Powered By Blogger

Friday, October 31, 2025

কবিকে জিজ্ঞাস্য।

কবিকে প্রবির জিজ্ঞাস্য,

কেন সর্বনাশের টের পাইনি? এই সর্বনাশের জন্য কে দায়ী? আমরা কি নিজেদের দায় এড়াতে পারি? আমরা কি 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা'-র মতো নিম্ন মানসিকতার মানুষ? বানরলাঠিকে কৃষ্ণচূড়া ও খেঁকি কুত্তাকে অ্যালসেশিয়ান ভাবা এবং ঝর্ণা কলমের ডট পেন, বড়বাবুর হেড অ্যাসিস্ট্যান্ট ও বাবার বাপি হ'য়ে যাওয়া সময়মতো টের না পাওয়ার জন্য কে দায়ী? বানরলাঠি? খেঁকি কুত্তা? ডট পেন কি সময়ের দাবী? বড়বাবুর হেড অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে অবনমনের জন্য বড় বাবু দায়ী নাকি অফিস ম্যানেজমেন্ট দায়ী? বাবার বাপী হ'য়ে যাওয়া কি অপসংস্কৃতি নাকি অতি ভালোবাসার বর্হিপ্রকাশ? কোনটা? এই চিনতে না পারার ও সময়ের দাবীকে বুঝতে না পারার জন্য যে দূরদৃষ্টির অভাব এবং বড়বাবু ও বাবার বর্তমান স্ট্যাটাস থেকে অবনমন হওয়ার কারণ ধরতে না পারার জন্য প্রকৃত কে বা কারা দায়ী???? এই এতবড় সর্বনাশের কারিগর কে? কাঠগড়ায় কাকে দাঁড় করাতে চাইছেন কবি??


বিচিত্রা ১৯৫

সবাইকে চলে যেতে হয় একদিন সত্য কিন্তু ছিন্ন তারের মত জীবন কাটিয়ে তা সে যতই মহান জীবন হ'ক না কেন! কেন এমন হয়!?

গাড়ি চালাতে জানি না অথচ স্টিয়ারিং ধরবোই তাই নিজের, দশের ও দেশের এই ল্যাংড়া-খোঁড়া-অন্ধ অবস্থা!
( লেখা ৩১শে অক্টোবর'২০২০)

যদি বাঁচতে চাও তো ইগো ব'লে কিছু রেখো না। মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় সমস্যা বা ডিজিজ হ'লো ইগো! রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও আনন্দে থাকতে হ'লে ইগো সমস্যা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখো। জীবনে ইগো নেই তো জীবনে কোনও সমস্যা নেই, রোগ নেই, অভাব নেই। আছে আনন্দ, আনন্দ আর আনন্দ!

ভয় কি?
জীবন্ত ঈশ্বর পরমপিতা শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রকে বুকে জড়িয়ে ধরো, কোলবালিশের মত দু'হাতে জাপ্টে জড়িয়ে ধরো, তোমার প্রিয় ভালোবাসার মানুষকে যেমন জড়িয়ে ধরো তেমনভাবে দয়ালকে বুকে জড়িয়ে ধরো আর দেখো, আস্তে আস্তে জীবনের সব ফ্যাকাশে রঙ পাল্টে গিয়ে জীবন রঙিন হ'য়ে উঠবে; উঠবেই কি উঠবে। একবার বিশ্বাস করো, নির্ভর করো তার উপর। দের হ্যায় লেকিন অন্ধেরা নেহি হ্যায়! 
( লেখা ৩১শে অক্টোবর'২০২১)

যে ক'রে মিথ্যার চাষ, সত্য ক'রে তার সর্বনাশ।
আর এক চিরন্তন সত্য।
( লেখা ৩১শে অক্টোবর'২০২২)



























Thursday, October 30, 2025

কবিতা/গানঃ কালো মেঘে ঢাকা আকাশ আজ-----

কালো মেঘে ঢাকা আকাশ আজ 
কোথায় তুমি যাবে গো?
ওরে মন দিয়ে মন ফেরাস না
আঁধার রাতে ভুল করিস না
আঁধার রাতে আর ভুল করিস না।

খেয়ালি মনের মত রিপুর বাহারে
ভুলো মনের ভুলের জালে ভুলের পাহাড়ে
ভুলের পাহাড়ে, ভুলের পাহাড়ে
খেয়ালি মনের মত রিপুর বাহারে
ভুলো মনের ভুলের জালে ভুলের পাহাড়ে
ভুলের পাহাড়ে, ভুলের পাহাড়ে

ও তোর জীবন মরু
প্রভুর ছোঁয়ায় সবুজ হ'য়ে যাবে গো
আঁধার পানে আর মুখ ফেরাস না।
ওরে মন দিয়ে মন ফেরাস না
ও কালো মেঘে ঢাকা আকাশ আজ 
কোথায় তুমি যাবে গো?
মন দিয়ে মন ফেরাস না
আঁধার রাতে ভুল করিস না
আঁধার রাতে ভুল করিস না।

শ্রাবণ মাসে চাঁদের আলো
সবুজ চুড়ির চল,
ভাদ্র মাসে প্রভুর হাসি
মেটায় হলাহল।
মেটায় হলাহল, মেটায় হলাহল।
শ্রাবণ মাসে চাঁদের আলো
সবুজ চুড়ির চল
ভাদ্র মাসে প্রভুর হাসি
মেটায় হলাহল।
মেটায় হলাহল, মেটায় হলাহল।

ও তোর পরাণখানা...........
ও তোর পরাণখানা
নেচেনেচে ঐ প্রভুর পায়ে দে গো
কারো দিকে ফিরে তাকাস না,
ওরে মন দিয়ে মন ফেরাস না,
আঁধার রাতে আর ভুল করিস না।।

কালো মেঘে ঢাকা আকাশ আজ 
কোথায় তুমি যাবে গো?
মন দিয়ে মন ফেরাস না,
আঁধার রাতে আর ভুল করিস না
আঁধার রাতে ভুল করিস না।।
( লেখা ২০শে সেপ্টেম্বর'২০২৫)
(আটটা বাজে দেরী করিস না গানের সুরে)

Wednesday, October 29, 2025

বাংলাদেশে কোন ছবিটা বা খবরটা সঠিক?

বাংলাদেশে সম্প্রতি শাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তনের যে ছাত্র ঝড় ব'য়ে গেল সেই ঝড়ে লন্ডভন্ড দেশে ভারতের রয়েল এনফিল্ড বাইক লঞ্চ হয়েছে। এই ঝড়ে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের যে অগ্নিমূল্য, হাত দিলেই ফোসকা পড়ছে, চাহিদার তুলনায় যোগানের ভয়ংকর অভাব ইত্যাদি ব'লে যে প্রচার চলছে প্রতিনিয়ত। 'বাংলাদেশের সবজি বাজার উত্তপ্ত। সাধারণ মানুষ ফাঁসি লাগাতে চাইছে। সবজি যেন এখন বিলাসী। অস্থির রাজধানীর সবজি বাজার, চলছে দাম বাড়ানোর প্রতিযোগীতা' ইত্যাদি নানা হেডলাইনে ঢেকে আছে বাংলাদেশের সবজী বাজার।

আর সবজী বাজারের এই অগ্নিমূল্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের ইয়ং জেনারেশন সম্প্রতি ভারতের রয়েল এনফিল্ড বাইক বাংলাদেশের ঢাকায় শোরুম খোলার ঘোষণা হ'তেই কেনার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে ডিলার পয়েন্টে কে আগে বুক করবে।

ভারতীয় মোটরসাইকেল প্রস্ততকারক সংস্থা রয়্যাল এনফিল্ড বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামে একটি উৎপাদন ইউনিট এবং ঢাকায় একটি শোরুম শুরু করার ঘোষণা করেছিল।
কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামে 7.83 একর জুড়ে বিস্তৃত এই প্ল্যান্টটি বার্ষিক 30,000 এর বেশি মোটরসাইকেল উৎপাদন করবে। হান্টার 350, উল্কা 350, ক্লাসিক 350 এবং বুলেট 350 এই চারটি মডেলের মোটর সাইকেল বাংলাদেশে উৎপাদন হবে।

আর, ভারতের রয়্যাল এনফিল্ডের প্রথম শোরুম এবং দেশের একমাত্র শোরুম হবে বাংলাদেশের ঢাকায়। 7,866 বর্গফুট জুড়ে বিস্তৃত শোরুমটি মোটরসাইকেল বিক্রি করবে এবং গ্রাহকদের সহায়তা করবে।

সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে অবস্থিত রয়্যাল এনফিল্ডের ফ্ল্যাগশিপ শোরুমে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশের বাজারে মোটরসাইকেলগুলো লঞ্চ করা হয়।

বাংলাদেশে রয়্যাল এনফিল্ডের একমাত্র প্রস্তুতকারক ও পরিবেশক ইফাদ মোটরস লিমিটেড। বাংলাদেশের বাজারের জন্য ৩৫০ সিসির হান্টার, ক্লাসিক, বুলেট ও মিটিয়র মডেলের মোটরসাইকেল লঞ্চ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে; সঙ্গে বেড়ে চলেছে নিত্য প্রয়োজনী পণ্যের দাম। পণ্যমূল্যের দাম এখন সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। ডিম থেকে কাঁচামরিচ, ভারত থেকে আমদানি করে সামাল দিতে হচ্ছে। কিন্তু তাতেও সুফল মিলছে না। মজুতদাররা রাতারাতি দলবদল করে সব জিনিসেরই দাম বাড়িয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এরই মধ্যে আড়াই মাস অতিক্রম করেছে। দেশজুড়ে ভয়ংকর অস্থিরতা। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আগুন হ'য়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, ১০০০ টাকার নোট নিয়ে গেলে সবজির বাজারে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা চলে যাচ্ছে শুধু কাঁচা বাজারে। তাহলে বাকি বাজার কি দিয়ে করা যাবে? এই সময় সবজির বাজারে এত দাম হওয়ার কথা নয়। ঐ ব্যাগ ভর্তি টাকা নিয়ে বাজারে গিয়ে পকেটে করে সবজি আনার মতো সাধারণ মানুষের অবস্থা। সাধারণ মানুষ চরম বিপর্যয়ে।
এখন প্রশ্ন জাগে মনে, এই যে হাসিনা সরকারের পতন হ'লো, এই আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে ভারত বিরোধী আন্দোলন হ'লো, বাংলাদেশের আপামর ইয়ং ছাত্র ও যুবদের মনে যে তীব্র ভারত বিরোধী ঘৃণা জন্মানো হ'লো, ভারতের সমস্ত রকম সম্পদ বয়কটের ডাক দেওয়া হ'লো, রবীন্দ্রনাথ যেহেতু ভারতীয় ও হিন্দু সেইহেতু তাঁর লেখা ভারতীয় জাতীয় সঙ্গীত বর্জনের ডাক দেওয়া হ'লো, রবীন্দ্রনাথের মূর্তি ভাঙ্গা হ'লো, ভারতের সেভেন সিস্টার্সকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দেওয়া হ'লো, ভারত শত্রু দেশ ব'লে বাংলাদেশীদের মনে গেঁথে দেওয়া হ'লো, ভারতের প্রধানমন্ত্রী আর বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে নোংরা অসভ্য জংলী সংস্কৃতির রগরগে প্রচার হ'লো, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা যেহেতু হিন্দু অতএব তারা ভারতীয় এই মানসিকতায় তাদের ওপর অত্যাচার শুরু হ'লো, হিন্দু মন্দির, দেবদেবী ভাঙচুর হ'লো, বাংলাদেশ থেকে বিতাড়নের ভয় দেখানো শুরু হ'লো, কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম দেওয়া হ'লো হিন্দুদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার, হুমকি দিলেন একজন মৌলানা। এরকম নানা অমানবিক যন্ত্রণাদায়ক ঘটনা ঘটানো হ'লো পরিকল্পিতভাবে এবং ঘটে চলেছে প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষ মদতে।

