দেখলাম ফেসবুকে কন্যাদের পৈতে অনুষ্ঠানের ছবি। দেখে ভালো লাগলো। ভাবলাম, বাঃ বেশ তো! সত্যিই তো কন্যাদের কেন পৈতে হয় না!? তাহ'লে কি প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতায় কন্যাদের পৈতে দান নিষিদ্ধ ছিল? নাকি পরবর্তীতে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় কায়েমি স্বার্থরক্ষাকারিদের চক্রান্তে ঋষি প্রদত্ত সমাজ ব্যবস্থাকে শাস্ত্রের ভুল কৌশলী ব্যাখ্যায় চাপা দেওয়া হয়েছিল? নিষিদ্ধ থাকলে কেন নিষিদ্ধ ছিল, চক্রান্ত থাকলে কি চক্রান্ত ছিল আর সমানাধিকারের দাবিতে যদি কন্যাদের পৈতে দান আধুনিক যুগে হ'য়ে থাকে তাহ'লে কিসের সমানাধিকার, কেন সমানাধিকার, সমানাধিকারের আদৌও কি প্রয়োজন আছে ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা, পর্যালোচনা, বিচার- বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রায়ই বলতেন, "আমার মা বলতেন, " যেখানেই দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখো তাই, পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন। " আর, এই পদ্ধতি প্রয়োগ ক'রে সময়ের চক্রান্তের যাতাকলে চাপা পড়া বহু বহু বিষয়কে তিনি ধাতুগত অর্থের উপর দাঁড়িয়ে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে বিশ্লেষণ ক'রে আসল অর্থকে অন্ধকার থেকে বের ক'রে এনে আলোর বুকে খোলা আকাশের বুকে মুক্তি দিয়েছেন।
যাই হ'ক, আমার শুধু এটুকুই মনে হয়,
সমানাধিকার মানে সব একাকার করা নয়। আর স্বাধীনতা মানে স্বেচ্ছাচারিতা নয়। চাল আর ডাল মিলে খিচুড়ি হ'তে পারে কিন্তু চাল ডালের আলাদা অস্তিত্ব চিহ্নিত করা আর সম্ভব নয়। আর বৈদিক যুগে যদি মুনি ঋষিদের দ্বারা শাস্ত্রমতে কন্যাদের পৈতে অনুষ্ঠান স্বীকৃত ছিল আর তা সময়ের যাতাকলে চাপা পড়ে গিয়ে থাকে তাহ'লে অবশ্যই তা যথাশীঘ্র চালু হওয়া উচিত। আর স্বীকৃতি যদি না থাকে তাহ'লে কেন তা নেই, কেন ছিল না তা তলিয়ে দেখা উচিত; আর তা অবশ্যই বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে তলিয়ে দেখা উচিত, বিশ্লেষণ ক'রে দেখা উচিত। আধুনিকতার দোহাই দিয়ে তা নস্যাৎ করা উচিত নয়, ধ্বংস করা উচিত নয়। এটা যেন ভুলে না যায় যে ভারতীয় ঋষি মুনিদের যুগ কিন্তু ছিল সর্ব্বোত্তম বিজ্ঞানের যুগ। ভারতীয় আর্য দর্শন কিন্তু বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ দর্শন আমরা অতি আধুনিক আধুনিকারা যেন ভুলে না যায়।
প্রবি।
( লেখা ৯ই ফেব্রুয়ারী'২০২২)
No comments:
Post a Comment