আর একদিন একটা কবিতা পড়ছিলাম। হুমায়ুন আজাদের কবিতা। পড়তে পড়তে একটা লাইনে গিয়ে চোখ আটকে গেল! লাইনটা না লিখলে হ'তো তবুও আলোচনা ধোঁয়াশা থেকে যায় তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও লিখলাম। "সবচে সুন্দর মেয়ে দুইহাতে টেনে সারারাত চুষবে নষ্টের লিঙ্গ-------"। আরো অনেক লাইন ছিল! মনে মনে ভাবলাম "সবচে সুন্দর মেয়ে দুইহাতে টেনে সারারাত চুষবে নষ্টের লিঙ্গ------" এই লাইনটা লিখতেই হ'লো কবিকে!? অন্যভাবে যেত না লেখা!? নষ্টরা না হয় সব নষ্ট ক'রে দেবে, নষ্ট ক'রে দেবে সমাজ- সভ্যতা! তাই ব'লে এমন ভাষা আর ভাবের আশ্রয়!? এমন অভিব্যক্তি!? এ তো হতাশার বহিঃপ্রকাশ!!!! প্রতিবাদ, প্রতিরোধের ভাষা এতো যৌনতায় ভরা!? অন্যভাবে ভাব প্রকাশ করা যেত না!?!? পুরো কবিতার মধ্যে যেন একফোঁটা নষ্টের লাম্পট্য! অবশ্য সবই যখন নষ্টের কবলে যাবে তখন কবিই বা বাদ থাকে কেন! নষ্টের প্রধান দোসর তো নষ্টজীবীরাই!!!!!!!!!! তাহ'লে লম্পটের লাম্পট্য-কে দোষ দিয়ে লাভ কি!? বর্তমান পৃথিবীতে আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় উন্নতি আর দুর্নীতি, গালাগালি আর গলাগলি যদি সহোদর ভাই হিসেবে মিলেমিশে পাশাপাশি চলতে পারে আর মানুষও অভ্যস্ত হ'য়ে যায়, দারুণ ভাবে মানিয়ে নেয় (নিয়েছেও) নিজেকে বর্তমান এই অদ্ভুত খিচুড়ি সংস্কৃতির সঙ্গে তাহ'লে বিনয় আর লাম্পট্য হাত ধরাধরি ক'রে চলবে এতে আর আশ্চর্যের বা বাহাদুরীর কি আছে!? ঠিকই বলেছেন কবি; হ্যাঁ, আকাশ বাতাস যা কিছু যে নষ্টদের কবলে সব একদিন সত্যিই চলে যাবে এই ধরণের কবিতা তারই অশনি সংকেত! ঘোর কলির শয়তানের নবরত্ন সভার রত্নদের অলংকার কি তাহ'লে বিনয় আর লাম্পট্য, গালাগালি আর গলাগলি, উন্নতি আর দুর্নীতি!? এই ধরনের লাম্পট্য আজ বাংলা সাহিত্যে নতুন কিছু নয়, বাংলার বাবু কালচারে তা একদিন খুবই সমাদৃত ছিল, বাহবা, বাহবা রব উঠতো! নারী, সূরা, যৌনতা ইত্যাদি নিয়ে যে লাম্পট্য সেই লাম্পট্যও তাহ'লে সৌন্দর্য্যের উপকরণ!?!?!?
যাক হবে হয়তো! সব মেনে নিতে হবে কারণ মনে পড়ে যায় সেই প্রবাদঃ "পড়েছো মোগলের হাতে খানা খেতে হবে একসাথে।" কিছু করার নেই। ধ্বংস যখন শুরু হয় তখন দিন কাল সময় পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো মন্দ লাভ লোকসান ক্ষয়ক্ষতি দেখে হয় না; ধ্বংস তার স্বাভাবিক নিয়ম ও কার্যকারণ মেনেই তার কাজ করে। এটা মানা আর না-মানা ব্যক্তিগত ব্যাপার। গ্রহণ ও বর্জন নিজ নিজ রুচি ও বোধের ব্যাপার।
কবিরা অনেক সময় নিজেদের কবি নন ব'লে ঘোষণা করেন। কে বললো এইধরণের কবিতা রচনাকারীরা কবি নন? কবিরা তো কবিতা লেখেন তাহ'লে কেন বলছেন কবিরা যে তাঁরা কবি নন? এটাকে কি বলবো? নিজের সম্পর্কে উদারতার ভঙ্গি? আর অনেকে এই আলোচনাকে লম্পটের গোপন লাম্পট্য বিষয় বলে আলোচনায় অকারণ চনা ঢেলে দেয়। কে লম্পট আর কার মধ্যে কি লাম্পট্য গোপন আছে সেটা কি আলোচ্য বিষয়? নাকি আলোচ্য বিষয়কে ঘুরিয়ে দেওয়ার সুকৌশলী প্রচেষ্টা!? লোকচক্ষুর অন্তরালে যদি কারও নষ্টামী থাকে আর তা যদি প্রকাশ্যে না আসে এবং সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর না হয় তা হ'লে অযথা তাকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বের ক'রে আনার কি দরকার? কেন এই বিকৃত মানসিকতা? পোশাকের নীচে নারী-পুরুষের অবস্থান সকলেরই জানা তাই ব'লে কি নারীপুরুষ সভ্য হবে না!? সৃষ্টির শুরুর সময়ের অসভ্য ও প্রাচীন থেকে যাবে? এখানে অন্যকে লম্পট উপাধি দেওয়া আমার লেখার মোটেও উদ্দেশ্য নয়! অকারণ বেলাইনি কথাবার্তা, উল্টো প্রসঙ্গ আলোচনাতে চনা ঢেলে দেয়। ঘরের মধ্যে যা ঘটে তাকে কি নোংরামি বলা যায়? একজন এখন যুবক, আগামীতে সেই যুবক ঘর বাঁধবেন এবং ঘরের মধ্যে চার দেওয়ালে নারীপুরুষের স্বাভাবিক চাহিদা পূরণ হবে তখন কি সেই চাহিদাকে নোংরামি বলা যাবে নাকি অসভ্যতা বলা হবে? আর সেই যুবকের স্ত্রী কি মেনে নেবেন এই 'নোংরামি' উপাধি এবং সন্তানকে নোংরামির ফসল বলা? তাহ'লে যুবকও কি নোংরামির ফসল? সৃষ্টির প্রয়োজনে যে মিলন সেই মিলনকে কি উচ্ছৃঙ্খলতা দিয়ে অলঙ্কৃত করা যায়? সার্জেনের হাতের ছুরি আর ঘাতকের হাতের অস্ত্র কি সমতুল্য ও একই অর্থ বহন করে?