আবার পর মুহুর্তে ভারতের পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। ভারত থেকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পণ্য আমদানি হয়। ভারত দেশটি থেকে যেসব খাদ্য পণ্য বাংলাদেশে আমদানি হয় তার মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজ, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, সূর্যমুখী ও সয়াবিন তেলসহ ভোজ্য-তেল, চিনি, মধু, কোমল পানীয়, চিপস, বিস্কুট, চকলেট ও ক্যান্ডি জাতীয় খাবার।
আর, এবার বাংলাদেশের ইয়ং জেনারেশন সম্প্রতি ভারতের রয়েল এনফিল্ড বাইক বাংলাদেশের ঢাকায় শোরুম খোলার ঘোষণা হ'তেই আনন্দে উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছে। কেনার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে ডিলার পয়েন্টে কে আগে বুক করবে। দাম ৫ লাখ থেকে ৬ লাখ হবে।
এই যে বৈষম্য বিরোধী তীব্র ছাত্র আন্দোলন হ'লো, যুব আন্দোলন হ'লো, দেশের স্থিরতা নষ্ট হ'লো, প্রভূত জাতীয় সম্পদ নষ্ট হ'লো, আবু সাঈদের মতো মানব সম্পদ ক্ষয় হ'লো, একটা উন্নয়ন মুখী রাষ্ট্রের গতি রুদ্ধ হ'লো, ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষতি হ'লো, দুই দেশের সম্পর্ক নষ্ট হ'লো। 
এখন প্রশ্ন জাগে মনে,
বাংলাদেশে যারা ভারতের তৈরী রয়েল এনফিল্ড বাইক কিনবে তারা কারা? তারা 'ভারতীয় পণ্য বয়কট করো' শ্লোগান ও দাবীর পক্ষে অবস্থানকারী যুব সমাজ? তারা কি শত্রু দেশ ভারত বিরোধী বাংলাদেশী? তারা কোন বাজার থেকে সবজি কেনে? এই যুব সমাজের গায়ে কি বর্তমান বাংলাদেশের ভয়ংকর দামের আগুনে তপ্ত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ফোস্কা পড়ে না? তাহ'লে সাধারণ মানুষ, গরীব মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ভয়ংকর অগ্নিমূল্য আর ৫-৬ লাখ টাকা দিয়ে বাইক কেনার মানুষের বিলাসিতার ক্ষেত্রে কোনও বৈষম্য নেই? এখানে কোনও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন হয় না? যে ছাত্র, যুব সমাজ তীব্র উগ্র ভারত বিরোধিতা করেছিল, ভারতকে শ্ত্রু দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল, ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছিলো সেই দেশের সেই ছাত্র, যুব সমাজ ভারতীয় পণ্য বিভিন্ন মডেলের বাইক কেনার ক্ষেত্রে এত উল্লসিত, এত আনন্দিত? এখানে একই দেশের ছাত্র, যুব সমাজের চরিত্রের মধ্যে মানসিকতার বৈষম্য চোখে পড়ে না, বিশেষ ভাবে চিহ্নিত হয় না? তাহ'লে এক্ষেত্রেও বৈষম্য নেই? তাহ'লে বৈষম্য কোথায়? বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনটা তাহ'লে কিসের ওপর ভিত্তি ক'রে? সবটাই কি ধোঁকাবাজি? সবটাই কি কপটতা? সবটাই কি ধান্দাবাজী আন্দোলন ছিল? ছয় সমন্বয়ক তো ছাত্র ও যুবক। আর, তাদের অনুগামীরাও ছাত্র ও যুব সম্প্রদায়। তাহ'লে ঐ ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা দিয়ে ভারতীয় পণ্য রয়েল এনফিল্ড কেনার ছাত্র যুবকদের মানসিকতা সম্পর্কে ছয় যুবক ছাত্র সমন্বয়কদের কি বক্তব্য? তাদের অনুগামী হাজার হাজার বিপ্লবী ছাত্র যুবকদেরই বা এই বৈষম্য সম্পর্কে কি বক্তব্য?

সোশ্যাল মিডিয়ায় মূল্যবৃদ্ধি, ক্রেতাদের নাভিশ্বাস, ভারত বিরোধিতা, বাইক লঞ্চ, বাইক ক্রেতাদের উল্লাস ইত্যাদি কোন ছবিটা বা খবরটা সঠিক? বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলনকারী ছয় সমন্বয়ক, লক্ষ লক্ষ ছাত্র, যুব সমর্থক, জনগণ, দেশের উপদেষ্টামন্ডলী ও প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া মহাজ্ঞানী ডাঃ ইউনুস আপনারা কি এর মধ্যে কোনও বৈষম্য খুঁজে পান?
( লেখা ২৯শে অক্টোবর'২০২৪)।


জওহরলাল নেহরু।

কবিতা সরকার, ফেশবূকে আপনার লেখাটা সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ! তাই লেখাটা শেয়ার করলাম ও আমার মনের মধ্যে বহুদিনের চাপা থাকা কয়েকটা মনের কথা লিখলাম।

আপনার কথাটা ঠিকই। কোনও ভুল নেই। অবশ্যই তিনি অসাধারণ বক্তা ছিলেন, ছিলেন পন্ডিত। আর তাই তাঁর নামের আগে 'পণ্ডিত' বিশেষণটি ব্যবহৃত হয় এখনও। তাঁর অগাধ পান্ডিত্যের পরিচয় তিনি রেখে গেছেন তাঁর "Letters from a Father to his Daughter, The Discovery of India, Glimpses of World History, Mahatma Gandhi" ইত্যাদি বিভিন্ন রচনার ওপর! এটাও সত্য বিজ্ঞানের প্রতি তাঁর অপরিসীম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার জন্য তাঁকে 'Jawaharlal Nehru — Builder of Modern Science and Promoter of Scientific Temper' আখ্যাও দেওয়া হয়েছে! আধুনিক ভারত নির্মাণের জন্য তিনি সচেষ্টও হয়েছিলেন এ কথাও সত্যি এবং এই সমস্ত কিছুর চেয়েও বড় সত্যি তাঁর বাগ্মিতা, জ্ঞান, পান্ডিত্য, বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা ও আধুনিক ভারত নির্মাণের স্বপ্ন দিয়ে তৈরী আর স্মৃতি দিয়ে ঘেরা এক খন্ড ভারত 'ভুমি'-র সঙ্গে তিনি রেখে গেছেন 'নেতাজী' সম্পর্কিত এক বিতর্কিত বিষয় সহ এক গভীর দগদগে ভয়ংকর দেশভাগের ঘা যা আজ স্বাধীনতার ৬০বছর পরও প্রজন্মের পর প্রজন্ম প্রশ্ন তোলে, ‘এগিয়ে চলার পথে শুরুতেই এমন এক মহাজ্ঞানী মহানজনের হাত ধরার পরও কেন অখন্ড ভারতের মানবজাতির আজ এই করুণ অবস্থা? আর কতদিন ভোগ করবে এই ভাগের বিষের জ্বালা অখন্ড ভারতের টুকরো টুকরো হ'য়ে যাওয়া দেশের সাধারণ নিরীহ মানুষ !? আর কতদিন চলবে এই করুণ দেশভাগের রক্তাক্ত অস্থিরতা !? আর কতদিন চলবে এই সাম্প্রদায়িক হানাহানি, ধর্মীয় উন্মত্ততা!?’ আমরা তো ভারত, পাকিস্থান, বাংলাদেশ মিলে সব এক ছিলাম! কত আক্রমণ তো এই অখন্ড ভারতের বুকে হয়েছে, তারপরেও ভারত অখন্ড থেকেছে! কত রক্ত মিলেমিশে এক হয়ে ফুলের মালা হ'য়ে ঝরে পড়েছে অখন্ড ভারতবর্ষের গলায়! স্বাধীনতার সময়ের এত এত মহাজ্ঞানী, মহান পন্ডিত, মহান আত্মাদের সম্মিলিত অবস্থান সত্ত্বেও কেন এমন হ'ল যে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ, শ্রেষ্ট, সর্বোৎকৃষ্ট, প্রধান, চূড়ান্ত 'আর্য্য ভারতবর্ষ'-কে টুকরো টুকরো ক'রে দিয়ে গেল ব্রিটিশের ঘৃণ্য নীতি 'Divide & Rule' !!!!???? কি কারণে এমন হ'ল?????? কে দেবে এর উত্তর?????? ভারতবর্ষকে টুকরো টুকরো ল্যাংড়া খোঁড়া ক'রে দিয়ে গেল যে ব্রিটিশ তাদের নোংরা নীতি দিয়ে তাদেরও আজ ল্যাংড়া খোঁড়া হ'তে আর যদিও বিশেষ কিছু বাকি নেই! কিন্তু আমার অখন্ড ভারতবর্ষের আজকের এই করুন অবস্থার দায় কার? এই প্রশ্ন কি উঠবে না? ওঠা কি অপরাধ, অন্যায়? আজ অখন্ড ভারতবর্ষের খন্ড খন্ড ভুমি ভারত, পাকিস্থান, বাংলাদেশের ঘরে ঘরে পরস্পরের বিরুদ্ধে পরস্পরের যে শ্ত্রুতার ডিম ফুটছে, ফুটে চলেছে অহরহ সেই দায় কার !? আমরা তো আম চাষার দল, আমরা না হয় আগাম বুঝতে পারিনা, দেখতে পারি না, চিনতে পারিনা, ধরতে পারিনা আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মুর্তিমান বিপদকে, ভবিষ্যৎ শয়তানকে!!! কিন্তু সেই মহাজ্ঞানী মহাজন যাদের হাত ধরে তামাম অখন্ড ভারতের আম চাষার দল বাঁচতে চেয়েছিল, ভরসা করেছিল এই বলে 'বাড়িয়ে দাও তোমার, তোমাদের হাত , আমরা তোমার, তোমাদের হাত ধরে বাঁচতে চাই-ই", বেঁচেছিল কি বা বেঁচে আছে কি মহাজ্ঞানীদের হাত ধ’রে চলা অখন্ড ভারতের ও খন্ড খন্ড ভারত, পাকিস্থান, বাংলাদেশ ভুমির আম চাষার দল????? দেশের সেই মহাজ্ঞানী, মহাপন্ডিত, মহান আত্মা, মহান দেশপ্রেমিকরা চিনতে, বুঝতে, জানতে, ধরতে পেরেছিল কি সেই দেশভাগের ভবিষ্যৎ বিপদকে, মুর্তিমান রক্তচোষা শয়তান বাদুড়কে???? কেন পারেনি? না-কি চিনতে, ধরতে, জানতে, বুঝতে চায়নি? কোনটা? যদি না পেরে থাকে, নাই পারতে পারে, তাহ'লে সেই ভয়ঙ্কর বিপদ সম্পর্কে তো আগাম সাবধান ক'রে দিয়েছিল The greatest phenomenon of the world, The living Ideal, The great seer Sri Sri Thakur Anukul Chandra. তাঁর সৃষ্ট Satsang-এর পক্ষ থেকে সেই সময়ের দেশোদ্ধারের মহান যোদ্ধাদের, মহান জ্ঞানীদের কাছে পাঠানো তাঁর message-এ কি ছিল? শ্রী শ্রী ঠাকুরের পক্ষ থেকে সৎসঙ্গের তৎকালীন সম্পাদক নিজের হাতে পৌঁছে দিয়েছিলেন দেশের প্রধান নেতাদের হাতে সেই message! দ্রষ্টাপুরুষের সেই সাবধানবাণী আজ পড়লে বিস্ময়ে চমকে উঠতে হয়, শিউরে ওঠে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ! এক লাইনের এক সংক্ষিপ্ত বাণী, "DIVIDING COMPROMISE IS THE HATCH OF THE ANIMOSITY' (ভাগ ক’রে সমাধান করা মানে তা’ দিয়ে শত্রুতার ডিম ফোটানো!)

মহাজ্ঞানী মহাজনদের মত সমজদারোকে লিয়ে এই ঈশারা কি কাফি ছিল না!! এ ছাড়াও শ্রী শ্রী ঠাকুর ব্রিটিশদের এই 'Divide & Rule' ঘৃণ্য নীতিকে মোকাবিলা করার জন্য সেই সময় সাম্প্রদায়িক বসতি প্রতিস্থাপনের যে মোক্ষম অস্ত্রের সন্ধান দিয়েছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে এবং দেশের নেতৃবৃন্দের কাছে , দুর্ভাগ্যের বিষয় সেই সময় দেশ স্বাধীনের উন্মত্ত নেশায় 'Divide & Rule' কে মোকাবিলা করার জন্য দ্রষ্টাপুরুষ শ্রীশ্রীঠাকুরের সেই মোক্ষম অস্ত্রকে সেই মহাজ্ঞানী মহাজনদের মনে হয়েছিল ভোঁতা ফালতু অস্ত্র ও দ্রষ্টাপুরুষের ঐ মেসেজকে মনে হয়েছিল Baseless message!!!!!!!!!!!!!!! কেন? কেন মহাজ্ঞানী মহাজনরা চিনতে পারলে না দ্রষ্টাপুরুষকে!? অজ্ঞানতা না-কি ইচ্ছাকৃত!?
পরিণতি আজকের ভারত, পাকিস্থান, বাংলাদেশ আর রক্তাক্ত ভুমি!!!!!!!!!!!!! শত্রুতার ডিম ফুটে চলেছে নিরন্তর!!!! ঝাঁকে ঝাঁকে বেরিয়ে আসছে শত্রতার ডিম ফুটে রক্ত বীজের ঝাড় রক্ত গঙ্গা বইয়ে দেবে বলে!!!! আরও কত ভাগ ও রক্তপাতের মধ্যে দিয়ে কোথায় এর শেষ কেউ জানে না!!!!
এর পরেও বলব আমরা মহাজ্ঞানী, মহান আত্মা!!!!!!
( লেখা ২৯শে অক্টোবর'২০১৪)

