Powered By Blogger

Wednesday, October 11, 2023

প্রবন্ধঃ বিরোধীতার ছবি ও ফেসবুক।

বাংলাদেশে ভারত বিরোধীতার ছবি প্রায় সময় দেখতে পায় ফেসবুকে। এখন ফেসবুক গঠনমূলক কাজের চেয়ে সম্পর্ক ভাঙার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বেশী! ধর্ম, রাজনীতি, শিক্ষা-সংস্কৃতি, খেলা, পরিবার ইত্যাদি সমস্ত ক্ষেত্রেই সম্পর্ক ভাঙার চক্রান্তের খেলা চলছে আর তার প্রচারের বলিষ্ঠ হাতিয়ার বা মাধ্যম রূপে আবির্ভুত হয়েছে ফেসবুক! ফেসবুক কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে কোনো দায় বা দায়িত্ব আছে ব'লে মনে হয় না! ফেসবুকের এমন একটা ভাব যেন একটা প্ল্যাটফর্ম খুলে দিয়েছি যার যেমন ইচ্ছে, যেমন খুশি তেমন একে অপরের বিরুদ্ধে বমি করতে পারবে তা সে টক-মিষ্টি-ঝাল-তেতো, অশ্লীল, কুশ্লীল যাই-ই হ'ক না কেন! 

রকমই কিছু নোংরা খেলা ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ককে নষ্ট করার জন্য সংগঠিতভাবে হ'য়ে চলেছে! ফেসবুকের মধ্যে দিয়ে সেখানে পাকিস্তানকে এমনভাবে তুলে ধরা হচ্ছে যেন পাকিস্তান একটা উন্নত সভ্য মানবতাবাদী দেশ আর ভারত একটা সাম্রাজ্যবাদী শোষণকারী প্রতিবেশী দেশ! বাংলাদেশের এইভাবে পাকিস্তান প্রেম আর ভারত বিরোধিতা ও ঘৃণার বীজ বপন করা যায় না। ৭১-এর ইতিহাস যারা ভুলে যায় তারা অকৃতজ্ঞ, গদ্দার, বেঈমান!!!!!!!! পাকিস্তানের মহানতা সেদিন বাংলাদেশের মাটিতে কি রূপ নিয়েছিল সম্ভবত সেদিনের প্রজন্ম আজও ভোলেনি। যে ভারত সেদিন আন্তর্জাতিক হুমকি উপেক্ষা ক'রে, আমেরিকার ভারতের উপকূলে ভারতের বিরুদ্ধে সপ্তম নৌবহর পাঠানোর চোখ রাঙানিকে পরোয়া না ক'রে দরিন্দা পাকিস্তান কিলবিসের হাত থেকে বাংলার মা-বোনেদের ইজ্জৎ, আব্রু রক্ষা করার জন্য, ভয়ঙ্কর নর সংহারের হাত থেকে দেশবাসীদের রক্ষা করার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বলিষ্ঠ কঠিন নেতৃত্বে ভারত যে ভূমিকা পালন করেছিল আমার স্থির বিশ্বাস সেই সাহায্য সহযোগিতা ভোলেনি প্রকৃত বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক! হাজার হাজার মা-বোনেদের ইজ্জৎ নষ্ট করার, চরম অত্যাচার করার, জানোয়ারের মত ভোগ করার পর নির্মমভাবে হত্যা করার ভয়ঙ্কর ইতিহাস, ইতিহাসের নায়কদের যারা ভুলে যায় তারা যে ঘর শত্রু দরিন্দা এতে সন্দেহ নাই।

বাংলাদেশের মানুষ এখনও এতটা চার অক্ষর হ'য়ে যায়নি যে অকৃতজ্ঞ, বেঈমান, গদ্দার পাক দালালদের প্রচারে প্রভাবিত হবে, প্রভাবিত হ'য়ে সত্যকে অস্বীকার করবে। বেঈমান, অকৃতজ্ঞ, নেমকহারাম, গদ্দাররা যেন ভুলে না যায় বাঙালির রক্তে এখনও খাঁটি আৰ্য্য রক্ত বইয়ে চলেছে! এই খাঁটি বাঙালী আর্য্য জাতির রক্তে হিন্দু-মুসলমান নেই, নেই নোংরা সাম্প্রদায়িকতার বিষ! এই খাঁটি আর্য্য রক্তে আছে সম্প্রদায় নিরপেক্ষতা, আছে পরস্পর পরস্পরকে ধ'রে রাখার মন্ত্র, আছে সম্প্রদায় নিরপেক্ষ সমাজব্যবস্থায় বাঁচা-বাড়ার দিশা! ভারতের পক্ষ থেকে যদি অন্যায়-অত্যাচার হ'য়ে থাকে তাহ'লে তা তথ্য ও সাক্ষ্য প্রমাণ সহ ভারত সরকারের কাছে অভিযোগ দায়ের হ'ক, আন্দোলন হ'ক কিন্তু মিথ্যা কপট প্রচারে পাকিস্তানের ক্ষমাহীন পাপ ভুলে গিয়ে পাক প্রশংসার দামামা বাজানো আর ঘর শত্রু দুর্যোধনের কাজ সমার্থক!!!!

বাংলাদেশকে মনে রাখতে হবে বাস্তব ও সত্য! ভারতের সঙ্গে বিরোধিতা বাংলাদেশের পক্ষে কখনোই মঙ্গলজনক হবে না! মনে রাখতে হবে প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে বাংলাদেশের জনগণকে যে সেদিন ৭১ সালের ভয়ঙ্করতম দিনগুলিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মত কেউ ছিল না, কোনও দেশ ছিল না সেদিন! ছিল ভারত! ছিল ভারতমাতা সেদিন। ছিল সেদিন নাড়ি ছেঁড়া টানের প্রকৃত অভিব্যক্তি!!!! এই নাড়ি ছেঁড়া টানের যন্ত্রণা বোঝে সে, প্রাণ বোঝে যার! আশা করি বাংলাদেশের দূরদৃষ্টি ও অনুভূতিসম্পন সচেতন মানুষ, প্রকৃত জ্ঞানী মানুষ, দেশভক্ত মানুষ এই নাড়ি ছেঁড়া টানের মর্মার্থ উপলব্ধি করতে পারবেন! (লেখা ১২ই অক্টোবর'২০১৯)

No comments:

Post a Comment