Powered By Blogger

Friday, October 27, 2023

প্রবন্ধঃ শুরু হ’ল পথ চলা, পাশাপাশি শুরু হ’ল কথা বলা!

বিদেশের ব্যাঙ্কে কালো টাকা গচ্ছিত রাখা আটজনের নামের তালিকা প্রকাশ করল কেন্দ্র। সরকারের দাবি, একে একে সব নামই প্রকাশ্যে আনা হবে। লোকসভা ভোটের প্রচারপর্বে নরেন্দ্র মোদীর প্রতিশ্রুতি ছিল, ক্ষমতায় এলে বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে আনা হবে। সেই পথে একধাপ এগোল মোদী সরকার। সামনে এল আটটি নাম। কালো টাকা মামলায় ওই আটজনের নাম সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে কেন্দ্র। এর মধ্যে আছেন, ডাবর গ্রুপের প্রাক্তন কার্যনির্বাহী অধিকর্তা প্রদীপ বর্মণ, ব্যবসায়ী পঙ্কজ চিমনলাল লোধিয়া, এবং রাধা এস টিম্বলো সহ টিম্বলো পরিবারের আরও পাঁচ সদস্য।
বিদেশে পাচার হওয়া কালো টাকার পরিমাণ সম্পর্কেই বিতর্ক রয়েছে। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির হিসেবে এর পরিমাণ ১০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। বিজেপি নেতা সুব্র্যহ্মণম স্বামীর দাবি বিদেশে ১২০ লক্ষ কোটি কালো টাকা রয়েছে। বাবা রামদেবের দাবি, কালো টাকার পরিমাণ ৪০০ লক্ষ কোটি টাকা। অন্যদিকে, সরকারের হিসেবেও তারতম্য রয়েছে। ২০০৬-এ কেন্দ্রের প্রকাশিত শ্বেতপত্রে জানানো হয়েছিল, বিদেশে ২৩ হাজার ৩৭৩ কোটি কালো টাকা রয়েছে। ২০১০-এ এর পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৯ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। এখন সুইত্জারল্যান্ডের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, সেদেশে ভারতীয়দের ১৪ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। ২০১২-তে সিবিআই প্রধান জানিয়েছিলেন, বিদেশের ব্যাঙ্কগুলিতে কালো টাকার পরিমাণ ২৯.৫ লক্ষ কোটি টাকা।
বিদেশে পাচার হওয়া কালো টাকার পরিমাণ যাই হোক না কেন সাম্প্রতিক টিভি সাক্ষাৎকারে কালো টাকা সম্পর্কিত এক আলোচনায় বিশেষজ্ঞদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে জানা গেছে কালো টাকা উদ্ধার হ’লে দেশের মোট জনগণের মাথা পিছু এক একজনের ভাগে পড়বে মোট ১৫লক্ষ টাকা! যদি সত্য হয়!!!!!!!!!!!!!
হে ঈশ্বর! একদিন সুন্দর সকালে ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠে যদি দেখে আম চাষার দল তাদের প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা ক’রে জমা পড়েছে তাহ’লে আঁতকে উঠে হার্ট ফেল করবে না-তো চাষার দল! কেননা আম চাষার মনে সুপ্ত এক বিশ্বাস জমা হয়েছে তাহ’লে কি এই জন্যই দেশের প্রতিটি পরিবারকে ব্যাংকিং পরিষেবার আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২৮শে আগস্ট’১৪ নতুন দিল্লিতে শুরু করেন উচ্চাকাঙ্খামূলক ‘প্রধানমন্ত্রী জন-ধন যোজনা’? এইজন্যই কি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তাঁর প্রথম স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রতিটি পরিবারকে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করা ও দূর দুরান্তের দুর্গম এলাকার মানুষকেও ব্যাংক পরিষেবার আওতায় আনার কথা ঘোষণা করেছিলেন!? যদি সত্যই এমন কখনো হয় তাহ’লে এর সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি চাষার শারীরিক সুস্থতার কথাও চিন্তা করতে হবে মোদী সরকারকে যাতে ১৫ লক্ষ টাকার খবরে প্রতিটি হৃদয় যেন অক্ষত থাকে।
যদিও আশায় মরে চাষা তবুও তো আশা নিয়ে, স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে চাষারা! ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখতে দেখতে যদি কেটে যায় আম চাষার জীবন যাক না, ক্ষতি কি!? এমনিতেই তো জ্যান্ত মড়া হ’য়ে বেঁচে আছে আম চাষার দল দেশ জুড়ে, আর স্বপ্ন ফেরী ক’রে যায় বছর বছর রাজনীতির ফেরীওয়ালারা রং বেরঙের স্বপ্ন নিয়ে জ্যান্ত মড়াদের দরজায় দরজায়! হয় সুইসাইড নয় রঙ্গীন স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকা ছাড়া আম চাষারতো আর দ্বিতীয় কোন অপশান নেই! যে কোন একটা তো বেছে নিতে হবে! সুইসাইড তো জীবন থেকে পালিয়ে যাওয়া তাই ১৫ লক্ষ টাকা পাওয়ার স্বপ্ন নিয়েই বেঁচে না হয় থাকুক আম চাষার দল, যদি কোনদিন বেড়ালের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে!
একদিকে যেমন কালো টাকা ফিরিয়ে আনা নিয়ে শুরু হ’ল পথ চলা, পাশাপাশি শুরু হ’ল কথা বলা! তালিকা সামনে আসতে না আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। দেখা যাক বিড়ালের ভাগ্যে কবে শিকে ছেঁড়ে!
ক্রমশ।
(লেখা ২৮শে অক্টোবর'২০১৪)

No comments:

Post a Comment