( নিচের অংশটি সংযোজন আজ)
তাই কবিতাজী, আমাদের অসাধারণ বক্তা চাই না। আমরা অসাধারণ দেশভক্ত চাই। আমরা তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা অগাধ জ্ঞান চাই না, চাই সেই অগাধ জ্ঞানের করার স্রোতের মধ্যে দিয়ে বাস্তব প্রতিফলন। আমরা অতি চমৎকার লেখনি চাই না, চাই সেই অতি সুন্দর লেখনীর প্রতিফলন চরিত্রে, বিজ্ঞানের প্রতি শুধু মৌখিক শ্রদ্ধা দিয়ে আমাদের ভারতকে জগত সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লাভ করানো যাবে না, চাই সেই বিজ্ঞানের দিক দিয়ে ভারতকে শক্তিশালী ক'রে তুলতে বিজ্ঞানীদের সমস্ত রকমভাবে সাহায্য যাতে ভারত বিজ্ঞানের সাহায্যে বিশ্বের শীর্ষে পৌঁছে যেতে পারে। 

পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র তাই বলেছিলেন, "কি বিজ্ঞানের দিক দিয়ে, কি যন্ত্রপাতির দিক দিয়ে----কোন দিক দিয়ে আমাদের দেশের খাঁকতি থাকে তা' আমার ভালো লাগে না।"
( লেখা ২৯শে অক্টোবর'২০১৪)

Kabita Sarkar

October 28, 2014 ·

জহরলাল নেহেরুকে মুছে ফেলা অত সহজ নয়। তিনি ছিলেন অসাধারণ বক্তা। ভারতবর্ষের ইতিহাস ও সমাজ সর্ম্পকে ছিল তার অগাধ জ্ঞান। তার লেখনি অতি চমৎকার। গণতন্ত্র প্রিয় এই মানুষটির বিজ্ঞানের প্রতি ছিল অপরিসীম শ্রদ্ধা। স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি আধুনিক ভারত নির্মাণে সচেষ্ট হয়েছিলেন।



উপলব্ধি।

একটা জিনিস আমাদের মাথায় রাখতে হবে আমরা যেন প্রসঙ্গ থেকে সরে না যায়। ঠাকুরের প্রত্যেকটা বাণীর আলাদা আলাদা গ-ভী-র অর্থপূর্ণ মাহাত্ম্য আছে। তাই যখন যেখানে যে বাণী আলোচ্য বিষয় সেখানে আলোচনার পরিবেশে সেই বাণীর গভীর আলোচনা না ক'রে, সেই বাণীর গভীরতার ছোঁয়া না পেয়েই সেই বাণীকে নামমাত্র ছুঁয়েই যদি আমরা প্রসঙ্গ থেকে অন্য প্রসঙ্গে স'রে যায়, অন্য প্রসঙ্গে আলোচনাকে নিয়ে যায়, আলোকপাত করি, আলোচ্য বিষয়কে গুরুত্ব না দিই তাহ'লে সেই বাণীকে তাচ্ছিল্য করার সাথে সাথে ঠাকুরকেও তাচ্ছিল্য করা হয় এবং আলোচনার পরিবেশ নষ্ট হয়, যোগ্য আলোচক হ'য়ে উঠি না। প্রত্যেকটি বিষয়ে আলাদা আলাদা আলোচনা করা যেতেই পারে কিন্তু আলোচকদের সতর্ক থাকতে হবে আমরা বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়ের ব'লে যাওয়া বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি এবং আলোচনা করার সময় যখন তাঁর যে বিষয়ে আলোচনা করবো তখন যেন সেই বিষয়ের উপর গভীর মনোনিবেশ করি; আলোচনা করার সময় তা' যেন কোনও অবস্থাতেই খিচুড়ি পাকিয়ে না যায়। মূল বিষয় থেকে সরে যাওয়ার অর্থ যেনতেনপ্রকারেণ মনের বিরুদ্ধভাবকে প্রকাশ করা। যেটা আমরা সবসময় টিভি চ্যনেলের প্রত্যেকটি আলোচনা সভায় দেখে থাকি।
( লেখা ২৯শে অক্টোবর'২০১৭)

প্রসংগঃ ফেসবুক সংস্কৃতি, অবশেষে-------

ফেসবুক সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রামক ব্যাধির মত। ফেসবুকে professional dashboard-এ নির্দেশনা থাকে কিভাবে পেজকে মানিটাইজেশন করতে হবে। তা' সত্ত্বেও তার সঙ্গে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেককেই বিশেষজ্ঞের ভূমিকায় অবতীর্ণ হ'তে দেখা যায় ফেসবুকে। ইয়ং জেনারেশনকে রাতদিন একটা অলীক মায়ার মোহন বাঁশির সুরে ডাকার মত টাকা রোজগারের নিশ্চিত লাভের পরামর্শ দিয়ে চলেছে ফেসবুক professional dashboard-ও ফেসবুক ব্যবহারকারী বিশেষজ্ঞরা। ফলে সারাদিন মোবাইলে বা ল্যাপটপে মুখ বুঝে পড়ে থাকে জেন এক্স, জেন ওয়াই, জেন জি প্রজন্মের সবাই ঘরে-বাইরে, পথেঘাটে, স্কুলেকলেজে, অফিসে-কলে-কারখানায় সমস্ত জায়গায় বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার পথের সমস্ত কাজকর্ম পিছনে ফেলে রেখে।

বর্তমানে প্রায় সবাই ফেসবুক বিশেষজ্ঞ হ'য়ে নেমে পড়েছে ফেসবুকে কিভাবে কিভাবে সকালে, দুপুরে, বিকেলে, সন্ধ্যায় ও রাতে আলাদা আলাদা ভাবে পা ফেলে এগোতে হবে ফেসবুকে পরিকল্পিতভাবে তা' জানান দিতে। বলা হচ্ছে ঘুম থেকে উঠেই সুর্যোদয়ের ছবি বা একগুচ্ছ ফুল হাতে কিংবা ধোঁয়া ওঠা গরম চায়ের কাপ বাড়িয়ে শুভ সকাল জানিয়ে দাও ফেসবুক বন্ধুদের, তারপর সময় এগিয়ে চলার সাথে সাথে একটা স্টোরি কিংবা একটা রীল পোষ্ট করো, তারপর দুপুরে একটা লেখা পোষ্ট করো, মাঝখানে মাঝে মাঝে অন্যের পোষ্টে কমেন্ট করো বা কমেন্টে সাড়া দাও, বিকেলে ও সন্ধ্যায় ভিডিও পোষ্ট করো এবং সবশেষে রাতে সময় হ'লে লাইভ করো ও সবাইকে গুডনাইট ও জয়গুরু জানিয়ে পোষ্ট ক'রে দিয়ে দিন শেষ করো, মনে মনে কালকের প্রস্তুতি নিয়ে ফেসবুক নাম জপতে জপতে শুয়ে পড়ো।

ফলস্বরুপ ফেসবুক অফিশিয়াল স্টাফদের কাজ হ'য়ে গেছে হালকা।
প্রতিদিন পরামর্শ আসছে, মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহারকারী এমনিভাবেই ধৈর্য্য ধ'রে তোমার রুটিন মাফিক দিন শুরু করো ও দিন শেষ করো। ব্যস, আর কিচ্ছু করতে হবে না দৈনন্দিন জীবনে। ভাগ্যলক্ষ্মী সুড়সুড় ক'রে ঢুকে পড়বে তোমার ঘরে, তোমার জীবনে। কুবেরের মন্ত্র পড়তে হবে না, ধারণ করতে হবে না কোনও মহালক্ষ্মী যন্ত্র, হবে না লক্ষ্মী পূজা করতে। এক ঢিলে সব পাখি মারার মত এক ফেসবুক মন্ত্রে সব দেবতার পুজো হ'য়ে যাবে। সুড়সুড় ক'রে ডলার ঢুকে যাবে তোমার ব্যাংক একাউন্টে।

এমনিভাবে সব ফেসবুক ব্যবহারকারী স্বঘোষিত বিশেষজ্ঞদের অযাচিত পরামর্শ প্রচার হ'য়ে চলেছে ফেসবুকে। কেন হচ্ছে তা' জানি না। তারা 'ফেসবুক' থেকে কোনও কমিশন পায় কিনা জানি না এইসব স্বাধীনভাবে নিজের উদ্যোগে বিশেষজ্ঞের ভূমিকায় হাজির হ'য়ে সাধারণ ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সাহায্য করার জন্য, কিংবা এটাও হয়তো বা তাদের নিজেদের জন্য মানিটাইজেশনের স্ট্রাটেজি। কখনও বা মানিটাইজেশনের জন্য সফল হওয়ার পরামর্শ সমৃদ্ধ একই লেখা সবাই কপি পেষ্ট ক'রে চলেছে ফেসবুকে, কিংবা কখনও বা আলাদা আলাদা ভাবে নিজস্ব স্টাইলে মতামত নিয়ে বিশেষজ্ঞের ভূমিকায় অবতীর্ণ হ'চ্ছে ফেসবুকে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের উদ্দেশ্যে।

দিনরাত পাকা মাথার চুলের এমন পরামর্শে কাঁচা চুলের মাথারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে ফেসবুকে, পিছনে পড়ে থাকছে পড়াশুনা, কাজকর্ম সব। সব ছেড়ে দিয়ে মুখ বুঁজে পড়ে থাকছে আফিমের নেশার মত মানিটাইজেশনের নেশায় বুঁদ হ'য়ে। অনুরোধ, উপরোধ, আবেদনের কান্নায়, অনুরোধের বন্যায় ভরে উঠছে ফেসবুকের বুক। সস্তা, হালকা, চটুল, সুড়সুড়ি কন্টেন্টে ভরে যাচ্ছে ফেসবুক প্ল্যাটফর্ম।
কিন্তু হায়, তথাপি অধরা ফেসবুক ডলার! এত পরিশ্রম, এত ব্রেন ওয়ার্ক, এত ঘাম ঝড়ানোর পড়ও মানিটাইজেশনের শর্ত আর ফুলফিল হচ্ছে না, ডলার আসছে না ঘরে। ডেইলি, উইকলি, মান্থলি শর্তপূরণের নিত্য নোতুন নোতুন পরামর্শ আসছে professional dashboard-এ ফেসবুকের অফিস থেকে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছে। যত লক্ষ্যের কাছে পৌঁছে যায় ফেসবুক ব্যবহারকারী, তত দূরে দূরে সরে সরে যায় দিগন্তের মত মানিটাইজেশনের হাতছানি। এতটাই নির্দয় ফেসবুক।

অবশেষে হতাশায় অবসাদে বিষন্ন হৃদয়ে গেয়ে ওঠে টাকার স্বপ্ন দেখা ফেসবুক ব্যবহারকারী কান্না ভেজা গলায়,
একুল-ওকুল, গেল আমার দুই কুল,
হায়, ভবিষ্যৎ হ'লো আমার নির্মূল!
তবুও আমার শুষ্ক ফেসবুক বুকে
ডাকে না পাখি, ফোটে না ডলার ফুল!!
প্রকাশ বিশ্বাস,
ভদ্রকালী, উত্তরপাড়া।


Tuesday, October 28, 2025

।। দিনের প্রার্থনা।।

দেশ, রাজ্য, সমাজ রক্ষক যারা তাঁরা চব্য, চোষ্য, লেহ্য, পেয়-তে ভালো থাকুন, ঈশ্বর আপনাদের সুখে রাখুন,

শুধু 'ওঁ গণেশায় নমঃ' 'লে কিংবা মরার সময়ের মত 'রাম নাম সত্য হ্যাঁয়' 'লে আমাদের মত দীর্ঘশ্বাস ফেলা অসুখে থাকা বোকা জনগণের দিকে সামান্য একটু শান্তির জল খৈ ছিটিয়ে দিলেই হবে। তা’তেই  সোয়াস্তি। প্রবি।

 

খারাপ সময় ও নাম প্রসঙ্গ।

 


ঠাকুরের বাণীঃ ১

"এক আদেশে চলে যারা তাদের নিয়ে সমাজ গড়া।"-----শ্রীশ্রীঠাকুর।

মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সমাজ মানে কি? একের অধিক মানুষ মিলিত হ'য়ে কিছু নিয়ম কানুন তৈরী ক'রে একসঙ্গে বসবাস করাকে সমাজ বলে। সেই সমাজে যে নিয়ম কানুন তৈরী করা হয় সেই নিয়ম মানুষের বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার জন্যই তৈরী করা হয়। কিছু প্রাজ্ঞ মানুষের চিন্তাভাবনা প্রসূত নিয়মকানুন সুন্দর সমাজ গঠনে সাহায্য করে। এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হ'য়ে চলে। যে সমাজে যত দূরদৃষ্টি বা দীর্ঘদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ থাকে সেই সমাজে তত সমাজ উন্নয়নের জন্য, মানুষের বাঁচাবাড়ার জন্য নিখুঁত নিয়মকানুন তৈরী করা সম্ভব হয়। প্রবি।

Monday, October 27, 2025

কবিতাঃ বন্ধ হ'ক।

 শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে জেনেছি,

বন্ধ হ’ক সাম্প্রদায়িক হানাহানি,

বন্ধ হ’ক ফোটানো ভেদাভেদের হুল,

বন্ধ হ’ক ব্রিটিশের ঘৃণ্য নরক নীতি

Divide & Rule.

