Powered By Blogger

Sunday, July 23, 2023

প্রবন্ধঃ অশনি সঙ্কেত

বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নে বর্ণিত ঠাকুরের এই বাণী কতটা নির্ম্মম সত্য তা আজ ফেসবুক ব্যবহারকারী তা সে দীক্ষিত হ'ক আর না হ'ক বুঝতে পারছেন! কিন্তু দুঃখ এই, ভয়ঙ্কর যে ভবিষ্যতের অশনি সংকেত দেখা যাচ্ছে এর মধ্যে দিয়ে সেই সংকেত বা ইঙ্গিত দেখতে পেয়েও সমাজের এলিট সমাজ আজ চুপ! বাংলার কৃষ্টি, বাংলার সংস্কৃতির যে ভয়াবহ বিপর্যয় নেবে আসতে চলেছে তার ইঙ্গিত পাওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন মস্তিস্ক থাকা সত্ত্বেও তারা 'আমার গায়ে আচঁ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতা নিয়ে দিব্যি আরামে তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে আছে!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে একশ্রেণীর বিপদগামী বিকৃত মানসিকতাসম্পন্ন নারীপুরুষ বিশেষতঃ বাঙালি যুবসমাজ অশ্লীল ভাষায় ঠাকুরকে গালিগালাজ ক'রে মানসিক তৃপ্তি খুঁজে নিচ্ছে! ভিটামিন প্রোটিন সমৃদ্ধ গালাগালিতে আকাশ বাতাস বিষাক্ত ক'রে তুলে নিজেকে ও নিজের পরিবারের ও পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎকে নরকের দোরগোড়ায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে! এইজন্য তারা বিন্দুমাত্র ভীত চিন্তিত নয়! সাধারণ অবিবাহিত যুবকযুবতী যৌবনের পাগলা ঘোড়ায় চেপে উচ্শৃঙ্খল বিশৃঙ্খল জীবনের অধিকারী হ'য়ে একের পর এক অকথ্য কুকথ্য ভাষায় ঠাকুরের, ঠাকুর পরিবারের চৌদ্দগুষ্টির শ্রাদ্ধ ক'রে চলেছে ফেসবুক নামক মিডিয়ায়! যার থেকে কানে গরম সীসা ঢেলে দেওয়া আরামদায়ক!!!! আর এরা সবাই বাঙালি!

আবার এর মধ্যে কিছু আছে যারা নিজেদের বলছে তারা নাকি সৎসঙ্গী!!!!! প্রকাশ্যে শ্রীশ্রীঠাকুরের জ্যেষ্ঠ আত্মজকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ক'রে তাঁর পরিবারকে কলুষিত ক'রে ঠাকুরপ্রেমী সাজতে তাদের এতটুকু দ্বিধা নেই!

এছাড়া ভাবলেও অবাক লাগে এক মা ঠাকুরকে অবলীলায় অবহেলায় বীভৎস ভাষায় গালাগালি ক'রে আমাকে কমেন্টে লিখছেন যে তার সন্তানকে হত্যা ক'রে নিজের হাতে মাটিতে পুঁতে দেবেন যদি সে কখনো সৎসঙ্গী হয়! এক মা বলছেন, সৎসঙ্গী হওয়ার থেকে মরে যাওয়া ভালো তার সন্তানের! এক বাবা বলছেন, আমি ও আমার ছেলে একসঙ্গে দুজনে মিলে বোকা----- অনুকূলের ------টিপি, ----------মারি!!!!!!! কয়েকটা মাত্র উদাহরণ তুলে দিলাম শুধু অনুভব ও উপলব্ধির জন্য। আর এই তুলে দেওয়ার জন্য ঠাকুর ও আপনাদের সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।

স্তম্ভিত হ'য়ে যেতে হয় এদের বায়োলজিক্যাল মেক আপ দেখে! স্তম্ভিত হ'য়ে যেতে হয় এদের চারপাশের পরিবেশ দেখে? কোন পরিবেশে এরা বড় হচ্ছে!? এরকম বায়োলজিক্যাল মেক আপ কি ক'রে হ'লো!? এর কি কোনও বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা আছে!? জন্মবিজ্ঞানের বিজ্ঞানীরা কি বলেন!? কৃষ্টিগত ভয়ঙ্কর পরাভবের জন্য পন্ডিত সমাজ কি বলেন!? এই বীভৎস পরাভবের ফলে চারপাশের উদ্ভূত কুৎসিত সংস্কৃতির পরিবেশের জন্য পরিবেশবিদরা কি বলেন!? কোন পরিবেশ এরা রচনা করছে আগামী পৃথিবীর ও আগামী প্রজন্মের জন্য!? সমাজের এলিট সমাজের কি কোনও দায় নেই!?

