দাদা,
আপনি আমার ভালোবাসা ও ভক্তিপূর্ণ জয়গুরু নেবেন। আপনাকে হঠাৎ খোলা চিঠি লেখার কারণ মানুষ যখন হতাশার তীব্র স্রোতে ভেসে যায় তখন তার সামনে সামান্য একটা খড়কুটোর মত একটা সামান্য হাত বিরাট শক্তি হ'য়ে দেখা দেয়। আর তাই-ই এই চিঠি লেখা।
আপনার কালনা সৎসঙ্গ মন্দির সংক্রান্ত বিষয়ে একটা লেখা পড়লাম। এছাড়া ঠাকুরকে নিয়ে কোনও একজন মানবাকৃতি অদ্ভুত জীবের মেসেঞ্জারে করা উৎকট কথার বাণ, কুৎসা আপনাকে যারপরনাই এতটাই ব্যথিত করেছে যে আপনি মর্মাহত, মানসিকভাবে ক্ষতবিক্ষত। আমিও ঠাকুর সম্পর্কিত লেখাটা পড়ে ব্যাথিত ও যারপরনাই ক্ষুব্ধ। আর এর উত্তর দেবার জন্য আপনার আমার উপর নির্ভরতা, ভরসা আমাকে বিচলিত ক'রে তুলেছে! আপনার লেখা দু'টো বিষয়েই অবগত হ'লাম। আমি দু'টো বিষয়েই আমার মতামত জানাবো। আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে ইনবক্সে আমার মতামত জানাতে পারতাম। কিন্তু তা করলাম না। করলাম না ইচ্ছাকৃতভাবেই। কারণ তা'তে আপনার মধ্যেই মতামত সীমাবদ্ধ থেকে যেত। পাঠককুল জানতে পারতো না। পাঠককুল একতরফা জানবে তা তো হ'তে পারে না। পাঠককুল দেখুক, পড়ুক, জানুক, বুঝুক তারপর না হয় গ্রহণ বা বর্জন করবে। গ্রহণ বর্জন ব্যক্তিগত।
যাই হ'ক, আপনার মন্দির সংক্রান্ত লেখা পড়ে অবাক হ'য়ে গেলাম! যদিও এখন সব গা সওয়া হ'য়ে গেছে। অবাকটবাক এখন হ'ই না আর। সেই যে কোন ছোটোবেলা থেকে এসব দেখছি তবুও অভ্যাসবশতঃ মাঝে মাঝে কুত্তার বাঁকা ল্যাজের মত চরিত্র হ'য়ে যাই। আপনি আপনার অবর্তমানে মন্দিরের গাছ কেটে ফেলার ব্যাপারে যা লিখেছেন সে সম্পর্কে নির্দ্বিধায় বলতে পারি, এর জন্য আপনি দায়ী।
কারণ,
আপনি মন্দির ছেড়ে চলে এলেন কেন!? কেন আপনি সুযোগ দিলেন তাদের!? মন্দির কার? মন্দির কি কারও পৈত্রিক সম্পত্তি!? মন্দির রঙ হওয়ার ছবি তুলে নিয়ে কে দেখিয়েছিল দেওঘরে!? আপনি, না যারা গাছ কেটেছে তারা!? দেওয়ালের ধার ঘেঁষে বড় বড় নিম গাছ রাখা না রাখা সংক্রান্ত সমস্যা নিবেদন কে করেছিল!? আপনি, না গাছ কাটা দলেরা!? কার কাছে নিবেদন করা হয়েছিল? যার কাছে করা হয়েছিল তিনি 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠানের কে? তিনি সব শুনে কি সমাধান দিয়েছিলেন? যখন গাছ রাখা না রাখা সংক্রান্ত প্রশ্ন নিবেদন করা হয়েছিল তখন কি যারা গাছ কেটে ফেলেছে তারা তখন সেইসময়ে দেওঘরে তাঁর সম্মুখে উপস্থিত ছিলেন? নাকি আপনি মন্দির থেকে সরে আসার পর ফোকটে পাওয়ার মত মন্দির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দেওঘরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে দেওঘরের পরামর্শ মতো গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন? গাছ কাটা সংক্রান্ত দেওঘরের নিষেধাজ্ঞা কি তারা জানতেন?