হিন্দু, হিন্দু থাকুক,

মুসলমান মুসলমান,

বৌদ্ধ বৌদ্ধ থাকুক, খৃষ্টান খৃষ্টান।

' Behavioral Conversion;

নয় Religious Conversion  

কবিতাঃ কত ডাকি তাঁরে।

কত ডাকি তাঁরে, দেয় না তবু সাড়া
দিন যায় ঢলে পশ্চিমার কোলে
মন বলে, একেলা যেতে লাগে ভয়
তুমি ছাড়া ওগো দয়াময়
আমি যে দিশাহারা।
পরাণ বলে, ওগো তুমি যেও না,
যেও না সজনী বাকী আছে রজনী
থাকো মোর সাথে, ধরা দ্বাও মোরে,
যাবার তরে দিও না মোরে তাড়া
ওগো দিও না মোরে তাড়া।
( লেখা ২৮শে অক্টোবর'২০১৭)






Friday, October 24, 2025

বিচিত্রা ১৯৪

আলোচনা ক'রে হবেটা কি যদি আলোচনায় না জ্বলে আলো?
বৃথা তর্কে শুধু হবে কালক্ষেপ চক্ষু যদি না খোলো।
চক্ষু যখন নাহি খোলে তখন সংঘাত অনিবার্য
এর চেয়ে বরং দূরত্ব বজায় রেখে সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকা ভালো।

আমার ভিতরে, অন্তরে কেউ কি আছো?
যদি থাকো দাও ধরা,
নইলে ভালো বারবার মরার চেয়ে
একবার একেবারে মরা।

আজ হ্যাপি কাল গ্যাপি ( Gappy),
জীবন জুড়ে শুধুই দাপাদাপি।
( লেখা ২৫শে অক্টোবর'২০১৮)

সাবধান! খেয়াল রেখো, সজাগ থেকো,মনে রেখো সবসময়
ইষ্টস্বার্থ-প্রতিষ্ঠা থেকে আত্মস্বার্থ-প্রতিষ্ঠা
যেন বড় না হয়!
( লেখা ২৫শে অক্টোবর'২০১৯)

Politicians want to keep the religious world away for their own interests in the question of state formation.
( লেখা ২৫শে অক্টোবর'২০২৪)































































.


 

বিষয়ঃ আলোচনার মাঝে চনা।

কি উত্তর দেবো বলুন তো? অনেকে নানারকম প্রশ্ন করে। ভাবি প্রত্যেকের সব প্রশ্নের উত্তর একে একে ধীরে ধীরে দেবো। আমি একা আর অতগুলো মানুষের অতগুলো প্রশ্ন। চেষ্টা করি অন্য সব কাজকে কিছু সময়ের জন্য দূরে সরিয়ে রেখে ঠাকুরের মুখের দিকে তাকিয়ে ঠাকুরের স্বার্থ প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আলোচনার টেবিলে বসার। দুনিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র হচ্ছে 'আলোচনার টেবিল'। এখন আর বিশ্বযুদ্ধ হয় না। দু'একটা দেশ ছাড়া প্রায় সব দেশের হাতেই............... তা' প্রকাশ্য ঘোষণার মধ্যে দিয়েই হ'ক আর গোপনীয়তার মধ্যে দিয়েই হ'ক............পারমাণবিক বোমা আছে। আর তাই যখনই পাশ্ববর্তী রাষ্ট্রের সঙ্গে কোনও রাষ্ট্রের বিবাদ উৎপন্ন হয় তখন সেই বিবাদ নিরসনে মুখ্য ভুমিকা পালন করে 'আলোচনার টেবিল'। আর সেই আলোচনার টেবিল ফলপ্রসু হয় আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দেশের মুখ্য ভূমিকায় যারা থাকে তাদের আগ্রহে। আলোচকদের দূরদৃষ্টি, বিষয়বস্তু সম্পর্কিত গভীর জ্ঞান, ভদ্রতা, সভ্যতা, ধৈর্য ও সহনশীলতা ইত্যাদি মহৎ গুণ আলোচনাকে সঠিক দিশায় এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। সবচেয়ে বড় কথা আলোচনা করার মানসিকতা। মানসিকতাই যদি না থাকলো তাহ'লে কি হবে বাকী সব গুণ দিয়ে। আলোচনায় মুখ্য ভুমিকা পালনকারীদের অনেক দায়িত্ব থাকে। তাদের কাজ থাকে পাশ থেকে অবাঞ্ছিত যারা অকারণ ভিত্তিহীন কথা ব'লে আলোচনায় চনা ফেলে তাদের মুখ্য ভুমিকা থেকে সরিয়ে রাখা। এইসবগুলি আলোচনার টেবিলকে বাঁচিয়ে রাখে। আলোচনার টেবিলের যেখানে গুরুত্ব বা মূল্য নেই সেখানে দুই রাষ্ট্রের হাতে থাকা পারমাণবিক বোমা কথা বলে। কোনও এক রাষ্ট্র যদি ভাবে আমার হাতে পারমাণবিক বোমা আছে তাহ'লে অন্য রাষ্ট্র তখন সেটা দেখাতে বাধ্য হয়। যদি কোনও রাষ্ট্র মনে করে আমার হাতে এত পারমাণবিক অস্ত্র আছে যে গোটা দেশটাই উড়িয়ে দিতে পারি তাহ’লে অল্প ক্ষমতাধর রাষ্ট্র তখন ভাবে ঠিক আছে আমার গোটা শরীরটা উড়িয়ে তুমি দিতে পারো তবে আমি কিন্তু উড়ে যাবার আগে একটা মোক্ষম ছোবল মেরে এক খন্ড মাংস আমি তোমার শরীর থেকে খুবলে নিয়ে যাবো। কিন্তু আলোচনার টেবিল মধ্যস্থতা রক্ষাকারীর ভুমিকা পালন ক'রে ভারসাম্য বজায় রাখে।

যাই হ'ক চেষ্টা করি প্রশ্নের উত্তর দেবার ও আলোচনা জিইয়ে রাখার। কিন্তু দেখতে পাই তা হবার নয়। যে কথা বলেছি একবার দেখি কিছু প্রশ্নকারী বারবার সেই এককথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নির্দিষ্ট পক্ষ নিয়ে কথা ব'লে চলে। অকারণ যাদের টেনে আনার নয় তাকে বা তাদের টেনে আনে বারবার। অনেকবার বলেছি আবারও বলছি, কথা নেই বার্তা নেই প্রসঙ্গ বহির্ভূত বিষয় নিয়ে এসে সরাসরি আক্রমণ ক'রে বসে। সত্যি আর মিথ্যের কে ধার ধারছে। নিজেরাই নিজেদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করুক না, উত্তর পেয়ে যাবে। কাউকে কিছু ভুল, ঠিক প্রমাণ করতে হবে না। অকারণ মন্তব্য ক'রে যদি বিস্তার লাভ করা যায় তো করুক না কার কি আসে যায়? আর কেউ যদি অন্যায়কে সমর্থনের মধ্যে দিয়ে বিস্তার লাভ করতে চান তা'তে আমার কোনও আপত্তি নেই। শুধু ভাবি, এক কথা কেন বারবার বলতে হয়? কারও পোষ্টের সঙ্গে কারও মন্তব্যের কোনও সম্পর্ক আমার নেই। আমার কাছে মূলত মুখ্য বিষয় মন্তব্য, মন্তব্যের ভাষা। আমি আগেও বলেছি আবার বলছি আলোচনা যদি সুস্থ আলোচনা হয়, স্বাস্থ্যকর হয় আমি সবার সব পোষ্টের উত্তর দেবো তা কারুর ভালো বা মন্দ লাগুক, পছন্দ বা অপছন্দ যাই হ'ক না কেন। উত্তর দিতে মন চায় কিন্তু দেখি, দীর্ঘ আলোচনায় প্রতিপক্ষের কাছ থেকে একই কথা বারবার ঘুরে ফিরে আসে আর অপমান আর অপমান। আলোচনার টেবিল আর আলোচনার টেবিলের পর্যায়ে নেই আর আশেপাশে থাকে অবাঞ্ছিত অজস্র বাক্যবাণ। ব্যাপারটা যেন ঐ "চোর ডাঁটে কোতোয়ালকে"-এর মত।

যাক এবারে যে কথাটা ব'লে শেষ করি তাহ’ল দেখলাম সমস্ত কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে এনে মাঝে মাঝে দীর্ঘ সময় যা করি তা' "উলু বনে মুক্তো ছড়ানো' ছাড়া আর কিছু নয়। যাই হ'ক সবাই ভালো থাকবেন। পরমপিতার চরণে সকলের মঙ্গল প্রার্থনা ক'রে এই আলোচনা থেকে বিদায় নিলাম।
( লেখা ২৫ শে অক্টোবর'২০১৭)

বিচিত্রা ১৯৩

 


বিচিত্রা ১৯২

যার যেদিকে মন পাকা 
ফোঁড়ার মতন
ব্যথায় করে টনটন।
( লেখা ২৪শে অক্টোবর'২০১৭)

মনের টানে নাচি আর প্রাণ চায় বাঁচি!
কিন্তু বাঁচা হয় না।
হায়! মন! তুই দাঁড়ে এসে বস না!
( লেখা ২৪শে অক্টোবর'২০১৭)























Tuesday, October 21, 2025

কবিতাঃ কু ঝিক ঝিক---

 


বিচিত্রা ১৯১

 


বিচিত্রা ১৯০

কথা যখন উঠলোই।
জনগণ যদি বাস্তবটাকেও সিনেমার মত রঙিন চোখে দেখে তার ফয়দা নেবে না অভিনেতারা? অভিনেতাদের দোষ কোথায়? মনে রাখতে হবে অভিনেতারা অভিনয় জানুক আর না-জানুক অভিনেতাদের রক্তের শিরায় শিরায় অভিনয় অর্থাৎ মিথ্যা হাসি, মিথ্যা কান্না, মিথ্যা রাগ, মিথ্যা আস্ফালন, মিথ্যা সেবা ইত্যাদি ব'য়ে চলেছে। জনগণ ন্যাড়া মাথার মত বেলতলায় বারবার যায় আর মাথা ফাটায়। তাই দেখে অভিনেতারাও হাসে। আর, নেতারা ভুলে যায় তাদের আগে ‘অভি’ নেই। কিন্তু দু’জনের কমন একটাই তা হ’লো অভিনয়। তবে সবাই কি তাই? ব্যতিক্রম আছেই। প্রবি।














বিচিত্রাঃ ১৮৯

সৎসঙ্গীরা সাবধান! আগামী ভয়ংকর আগুনের পৃথিবীতে কিন্তু আমাদেরও থাকতে হবে। থাকতে হবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মদের। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের প্রতি আমাদের সৎসঙ্গীদের একটা দায়বদ্ধতা আছে। নিদেনপক্ষে নিজের জীবনের প্রতি আছে। প্রতিদিনই কিন্তু সময় ও পরিস্থিতি ভয়ংকর থেকে আরও ভয়ংকর হ'য়ে উঠছে! তাত্ত্বিক আমেজে আর ফুর্তিতে দিন কাটাবার দিন অনেক আগেই শেষ হ'য়ে গেছে। ঠাকুর কিন্তু আমাদের জন্যই সারাজীবন কষ্ট যন্ত্রণা পেয়েছেন আর চোখের জল ফেলেছেন। বাংলাদেশের ঘটনায় আবেগে ভেসে আলটপকা ঠাকুর দর্শন বিরোধী মন্তব্য ক'রে আমরা ঠাকুরকে যেন ছোট ক'রে না দিই। সৎসঙ্গীর চরিত্রই সৎসঙ্গের সম্পদ।

আগামী যে ভয়ংকর দুঃসময়ের কথা ব'লে গেছেন ঠাকুর সে সম্পর্কে আগাম সাবধানও ক'রে গেছেন ঠাকুর আমাদের। ঠাকুর আগামী এই কঠিন সময়ের হাত থেকে বাঁচতে ও বাঁচাতে যত দ্রুততার সঙ্গে সিরিয়াসলি আমাদের করণীয় যা করতে বলেছেন, হ'য়ে উঠতে বলেছেন ততটাই ধীরগতি ও তাচ্ছিল্যের সঙ্গে তা পালন করিনি, করেছি ও করছি উপেক্ষা। আমাদের সংখ্যাগুরু সৎসঙ্গীদের চরিত্রই তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। বাংলাদেশের ঘটনা আজ নতুন কিছু নয়। ধর্মীয় উগ্রতা ও উন্মাদনা আজ জলভাতের মত হ'য়ে গেছে। তবুও আমরা সৎসঙ্গীরা জেগে ঘুমিয়ে আছি। আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা এই মনোভাব আমাদের সৎসঙ্গীদের।

আমরা যদি ঠাকুরের চাওয়া মত প্রকৃত সৎসঙ্গী হ'য়ে উঠতে পারতাম তাহ'লে নিজেরাই বুঝতে পারতাম বাংলাদেশে ১৩ই অক্টোবর'২১-এ সংঘটিত হিন্দু ধর্মের ওপর আক্রমণের এইসময়ে আমাদের কি করণীয় আর আমরাই পারতাম পথ দেখাতে। ঠাকুর আমাদের আগামী সম্ভাব্য সমস্ত রকম ভয়ংকর বিপর্যয়ের ইংগিত দিয়ে গেছেন। আর সেই বিপদ ভয়াবহ আকার ধারণ করার আগেই তাকে রোধ করার সমস্ত রকম পথও ব'লে দিয়ে গেছেন। আমরা সৎসঙ্গীরা ঠাকুরের ইচ্ছামত, তার মনের মতো কেউ হ'য়ে উঠিনি। ৫০ ভাগও হ'য়ে উঠিনি। হ'য়ে ওঠার প্রথম শর্তই হ'লো আমার চরিত্র গঠন! আমার চরিত্রই আমার যজন যাজনের জ্বলন্ত উদাহরণ।
( লেখা ২১শে অক্টোবর'২০২১)




আহ্বানঃ সৎসঙ্গী গুরুভাইবোন আমার!