এদের নোংরা মুখের নোংরা ভাষায় পাল্লা দিতে না পেরে জড়িয়ে যাচ্ছে কিছু সৎসঙ্গীও! এলাকায় এলাকায় উৎসবের নামে কোনও কোনও উৎসব মণ্ডপে দেখা গেছে সৎসঙ্গ শেষে গান বাজনার নামে বেলেল্লাপনা! দেখা গেছে উৎসব কর্তাদের উৎসবের মূল অনুষ্ঠান শেষে আর তাদের কোন দায় বা দায়িত্ব নেই উৎসব শেষের অনুষ্ঠান নিয়ে! কারণ তাদের হাত পা বাঁধা শেষের অনুষ্ঠানের আয়োজকদের কাছে! কিসের জন্য হাত পা বাঁধা!? এমনও দেখা গেছে উৎসব হয়েছে, মূল অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে, তারপর শুরু হয়েছে বাউল গানের অনুষ্ঠান! সেই অনুষ্ঠানের দেহতত্ত্বের দোহাই দিয়ে দ্বৈত অর্থের অজুহাতে পরিবেশন হচ্ছে শ্রীশ্রীঠাকুরের আদর্শ বর্জিত অশ্লীল ইঙ্গিতপূর্ণ যৌন সুড়সুড়ি-তে ভরপুর মাতাল গান! আর সেই গান উপভোগ করছে নারীপুরুষ নির্বিশেষে! মঞ্চের সামনে মাল খেয়ে উদোম নৃত্য করছে ছেলেছোকরা! সামনে চেয়ারে বসে লাল চোখে তা উপভোগ করছে দাদা ও সাঙ্গপাঙ্গরা! আর মঞ্চে সাজানো ফটো থেকে শ্রীশ্রীঠাকুর, শ্রীশ্রীবড়মা, শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীঅশোকদাদা ও শ্রীশ্রীবাবাইদাদা তা দেখছেন সৎসঙ্গের সকাল থেকে অনুষ্ঠিত বাঁচাবাড়ার অনুষ্ঠানের সমাপ্তি!

কথায় আছে শেষ ভালো যার সব ভালো তার। কিন্তু শেষে ভালো হচ্ছে কি মন্দ হচ্ছে তা দেখার আর দরকার পড়েনি অনুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত, অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত দায়িত্বপূর্ণ সৎসঙ্গী ঋত্বিক, যাজক, অধ্বর্যু, বক্তা, গায়ক এবং সৎসঙ্গী দাদা ও মায়েদের! এরা সবাই তখন ততক্ষণে নিরাপদ আশ্রয় ঘরে পৌঁছে হাতপা ধুয়ে খেয়েদেয়ে নিশ্চিন্ত নিদ্রাসুখের ব্যবস্থায় ব্যস্ত অনুষ্ঠান আয়োজনের, গান ও বক্তৃতার তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে তুলতে!!!! এর কি প্রতিক্রিয়া হ'তে পারে তার জন্য কোনও মাথাব্যথা নেই এদের! বিশেষ ক'রে ইয়ং সৎসঙ্গী জেনারেশনের! তারা অনুষ্ঠান থেকে শরীরে-মনে-আত্মায় অক্সিজেন, ভিটামিন, প্রোটিন নিয়ে ঢুকে পড়েছে ঘরে অতএব আর কোনও দরকার নেই!

এরকম বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে চলেছে সৎসঙ্গীদের মধ্যে আমিত্ব প্রতিষ্ঠার প্রতিযোগিতায়! আর এদের সুযোগ নিয়ে শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢুকে পড়ার মত সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিচ্ছিন্নতাবাদী ঠাকুর বিরোধীরা সৎসঙ্গী সেজে ঢুকে পড়ছে ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারকে কলঙ্কিত করার জন্যে! আর 'কালকের যোগী ভাতকে বলে অন্ন' প্রবাদের মত কাল দীক্ষা নিয়েই আজ বি-শা-ল ঠাকুরপ্রেমী, ঠাকুরভক্ত হ'য়ে পাগলের মত আবেগে ভেসে পড়ছে! এরা জানে না আবেগ ভালো, আবেগে ভেসে যাওয়া ভালো নয়! এরা আবেগে ভেসে গিয়ে ঢুঁশ দিয়ে বেরোচ্ছে বকনা বাছুরের মত সমাজের এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত ঠাকুরের আদর্শ, ঠাকুরের মিশন, ঠাকুরের কথা, ঠাকুরের বলা, ঠাকুরের ইচ্ছা, ঠাকুরের স্বপ্ন, ঠাকুরের কান্না, ঠাকুরের বুকের ব্যথা, ঠাকুরের চাহিদা, ঠাকুরের নির্দেশ, ঠাকুরের আদেশ, ঠাকুরের বিধান, ঠাকুরের নীতি ইত্যাদি কিছুই বিন্দুমাত্র না জেনে মূর্খের মত আর তারপরে ঝিমিয়ে পড়ছে কিছুদিন পরে, নইলে নিজেদের মধ্যে জড়িয়ে পড়ছে বাকবিতণ্ডাতে! জড়িয়ে পড়ছে জিলিপির প্যাঁচহীন সরল সাধাসিধেভাবে চলা আবেগে ভেসে যাওয়া কিছু সৎসঙ্গী! জড়িয়ে পড়ছে আমিত্ব প্রতিষ্ঠাতে উন্মাদ কিছু সৎসঙ্গী! জড়িয়ে পড়ছে ক্ষমতা দখলের লোভে লোভী কিছু সৎসঙ্গী! জড়িয়ে পড়ছে সমাজে অর্থ, মান, যশ, শিক্ষা, সভ্যতায় পিছিয়ে পড়া অবস্থা থেকে সামাজিক প্রতিষ্ঠা ও এলাকায় পরিচিত ব্যক্তিত্ব হওয়ার লোভে পাঞ্জা হাতিয়ে বিশেষ সৎসঙ্গী হওয়ার নীচ মানসিকতায়! জড়িয়ে পড়ছে ঠাকুরকে আয়ের উপকরণ ক'রে নিয়ে রোজগারের মানসিকতায়!

