষ্টের টাকা ইষ্টের নামে হাতিয়ে নিয়ে পকেট খরচা এমনকি সংসার চালানোর উপায় ক'রে নিয়েছে! এর জন্য দায়ী কে? ঠাকুর? সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠান? নাকি আমাদের সরলতার নামে মহা বেকুবী? কোনটা? আমরা জানি না শ্রীশ্রীঠাকুর আমাদের সাবধান ক'রে দিয়ে বলে গেছিলেন, "কেষ্টদা মন্দিরের আশেপাশে কুৎসিত লোকের আনাগোনা বেশী, সাবধান থেকো তা থেকে"! আমরা কি এই সব কথা জেনেছি? নাকি জেনে মেনেছি? সাবধান হয়েছি? এবং অন্যদের সাবধান করেছি!? 'কালকের যোগী ভাত কে বলে অন্ন' এমন ভক্তরা এলাকায় এলাকায় ইষ্টপ্রাণতার এমন লম্প দিয়ে ঝম্প মারে যে এদের ইষ্টের প্রতি, ঠাকুরের প্রতি ভক্তি, প্রেম, ভালোবাসা ভক্তশ্রেষ্ট হনুমানকেও হার মানায়, হার মানায় হনুমানের ঐতিহাসিক লাফ কে! ঠাকুর এই সমস্ত ভন্ড মানুষদের আয়ের উপকরণ। এইসমস্ত লোক দেখানো ভক্তির অধিকারী কিচ্ছু না করা দীক্ষিতরা(?) সৎসঙ্গীদের মধ্যে নিজেদের ভেস্টেড ইন্টারেস্ট ব্যবসা-বাণিজ্যকে প্রসারিত ক'রে ক্ষমতা কায়েম করার জন্য সর্বাঙ্গ সাদায় ঢেকে শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢুকে পড়ার মত ভালো মানুষের বোরখা পড়ে কেন্দ্রে, মন্দিরে, সৎসঙ্গীদের ঘরে ঘরে ঢুকে পড়ে! তারপর সুযোগ বুঝে ফাঁকা ঘরে মোক্ষম দাঁও মেরে ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে মিষ্টি স্বরে জয়গুরু ব'লে কেটে পড়ে আবার পরবর্তী দিনের বা পরবর্তী শিকারের খোঁজে! এরা অসম্ভব ধৈর্য্যশীল হয়! ঘন্টার পর ঘন্টা চুপ ক'রে ধৈর্য্য ধ'রে বসে থাকতে পারে! কিছুতেই স্থান ত্যাগ করে না! সুযোগের অপেক্ষায় থাকে শিকারী জন্তুর মত! সুযোগ পাওয়া মাত্র অত্যন্ত ক্ষিপ্রতায় ছোবল মারে! এরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে অতি দ্রুত চোখের পলক পড়ার আগেই প্রতিপক্ষকে কথার মুন্সিয়ানায় সম্মোহিত ক'রে টাকা হাতিয়ে কেটে পড়ে! এরা হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ সৎসঙ্গীদের ঘরে ঘরে ঢুকে যায় যার যা ব্যবসা, যার যা আয়ের সোর্সকে ফুলে ফেঁপে ঢোল ক'রে তোলার জন্য! তাই সাধারণ সৎসঙ্গী গুরুভাইবোন আমার, সাবধান! এদের হাতের পুতুল হবেন না। নিজেকে এদের ঠাকুরকে ব্যবসার উপকরণ বানাবার বোড়ে হ'তে দেবেন না। আর আমার এই লেখাকে শুধু 'জয়গুরু' ব'লে মন্তব্য ক'রে ছেড়ে দেবেন না। আপনারা সতর্ক হলেই আমার এই লেখা সার্থক হবে। কারণ এইসমস্ত ধান্দাবাজি ভক্তমন্ডলী আমার উপর ক্ষুব্ধ হবে। আপনারা লক্ষ লক্ষ সাধারণ ভালো সৎসঙ্গীরা আমার এই লেখায় উপকৃত হ'লে আমি আনন্দ পাবো এবং ঠাকুর ভীষণ খুশী হবেন!!!!!! অনেক অভিজ্ঞতা থেকে একথা বললাম। নিতেও পারো আবার নাও নিতে পারো। শ্রীশ্রীবাবাইদাদা বলেন, গ্রহণ বর্জন ব্যক্তিগত ব্যাপার। জয়গুরু।
(লেখা ১২৯শে ফেব্রুয়ারী'২০২০)

No comments:

Post a Comment