বাংলাদেশের ঘটনায় আমরা সৎসঙ্গীরা ব্যথাহত সঙ্গে উত্তেজিত। আর সেই কষ্ট ও উত্তেজনার বর্হিপ্রকাশ আমরা দেখতে পাচ্ছি ফেসবুকে। আমরা সৎসঙ্গী পরিচয়েই আমাদের যার যার মত ক'রে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছি ফেসবুকে। কিন্তু মনে রাখতে হবে আমাদের যে, আমাদের সৎসঙ্গীদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া 'সৎসঙ্গ'-এর প্রতিক্রিয়া নয়। যদিও আলটপকা বেসামাল প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যে 'সৎসঙ্গ'-এর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও ঠাকুর দর্শনে আঘাত লাগতে পারে। তাই মন্তব্যে ও প্রতিক্রিয়া ব্যক্তে সাবধান!

বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক ঘটনায় কোনও সম্প্রদায় সম্পর্কে সৎসঙ্গী হিসাবে মন্তব্য করার আগে একবার নিজের ভিতরে ঝাঁক মেরে দেখতে হবে আমি ঠাকুরের মনের মত সৎসঙ্গী তো!? প্রতিবাদ করবো। নিশ্চয়ই করবো। আর সে প্রতিবাদে থাকবে তেজ, ক্রোধ নয়। সে প্রতিবাদে থাকবে সত্য কিন্ত সংহার নয়! সে প্রতিবাদে থাকবে স্পষ্টতা কিন্তু থাকবে মিষ্টতা! সে প্রতিবাদে থাকবে প্রকৃত বীরের পরিচয়; থাকবে না বাঘ ভাল্লুকের হিংস্রতার প্রতিফলন! প্রতিবাদে থাকবে যজন ও যাজনমুখী চরিত্র! আমার চরিত্রই আমার বলিষ্ঠ প্রতিবাদ।

যদি সৎসঙ্গী পরিচয়ে কিছু মন্তব্য করি তাহ'লে মন্তব্য করার আগে আমাদের ভেবে দেখতে হবে বিগত দিনে এমন ঘটনায় ঠাকুর কি বলেছিলেন আর আজ ঠাকুর থাকলে কি বলতেন। আমরাও সৎসঙ্গীরাও তাই করবো ও বলবো। আমাদের মাথার ওপর ঠাকুর রেত শরীরে এখনও প্রতিমুহুর্তে অবস্থা করছেন আচার্যদেব রূপে। তাই আসুন আমরা সৎসঙ্গীরা সতর্ক ও সাবধান হ'ই।
( লেখা ২১শে অক্টোবর'২০২১)

আবেদনঃ বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের কাছে।

জানা গেল, কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখায় প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে একজন ইসলাম ধর্ম অনুসারী এক মুসলমান যুবককে। জানি না এই খবর সত্যি না মিথ্যে।

যদি এই খবর সত্যি হয় তাহ'লে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন, সরকার তাদের জন্য কি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করবে সেটা প্রশাসন ও আইনি ব্যবস্থা্র উপর নির্ভরশীল। কিন্তু একজন সৎসঙ্গী হিসেবে আমার আবেদন শাস্তি প্রদানের আগে তা সে যে শাস্তিই হ'ক সেই যুবককে ও অন্যান্য যারা গ্রেপ্তার হবে তাদেরকে তাদের দ্বারা কৃত ধ্বংস স্থান সহ অত্যাচারিত ও অত্যাচারিতা নারী পুরুষের সামনে তাদের পরিবারের সদস্য সহ আনা হ'ক। ঘুরিয়ে দেখানো হ'ক তাদেরকে তাদের দ্বারা ঘৃণ্য নারকীয় কার্যকলাপ আর তাদের পরিবারের সকলের সামনে তাদের জিজ্ঞাসা করা হ'ক তাদের এই অমানবিক ঘৃণ্য নারকীয় কাজ নবী মহম্মদ স্বীকার করেন কিনা। বিশ্বনবী মহম্মদ দ্বারা সৃষ্ট ইসলাম ধর্ম্মমত তা অনুমোদন করেন কিনা। তাদের জিজ্ঞাসা করা হ'ক বিশ্বনবী কি শুধু মুসলমানদের জন্যই এই পৃথিবীতে এসেছিলেন কিনা? জিজ্ঞেস করা হ'ক হজরত মহম্মদ কি শুধু মুসলমানদেরই নবী, আরাধ্য পুরুষ, ঈশ্বর কিনা? তাদের জিজ্ঞাসা করা হ'ক মুসলমানরাই কি শুধু বিশ্বনবী হজরত মহম্মদের সন্তান? বাকীরা কি তাঁর সন্তান নয়? ইসলাম কি এই শিক্ষা দিয়েছে? কোরান কি এই কথা বলে? হাদিসে কি এর সমর্থন আছে?
এরকম নানা দিক তাদের সামনে তুলে ধরা হ'ক আর তা হ'ক প্রকাশ্যে আর সম্প্রচার হ'ক টিভির মাধ্যমে সারা বিশ্বে। দেখুক, শুনুক, ভাবুক, বুঝুক সারা বিশ্বের সমস্ত ধর্ম তথা সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ। আর তা বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাক বিশ্বের ধর্মীয় জনসমাজ।

যাই হ'ক, আরও আরও অনেক জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে। আমার প্রধানমন্ত্রী হাসিনা সরকারের কাছে, দেশের প্রকৃত মুসলমানদের কাছে, প্রকৃত ইসলামপন্থীদের কাছে অনুরোধ যদি আপনারা সত্যি সত্যিই এই মর্মান্তিক ঘটনার চিরকালীন সমাধান চান তাহ'লে অন্তত এই চর্চা সরকারী পর্যায়ে ও প্রকৃত রসুল অনুগামী মুসনমানদের পক্ষ থেকে শুরু করা যেতে পারে। চেষ্টা ক'রে দেখা যেতে পারে। এই যাজন কাজে ভেসে যাক বাংলাদেশ। ভেসে যাক আসমুদ্রহিমাচল! ভেসে যাক বিশ্ব!

হ্যাঁ, ভেসে যাক গোটা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ ঈশ্বর বিশ্বাসী মানুষ এই বোধে যে, নিরাকার ঈশ্বর সাকার হ'য়ে নেবে আসেন তাঁর সৃষ্ট মানবজাতীর জন্য বারবার। ঈশ্বর নেবে এসেছেন রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ ও শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র রূপে। আর ঈশ্বর কখনো শুধু হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ইত্যাদি কোনও সম্প্রদায়ের জন্য নেবে আসেন না। তিনি যতদিন তাঁর সৃষ্ট এই পৃথিবী থাকবে ততদিন তিনি তাঁর সন্তানদের জন্য নেবে আসবেন প্রয়োজনবোধে যেখানে তিনি তাঁর নামার মত জমি পাবেন।

তাই এই যাজন কাজ এখনই শুরু হ'ক। যেখানেই এই ঘটনা ঘটবে তা যে দেশেই হ'ক আর যে ধর্মেই হ'ক তৎপরতার সঙ্গে শুরু হ'ক এই প্রক্রিয়া। দুষ্কৃতিকারীদের জন্য বিচারব্যবস্থা যা বিচার করে করুক। কিন্তু এই যাজন প্রক্রিয়া শুরু হ'ক। তাদের মনোভাবের পরিবর্তন হ'লেও হ'তে পারে। আর যদি নাই বা হয় পরবর্তী প্রজন্মের জন্য শুরু হ'ক এই যাজন প্রক্রিয়ার মত মহতী প্রচেষ্টা। নিশ্চয়ই লাভবান হবে পরবর্তী প্রজন্ম।

আর, খুশী হবেন, খুব খুশী হবেন, আনন্দিত হবেন, শিশুর সারল্য নিয়ে ভুবনভোলানো হাসি হেসে উঠবেন আমার রসুল, আমার নবী, আমার ঈশ্বর, আমার খোদা, আমার ভগবান, আমার আল্লা!

আমার আচার্যদেব শ্রীশ্রীদাদার ৮৯তম জন্মদিনে তাঁর রাঙা চরণে প্রণাম জানিয়ে, তাঁর আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে আমার ঠাকুর পুরুষোত্তম পরমপিতা বিশ্বপিতা সৃষ্টিকর্তা জীবন্ত ঈশ্বর শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের কাছে আমি যা শিখেছি তাই-ই তুলে ধরলাম একজন সৎসঙ্গী হিসেবে।
গ্রহণ ও বর্জন ব্যক্তিগত।
( লেখা ২১শে অক্টোবর'২০২১)


Monday, October 20, 2025

প্রবন্ধঃ সৎসঙ্গ নিবন্ধন শতবর্ষ উদযাপন।

আজ ২০শে অক্টোবর'২৪ রবিবার সৎসঙ্গ" শতবর্ষ নিবন্ধন উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেওঘরে। গতকাল ১৯শে অক্টোবর শনিবার শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ১৩৭তম পুণ্য জন্ম-মহামহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছিল।যুগপুরুষোত্তম পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ১৩৭তম পুণ্য জন্ম-মহামহোৎসব এবং ‘সৎসঙ্গ’ নিবন্ধন শতবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল ও আজ দু'দিন ধ'রে সৎসঙ্গ দেওঘরে জনজোয়ার নেমেছে।

আজ থেকে ১০০ বছর আগে ১৯২৫ সালে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান সরকারী রেজিষ্ট্রিকৃত হয়। একটি সৎসঙ্গ কার্যনির্বাহক কমিটি গঠন করা হয়। সেইসময় কমিটির সভানেত্রী অর্থাৎ সৎসঙ্গের সভাপতি ছিলেন শ্রীশ্রীঠাকুরের মা জননী মনমোহিনী দেবী। এবং সহ সভাপতি ছিলেন শ্রীশ্রীঠাকুরের পরম ভক্ত শ্রী অনন্ত নাথ রায়, যাঁকে আমরা অনন্ত মহারাজ ব'লে জানি। সৎসঙ্গের সম্পাদক ছিলেন শ্রী সুশীল চন্দ্র বসু ও সহ সম্পাদক ছিলেন ব্রজগোপাল দত্তরায়।

আজকের এই পূণ্যদিনে পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুরের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান 'সৎসঙ্গ' ১০০ বছরে পা দিল। শ্রীশ্রীঠাকুরের এই 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান যখন সরকারী রেজিষ্ট্রিকৃত হয় তখন তাঁর বয়স ছিল ৩৬ বছর। শ্রীশ্রীঠাকুর আবেগের সঙ্গে বলতেন। "এ আমার সৎসঙ্গ, সমস্ত মানুষের বাঁচা বাড়ার সৎসঙ্গ।" ধর্ম ও কর্মের অপূর্ব সমন্বয়ে গঠিত তাঁর এই 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান। তাঁর এই প্রতিষ্ঠানটির নামের তাৎপর্য ব্যখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘সৎ-এ সংযুক্তির সহিত তদগতিসম্পন্ন যাঁরা তাঁরাই সৎসঙ্গী, আর তাদের মিলনক্ষেত্র হল সৎসঙ্গ। শুরু হ'লো তাঁর মানুষ তৈরীর আবাদ। কর্মের মধ্যে দিয়ে যোগ্যতর মানুষ গড়ে তোলাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। বর্তমান কাম, ক্রোধ, লোভ, হিংসা ইত্যাদি রিপুতাড়িত জর্জরিত অস্থির পৃথিবীতে মানুষকে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাই ছিল ঠাকুরের উদ্দেশ্য। তাঁর সৃষ্ট এই 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান কোনও সম্প্রদায়-বিশেষের জন্য নয়, বরং হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, জৈন, শিখ বিশ্বজুড়ে যত সম্প্রদায় আছে সব সম্প্রদায়ের প্ল্যাটফর্ম হ'লো এই 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান। তিনি নিজেও কোনও সম্প্রদায়-বিশেষের নন, বরং সব সম্প্রদায়ই তাঁর।শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছেন, “একজন মানুষের বিনিময়ে আমি একটি সাম্রাজ্য ত্যাগ করতে পারি, কিন্তু একজন মানুষকেও ত্যাগ করতে পারি না।" তাঁর সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান দাঁড়িয়ে আছে চারটি পিলারের ওপর। চারটি পিলার হ'লো শিক্ষা, কৃষি, শিল্প ও সুবিবাহ। আর তাঁর সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠানের নীতি হ'লো পাঁচটি। যজন, যাজন, ইষ্টভৃতি, স্বস্ত্যয়নী ও সদাচার। এই পাঁচটি নীতি তিনি তাঁর দীক্ষিত সৎসঙ্গীদের পালন করার জন্য বলে গেছেন। তাঁর সৃষ্ট 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান হচ্ছে একটি ধর্মীয় আন্দোলন। এই আন্দোলনের আদর্শ হচ্ছে, ধর্ম কোনও অলৌকিক ব্যাপার নয়, ধর্ম হচ্ছে বিজ্ঞানসিদ্ধ জীবন সূত্র। এই আন্দোলনের মূল হচ্ছে ভালোবাসা, ভালোবাসাই মহামূল্য, যা দিয়ে শান্তি কেনা যায়। শ্রীশ্রীঠাকুরকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ত্রেতা যুগে শ্রীশ্রীরামচন্দ্র এসেছিলেন রাবণ বধ করতে, তাঁর অস্ত্র ছিল তীর ধনুক, শ্রীশ্রীকৃষ্ণ এসেছিলেন কংস বধ করতে, তাঁর অস্ত্র ছিল চক্র। আপনি কা'কে বধ করতে এসেছেন, আর আপনার অস্ত্র কি? শ্রীশ্রীঠাকুর উত্তরে বলেছিলেন, তখন একটা রাবণ, একটা কংস ছিল, আর এখন ঘরে ঘরে রাবণ, কংস। ক'জনকে বধ করবো? আমি এসেছি বশ করতে, বধ করতে নয়। ভালোবাসা দিয়ে, প্রেম দিয়ে বশ করতে। ভালোবাসা, প্রেমই আমার একমাত্র অস্ত্র।"