এইসমস্ত প্রশ্নের একটাই উত্তর যদি তাই-ই হ'য়ে থাকে যারা মন্দিরের দায়িত্বে এসেই গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের মত দেওঘরকে উপেক্ষা ক'রে আচার্যদেবের উপস্থিতিকে অমান্য ক'রে ও পূজ্যপাদ বাবাইদাদাকে অপমান, অসম্মান ও অস্বীকার ক'রে, বাবাইদাদার নির্দেশকে বাটিল ক'রে নিজেদের স্বাধীন ইচ্ছেমতো মন্দির পরিচালনা করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তারা আর যাই-ই হ'ক সুকেন্দ্রিক না, তারা বিকেন্দ্রিক। তারা মন্দির দখল ক'রে আত্মপ্রতিষ্ঠার লোভে ইষ্টকে আয়ের উপকরণ বানিয়ে নিয়েছে। আর পথে, ঘাটে শুধু 'জয়গুরু' বলা নিস্ক্রিয় আবেগ জর্জরিত আম সৎসঙ্গী 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতায় আবদ্ধ থেকে ঠাকুর বিরোধী কাজে পরোক্ষে সহযোগীতা করেছে। যারা গাছ কাটার নেতৃত্ব দিয়েছিল, হুকুম দিয়েছিল তারা জানেই না পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবাবাইদাদা গাছ না কাটার কি পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং কি ক'রে মন্দিরের পাঁচিলকে বড় বড় নিম গাছের শেকড়ের চাপে ফাটল হওয়ার হাত থেকে বাঁচানো যায় তার পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং সেইমত যে কাজও হয়েছিল তাও তারা জানেন না!!!!! এই যদি সত্য হয় তাহ'লে একরকম ব্যাপার আর জানা সত্ত্বেও যদি কেটে ফেলে গাছ!? তাহ'লে!? তাহ'লে তো ঘোর দুর্দিন আগামীদিনে মন্দিরে!!!! পূজ্যপাদ বাবাইদাদার Direct observation-এ বিশ্বজুড়ে সৎসঙ্গের সমস্ত কাজকর্ম যে পরিচালিত হয় তা যারা জানে না বা জানলেও 'আপনা গলি মে কুত্তা ভি শের হ্যায়'-এর মতন মানসিক গঠন যাদের তারা করবে মন্দির দেখভাল!? তারা নেবে মন্দির পরিচালনার ও মন্দির রক্ষাণাবেক্ষণের দায়িত্ব!? যারা ঠাকুরের রেত শরীরের জ্যান্ত উপস্থিতিকেই মানে না, স্বীকার করে না, তাঁর নির্দেশকে অমান্য করে তারা মন্দিরের হর্তাকর্তাবিধাতা!? এ তো ঘোর পাপ! এ তো শেষের সেদিনের অশনি সঙ্কেত! আর আম সৎসঙ্গী তাদের মেনে চলছেন!?
আর তারা অর্থাৎ যারা ঠাকুরবাড়িকে না জানিয়ে গাছ কেটেছেন, সিঁড়িতে মার্বেল বসাচ্ছেন তারা যদি গুরুর প্রকৃত শিষ্য হয়, যদি তারা সঠিক হয় তাহ'লে দেওঘরে গিয়ে মাথা উঁচু ক'রে বুক ফুলিয়ে বাবাইদাদার মুখোমুখি হ'য়ে বাপের বেটার মত সত্য উন্মোচনে দুধ কা দুধ আর পানি কা পানি ফয়শালা ক'রে নিয়ে সাধারণ সৎসঙ্গীদের বিভ্রান্তি দূর করুন ও অদীক্ষিতদের হাসাহাসি আর নোংরা সমালোচনার মুখ বন্ধ করুন।
আচ্ছা মনোজদা, আপনি যে লেখা ফেসবুকে লিখেছেন তাতে কালনা সৎসঙ্গীরা প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে না কেন!? কেন তাদের মতামত জানাচ্ছে না!? কালনা মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত গুরুভাইবোনেরা কি ফেসবুক করেন না!? নাকি যার মাথা তার ব্যথা সে বুঝুক গে, এ রকম ব্যাপার!? কেন আপনি সেদিন রুখে দাঁড়াননি!? পূজ্যপাদ বাবাইদাদা গাছ কাটার খবর শুনলে কষ্ট পাবেন ঠিক কথা তার থেকেও বেশী কষ্ট পাবেন আপনি যথাসময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ না ক'রে মন্দির ছেড়ে চলে গেছিলেন শুনে। পূজ্যপাদ বাবাইদাদার আদেশ, নির্দেশ, নিদেশ, সম্মান ইজ্জৎ কেন বুক দিয়ে আগলে রাখেননি!? কেন রক্ষা করেননি!? আপনি জানেন না বাবাইদাদা কে!? "ইষ্ট স্বার্থ প্রতিষ্ঠা প্রাণ গেলেও তুই ছাড়িস না, সব পাপেতেই উৎরে যাবি, ঋষির বাণী ভুলিস না"---এই বাণী আপনি ভুলে গেছেন?
