Powered By Blogger

Thursday, October 5, 2023

কবিতাঃ দান ও প্রতিদান!

ঈশ্বর তো তোমায় সব দিয়েছে অর্থ, মান আর যশ!
তবুও রিপুর রঙে রাঙিয়ে নিয়ে
লাগাম ছাড়া জীবন উড়িয়ে
বৃত্তি-প্রবৃত্তির তীব্র টান তোমায় করেছে বশ!
আর, তুমি দেখাও ক্ষমতার হাতযশ!

দেখাও মানব! দেখাও! 
যতপার দেখাও তোমার কষ!
ঈশ্বর তোমায় কি দেয়নি!? কি পাওনি!?
দিয়েছে বিপুল অর্থ, দিয়েছে ক্ষমতা,
দিয়েছে প্রভাব প্রতিপত্তি!
সব পেয়েও আরও পাওয়ার নেশায়
পাগল তুমি মিথ্যেকে করেছো সাথী,
কপটতার নামাবলী জড়িয়ে গায়ে গোদা পায়ে
মেরেছো, মারছো সত্যের বুকে লাথি ফেলে দিয়ে সত্যি!

ঈশ্বর তোমায় যা দিয়েছে তা কি যাবার সময়
পারবে তুমি নিয়ে যেতে সাথে? হাত মুঠো ক'রে
যা চাইবে ধরতে তা পারবে কি ধরতে হাতে?
সবই ফেলে যেতে হবে চলে একদিন নির্মম রাতে
সকালে, দুপুরে, বিকেলে, সন্ধ্যায় কিম্বা অতি প্রাতে!
যা রেখে যাবে যাবার সময় দেখো ভেবে একবার
তাতে কিসের গন্ধ আছে লেগে? 
কিসের পরশ বয় সে সাথে? আলোর নাকি অন্ধকার!?
ঈশ্বর তোমায় সব দিয়েছে! দিয়েছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা!
ক্ষমতা দিয়েছে! ক্ষমতার পাহাড় দিয়েছে!
তবুও মান, সুখ-শান্তির ঘর কেন ফাঁকা!?
টাকা তো নয় কতকগুলি বান্ডিল বান্ডিল কাগজ!
ক্ষমতা তো নয় অলীক মায়ায় ভরা ফাঁপা মগজ!
দিন শেষে দেখবে তুমি কেউ নেই তোমার পাশে
অর্থ নেই, মান নেই, যশ নেই, নেই তিলমাত্র ক্ষমতা
তোমার শেষের সেদিনের আশেপাশে!
সেদিন তুমি একা!
একা তুমি আগেও ছিলে! আজও একা!
দেখতে তুমি পাওনা তা বোকা চাটুকারের ভিড়ে;
ঈশ্বর যে তোমার বাপের নয় চাকর সে কথা
বিপুল অর্থ আর ক্ষমতার অলীক মোহে গিয়েছিলে ভুলে।

ঈশ্বর তোমায় 
সব দিয়েছে। কি দেয়নি?  তবুও
সারাজীবন ব'য়ে বেড়িয়েছো হয়রানি! কেন!?
আছে আমাপা অর্থ, আছে বাড়ি, গাড়ি,
ঘরে-বাইরে বৈধ-অবৈধ নারী!
রাজনীতি, শিক্ষা, সাহিত্য, ধর্ম ইত্যাদির আঙিনায়
কেউকেটা সেজে অন্যের ভেঙেছো ঘর,
সমাজ, সভ্যতার বর্তমান-ভবিষ্যত করেছো তছনছ
বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ করেছো নড়বড়।
ডঙ্কা বাজিয়ে লঙ্কার গরিমা প্রচারে ফাঁপা অহঙ্কারে
ভেঙেছো নিজেই নিজের মিথ্যে শান্তির ঘর!
ভেবেছিলে তুমি চালাক, চতুর, মহাপন্ডিত!
কিন্তু বাস্তবে ছিলে মূর্খ, বেকুব, আনাড়ি লেন্ডিত!
হাত পেতে নিয়েছো নির্লজ্জের মত শুধু হরিয়ালি সুখ!
বিনিময়ে কি দিয়েছো তাঁরে? দিয়েছো চরম অবহেলে
কৃপণ ভিখারির মত ছোট্ট ভাঙা একটুকরো খুদ!
আর যদি দিয়েও থাকো তাকে দিয়েছো আত্মপ্রতিষ্ঠার মোহে
নিস্বার্থ নয় সে দান; তা কড়ায় গণ্ডায় নিয়েছো বুঝে প্রতিদানে!
বিপদে পড়লেই বোবা ভগবানের পায়ে চড়িয়েছো ডালি,
গলায় চড়িয়েছো মালা, কখনো বা মুক্তি পেতে চড়িয়েছো
বাঁ হাতি রোজগারে উপচে পড়া মণিমুক্তোয় ভরা সোনার থালি!
তবুও শেষের সেদিন দুঃসহ যন্ত্রনায় ভরা অন্ধকার রাত্রি
ফেলে আসা বিষাক্ত নিশ্বাস পচা দুর্গন্ধ বাতাস তোমার যাত্রী
কেউ নেই পাশে জীবন জুড়ে হাহাকার হাহাকার খালি।
জীবননাথকে করে অবহেলা জগন্নাথ গণপতি তিরুপতিকে
চরণপুজায় ভরিয়ে চড়িয়েছো যে মালা জীবননাথের
চলনপুজোকে বাতিল ক'রে সে মালা আসেনি ফিরে
হ'য়ে মোক্ষ মুক্তির হালা। ভেট চড়িয়েছো তুমি
ঈশ্বরকে মনে ক'রে লোভি
যা তুমি করেছো বা ক'রে রেখেছো
এখন শুধু ফিরে পাবার পালা।
(লেখা ৬ই অক্টোবর'২০২১)

No comments:

Post a Comment