শ্রীশ্রীঠাকুর তাঁর সৎসঙ্গ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আমাদের শেখালেন যে ধর্ম পালনের প্রধান লক্ষ্য হ'লো পারিপার্শ্বিকের সবাইকে নিয়ে জীবন-বৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলা। নিজে বাঁচো ও অন্যকে বাঁচাও।

আর, ধর্ম মূর্ত্ত হয় (embodied) আদর্শে এবং শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হলেন ধর্মের মূর্ত্ত সেই আদর্শ। তিনিই ধর্মের মূর্ত প্রতীক (symbol)। অর্থাৎ ধর্মকে আমরা দেখতে পাই শ্রীশ্রীঠাকুরের সমগ্র জীবনে ফুটে উঠতে। শ্রীশ্রীঠাকুরের সমগ্র জীবনটাই চলমান ধর্ম। প্রতিটি সৎসঙ্গীর জীবনে, প্রতিটি সৎসঙ্গীর চরিত্রে শ্রীশ্রীঠাকুরের জীবন মূর্ত হ'য়ে ওঠার লক্ষ্যে 'সৎসঙ্গ' আন্দোলন এগিয়ে চলেছে নীরবে। ধর্ম বাস্তবায়িত হ'ক প্রতিটি সৎসঙ্গীর জীবনে, চরিত্রে এই ছিল ঠাকুরের স্বপ্ন। সনাতন আর্য জীবনে যে চারটি স্তর আছে ব্রহ্মচর্য্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ ও সন্ন্যাস এই চারটি স্তরই 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠানের পতাকার তলায় সৎসঙ্গীদের সংসার জীবনে এক সামঞ্জস্যপূর্ণ যুগোপযোগী রূপ লাভ করে।

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র শৈশব অবস্থা থেকে শুরু ক'রে কৈশোর, যৌবন পেরিয়ে প্রৌঢ়ত্বের নানা ঘটনাবলীর মধ্যে দিয়ে তাঁর এই 'সৎসঙ্গ' আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন ও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি একমাত্র এই 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি নিরন্তর এই Being & Becoming অর্থাৎ বাঁচাবাড়ার কথা ব'লে গেছেন।

এই জীবনবাদ, অস্তিত্ববাদ অর্থাৎ জীবনের কথা, অস্তিত্বের কথা তিনি ব'লে গেছেন তাঁর জীবনের ৮১ টি বছরের শেষ দিন পর্যন্ত। ব্যক্তিজীবন, সমাজজীবন, রাষ্ট্রজীবন-এর সমস্ত দিক সম্পর্কে তিনি ব'লে গেছেন। ঈশ্বরের সৃষ্টির এমন কোনও দিক বাকী নেই যা তিনি বিশ্বের মানুষের উদ্দেশ্যে তাঁর প্রায় ২৪হাজার বাণীর মধ্যে ব'লে যাননি। এখন বিশ্বের মানুষের ওপর নির্ভর করছে তাঁর বলে যাওয়া বিষয়গুলি নিয়ে মানুষ গবেষণা ক'রে জীবনবৃদ্ধির কাজে লাগাবে কিনা, সৃষ্টিকে রক্ষা করবে কিনা। ১৯৬৯ সনের ২৭ জানুয়ারী তারিখে ৮১ বছর বয়সে তাঁরই প্রতিষ্ঠিত আশ্রম ভারতের বিহার রাজ্যে দেওঘরে ঠাকুর দেহ ত্যাগ করেন। শ্রীশ্রীঠাকুর তাঁরই ঔরসজাত ও কৃষ্টিজাত সুযোগ্য পুত্র, সৎসঙ্গের প্রধান আচার্যদেব, বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের প্রাণের বড়ভাই শ্রীশ্রীবড়দার হাতে সৎসঙ্গ পরিচালনার দায়ভার দিয়ে যান। শ্রীশ্রীবড়দা শ্রীশ্রীঠাকুরের সৎসঙ্গের পতাকা কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। ১৯৯৪-এ শ্রীশ্রীবড়দার মহাপ্রয়াণ ঘটে। তখন 'সৎসঙ্গ' রথের রশি ধরেন শ্রীশ্রীদাদা অর্থাৎ শ্রীশ্রীবড়দার জ্যেষ্ঠ পুত্র শ্রীঅশোক চক্রবর্তী। শ্রীশ্রীদাদা ১৬ই ডিসেম্বর'২০২১ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এর পরে সৎসঙ্গ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন বর্তমান শ্রীশ্রীআচার্যদেব বাবাইদাদা। তাঁর যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্বে সৎসঙ্গের রথ এগিয়ে চলেছে।
সৎসঙ্গ কি চায়?
পরমপিতা, পুরুষোত্তম পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বললেন,
সৎসঙ্গ চায় মানুষ,
ঈশ্বরই বল খোদাই বল
ভগবান. বা অস্তিত্বই বল-
ভূ ও মহেশ্বর যিনি এক -তাঁরই নামে
সে বোঝে না হিন্দু, সে বোঝে না খ্রীষ্টান,
সে বোঝে না মুসলমান, সে বোঝে না বৌদ্ধ,
সে বোঝে প্রতি প্রত্যেকে তাঁরই সন্তান,
সে আনত ক'রে তুলতে চায় সকলকে সেই একে,
সে পাকিস্তানও বোঝে না,
হিন্দুস্তানও বোঝে না, রাশিয়াও বোঝে না
চায়নাও বোঝে না, হউরোপ, আমেরিকাও বোঝে না -
সে চায় মানুষ, সে চায় প্রত্যেকটি লোক
সে হিন্দুই হোক, মুসলমানই হোক,
খ্রীষ্টানই হোক, বৌদ্ধই হোক বা যেই যা হোক না কেন
যেন সমবেত হয় তাঁরই নামে
পঞ্চবর্হির উদাত্ত আহবানে -অনুসরণে -পরিপালনে-
পরিপূরণে উৎসৃজী উপায়নে পারস্পরিক সহৃদয়ী সহযোগিতায়
শ্রমকুশল উদ্বর্দ্বনী চলনে
যাতে খেটেখুটে প্রত্যেকে দু'টো খেয়ে -পরে বাঁচতে পারে
সত্তা সাতন্ত্র্যকে বজায় রেখে সম্বর্দ্ধনার পথে চলে,
প্রত্যেকটি মানুষ যেন বুঝতে পারে প্রত্যেকেই তার,
কেউ যেন না বুঝতে পারে সে অসহায়, অর্থহীন, নিরাশ্রয়,
প্রত্যেকটি লোক যেন বুক ফুলিয়ে বলতে পারে
আমি সবারই -আমার সবাই -সক্রিয় সহচর্য্যী অনুরাগোন্মদনায়;
সে চায় একটা পরম রাস্ট্রীক সমবায়
যাতে কারও সৎ-সম্বর্দ্ধনায় এতটুকু ত্রুটি না থাকে
অবাধ হয়ে চলতে পারে প্রতিপ্রত্যেকে এই দুনিয়ার বুকে
এক সহযোগিতায় আত্নোন্নয়নী শ্রমকুশল সেবা সম্বর্দ্ধনা নিয়ে
পারস্পরিক পরিপূরণী সংহতি উৎসারণায়
উৎকর্ষী অনুপ্রেরণায় সন্দীপ্ত হয়ে
সেই আদর্শ পুরুষে সার্থক হতে সেই এক -অদ্বিতীয়ে।
(ধৃতি -বিধায়না,১ম খন্ড/শ্লোক ৩৯৪)


এই মহতী উদ্দেশ্য নিয়ে শ্রীশ্রীঠাকুর সমগ্র পৃথিবীকে একায়িত পৃথিবী করতে চেয়েছিলেন। With this great purpose, Sri Sri Thakur wanted to make the entire world a united world. ভারতের সমস্ত মানুষকে তিনি এরকমভাবে ইষ্টের সাথে লেগে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে একই পতাকার তলায় আনতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, India হবে magnetic pull (চৌম্বক টান)। তখন ইউরোপও এসে ভারতের সাথে যোগসূত্র রচনা করবে। তারপর আরো একটা গুচ্ছ হবে। এভাবে whole world (সমগ্র পৃথিবী) একায়িত হবে। আর তাই-ই হবে united world (একায়িত পৃথিবী)।

একদিন তাঁর স্বপ্ন পূরণ হবে। আজ তাঁর প্রতিষ্ঠিত প্রাণের 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান ১০০বছর পূর্ণ করলো। এমনিভাবে দিন এগিয়ে যেতে যেতে ২০০বছর পূর্ণ হবে, হবে ৩০০, ৪০০, ৫০০, ১০০০ বছর। আর, এমনিভাবেই 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে ভারত একদিন ভয়ংকর শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হ'য়ে জগত সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লাভ করবে। কারণ আমরা জানি, Knowledge rules world. আর, শেক্সপিয়ারের কথায় বলতে পারি Knowledge is the wing wherewith we fly to heaven. আর, তা' করবে শ্রীশ্রীঠাকুরের ব'লে যাওয়া ২৪হাজার বাণীর মধ্যে দেখিয়ে দিয়ে যাওয়া পথ ধ'রে। তিনি বলেছিলেন, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সৎসঙ্গীদের ওপর বাংলার, ভারতের তথা সমগ্র জগতের অনেক কিছু দুঃখ-কষ্টের সমাধান নির্ভর করছে। শ্রীশ্রীঠাকুর সৎসঙ্গীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, "কি বিজ্ঞানের দিক দিয়ে, কি যন্ত্রপাতির দিক দিয়ে কোনও দিক দিয়ে আমাদের দেশের খাঁকতি থাকে তা' আমার ভালো লাগে না। ধর্মের ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আপনারা সব ব্যাপারে অদ্বিতীয় হ'য়ে ওঠেন এই আমার ইচ্ছে। শিক্ষা কাকে বলে, সভ্যতা কাকে বলে, কৃষ্টি কা'কে বলে, দেবদক্ষ চৌকশ মানুষ কা'কে বলে আমার বড় সাধ হয় তার নমুনা দেখাতে।"
এইজন্য তিনি এই 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শ্রীশ্রীঠাকুর বলতেন, এটা আমার 'সৎসঙ্গ'।

আজ দেশ বিদেশের লক্ষ লক্ষ সৎসঙ্গী যুগপুরুষোত্তম পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ১৩৭তম পুণ্য জন্ম-মহামহোৎসব এবং ‘সৎসঙ্গ’ নিবন্ধন শতবার্ষিকী মহাসমারোহ উপলক্ষে আয়োজিত উৎসবে দেওঘরে দু'দিন ধ'রে অবস্থান করছেন, নির্মল আনন্দ উপভোগ করছেন। আজ তাঁদের আনন্দ উপভোগের সঙ্গে সঙ্গে অনুভব করতে হবে, উপলব্ধি করতে হবে কেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র জন্মগ্রহণ করেছিলেন ও এই 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান গঠন করেছিলেন এবং আজ থেকে ১০০ বছর আগে ১৯২৫ সালে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান কেন সরকারী রেজিষ্ট্রিকৃত হয়েছিল।

আর, আজকে সৎসঙ্গীদের ভাবতে হবে, বুঝতে হবে তিনি আমাদের কাছে কি চেয়েছিলেন" আজ এই ১০০তম সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠানের মাহেন্দ্রক্ষণে অর্থাৎ শুভক্ষণে সৎসঙ্গীদের দেওঘর থেকে ফেরার পথে ভাবতে হবে ঠাকুর আমাদের কাছে কি চেয়েছিলেন, আমাদের কেমন দেখতে চেয়েছিলেন। জয়গুরু।
( লেখা ২০শে অক্টোবর'২০২৪)

প্রশ্নঃ দুষ্কৃতিকারীর দৌরাত্ম কেন?

