Powered By Blogger

Sunday, January 7, 2024

চিঠিঃ বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক বন্ধুকে খোলা চিঠি। (২)

হে বন্ধুবর! আপনাকে লেখা আমি আমার প্রথম চিঠিতে আপনাকে জানিয়েছিলাম আমার পরবর্তী চিঠিতে আমি আপনার তির্যক প্রশ্নের উত্তর দেবো।
আপনার প্রশ্ন ছিল ও আপনি জানতে চেয়েছিলেন জীবিত মানুষের জন্য অনুকূল কি বুজরুকি দেখাতে পারেন?
আপনার কুৎসামন্ডিত এই প্রশ্নের উত্তর এই চিঠিতে দিচ্ছি। আশা করি ধৈর্য্য ধ'রে অনুকূলের বুজরুকি পড়বেন।
এই প্রশ্নের উত্তরে বলি, তিনি সারা জীবন আপনার ভাষায় একটাই বুজরুকি দেখিয়েছেন তা হ'লোঃ
১) কোথাও না গিয়ে এক জায়গায় বসে আজ থেকে ১০০বছরের অধিক সময় পূর্বে তিনি সারা বিশ্বের প্রাজ্ঞ, বিদগ্ধ, জ্ঞানী, পন্ডিত, মহাপন্ডিতদের তাঁর কাছে সেই বিশ্বের সভ্য জগতের বাইরে অখ্যাত অজ্ঞাত অন্ধকারাচ্ছন অনুন্নত অসভ্য হিমাইতপুরের মাটিতে এবং মধ্যবয়সে (৫৪ বছর বয়স) দেওঘরের লাল মাটিতে টেনে এনেছিলেন; যেমন ফুলের সৌরভে মাতাল হ'য়ে ফুলের মধুর লোভে মৌমাছি ছুটে ছুটে আসে ফুলে ঠিক তেমনি! ফুল কখনো ছুটে যায় না মৌমাছির পিছনে, মৌমাছি ছুটে আসে ফুলের কাছে। ঠিক তেমনি তাঁর কাছে ছুটে ছুটে এসেছিল আর্ত, জিজ্ঞাসু, অর্থাথী ও দেশবিদেশের প্রথিতযশা জ্ঞানী-বিজ্ঞানী, বিদগ্ধ পন্ডিত, বিখ্যাত সাহিত্যিক, দার্শনিক, কবি, প্রাবন্ধিক, গায়ক, সুরকার, অভিনেতা, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী, ম্যাজিশিয়ান, শিক্ষাবিদ, অধ্যাপক, গবেষক, দোর্দন্ডপ্রতাপ ব্রিটিশ ভারতের ও স্বাধীন ভারতের সরকারী ও প্রশাসনিক উচ্চপদাধিকারিবৃন্দ; এসেছিলেন বিখ্যাত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। সারা দেশবিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছিল সাধারণ-অসাধারণ, বিখ্যাত-অখ্যাত লক্ষ লক্ষ মানুষ ঠাকুরের জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত দেওঘরে! তিনি কোথাও ছুটে ছুটে যাননি। আর আজও তাঁর দেহ রাখার ৫৪বছর পরও বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে ছুটে আসছে দেওঘরের বুকে যার যার নিজ সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে। এই বুঝ্রুকি তিনি দেহ থাকাকালীন ও দেহ রাখার পরও জীবিত মানুষদের জন্য দেখিয়েছেন ও দেখিয়ে চলেছেন আজ দেহহীন ১৩৫বছর বয়সেও।। আজ প্রায় ১০কোটি মানুষের মাঝে পৌঁছে যাওয়ার লক্ষ্যে ছুটে চলেছে তাঁর বুঝ্রুকি!