আপনি লিখেছেন, বর্তমানে মন্দিরে কাজ হচ্ছে, মন্দিরের সিঁড়িতে পাথর বসানো হচ্ছে অথচ ঠাকুরবাড়ি জানে না, নির্মাণকাজে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। তা সেই কাজ কি ক'রে হচ্ছে!? কে টাকা পয়সা দিচ্ছে!? টাকাপয়সা কালেকশান হচ্ছে কোন নিয়মে!? এই নির্মাণ কাজ তো অবৈধ!? এই নির্মাণ কাজের আয় ও ব্যায়-এর হিসাব কে রাখবে বা রাখছে!? নির্মাণ কাজে সংগৃহীত অর্থ তো প্রথমে সৎসঙ্গের নিয়ম অনুযায়ী দেওঘরে 'সৎসঙ্গ ব্যাঙ্কে' কালনা মন্দির অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে আর তারপর ঠাকুরবাড়ির প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ ও তত্বাবধানে মন্দির নির্মাণ কাজে অর্থ অনুমোদন হবে এবং প্রতিটি খরচখরচার নিখুঁত পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব রক্ষিত হবে। এমনটা কি নিয়ম মেনে হচ্ছে!? যদি হ'য়ে থাকে আমার কিছু বলার নেই আর যদি না হ'য়ে থাকে তা কেন্দ্র বিরোধী অন্যায় পদক্ষেপ। আপনি তো বলছেন এইসব বিষয়ে কোনও খবর বাবাইদাদার কাছে নেই!!!! এ তো অদ্ভুত নৈরাজ্য!!!!! আপনি কেন তাদের বোঝালেন না যে এটা কেন্দ্র বিরোধী পদক্ষেপ!? কেন আপনি তাদের সকলকে বললেন না চলুন সবাই বাবাইদাদার কাছে যাই!? কেন আপনি বাবাইদাদার গোচরে পুরো বিষয়টা আনলেন না!? নিদেনপক্ষে মাঝিদার থেকে পরামর্শ নিয়ে তাঁর মাধ্যমে বাবাইদাদার কাছে সম্পূর্ণ পরিস্থিতি তুলে ধরতে পারতেন। আপনি কেন দেওঘরে গিয়ে সব জানালেন না!? পূজ্যপাদ বাবাইদাদার কাছে গিয়ে কেন সব জানালেন না!? ঠাকুরবাড়িকে অমান্য করা, আচার্যদেবের উপস্থিতিকে অস্বীকার করা, বাবাইদাদাকে অপমান, অশ্রদ্ধা করা এ তো সবার জন্য অভিশাপ!!!! যারা করছে অন্যায় আর যারা কালনা মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত সৎসঙ্গী হ'য়েও জেনে শুনে মুখ বুঝে আছে ও এদের কাজের প্রতিবাদ করছে না 'গায়ে আঁচ না লাগার জন্য ও ঝুট ঝামেলায় জড়িয়ে যাওয়ার ভয়ে' তাদের উভয়ের ক্ষেত্রেই এ ঘোর অভিশাপ!!!!!