বাংলাদেশে যারা হিন্দু ধর্ম্মের উপর আঘাত করলো তাদের একটাই পরিচয়; তারা দুষ্কৃতিকারী। প্রশ্ন জাগে, মুষ্ঠিমেয় দুষ্কৃতিকারী বজ্জাত বেজাতের দল কি ক'রে এত শক্তিশালী হয়!? সব সম্প্রদায়ে এরা তো সংখ্যালঘু!? নাকি!? তাহ'লে এদের এত শক্তি, এত সাহস, এত পরাক্রম কি ক'রে সম্ভব!? প্রকাশ্যে এই মুষ্ঠিমেয়র দল দেশের অভ্যন্তরে কি ক'রে ইসলামের নামে সভ্যতা বিরোধী, ধর্ম বিরোধী, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি বিরোধী, ঈশ্বর ও ঈশ্বরের বিধান বিরোধী মৃত্যু উপত্যকা বানাবার প্রক্রিয়া চালু করে!? কে বা কারা এদের মদতদাতা!? তাহ'লে কি ধ'রে নিতে হবে সংখ্যাগুরুরাই এদের পিছনে আত্মগোপন ক'রে থাকে!? আর প্রশাসন এই সংখ্যালঘুদের পৃষ্টপোষক!? তাহ'লে সব সম্প্রদায়ের আম আদমীর কোনও মূল্য নেই!? আম আদমী ভেড়ার পালের মত কিম্বা বলীর পাঁঠার মত!? পেছনে লাঠি উঁচিয়ে হ্যাট হ্যাট ক'রে যেদিকে নিয়ে যাবে সেদিকেই যাবার মত!? কেন!? কেন!? কেন!?
( লেখা ২০শে অক্টোবর'২০২১)


কারণ, কোরাণ বা গীতা বা বাইবেল ইত্যাদি ধর্মগ্রন্থ কুলুঙ্গিতে তুলে রাখা তামাম সাধারণ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটা পবিত্র 'বই' মাত্র! বই পড়ে বইয়ের মর্ম্মবাণী বুঝে তা পালন করার জন্য নয়, নয় চরিত্রগত ক'রে তোলার! শুধু সাজিয়ে গুছিয়ে ধূপ ধুনো দিয়ে কুলুঙ্গির গহ্বরে রেখে দাও! ব্যাস! এর বাইরে আর কিছুই নয়।


তাই আজ আমাদের, সব সম্প্রদায়ের ধর্মভীরু ভাঙাচোরা মূর্খ মানুষ জাতের দুষ্কৃতিকারীর দৌরাত্মে নির্ম্মম করুণ শোচনীয় অবস্থা।

Saturday, October 18, 2025

উপলব্ধিঃ আমি আগে সৎসঙ্গী, পরে হিন্দু।

ধ্বংস তো অনিবার্য। আজ নয়তো কাল। শুধু সময়ের অপেক্ষা। কারণ এটা কলিযুগ। সবাই ধ্বংস হবে। কেউ বাঁচবে না। আগে হিন্দুরা পরে অন্যরা বা আগে অন্যরা পরে হিন্দুরা ধ্বংস হবে, এমন কোনও কথা নয়। আগে আর পরের ব্যাপার। সবাইকেই ধ্বংস হতেই হবে। আর তা' হবে ধর্মের মারামারির কারণে। হিন্দুদের কোনওদিনই ঐক্য ছিল না। তাই তাদের আজ এই অবস্থা। তারা নিজেদের সনাতনী ঐতিহ্যের ধ্বজার লাঠি দিয়ে হিন্দুর পেছনেই বাঁশ দেয়, পুরুষোত্তমের নিন্দা করে, করে অপমান আবার সনাতনী ধ্বজা উড়িয়ে বালখিল্য ঐক্যের আন্দোলনের ডাক দেয়। এই কপট চরিত্ররা কাদের এজেন্ট? আগে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। আর আমি আগে সৎসঙ্গী, পরে হিন্দু। প্রবি।
( লেখা ১৮ই অক্টোবর'২০২৪)

বিচিত্রা ১৮৮

পৃথিবীর যে কোনও দেশে ধর্ম্মের নামে, গণতন্ত্র রক্ষার নামে, ক্ষমতা দখলের নামে তা সে যে কারণেই হোক যদি সেই দেশে অন্য ধর্ম্মের অবমাননা হয়, গণহত্যা হয়, অবাধ নারীধর্ষণ, লুটপাট ও ভাংচুর হয় সেটা সেই দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার; সেখানে মানবতা রক্ষা, মানুষ হিসাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রশ্ন অর্থহীন ও মূল্যহীন! সাবাস! হ্যাটস অফ এলিট সমাজ! হ্যাটস অফ!!

বাংলাদেশের শারদোৎসবে কুমিল্লা সহ বিভিন্ন স্থানে নারকীয় ঘটনায় পশ্চিমবাংলার শিক্ষামন্ত্রী একসময়ের বামপন্থী নাট্যকার ব্রাত্য বসুর প্রতিক্রিয়াঃ ওটা বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার!!

বড্ড দেরি হ'য়ে গেল বুঝতেঃ
অসৎ পথেই অর্থ-মান-যশ!
অন্যায় পথেই সুখ-শান্তি সব!

মিডিয়া R বাংলা প্রশ্ন তুলেছেঃ
বাংলাদেশের কুমিল্লা সহ বিভিন্ন স্থানে নির্ম্মম ঘটনায় রাষ্ট্রসংঘ চুপ কেন?
উত্তরঃ মিডিয়া জানে না ৭১ এর বাংলাদেশের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নারকীয় অত্যাচার যেমন ৩০,০০,০০০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু, ৪,০০,০০০ লক্ষ নারীর ওপর নারকীয় যৌন অত্যাচারের সময়ও সেদিন রাষ্ট্রসংঘ নির্লজ্জভাবে চুপ ছিল!?
( লেখা ১৮ই অক্টোবর'২০২১)

বিচিত্রা ১৮৭

প্রতিনিয়ত ঘরে বাইরে, দেশে বিদেশে নানা বিষয়ের ওপর বিশেষজ্ঞের নতুন নতুন মতামত উঠে আসছে। এ নিয়ে পক্ষ প্রতিপক্ষের বাদ বিসংবাদ লেগেই আছে। বিশেষ কোনও বিষয়ের ওপর আপনার বিশেষ ভাবনা যদি ছড়িয়ে দিতে চান সবার মাঝে তাহ'লে আপনাকে সেই বিষয়ের অনেক গভীরে যেতে হবে। অনেক ধীর, স্থির, শান্ত, সংযত হ'য়ে ধৈর্য সহকারে সহ্য শক্তি নিয়ে সেই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কিত জটিল স্পর্শকাতর বিষয়ে আপনাকে অগ্রসর হতে হবে। প্রচুর পড়াশুনা করতে হবে বিষয়ের ওপর। সংশ্লেষন ও বিশ্লেষনের মধ্যে দিয়ে বিষয়ের একেবারে গভীরে পৌঁছে তবেই সমাধানের মুক্তো তুলে আনতে হবে। মনে রাখতে হবে প্রগতি যেন দুর্গতিকে ডেকে না আনে। মনে রাখতে হবে আপনার কোনো চিরাচরিত প্রচলিত বস্তু বা বিষয়ের ওপর বৈপ্লবিক ভাবনার অনিচ্ছাকৃত অসম্পূর্ণতা যেন আপনার মতের বিরোধীদের অহেতুক সুযোগ ক'রে না দেয় আপনার সদিচ্ছাকে খতম করতে। আমি আপনার নতুন কোন বৈপ্লবিক দৃষ্টিভঙ্গি ও মতের মানসিকতার সঙ্গে সহমত পোষণ করি কিন্তু আমি চাই সেই বিষয়ের ওপর প্রচুর যুক্তিপূর্ণ আলাপ আলোচনা বিতর্ক হোক এবং অবশ্যই তা লক্ষ্যে পৌঁছোবার মানসিকতা নিয়েই হোক। অহেতুক ইগোর লড়াই যেন উদ্দেশ্যকে ব্যহত না করে।
( লেখা ১৮ই অক্টোবর'২০১৪)

তুমি না হয় হ'য়ে রইলে শবরী
চেয়ে রইলে পথপানে অনন্তকাল
সে আসবে ব'লে।
 কিন্তু তুমি শবরী,
অন্তরে বাহিরে শবরী হয়ে যদি থাকো চিরকাল
তবে জেনো একদিন সে আসবে,
আসবেই আসবে, 
যদি হয় সে রাম।

হে আজকের শবরী!
রাম ভেবে রাবণের অপেক্ষায় দিন নষ্ট ক'রো না। 
জীবন ছোট, ভুল ক'রে রাবণকে আলিঙ্গন ক'রে ব'সো না।

বন্ধু!
আমি শবরী হ'তে রাজী।
রাখো বাজি, এক ডুবে হব আমি পার; 
আমি কাটবো সাঁতার।
যদি সে হয় রাম অবতার!!!!!

শব্দবাজি আর আজান
একই গোত্র, একই তান!?
তথা হ'তে আগত
Divine dictation!!

কেনই বা নোটবন্দি সমর্থন আর 
কেনই বা তা' প্রত্যাহার!?
হে রাম!
বুড়ো বয়সে বালখিল্য আচরণ? 
কেন যে লোক কমল হাসান!!!!! 
( লেখা ১৮ই অক্টোবর'২০১৮)

জল আর জলপাই
যদি হয় এক
তাহ'লে কোথায় জল পাই?
শব্দবাজি আর আজান
যদি হয় এক 
তাহ'লে ডাকাত আর ডাক্তার
এক হ'লে কেমন হয় দ্যাখ।
তারা কেন নয় এক?
তথা হ'তে আগত তথাগত
আর তথাগত
দুজনেই সমান স্বাগত!?

হে বনবিবি! আমি ব'নে যাবো
তোর প্রেমে মাতাল হবো
সেথায় সবুজ আছে, 
সবুজ প্রাণ আছে,
তোর গায়ের মিষ্টি গন্ধে 
আমি পাগল হবো।
(লেখা ১৮ই অক্টোবর'২০১৮)

জংলী জংলী প্যারি জংলী
মানুষের জঙ্গলে না।
সুইটি সুইটি সুইটি জংলি
জংলি সভ্যতার না।

তোমার হাতে হাত রেখে 
আমি হ'তে চাই ভবসাগর পার;
তুমি আছো তাই তো আমি আছি
সাঁতরে যাবো আমি 
জীবন মৃত্যুর পারাবার।

যার যে রূপ লাগে ভালো
সে সেই রূপে মজুগ গো;
আমার লাগে ভালো রূপ মীরাবাঈ
আমি তাঁরে পুঁজি গো।
( লেখা ১৮ই অক্টোবর'২০১৭)






































.

Friday, October 17, 2025

কবিতাঃ ঐক্যের দিকে এক ধাপ-------

একটি পদক্ষেপ, দৃঢ় ও অবিচল পদক্ষেপ
আত্মবিশ্বাসে পূর্ণ একটি পদক্ষেপ
অবিরাম একাগ্রতার সাথে পদক্ষেপ
একমাত্র উপযুক্ত ও যোগ্য পদক্ষেপ
একত্রিতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।

ঐক্যের অনুভূতির জন্ম হয়
ভাগ করা কষ্ট থেকে, যেমন কষ্ট
যাযাবর জীবনের কষ্ট।
আমাদের সমস্ত কষ্ট সাহসের সাথে সহ্য করতে হবে
অদম্য অবিচল আনুগত্যের সাথে।

আমি তোমার কথা ভাবছি
তুমি আমার কাছে এসো
আমার দুর্বল পাতলা হাত
ঠান্ডায় কাঁপছে হাত
তোমার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উষ্ণ হাতে
আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছা এবং বেড়ে ওঠার ইচ্ছা,
আমাকে জাগিয়ে তোলো
আমার ভেতরে ঘুমন্ত শক্তিকে জাগিয়ে তোলো
আবার নতুন ভোরের ঝলকের সাথে,
নতুন ভোরের আভাস দিয়ে।

বৃষ্টি, সাফল্যের বৃষ্টি সহজেই নেমে আসে
সর্বশক্তিমানের আশীর্বাদের বৃষ্টির মতো
বহুবর্ষী শুষ্ক ও ফ্যাকাশে জীবন, নরকের জীবনকে
স্নান করানোর জন্য।


বিচিত্রা ১৮৬

সেদিন মানুষের ভরা দরবারে মা দ্রৌপদীকে উলংগ করেছিল দূর্যোধনের নেতৃত্বে দুঃশাসন আর সেই সময় তা চুপ ক'রে দেখেছিল সমাজের উচ্চবর্গের মহাবীর ভীষ্মেরা! আর আজও ওপার বাংলায় শারদোৎসবে উলঙ্গ করলো মা দূর্গাকে আজকের দুঃশাসনেরা আর দু'বাংলার বাঙালী সমাজের এলিট সম্প্রদায়ের ভীষ্মেরা চুপ, নিশ্চুপ!!! আর আনন্দে মাতোয়ারা এ বাংলার শারদোৎসবে তামাম হিন্দু বাঙালী!!!!!!!!
সেই ট্রাডিশন সমানে চলেছে!

