Powered By Blogger

Thursday, July 27, 2023

উপলব্ধি ৫০ঃ ঠাকুর ও আমরা।

প্রায় সময় দেখি কেউ ঠাকুরের (শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র) কোনও বিষয় নিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট করলে যেমন ‘জয়গুরু’ ‘ধন্যবাদ’ ইত্যাদি পজিটিভ মন্তব্য ভেসে আসে ঠিক তেমনি কিছু মন্তব্য ভেসে আসে নেগেটিভ আর তাও আবার গুরুভাইদের কাছ থেকে। তারা পোষ্টের বিষয়বস্তু সংশোধন ক’রে দিতে চায় অতি ভক্তি ও অতি জ্ঞানীর পরাকাষ্ঠা হিসাবে। সংশোধন ভালো কিন্তু সংশোধনের জন্য দম থাকতে হবে যথেষ্ট এটা যেন সংশোধনকারীরা মনে রাখে। কিছু গুরুভাই আছে তারা নিজেদের ঠাকুরের শুধু দীক্ষিত যে বলে তা নয় তারা ভীষণ নিজেদের ঠাকুর প্রেমী ও ইষ্টপ্রাণ এবং ইষ্টপ্রতিষ্ঠা ও ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠার নিষ্ঠাবান কর্মী ব’লে মনে করে আর তাই তারা পোষ্ট করা বিষয়ের প্রসঙ্গ থেকে বেরিয়ে গিয়ে ব্যাক্তিগত আক্রমণে চলে যায়। আবার কেউ কেউ তো ঠাকুর পরিবারের বিরুদ্ধে তীব্র অশ্লীল বিষোদ্গার ক’রে ঠাকুর প্রেমে ভেসে গিয়ে ঠাকুর প্রেমের বাণ ডেকে আনে। এইরকম পরিস্থিতিতে যার বিরুদ্ধে এমন আক্রমণ হয় তারা নড়ে যায় এবং তর্ক ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে। তখন এই সুযোগে কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের অদীক্ষিত নারী পুরুষ তীক্ষ্ণ অশ্লীল মন্তব্য ছুড়ে দেয় ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারের উপর। এক্ষেত্রে তখন নিজের উপরেই নিজের রাগ হয়। মন ব’লে, আমরা সত্যিই কি ঠাকুরের, ঠাকুর মিশনের যোগ্য, দক্ষ ও শিক্ষিত পতাকাবাহী!?
যাই হ’ক, কারও নেগেটিভ মন্তব্যে ন'ড়ে গেলে নিজের বিশ্বাসের প্রতি সন্দেহের প্রশ্ন এসে যায়। প্রত্যেকের স্বাধীন মতামত আছে তা সে মতামত অমৃত বহন ক'রে আনতে পারে আবার নরবর ব'য়ে আনতে পারে। যার যেমন শিক্ষা, যার যেমন রুচি, যার যেমন বংশমর্যাদা, যার যেমন পূর্ব জন্মের সুকৃতি, যার যেমন পারিবারিক ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ সে তেমন ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া দেয়। এখন যে যেটা গ্রহণ করবে। সবাই আজকাল পন্ডিত তা সেই আলোচ্য বিষয় সম্বন্ধে তার জ্ঞান থাকুক আর নাই থাকুক; মন্তব্য তাকে করতেই হবে। আর এক ধরণের মানুষ আছে যারা আলোচ্য বা প্রকাশিত বিষয়ের অন্তর্নিহিত অর্থ ধরতে বা বুঝতেই পারে না অথচ গভীর মন্তব্য করার ইচ্ছা জাগে। এগুলি করে হীনমন্যতা থেকে। একটা ভালো পোষ্ট তাকে নীচা দেখাতেই হবে যেমন ক'রে পারি। প্রশংসা দিতে বা করতে বুকে ব্যাথা লাগে। আর এক ধরণের মানুষ আছে যারা লেখা ভালো ক'রে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে না পড়েই হড়বড়ি আলটপকা মন্তব্য ক’রে নিজেকে সাজাতে চায় ময়ূরপুচ্ছধারী কাকের মত। তাই এইসব মানুষের জন্যে সব বিষয় বা সব বাণী সব জায়গায় সম্মান ও গুরুত্ব পায় না। পোষ্ট করা বিষয়ের বিষয়বস্তু এক; আর কারও কারও সেই বিষয় থেকে একেবারে ১৮০ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে উল্টোপথে হেঁটে মন্তব্য আর এক; এসব দেখে ঠাকুরের কথা মনে পড়ে যায় , “অপাত্রে, অযোগ্যে করিলে দান, দাতা গ্রহীতা দুইই ম্লান।