শুধু আপনাকে যৌবনে ২০বছর বয়সে ও আজ আপনার এই মধ্য গগনে বুঝ্রুকি দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। কারণ ঐ তাঁর বলা " প্রকৃত জ্ঞানী যাঁরা তাঁরা পুরুষোত্তমকে দেখেই চিনতে পারেন। তাঁকে দেখেই তাঁরা ভাবেন-- 'দেখে যেমন মনে হয় চিনি উহারে'।
২) আচ্ছা The greatest magician of the world ভারতের যাদুকর সিনিয়র পি সি সরকারের ( প্রতুলচন্দ্র সরকার ) নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন? তিনি ধর্মগুরু সাঁইবাবার ( যিনি ঝাঁকড়া চুলের অধিকারী ছিলেন) বুঝ্রুকির পর্দা ব্যাঙ্গালোরে ফাঁস ক'রে দিয়েছিলেন জানেন তো? সেই পি সি সরকার আপনার বলা শ্রীশ্রীঠাকুরের বুজরুকি কেন ধরতে পারলেন না? কেন তিনি তাঁর সীমাবদ্ধ ক্ষমতায় শ্রীশ্রীঠাকুরের বুঝ্রুকি ধরতে এসে নিজেই তাঁর অন্তহীন অসীম রহস্যময় অলৌকিক ক্ষমতায় মুগ্ধ হ'য়ে, বিভোর হ'য়ে তাঁর কাছে নিজেকে সারেন্ডার ক'রে তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন? কেন তিনি ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর ইন্দজাল সংক্রান্ত বিষয়ে গভীর আলোচনায় মগ্ন থাকতেন? শ্রীশ্রীঠাকুর আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য বিখ্যাত জাদুকর পি সি সরকারকে ভুতের রাজা বলে ডাকতেন। তিনি যখনই আসতেন ঠাকুরের কাছে ঠাকুরকে ভুতের খেলা দেখাতেন। আর ঠাকুর খুব মজা করতেন ও আনন্দ করতেন। শ্রীশ্রীঠাকুর তাঁর নয়ন ভুলানো মিষ্টি মধুর হাসির তুফান তুলে চারপাশ মোহিত ক'রে হাসতে হাসতে বলতেন, দেখাবো নাকি সত্যিকারের ভুতের খেলা, দেখবেন নাকি ভুতের রাজা? মোহিত মুগ্ধ হ'য়ে চেয়ে থাকতো ঠাকুরের মিষ্টি হাসিতে ভরা প্রেমময় মধুর মুখচোখের দিকে অপলক দৃষ্টিতে বিশ্ববিখ্যাত যাদুকর শ্রদ্ধেয় পি সি সরকার!
হে মান্যবর সাহিত্যিক বন্ধু! শ্রীশ্রীঠাকুরের বুজরুকি যা আপনি পারলেন ধরতে তা কেন বিশ্ববিখ্যাত ম্যাজিশিয়ান পি সি সরকার ধরতে পারলেন না?
৩) কেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন স্বাধীনতা সংগ্রামী, রাজনীতিবিদ, ব্রিটিশ ভারতের বিশিষ্ট দুঁদে আইনজীবী ও সাংবাদিক শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের বুজরুকি ধরতে পারলেন না? কেন তিনি ৫৪ বছর বয়সে তাঁর থেকে ১৮বছরের ছোটো মাত্র ৩৬বছর বয়সের শ্রীশ্রীঠাকুরকে গুরুরূপে জীবনে গ্রহণ ক'রে তাঁর মন্ত্রশিষ্য হলেন? এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলনের সমস্ত ভুল পথ এবং সব কিছু থেকে সরে এসে সমস্ত মনপ্রাণ ঠাকুরে সঁপে দিয়েছিলেন?
যা আপনি সব বোগাস, বুজরুকি ব'লে ধরতে পারলেন কিন্তু দেশবন্ধুর মতো দুঁদে আইনজীবী, স্বাধীনতা সংগামী, তুখোড় রাজনীতিবিদ শ্রীশ্রীঠাকুরের বু্জ্রুকি কেন ধরতে পারলেন না?
