Powered By Blogger

Saturday, July 1, 2023

প্রবন্ধঃ মূর্তি পুজা ও শ্রীশ্রীঠাকুর (১)

মূর্তি পুজা নিয়ে নানাভাবে ঠাকুরের স্পষ্টভাবে বলা আছে। তা সত্ত্বেও দেবদেবীর পুজো নিয়ে ব্যস্ত থাকা সৎসঙ্গীরা মূর্তি পুজোর পক্ষে সওয়াল ক'রে চলেছে; ক'রে চলেছে ঠাকুরকে, ঠাকুরের বাণীকে হাতিয়ার ক'রে। সেই বাণীর অর্থের সঙ্গে মূর্তি পূজোর কোনও সম্পর্ক বা মিল থাকুক আর নাই থাকুক ব্যবহার করলেই হ'লো। শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীর অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝবো না, বোঝার চেষ্টা করবো না, অথচ উপরি ভাসা ভাসা আধাখেঁচড়া অর্থ বুঝেই সৎসঙ্গে দাঁড়িয়ে ও ফেসবুকের মাধ্যমে তা তামাম সৎসঙ্গী ও সাধারণ ধর্ম বা ঈশ্বর বিশ্বাসী-অবিশ্বাসীদের মধ্যে তুলে ধ'রে ঠাকুরকে প্রকারান্তরে ছোটো ও কলঙ্কিত করবো।
সম্প্রতি ফেসবুকে এইরকম নানালেখা নিয়ে সৎসঙ্গীরাই কনফিউজড। বিপদতারিণী পুজো হ'য়ে গেল দু'দিন আগে। সেই নিয়েও অনেক সৎসঙ্গী দ্বিধাবিভক্ত। কেউ কেউ ক্ষিপ্ত বিপদতারিণী পুজো প্রসঙ্গে বহুনৈষ্ঠিকের প্রসঙ্গ তোলায়। কিছুদিন আগে কোন্নগরের শকুন্তলা কালিপুজোকে কেন্দ্র ক'রে ফেসবুকে আলোচনায় সৎসঙ্গী মায়েদের কাছ থেকে চরম অপমানিত হয়েছি। এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি প্রায় সবসময়েই হ'তে হয়। দূর্বলতা এতটাই তীব্র সেখানে ঠাকুরের উপস্থিতিও গৌণ হ'য়ে যায়। মূর্তি পুজোতে মানুষের বিশেষ ক'রে মায়েদের দুর্বলতা সর্বজনবিদিত। এই প্রসঙ্গ উঠে আসে প্রায় সময়ই নানা দেবদেবীর পুজোকে কেন্দ্র ক'রে। সৎসঙ্গী যারা নানা দেবদেবীর পুজো করে, আরও নানা ধর্মীয় গুরুর আরাধনা করে, নানা ব্রত পালন করে, আংটি, মাদুলি, তাবিজ, লাল কালো হলুদ সুতো ইত্যাদি ধারণ করে, ইদের কোরবানির মত মায়ের মূর্তির সামনে বলি দেয় আবার শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের দীক্ষা গ্রহণ ক'রে সৎসঙ্গে গলা ফাটিয়ে ঠাকুরের জীবন দর্শন বুঝুক আর অল্প বুঝুক কিংবা না বুঝুক তা বলে ও নিজের মন মতো তাঁর পুজো করে। সাধারণ দীক্ষিত, স্বস্ত্যয়নীধারী, ঋত্বিক, যাজক, অর্ধ্বয্যু প্রায় সকলকেই দেখেছি (ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে) এই 'আমি জিরাফেও আছি আবার ধর্মেও আছি' রোগে আক্রান্ত। তাদের ল্যাজে পা পড়লেই তারা ফোঁস ক'রে ওঠে, নিজের বৃত্তি-প্রবৃত্তিকে সযত্নে লালন পালন করে। এর জন্য ঠাকুরকেও স্যাক্রিফাইস করতে দ্বিধা বোধ করে না।
এইসব দেখে মনে হয়, আমি জিরাফেও আছি আবার ধর্মেও আছি প্রবাদটা কত সত্য। এই জিরাফেও আছি আবার ধর্মেও আছি মানসিকতার যারা তারা ঠাকুরকে নিজের বৃত্তি-প্রবৃত্তি অনুযায়ী কাজে লাগায়। ঠাকুরের যে কথাগুলি বৃত্তি-প্রবৃত্তির পক্ষে পোষণ দেয় না, বিপক্ষে অবস্থান করে সেই কথাগুলি তাদের কাছে গ্রহণীয় নয়। সেই কথা বা বাণীগুলিকে নিজের মতো ক'রে তারা ব্যাখ্যা ক'রে নেয়।
যাই হ'ক, এবার দেখে নিই আমার দয়াল ঠাকুর কোথায় কোথায় কখন কাকে কি বলেছেন বা কি আচরণ করেছেন এই অমূর্ত ভগবান (Unseen God)-এর পুজো প্রসঙ্গে।------------প্রবি।
ক্রমশঃ

No comments:

Post a Comment