মনোজদা, আপনি চিন্তা করবেন না, দয়াল চিরজাগ্রত! তিনি সব দেখছেন!!!! দয়ালের ভয়াল রূপ অন্যায়কারীরা দেখেনি!!!!! যদি কেউ অন্যায় ক'রে থাকে দয়ালের দুনিয়ায় ও দয়ালের কাজে তাকে এই জীবনেই তার ভয়ংকর খেসারত দিয়ে যেতে হবে।
আর, সব জানার পর যদি বাবাইদাদা আপনাকে দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বলতেন তাহ'লে তা 'রেত শরীরে সুপ্ত থেকে জ্যান্ত তিনি নিরন্তর'-এর অমোঘ বিধান হ'তো! আর তা মাথা পেতে মেনে নিয়ে আপনি সরে যেতেন তখন। সেইটা মঙ্গল হ'তো।
নেগেটিভ চাপে আত্মবিশ্বাসে টান ধরেছিল আপনার। এটা আমাদের মত সরল দুর্বল লোকেদের স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। গাছ যাতে না কাটে তা প্রাণপণে বোঝাবার পরও যদি গাছ কাটার সিদ্ধান্তে অনড় থাকতো গাছ কাটা ভক্তেরা তাহ'লে কেন সাধারণ গুরুভাইদের কাছে সমস্ত বিষয়টা তুলে ধরলেন না!? যদিও সাধারণ গুরুভাইবোন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উদাসীন ও 'ঝুট ঝামেলায় নীরব থেকে, প্রাণ দেব না সঁপে' মানসিকতার। তবুও চেষ্টা ক'রে দেখতে হয়। নাহ'লে কি আর করা। দয়ালের ওপর তখন ছেড়ে দিতে হয়।
মনোজদা, ভালো ভালো লোকেরা উচ্ছেদ হ'য়ে যাচ্ছে সব মন্দির থেকে সুযোগসন্ধানী মানুষের কারণে। এই ট্রাডিশন সমানে চলছে ঠাকুরের সময় থেকে। এই নিয়ে ঠাকুর দুঃখ প্রকাশও করেছিলেন। তাই প্রাণপণে আঁকড়ে ধ'রে থাকুন ঠাকুরকে আর আচার্য পরম্পরাকে আর চলতে থাকুন ঠাকুরের বাণীকে মাথায় রেখে,
"প্রশ্ন তোমার অস্ত যাউক, রহুক যুক্তি সরে
তোমার আজ্ঞা করবো পালন মরণ স্তব্ধ ক'রে।"
দাদা! ভয় পাবেন না। আপনার মাথায় ঠাকুর আছেন, শ্রীশ্রীবড়দা আছেন, আচার্যদেব শ্রীশ্রীদাদা আছেন, আছেন শ্রীশ্রীবাবাইদাদা, আছেন শ্রীশ্রীঅবিনদাদা ও ঠাকুরবাড়ির অন্যান্য দাদারা। দয়ালের ওপর নির্ভর করুন। শালা! ডর কিস বাত কি!? কান পেতে আকাশবাণী শুনুন মনোজদা! দয়াল বলছেন, ডর কিস বাত কি!? ম্যায় হু না!!!!!!!!
আমার অকৃত্রিম ভালোবাসা ও জয়গুরু জানবেন।
ইতি,
প্রবি।
ক্রমশঃ
( ঠাকুরকে কুৎসার বিষয় পরবর্তী চিঠিতে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।)
(১৩ই অক্টোবর' ২০২১)
আপনি মন্দির ছেড়ে চলে এলেন কেন!? কেন আপনি সুযোগ দিলেন তাদের!? মন্দির কার? মন্দির কি কারও পৈত্রিক সম্পত্তি!? মন্দির রঙ হওয়ার ছবি তুলে নিয়ে কে দেখিয়েছিল দেওঘরে!? আপনি, না যারা গাছ কেটেছে তারা!? দেওয়ালের ধার ঘেঁষে বড় বড় নিম গাছ রাখা না রাখা সংক্রান্ত সমস্যা নিবেদন কে করেছিল!? আপনি, না গাছ কাটা দলেরা!? কার কাছে নিবেদন করা হয়েছিল? যার কাছে করা হয়েছিল তিনি 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠানের কে? তিনি সব শুনে কি সমাধান দিয়েছিলেন? যখন গাছ রাখা না রাখা সংক্রান্ত প্রশ্ন নিবেদন করা হয়েছিল তখন কি যারা গাছ কেটে ফেলেছে তারা তখন সেইসময়ে দেওঘরে তাঁর সম্মুখে উপস্থিত ছিলেন? নাকি আপনি মন্দির থেকে সরে আসার পর ফোকটে পাওয়ার মত মন্দির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দেওঘরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে দেওঘরের পরামর্শ মতো গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন? গাছ কাটা সংক্রান্ত দেওঘরের নিষেধাজ্ঞা কি তারা জানতেন?