ও বাংলার শারদোৎসবের নির্ম্মম ঘটনায়
এ বাংলায় শারদোৎসবে ভয়ংকর এক আনন্দময় শান্তিপূর্ণ নীরবতা!!!!
হ্যাটস অফ হিন্দু বাঙালী!
( লেখা ১৭ই অক্টোবর'২০২১)

যাকেই ভাবি ভরসা করা যায়
সেই ভাসিয়ে দিয়ে চলে যায়!
যাকেই ভাবি সৎ
দুর্নীতির আখড়া চালনায় সেই দেয় মদত!!
( লেখা ১৯ই অক্টোবর'২০২১)

যার যেমন ভাব তার তেমন লাভ,
আবার যার যেমন সঙ্গ
তার তেমন ভাব, তেমন লাভ,
তেমন ভালোমন্দ।

আজ তোমার দিন
আমার দিনের প্রতিক্ষায় রইলাম।
রাম! রাম!!
তবে বদলার প্রতীক্ষায় নয়,
ফিরিয়ে দিয়ে সম্মান নেবো চির আরাম।

আজ কাছে আছি তাই অবহেলায় বাঁচি
যেদিন থাকবো না আর কাছে মুখে বসবে মাছি
সেদিন পড়বে মনে খালি
চলে যাওয়া দিনগুলি।

আজকে দিলে গালি যেদিন থাকবো না
সেদিন পড়বে মনে খালি
কোথায় পাবো তারে?
শুধরে নিয়ে ভুল 
এবার রাখবো তারে হৃদমাঝারে ধ'রে!!
কিন্ত সে গুড়ে বালি,
হৃদয় রবে তোমার খালি।
তাই সময় থাকতে জাগো
নিজের ভুল ভাঙো।
( লেখা ১৭ই অক্টোবর'২০১৮)

 

Thursday, October 9, 2025

বিচিত্রাঃ ১৮৫

।। মতবিরোধ ও মনবিরোধ।।

আজ লক্ষীপুজো। দয়ালের কাছে প্রার্থনা 
করি আমার কাছের দূরের যত পরিচিত মানুষ সবার ঘরে লক্ষী অধিষ্ঠিত হ'ক।
আর এই পবিত্র দিনে প্রার্থনা করি সবার সঙ্গে আলোচনা হ'ক, আলোচনায় মতবিরোধ হ'ক কিন্তু মনবিরোধ যেন না হয়।
কারণ দয়ালের ভাষায় আমিও বলি, "I love you in the name of Dayal (Christ). I love you because I love Dayal (Christ) (আমি তোমাকে দয়ালের (খ্রীষ্টের) নামে ভালবাসি। আমি দয়ালকে (খ্রীষ্টকে) ভালবাসি ব'লেই তোমাকে ভালবাসি)।"  
( লেখা ৯ই অক্টোবর'২০২৩)

Wednesday, October 8, 2025

প্রবন্ধঃ নাস্তিক ও আস্তিক আর স্বীকার ও অস্বীকার এবং গ্রহণ ও বর্জন ।

নাস্তিক আর আস্তিক শব্দ নিয়ে ঈশ্বর বিশ্বাসী আর ঈশ্বর অবিশ্বাসীদের মধ্যে লড়াই আজও বিদ্যমান। নাস্তিক কেউ না, সবাই আস্তিক। কারণ প্রত্যেকের অস্তিত্ব আছে, আর সবাই অস্তিত্বে বিশ্বাসী, বিশ্বাসী পারিপার্শ্বিক সহ নিজের অস্তিত্ব রক্ষা ও তার শ্রীবৃদ্ধিতে। তাই কেউ নাস্তিক নয়, সবাই আস্তিক।

মানুষের ধারণা ঈশ্বরকে যে বিশ্বাস করে সে আস্তিক আর ঈশ্বরকে যে বিশ্বাস করে না সে নাস্তিক। ঈশ্বরের অস্তিত্ব আছে কি নেই তা' নিয়ে তর্কবিতর্ক বা বিশ্বাস অবিশ্বাস করার দরকার নেই, নিজের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করে কিনা সেটাই মুখ্য। যে নিজের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করে, অনুভব করে, উপলব্ধি করে সে অস্তিত্বের অস্তিত্ব পরম অস্তিত্বকে, উৎসের উৎস পরম উৎসকে, কারণের কারণ পরম কারণকে বিশ্বাস করে, অন্বেষণ করে। ভেবে দেখে আমি কেন জন্মেছি সেই কারণ জানার।
পরমপ্রেময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বললেন,
" তুমি কেন জন্মেছ মোটাভাবেও কি দেখেছ ? থাকাটাকে কি উপভোগ ক'রতে নয় ---- চাহিদা ও কর্ম্মের ভিতর - দিয়ে পারস্পরিক সহবাসে ----- প্রত্যেক রকমে ?
তেমনি বুঝছ না ভগবান কেন সৃষ্টি ক'রেছেন ? উত্তর কি এখন ?----- নিজেকে অনুভব ক'রতে , উপভোগ ক'রতে ---- বিশ্বে , প্রত্যেক অনুপাতে --- দেওয়ায় , নেওয়ায় -- আলিঙ্গনে , গ্রহণে , কর্ম্মবৈচিত্রে , ----- নয় কি ? "

তাই ঈশ্বরে বিশ্বাস বা অবিশ্বাস করা আমার নিজের ব্যাপার। আমি স্বাধীন। আমার স্বাধীনতায় স্রষ্টা কোনও হস্তক্ষেপ করেন না। স্রষ্টা একমাত্র গণতান্ত্রিক পুরুষ অর্থাৎ তিনিই এক ও একমাত্র নিরপেক্ষ, ন্যায়পরায়ণ এবং সকলের প্রতি তাঁর সমান অধিকার। স্রষ্টা নিজেই এমন একটি আদর্শের প্রতীক যা সকলের জন্য প্রযোজ্য।
তাই আমি স্রষ্টার অস্তিত্বকে, স্রষ্টার মানুষী রূপকে মানতে পারি আবার অগ্রাহ্য করতেও পারি। তাঁর দেখানো পথে চলা শুরু করতেও পারি আবার উল্টো পথেও চলতে পারি। এটা আমার অধিকার। তাঁর দেখানো পথ গ্রহণ ও বর্জন করার অধিকার আমার আছে। জাগতিক ভাবে আমার সংসারে যে নিয়ম, স্রষ্টার দরবারেও তাই নিয়ম। আমাকে আমার পিতা মাতা পৃথিবীর আলো দেখিয়েছেন, তাই তাদের একটা দায়িত্বও আছে আমাকে রক্ষা করার, বাঁচার ও বেড়ে ওঠার পথে চালিত করার জন্য আমাকে গাইড করার। এবার আমি বড় হয়েছি, আমি স্বাধীন, আমি সেই গাইডেন্স অনুযায়ী জীবনে চলতেও পারি, আবার নিজের ইচ্ছেমত নিজের জীবনকে চালাতে পারি। তাদের কথা শুনতেও পারি, আবার নাও শুনতে পারি। বড় জোর আমার জাগতিক পিতামাতা চেঁচামেচি করতে পারেন, মারধর করতে পারেন আমাকে তা' আমি যতদিন ছোটো ততদিন কিন্তু আমি যখন বড় হ'য়ে গেছি, বৃত্তি-প্রবৃত্তির বৃত্তে ঘোরা শুরু করেছি, রিপুর গরম উপস্থিতি অনুভব করতে শিখেছি শরীরে-মনে তখন তাঁদের কথা অনুযায়ী আমি চলবো কি চলবো না সেটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার ও সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ব্যক্তিগত।

আমার ইচ্ছা তখন একান্তই আমার, আমি আমার নিজের ইচ্ছেমত চলতে পারি, নিজের ইচ্ছের ডানা মেলে উড়তে পারি। সেখানে পিতামাতা কিছু করতে পারেন না, তাঁরা আমার এই পৃথিবীতে আসার কারণ হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা আমার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারেন না, করলেও আল্টিমেট কোনও লাভ হয় না, সফল হ'ন না, কারণ আমি তাঁদের কথা শুনি না, তাঁদের পরামর্শ নিই না, নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করি না। আমি স্বাধীনচেতা, পরাধীনতা আমার চেতনায় নেই। গলায় বকলেস বাঁধা পোষা কুকুর হ'তে আমি রাজী ন'ই, আমার আত্মমর্যাদায় বাধে, অহংবোধের প্রাবল্যে আমি মুক্তমনা। আমার পিতামাতা আমায় জন্ম দিতে পারে কিন্তু আমার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। তাই এমতাবস্থায় আমার পিতামাতা পরাধীন। আমার পিতামাতা বোঝে না যে আমি চড়ুই পাখি হ'তে চাই না, আমি বাবুই পাখি, বা বাবুই পাখি হ'তে চাই। কবি রজনীকান্ত সেন আমার আদর্শ। কবি রজনীকান্ত সেনের বিখ্যাত কবিতা "স্বাধীনতার সুখ" আমার পথ চলার দর্শন, আদর্শ। 'স্বাধীনতার সুখ' কবিতায় কবি বলছেন,
"বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই,
কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই,
আমি থাকি মহা সুখে অট্টালিকা পরে,
তুমি কত কষ্ট পাও রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ে।"

উত্তরে বাবুই পাখি বলছে,
বাবুই হাসিয়া কহে, “সন্দেহ কি তায়?
কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়।
পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা,
নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর, খাসা।”

এই কবিতার বাবুই পাখির মত স্বাধীনতা, আত্মমর্যাদা সবাই চায়, আত্মসম্মানবোধ সবার আছে। সবাই চায় নিজের পায়ে দাঁড়াতে, সবাই চায় নিজের সৃষ্টির স্বীকৃতি পেতে, স্বীকৃতি পাক, না-পাক নিজের সৃষ্টির প্রতি স্রষ্টার ভালোবাসা ও গর্ব থাকেই। তাই নিয়ে সে বড়াই করতেই পারে। কিন্তু সেই বড়াই, সেই গর্ব, সেই অহংকার যেন তার স্বাধীনতাকে, স্বাধীনতার অর্থকে কলুষিত না করে, ভারসাম্য নষ্ট না করে।
আবার কারও নিশ্চিন্ত আশ্রয়ে থেকে, সুখে থেকে সেই আশ্রয়কে নিয়ে অহংকারে অন্যকে ছোটো করা, অন্যের ছোট্ট আশ্রয়কে অপমান করা যেমন অন্যায়; ঠিক তেমনি অপরের আশ্রয়ে থেকে সেই নিশ্চিন্ত আশ্রয়কে অস্বীকার করা, আশ্রয়কে taken for granted ক'রে নেওয়া অর্থাৎ কারও আশ্রয়ে থেকে তার দয়া, করুণাকে প্রকৃত মূল্য না দিয়ে বা আশ্রয়দাতার গুরুত্বকে অবমূল্যায়ন ক'রে ধরে নেওয়া যে এই আশ্রয় আমার অধিকারের মধ্যে পড়ে এবং এই অধিকার আমার সবসময় থাকবে বা পাওয়া যাবে; এটা ভাবাও তেমনি অন্যায় ও মূর্খামি।
তাই, স্বাধীনতার অর্থ বেঈমানি, অকৃতজ্ঞতা ও নেমকহারামী নয়। স্বাধীনতার অর্থ অহংকার বা অহংকারী হওয়া নয়। স্বাধীনতার অর্থ উচ্ছৃঙ্খলতা নয়, স্বাধীনতার অর্থ উৎসকে অস্বীকার করা নয়। স্বাধীনতার অর্থ কু-এর অধীন হওয়া নয়।

স্বাধীনতার অর্থ সু-এর অধীন হওয়া। স্বাধীনতার ইংরেজী Independence কিন্তু এর প্রকৃত অর্থ Interdependence অর্থাৎ পরস্পর নির্ভরতা, পরস্পর পরস্পরের প্রতি নির্ভশীল হওয়া। সেই নির্ভরশীলতা, সেই কৃতজ্ঞতা, সেই বিশ্বস্ততা বাপের প্রতি বা স্রষ্টার প্রতি যার থাকে না সে কি জানি না, তবে মনুষ্য পদবাচ্য নয় এবং সে মহামূর্খ ও পাগল।

আর, যে বাপকে বাপ ব'লে স্বীকৃতি দেয় না, উৎসকে স্বীকৃতি দেয় না, তা'তে বাপের বা উৎসের কিচ্ছু যায় আসে না, বাপ যদি পুত্রকে পুত্র ব'লে পরিচয় না দেয়, উৎস যদি তাকে স্বীকৃতি না দেয় তাহ'লে সে জারজ ব'লে বিবেচিত হয়।

যাই হ'ক শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের দৃষ্টিতে বিষয়টি দেখবার ও বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করলাম। এই বিশ্লেষণ গ্রহণ ও বর্জনের অধিকারও পাঠকের নিজস্ব। গ্রহণও করতে পারে, বর্জনও করতে পারে।