এখানে অনেকে সাধু অসাধুর প্রশ্ন তুলে এনে জল আরো ঘোলাটে ক'রে তুলতে সচেষ্ট কিন্তু কেন তাও বুঝি না; কিন্তু বুঝলাম অনেকে অকারণ বালখিল্য সুলভ ক্রুদ্ধ এবং ভারসাম্য হারিয়ে ব্যক্তি আক্রমণে নেবে আসেন!! আমি এখানে সমালোচনাকারীদের হুমায়ুন আজাদের কবিতার মত (তাদের কবিতাও পড়েছি) সেই তাদের কবিতা প্রসঙ্গেও উলঙ্গ ভাবে প্রশ্নগুলি করতে পারতাম কিন্তু করিনি শালীনতা বোধে। তাই নচিকেতার গানের ’শুয়োরের বাচ্চা' ও হুমায়ুন আজাদের কবিতার লাইন "সবচে সুন্দর মেয়ে দুইহাতে টেনে সারারাত চুষবে নষ্টের লিঙ্গ-------" যদি এর পরেও উলঙ্গ না হয়, শালীনতার চাদরে ঢাকা থাকে আর যদি সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ উৎকৃষ্ট সম্পদ হয়, সভ্যতার নিদর্শন হয় আমার কট্টর সমালোচকদের চোখে তবে স্বাগতম সেই সভ্যতা! স্বাগতম সেই উৎকৃষ্ট সম্পদ মানব সভ্যতাকে মহান ক'রে তুলতে!!!!!! আমি শুধু বলতে চেয়েছি ইচ্ছে করলেই আর একটু অন্যভাবে মনের রাগ, ক্ষোভ, বিরক্তি প্রকাশ করা যায় কিনা।।
আর তাই আমি আমার কট্টর সমালোচকদের জন্য চেষ্টা করলাম এমন একটা কবিতা লেখার।
সম্মুখে দাঁড়িয়ে এক মোহময়ী ঘন রাত!
ঘোর রাতের অন্ধকার তার উদ্দাম জমাট যৌবন নিয়ে
আমাকে ডাকে, হাতছানি দেয়, মন অবশ করে!
আর পাশে দন্ডায়মান রাতের নিস্তব্ধতা!
কেন এত অন্ধকার? কিসের অন্ধকার!?
কেন এত নিস্তব্ধতা? কিসের নিস্তব্ধতা?
অন্ধকার চোখের ইশারায় মিলনের আহ্বান জানায়!
আমি অন্ধকারের অন্ধকার যোনিতে ঢুকে যাবো!
আমি অন্ধকারের যোনির গভীরে ঢুকে
মেপে দেখতে চাই যোনির গভীরতা আর
গভীর অন্ধকারের সুডৌল স্তন চুষে চুষে
পান করতে চাই অন্ধকারের অমৃত!
হে অন্ধকার! আমায় জড়িয়ে ধরো
ধরো অক্টোপাশের মত আষ্টেপৃষ্ঠে
আমি তমসার পার অচ্ছেদ্যবর্ণ মহান পুরুষ
আলোর প্রতীকে আবির্ভুত হ'য়ে
তোমার যোনির গভীর থেকে গভীরে
আমার আলোর লিঙ্গ নিয়ে লীন হ'য়ে যেতে চাই!
তুমি আমায় জাপটে ধর হে রূপসী অন্ধকার!
আমার আলোর মাঝে তোমার নিগূঢ় আলিঙ্গন,
তোমার মোহময়ী সুডৌল স্তন আর যোনিদেশ দিয়ে
আমার সর্বাঙ্গ দাও ঢেকে!
আমার আলোর লিঙ্গ ফলাকা বিঁধিয়ে আমি যাতে
গভীর অন্ধকারের যোনির গভীরতা পারি মাপতে
আর পারি নিস্তব্ধতার ভাষা শিখতে!
নিস্তব্ধতা আমায় ডাকে, ডাকে ঘুম ঘুম অলস চোখে
নিস্তব্ধতার লিঙ্গে হাত দিয়ে ডাকি, ঘুম ভাঙাতে চাই!
গভীর এক মরণ ঘুমে লিঙ্গ শিথিল গ্রাস করে নিস্তব্ধতাকে
অন্ধকারের সুডৌল স্পর্শ আর জঙ্ঘার আশ্রয়ে
নেশাগ্রস্থ নিস্তব্ধতা কোমায় আচ্ছন্ন!
আর সেই শ্মশান নিস্তব্ধতার মাঝে খুঁজে নেব
আমি সত্যকে অন্ধকার তোমার আলিঙ্গনে!
(লেখা ১১ই ফেব্রুয়ারী'২০২১)
No comments:
Post a Comment