এইসমস্ত প্রশ্নের একটাই উত্তর যদি তাই-ই হ'য়ে থাকে যারা মন্দিরের দায়িত্বে এসেই গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের মত দেওঘরকে উপেক্ষা ক'রে আচার্যদেবের উপস্থিতিকে অমান্য ক'রে ও পূজ্যপাদ বাবাইদাদাকে অপমান, অসম্মান ও অস্বীকার ক'রে, বাবাইদাদার নির্দেশকে বাটিল ক'রে নিজেদের স্বাধীন ইচ্ছেমতো মন্দির পরিচালনা করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তারা আর যাই-ই হ'ক সুকেন্দ্রিক না, তারা বিকেন্দ্রিক। তারা মন্দির দখল ক'রে আত্মপ্রতিষ্ঠার লোভে ইষ্টকে আয়ের উপকরণ বানিয়ে নিয়েছে। আর পথে, ঘাটে শুধু 'জয়গুরু' বলা নিস্ক্রিয় আবেগ জর্জরিত আম সৎসঙ্গী 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতায় আবদ্ধ থেকে ঠাকুর বিরোধী কাজে পরোক্ষে সহযোগীতা করেছে। যারা গাছ কাটার নেতৃত্ব দিয়েছিল, হুকুম দিয়েছিল তারা জানেই না পূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবাবাইদাদা গাছ না কাটার কি পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং কি ক'রে মন্দিরের পাঁচিলকে বড় বড় নিম গাছের শেকড়ের চাপে ফাটল হওয়ার হাত থেকে বাঁচানো যায় তার পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং সেইমত যে কাজও হয়েছিল তাও তারা জানেন না!!!!! এই যদি সত্য হয় তাহ'লে একরকম ব্যাপার আর জানা সত্ত্বেও যদি কেটে ফেলে গাছ!? তাহ'লে!? তাহ'লে তো ঘোর দুর্দিন আগামীদিনে মন্দিরে!!!! পূজ্যপাদ বাবাইদাদার Direct observation-এ বিশ্বজুড়ে সৎসঙ্গের সমস্ত কাজকর্ম যে পরিচালিত হয় তা যারা জানে না বা জানলেও 'আপনা গলি মে কুত্তা ভি শের হ্যায়'-এর মতন মানসিক গঠন যাদের তারা করবে মন্দির দেখভাল!? তারা নেবে মন্দির পরিচালনার ও মন্দির রক্ষাণাবেক্ষণের দায়িত্ব!? যারা ঠাকুরের রেত শরীরের জ্যান্ত উপস্থিতিকেই মানে না, স্বীকার করে না, তাঁর নির্দেশকে অমান্য করে তারা মন্দিরের হর্তাকর্তাবিধাতা!? এ তো ঘোর পাপ! এ তো শেষের সেদিনের অশনি সঙ্কেত! আর আম সৎসঙ্গী তাদের মেনে চলছেন!?
