ধর্ম পালন আর ঈশ্বরকে ভক্তি যারা না বুঝে, না জেনে শুধু অর্থহীন আচার, প্রাণহীন উপাচার ও অমূলক ভয়ভীতি থেকে করে তারা উপরে সবল হ'লেও ভিতরে দুর্বল, উপরে দারোগা মার্কা হ'লেও ভিতরে রোগা ও মানসিক রোগগ্রস্ত ও শারীরিক নানা রোগে ভর্তি একতাল মাংসের দলা! যা আমার আপনার চারপাশ ঘিরে ফেলে গিজগিজ করছে! দম ফেলার উপায় নেই! তাই বললাম, মূর্খ, দুর্বল ও ধর্মভীরু মানুষেরাই ধর্ম ও ঈশ্বরের সঙ্গে বেইমানি করেছে, করেছে মানুষের সর্বনাশ! সুযোগ ক'রে দিয়েছে ধর্ম ব্যবসায়ীদের? এর থেকে নাস্তিক ভালো!!!!!!!
ধর্ম পালন আর ধর্মকে মেনে চলা মানে যদি অনন্তকাল পুরনোকে বুকে আঁকড়ে নিয়ে চলা বোঝায় বা যা কিছু পুরাতন, যা কিছু প্রবীণ তাকে যুগোপযোগী ক'রে নেওয়া পাপ ব'লে মনে হয় আবার পুরোনো বলেই তাকে না জেনে, না বুঝে সনাতন সনাতন ব'লে হাঁক পেরে অন্ধের হস্তী দর্শনের মত জ্ঞানী পন্ডিত সেজে ব'সে সনাতন ধর্মের পতাকা উড়িয়ে সবার অভিভাবক হ'য়ে মাথায় চড়ে বসতে চায় বা নিজ হীন স্বার্থ পূরণে কিম্বা কারণ ছাড়াই না বুঝে, না জেনে ধর্মীয় মূল রীতিনীতি ডাস্টবিনে আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলে দিতে চায়, দিতে চায় বিসর্জন, নতুনকে চায় অস্বীকার করতে, সংস্কারের নামে কুসংস্কারকে ধর্মের নামে তৈল মর্দন ক'রে চলে তাহ'লে ধ'রে নিতে হবে ঐ লোক দেখানো ধর্মপালন ভণ্ডামি ছাড়া কিছুই নয়, ঈশ্বরের প্রতি ধর্মাত্মাদের হাইটেক বেইমানি, নেমকখারামির নিদর্শন!
ধর্ম পালন ও ধর্মীয় আচরণ যদি শুধু মূর্তি পূজা, আচার সর্বস্ব আর হৈচৈ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, মূর্তি পূজা বা ধর্মীয় আচার আচরণের পিছনের যৌক্তিক বিজ্ঞান সম্মত কারণ মানুষ না জানে, না বোঝে বা না জানতে চায় বা না বুঝতে চায় তাহলে মানুষের এই অজ্ঞতা, এই মূর্খতা, এই দুর্বলতাকে হাতিয়ার ক'রে, সম্বল ক'রে যারা এই মূর্তি পূজা ও ধর্মীয় আচার আচরণকে ব্যবসার উপকরণ বানিয়ে নিজেদের সাম্রাজ্য বৃদ্ধি ক'রে চলেছে, মানুষকে নানা মূর্তি ও মূর্তির অন্তর্নিহিত অর্থকে বুঝতে না দিয়ে, অনুধাবন করতে না দিয়ে বন্ধ্যা চরণ পূজায় মাতিয়ে তুলেছে যুগ যুগ ধ'রে, মাতিয়ে তুলেছে কিছু না ক'রেই শুধু তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থেকে কিংবা শুধু ঈশ্বর ভগবানকে ফুল বেলপাতা চন্দন ধুপধুনো দিয়ে পুজো করার মধ্যে দিয়ে পাওয়ার বুদ্ধিকে তোল্লা দিয়ে, মাতিয়ে তুলছে ধর্মীয় সভ্যতার সমস্ত রকম যুগোপযোগী অগ্রগতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, পিছন দেখিয়ে তারাই সমাজ সভ্যতার পূজারী? তারাই ধর্মের শেষ কথা?
ধর্ম, সনাতন ধর্ম, হিন্দু ধর্ম বা অন্যান্য ধর্ম কি মুষ্টিমেয় সেই ধর্মের তথাকথিত কিছু ধর্মীয় নিম্নমানের ব্যক্তিত্বের একচেটিয়া পৈতৃক সম্পত্তি!? বা সেই ধর্ম নামক সম্পত্তির অভিভাবক? তারাই সমস্ত রামায়ণ, মহাভারত, শাস্ত্র, বেদ, পুরাণ, গীতা, কোরআন, বাইবেল ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি সমস্ত ধর্মগ্রন্থ পড়ে ফেলেছে? অর্থ বুঝে গেছে? ঈশ্বর, ভগবান, আল্লা বা যে নামেই সৃষ্টিকর্তাকে ডাকা হ'ক না কেন সেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর কি কারও বা কোনও সম্প্রদায়ের কি কারও ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত সম্পদ যা ভোগ করা তাদেরই একচেটিয়া অধিকার? তারাই ধর্ম পালনের ক্ষেত্রে সম্প্রদায় বিশেষ অনুযায়ী তামাম সাধারণ মানুষকে আদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে ঈশ্বরের মত এক ও একমাত্র ক্ষমতার ও সমাজ সভ্যতার ভালো মন্দের অধিকারী? তাদের বালখিল্য কথায় সমস্ত মানবসমাজকে উঠতে হবে? বসতে হবে? চলতে হবে? তারা ধর্মের জায়গীরদার!?