৩) বিখ্যাত কবি হেমচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ( যিনি হেম কবি নামে বিখ্যাত ) যার লেখা বহু গান চারণকবি মুকুন্দদাস গাইতেন তিনি কেন ঠাকুরের বুজরুকি ধরতে না পেরে তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন, দীক্ষা নিয়েছিলেন? আর আপনি তাঁর কাছে ২০বছর বয়সে গিয়ে কিছুই না জেনে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হ'য়ে পরে সব বুজরুকি ব'লে বুঝতে পেরে চলে এলেন কিন্তু হেমকবির মতো ঘোরোতর নাস্তিক, পাঁড় মাতাল, চরিত্রহীন মানুষ শ্রীশ্রীঠাকুরের চরিত্রের বুজরুকি ধরতে না পেরে উল্টে নিজের আমূল ঘৃণ্য চরিত্রের পরিবর্তন ঘটিয়ে শেষজীবন তাঁর পদপ্রান্তে কাটিয়ে দিলেন এক উন্নত মহাপুরুষে পরিবর্তিত হ'য়ে। কেন?
৪) বিজ্ঞানী কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য (কেমিষ্ট্রিতে গোল্ড মেডেলিষ্ট, নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত সি ভি রমনের সহকারী) ঘোরতর নাস্তিক কেন বিজ্ঞান সাধনা ছেড়ে দিয়ে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত বিজ্ঞানী সি ভি রামনের সহকারী পদে ইস্তফা দিয়ে, বিজ্ঞান সাধনার জন্য আমেরিকা সফর ত্যাগ ক'রে ঠাকুরের চরণ প্রান্তে এসে পড়ে রইলেন সারাজীবন? শ্রীশ্রীঠাকুরের সংস্পর্শে এসে তাঁর সাহায্যে, তাঁর দেখানো পথে বিজ্ঞান সাধনা ছাড়াও সমস্ত শাস্ত্রে অসাধারণ জ্ঞানী পন্ডিত হ'য়েও কেন তিনি ঠাকুরের বুজরুকি ধরতে পারলেন না? আর আপনি ধরতে পারলেন? আপনাকে নতমস্তকে প্রণাম।
৫) বিখ্যাত সুরকার বাপি লাহিড়ীর পিতা ও সুরকার শ্রী অপরেশ লাহিড়ী কেন সস্ত্রীক ঠাকুরের দীক্ষা নিয়েছিলেন? তিনি ঠাকুরের লেখা সৎসঙ্গের প্রার্থনায় অঙ্গীভূত বিখ্যাত গান 'জয় রাধে রাধে' গানের সুরকার ছিলেন। তিনি কেন ঠাকুরের বুজরুকি ধরতে পারলেন না? তাঁর মতো একজন গুণী লোক সস্ত্রীক চিরজীবন ঠাকুরের সান্নিধ্যে কাটিয়ে যা পারলেন না আপনি অনায়াসেই তা পারলেন? আশ্চর্য আপনার মানুষ চেনার ক্ষমতা!!!!!
আজ এই পর্যন্ত। এরপরে ধারাবাহিকভাবে আপনাকে ও আপনার মতো আরও পন্ডিত ব্যক্তিত্ব আছেন যারা ঠাকুরের বুজরুকি নিয়ে সোচ্চার সেই আপনাদের সকলকে সারা বিশ্বের বিখ্যাত বিখ্যাত মানুষ যারা ঠাকুরের চরণপ্রান্তে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের শ্রীশ্রীঠাকুরের বুজরুকি ধরতে না পারার সীমাহীন মূর্খতা নিয়ে সেই গবেষণালব্ধ আলোচনা এখানে করবো ও তাঁদের নাম প্রকাশ করবো আমার পরবর্তী চিঠিতে।
ইতি,
প্রকাশ বিশ্বাস
পশ্চিমবাংলা, ভারত।
ক্রমশঃ
( লেখা ৮ই জানুয়ারি, ২৩)

No comments:

Post a Comment