আর তারা অর্থাৎ যারা ঠাকুরবাড়িকে না জানিয়ে গাছ কেটেছেন, সিঁড়িতে মার্বেল বসাচ্ছেন তারা যদি গুরুর প্রকৃত শিষ্য হয়, যদি তারা সঠিক হয় তাহ'লে দেওঘরে গিয়ে মাথা উঁচু ক'রে বুক ফুলিয়ে বাবাইদাদার মুখোমুখি হ'য়ে বাপের বেটার মত সত্য উন্মোচনে দুধ কা দুধ আর পানি কা পানি ফয়শালা ক'রে নিয়ে সাধারণ সৎসঙ্গীদের বিভ্রান্তি দূর করুন ও অদীক্ষিতদের হাসাহাসি আর নোংরা সমালোচনার মুখ বন্ধ করুন।
আচ্ছা মনোজদা, আপনি যে লেখা ফেসবুকে লিখেছেন তাতে কালনা সৎসঙ্গীরা প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে না কেন!? কেন তাদের মতামত জানাচ্ছে না!? কালনা মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত গুরুভাইবোনেরা কি ফেসবুক করেন না!? নাকি যার মাথা তার ব্যথা সে বুঝুক গে, এ রকম ব্যাপার!? কেন আপনি সেদিন রুখে দাঁড়াননি!? পূজ্যপাদ বাবাইদাদা গাছ কাটার খবর শুনলে কষ্ট পাবেন ঠিক কথা তার থেকেও বেশী কষ্ট পাবেন আপনি যথাসময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ না ক'রে মন্দির ছেড়ে চলে গেছিলেন শুনে। পূজ্যপাদ বাবাইদাদার আদেশ, নির্দেশ, নিদেশ, সম্মান ইজ্জৎ কেন বুক দিয়ে আগলে রাখেননি!? কেন রক্ষা করেননি!? আপনি জানেন না বাবাইদাদা কে!? "ইষ্ট স্বার্থ প্রতিষ্ঠা প্রাণ গেলেও তুই ছাড়িস না, সব পাপেতেই উৎরে যাবি, ঋষির বাণী ভুলিস না"---এই বাণী আপনি ভুলে গেছেন?
আপনি লিখেছেন, বর্তমানে মন্দিরে কাজ হচ্ছে, মন্দিরের সিঁড়িতে পাথর বসানো হচ্ছে অথচ ঠাকুরবাড়ি জানে না, নির্মাণকাজে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। তা সেই কাজ কি ক'রে হচ্ছে!? কে টাকা পয়সা দিচ্ছে!? টাকাপয়সা কালেকশান হচ্ছে কোন নিয়মে!? এই নির্মাণ কাজ তো অবৈধ!? এই নির্মাণ কাজের আয় ও ব্যায়-এর হিসাব কে রাখবে বা রাখছে!? নির্মাণ কাজে সংগৃহীত অর্থ তো প্রথমে সৎসঙ্গের নিয়ম অনুযায়ী দেওঘরে 'সৎসঙ্গ ব্যাঙ্কে' কালনা মন্দির অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে আর তারপর ঠাকুরবাড়ির প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ ও তত্বাবধানে মন্দির নির্মাণ কাজে অর্থ অনুমোদন হবে এবং প্রতিটি খরচখরচার নিখুঁত পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব রক্ষিত হবে। এমনটা কি নিয়ম মেনে হচ্ছে!? যদি হ'য়ে থাকে আমার কিছু বলার নেই আর যদি না হ'য়ে থাকে তা কেন্দ্র বিরোধী অন্যায় পদক্ষেপ। আপনি তো বলছেন এইসব বিষয়ে কোনও খবর বাবাইদাদার কাছে নেই!!!! এ তো অদ্ভুত নৈরাজ্য!!!!! আপনি কেন তাদের বোঝালেন না যে এটা কেন্দ্র বিরোধী পদক্ষেপ!? কেন আপনি তাদের সকলকে বললেন না চলুন সবাই বাবাইদাদার কাছে যাই!? কেন আপনি বাবাইদাদার গোচরে পুরো বিষয়টা আনলেন না!? নিদেনপক্ষে মাঝিদার থেকে পরামর্শ নিয়ে তাঁর মাধ্যমে বাবাইদাদার কাছে সম্পূর্ণ পরিস্থিতি তুলে ধরতে পারতেন। আপনি কেন দেওঘরে গিয়ে সব জানালেন না!? পূজ্যপাদ বাবাইদাদার কাছে গিয়ে কেন সব জানালেন না!? ঠাকুরবাড়িকে অমান্য করা, আচার্যদেবের উপস্থিতিকে অস্বীকার করা, বাবাইদাদাকে অপমান, অশ্রদ্ধা করা এ তো সবার জন্য অভিশাপ!!!! যারা করছে অন্যায় আর যারা কালনা মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত সৎসঙ্গী হ'য়েও জেনে শুনে মুখ বুঝে আছে ও এদের কাজের প্রতিবাদ করছে না 'গায়ে আঁচ না লাগার জন্য ও ঝুট ঝামেলায় জড়িয়ে যাওয়ার ভয়ে' তাদের উভয়ের ক্ষেত্রেই এ ঘোর অভিশাপ!!!!!