“ এছাড়া অবাক লাগে যখন দেখি ঠাকুরের দীক্ষিত অথচ ঠাকুরকে আম ধর্মীয় গুরুদের আসনে বসিয়ে নির্দ্বিধায় ও অবলীলায় আলোচনা করে!!!!!!! ঠাকুরের দীক্ষিত অথচ ঠাকুর সম্পর্কে, ঠাকুরের মিশন সম্পর্কে, ঠাকুরের দর্শন সম্পর্কে, ঠাকুরের বাণী সম্পর্কে, ঠাকুরের জীবন সম্পর্কে, ঈশ্বর, গুরু, ধর্ম, মত ইত্যাদি সম্পর্কে তিল মাত্র জ্ঞান ও ধ্যান ধারণা নেই অথচ ঠাকুর ও ঠাকুরের বিষয় নিয়ে, ধর্ম, ঈশ্বর, গুরু ইত্যাদি বিষয় নিয়ে পোঙা পন্ডিতের মত আলোচনার আসরে হাজির হ'য়ে যায় গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লের মত!!!!! এমন বিদগ্ধ পন্ডিতরা কাউকেই রেহাই দেয়না ও দেয়নি সে বিশ্বের যত বড় পন্ডিত হ'ক না কেন। এরা বিরাট জ্ঞানী পন্ডিত, এদের হিমালয় সমান জ্ঞান আর মহাসমুদ্রের মত গভীর ও ব্যাপ্ত দৃষ্টি!!! এরা এতটাই মহান আত্মা যে এরা মহাত্মা তো দূরের কথা পরমাত্মাকেও অবলীলায়, অবহেলায় সামনে পিছনে বলাৎকার ক'রে দিতে দ্বিধা করে না। তাই ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে এদের কুৎসিত ভাষা প্রয়োগ দেখে মনে পড়ে যায় ঠাকুরের আরও একটা বাণী, "বাক ও ব্যবহার এই দুটো জিনিসের মধ্যে Whole creation( সমগ্র সৃষ্টি) নিহিত আছে। তাই মানুষকে চেনা যায় তার বিভিন্ন অবস্থার বাক্য ও ব্যবহার দিয়ে।" তাই এখানে যারা ঠাকুরের দীক্ষিত ও অদীক্ষিত মন্তব্যকারী বিভিন্ন পোষ্টের বিষয়বস্তু নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবার নিয়ে যে ভাষা প্রয়োগ করে এবং যেসব নোংরা ছবি পোষ্ট করে এবং নির্দ্বিধায় যারা বলতে পারে পৃথিবীর সবাই নীলছবি দেখে তাদের চেনার জন্য ঠাকুরের এই বাণী যথেষ্ট। আর ঠাকুরের শিষ্য হিসাবে ও একজন গুরুভাই হিসেবে অন্য গুরুভাইদের যারা গুরুভাই হিসাবে গুরুভাইকে অকপটভাবে প্রকৃত সম্মান করে, শ্রদ্ধা করে, ভালোবাসে তাদের বলছি ঠাকুরের ও ঠাকুর পরিবারের সম্মান রক্ষা করার দায়িত্ব আপনার-আমার। তাই অযথা যেন আমরা তর্কে না যাই আর গেলেও যথেষ্ট পরিমাণে তৈরী হয়েই যেন যাই কারণ ঠাকুর হ'লেন বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময়!!!!! তাই তাঁর সম্পর্কে পোষ্ট করা বিষয়বস্তু সম্পর্কে ও তাঁর সম্পর্কে কথাবার্তা বলার ক্ষেত্রে তাঁর সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল থাকা জরুরী এবং যাদের সঙ্গে কথা বলছি, মত বিনিময় করছি তা সে দীক্ষিত-অদীক্ষিত যেই হ'ক, তাদের রুচি, শিক্ষা ইত্যাদি সম্পর্কে সাবধান ও সতর্ক থাকা খুবই জরুরী। আপনার-আমার ঠাকুরকে ও ঠাকুর পরিবারকে আপনি-আমি রক্ষা করতে না পারলে কার দায় পড়েছে ঠাকুরের ও ঠাকুর পরিবারের ইজ্জৎ রক্ষা করার????? তাই সাধু সাবধান। স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনা ক’রে যেন কথা বলি ও তাঁর বিষয় পোষ্ট করি। সব কথার যেমন উত্তর দেবো না, ঠাকুরের সব বিষয় ল্যাজা মুড়ো বাদ দিয়ে যত্রতত্র যখন তখন যেন পোষ্ট না করি।
(লেখা ২৮শে জুলাই'২০১৮)

No comments:

Post a Comment