আর এই সুযোগে সুযোগসন্ধানীরা হ'য়ে উঠেছে সক্রিয়।
সুযোগ সন্ধানীরা সাধারণ সরলমতি সম্পন্ন সাদাসিধে মানুষকে বিপথগামী ক'রে তুলবার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে ফেসবুকে গালাগালির অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রে রে ক'রে! তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছে বাংলার বুকে বাঙালি হ'য়ে হিন্দুধর্ম, সনাতন ধর্ম্ম, ঈশ্বর, দেবদেবী, নারী জাতির মর্যাদা রক্ষা করবার মহান দায়িত্ব নিয়ে! তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছে মুষ্টিমেয় কয়েকজন বাঙালি (তার মধ্যে কিছু সাজা বাঙালিও আছে) ফেক আইডি খুলে, মুখ লুকিয়ে, নাম ভাঁরিয়ে ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারের বিরুদ্ধে সীমাহীন গালাগালি ও অশ্লীল শব্দের মালা গেঁথে কুৎসা, নিন্দা, অশ্রদ্ধা, অপমানের বান ডাকার মহান ব্রত নিয়ে! আর লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি সৎসঙ্গীরা যারা ফেসবুক করেন তারা দেখছেন তা নীরবে! আর ফেসবুকে যারা ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবার, ঠাকুরের আদর্শ, ঠাকুরের মিশন নিয়ে কিছু লেখালেখি করেন সেখানে তারা আসেন আর সেই লেখার সঙ্গে পোস্ট করা ঠাকুরের ফটোতে প্রণাম, জয়গুরু জানিয়ে আর লাইক দিয়ে দায় সারেন! পড়েনই না! জানার চেষ্টায় করে না এই লেখায় বাঘ-ভাল্লুক কি আছে! পড়ার, জানার, চেনার, বোঝার ইচ্ছা, চেষ্টা যতদিন না হবে ততদিন ঐ শয়তানের দল, কুচক্রী সুযোগ নিয়ে যাবে ঠাকুরকে আক্রমণ করতে। এই লেখার ক্ষেত্রেও তাই হবে! জয়গুরু আর লাইকের বন্যা বইবে! কিন্তু মতের আদানপ্রদান হবে না নিজেদের মধ্যে উল্টে দেখা যাবে এই লেখাতেও চলে আসবে গালাগালির ফেরিওয়ালারা অশ্লীল দুর্গন্ধযুক্ত গালাগালি ফেরি করার জন্য! আর সৎসঙ্গীরা মিনিমাম পজিটিভ মন্তব্য করতেও এগিয়ে আসবে না! ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে!
তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন,
অমিয়বাণী।
"যা'রা ধর্ম্মের মর্য্যাদা রক্ষা করতে জানে না,
গুরুজনের মর্য্যাদা রক্ষা করতে জানে না,
নারীর মর্য্যাদা রাখতে জানে না,
অসহায়, শিশু ও নিরাশ্রয়দিগের
আশ্রয় হ'তে জানে না,
তা'রা ঈশ্বর ও প্রেরিতদিগকে অবজ্ঞা করে,
তা'রা ঈশ্বরদ্রোহী,
প্রেরিতদ্রোহী,
দেশদ্রোহী ও গণদ্রোহী,
বিষাক্ত তা'দের সংশ্রব,
এর অপনোদন যদি না কর----
দুর্দ্দশা দুর্ম্মদ আলিঙ্গনে
তোমাদের অবসান
অতিসম্ভব ক'রে তুলবে।" ৪৪।
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র।
(আচার-চর্য্যা)
( লেখা আ৪শে জুলাই'২০২০ )
প্রবি।

No comments:

Post a Comment