মনোজদা, আপনি চিন্তা করবেন না, দয়াল চিরজাগ্রত! তিনি সব দেখছেন!!!! দয়ালের ভয়াল রূপ অন্যায়কারীরা দেখেনি!!!!! যদি কেউ অন্যায় ক'রে থাকে দয়ালের দুনিয়ায় ও দয়ালের কাজে তাকে এই জীবনেই তার ভয়ংকর খেসারত দিয়ে যেতে হবে।
আর, সব জানার পর যদি বাবাইদাদা আপনাকে দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বলতেন তাহ'লে তা 'রেত শরীরে সুপ্ত থেকে জ্যান্ত তিনি নিরন্তর'-এর অমোঘ বিধান হ'তো! আর তা মাথা পেতে মেনে নিয়ে আপনি সরে যেতেন তখন। সেইটা মঙ্গল হ'তো।
নেগেটিভ চাপে আত্মবিশ্বাসে টান ধরেছিল আপনার। এটা আমাদের মত সরল দুর্বল লোকেদের স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। গাছ যাতে না কাটে তা প্রাণপণে বোঝাবার পরও যদি গাছ কাটার সিদ্ধান্তে অনড় থাকতো গাছ কাটা ভক্তেরা তাহ'লে কেন সাধারণ গুরুভাইদের কাছে সমস্ত বিষয়টা তুলে ধরলেন না!? যদিও সাধারণ গুরুভাইবোন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উদাসীন ও 'ঝুট ঝামেলায় নীরব থেকে, প্রাণ দেব না সঁপে' মানসিকতার। তবুও চেষ্টা ক'রে দেখতে হয়। নাহ'লে কি আর করা। দয়ালের ওপর তখন ছেড়ে দিতে হয়।
মনোজদা, ভালো ভালো লোকেরা উচ্ছেদ হ'য়ে যাচ্ছে সব মন্দির থেকে সুযোগসন্ধানী মানুষের কারণে। এই ট্রাডিশন সমানে চলছে ঠাকুরের সময় থেকে। এই নিয়ে ঠাকুর দুঃখ প্রকাশও করেছিলেন। তাই প্রাণপণে আঁকড়ে ধ'রে থাকুন ঠাকুরকে আর আচার্য পরম্পরাকে আর চলতে থাকুন ঠাকুরের বাণীকে মাথায় রেখে,
"প্রশ্ন তোমার অস্ত যাউক, রহুক যুক্তি সরে
তোমার আজ্ঞা করবো পালন মরণ স্তব্ধ ক'রে।"
দাদা! ভয় পাবেন না। আপনার মাথায় ঠাকুর আছেন, শ্রীশ্রীবড়দা আছেন, আচার্যদেব শ্রীশ্রীদাদা আছেন, আছেন শ্রীশ্রীবাবাইদাদা, আছেন শ্রীশ্রীঅবিনদাদা ও ঠাকুরবাড়ির অন্যান্য দাদারা। দয়ালের ওপর নির্ভর করুন। শালা! ডর কিস বাত কি!? কান পেতে আকাশবাণী শুনুন মনোজদা! দয়াল বলছেন, ডর কিস বাত কি!? ম্যায় হু না!!!!!!!!
আমার অকৃত্রিম ভালোবাসা ও জয়গুরু জানবেন।
ইতি,
প্রবি।
ক্রমশঃ
( ঠাকুরকে কুৎসার বিষয় পরবর্তী চিঠিতে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।)
(১৩ই অক্টোবর' ২০২১)
No comments:
Post a Comment