আর ধর্মের বিরুদ্ধে যারা জেহাদ ঘোষণা করেছে, ধর্মকে আফিম ব'লে মানুষকে ধর্ম থেকে, ধর্মনীতি থেকে সরিয়ে এনে অবৈজ্ঞানিক সাম্যবাদ ও সাম্যবাদের নীতিতে আস্থা স্থাপন করাতে চেয়েছে, আস্থা স্থাপন করাতে চেয়েছে এক ইউটোপিও রাষ্ট্র ব্যবস্থার উপর, যারা রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রনীতির উপর সমাজ ও সভ্যতার অগ্রগতিকে, জীবন যাপনের, বাঁচা-বাড়ার নীতিকে দাঁড় করাতে চেয়েছে, রাষ্ট্র নামক একটি অদ্ভুত প্রাণহীন যন্ত্রের দাস বানাতে চেয়েছে, বানাতে চেয়েছে বা ক'রে তুলতে চেয়েছে রাষ্ট্রের সমস্ত মানুষকে রাষ্ট্রের নামে ঘুরিয়ে নাক দেখাবার মত আল্টিমেট রাষ্ট্রের পিছনের কিছু ক্ষমতাবান মানুষের হাতের পুতুল, তারাই কি শেষ কথা? তারাই কি মানবজাতি ও মানবসভ্যতা রক্ষার ও তার নিখুঁত শ্রীবৃদ্ধির এক ও একমাত্র রূপকার?
রাষ্ট্রের সর্বময়কর্তা বা পরিচালক যারা সূর্য ও সূর্যের কিরণকে এক আসনে বসায়, কিরণকেও সূর্য ব'লে মনে ক'রে সূর্যের আরাধনা করে অর্থাৎ ঈশ্বর, ভগবান, আল্লা বা গড যে যে নামেই ডাকুক না কেন সেই এক ও অদ্বিতীয় ঈশ্বরের নরমাংসরূপী জীবন্ত ঈশ্বরকে সূর্য ও সূর্যের কিরণের মত ঈশ্বরের নানা গুণের খন্ড খন্ড আধারকে অর্থাৎ তেত্রিশ কোটি দেবদেবীকে জীবন্ত ঈশ্বরের সঙ্গে একই আসনে বসিয়ে একই গুরুত্বের সঙ্গে পুজো করে তারা কি মনে করে তারাই প্রকৃত ঈশ্বর পূজারী ও ধর্মের রক্ষক!? তাই কি!?
আবার কেউবা ধর্মকে হাতিয়ার ক'রে ধর্মের নামে, ধর্ম পালনের নামে অধর্মকেই পালন পোষণ ক'রেছে বা করছে, নানারকম ধর্মীয় আচরণের নামে বা মোড়কে অধর্মকেই ধর্ম ব'লে প্রতিষ্ঠা করেছে যুগ যুগ ধ'রে ও ক'রে চলেছে নিজেদের মৌরসি পাট্টা বজায় রাখার জন্য! তারা কি এতই শক্তিমান যে এর বিরুদ্ধে হাজার বলা সত্বেও একইরকম ভাবে তারা ধর্মের নামে অধর্মকে হাতিয়ার ক'রে, ধর্মীয় কুসংস্কারকে মূলধন ক'রে অধর্মের সাম্রাজ্য স্থাপন ক'রে ব'সে পায়ের উপর পা তুলে সাধারণ মানুষের মাথার ওপর সপাটে চাঁটি মেরে, পশ্চাতে পদাঘাত ক'রে তাদেরই দিয়ে দুধ দুইয়ে ঘি বানিয়ে দুধ ঘি মাখন খাচ্ছে আর ঢেঁকুর তুলছে আর তারপরেই গভীর নিদ্রায় গা এলিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে নাক ডাকতে ডাকতে! এই ট্র্যাডিশন সমানে ব'য়ে চলেছে যুগ যুগ ধ'রে! কোনোদিনই কি মানুষের অন্ততঃ যারা জীবন্ত ঈশ্বরকে গ্রহণ করেছে তাদের ঘুম ভাঙবে না!?
তা যাই হ'ক, যারা স্বঘোষিত ধর্মের রাখোয়ালা, যারা রাষ্ট্রব্যবস্থার ধর্মীয় পরিচালক, যারা ধর্ম ও ঈশ্বর বিরুদ্ধ তাদের জন্য কি সৃষ্টি-স্থিতি-লয়ের যে মূল মরকোচ, মূল মেকানিজম ধর্ম ও ঈশ্বর তা কি ভুল ও ইচ্ছাকৃত ভুল ব্যবহারের ফলে কৌলিন্য হারালেও আভিজাত্য হারায়?
না! না!! না!!! ওল্ড ইজ গোল্ড এন্ড গোল্ড ইজ গোল্ড আল্টিমেট গোল্ড!!!!!
প্রবি।
(লেখা ২৭শে জুলাই'২০২০)
No comments:
Post a Comment