কবিতাঃ আন বান শান!

ধুর! ফ্যাকাশে সকাল, বিষন্ন দুপুর, মরা সন্ধ্যে
আর দিন শেষে আসে হতাশায় ভরা রাত!

আমি জীবন সায়াহ্নে আজ একাকী
পিছনে এসেছি ফেলে বর্ণময় জীবন
কাটিয়ে দূরন্ত ভরা যৌবন আজ আমি ধন্দে
দয়াল সাথে কাটিয়ে জীবন যৌবন
কেন হচ্ছে মনে দিন শেষে হ'লো সব বরবাদ,
পুরো জীবনটাই হ'লো বুঝি বেহাত!
দয়াল তো আছে আমার সাথে, চলছি দুর্গম পথ
তাঁকে নিয়ে মাথে তবে কেন মনে হয় নেই কেউ সাথে
আজ হাত রেখে হাতে!? এইটাই কি সত্য?
সত্য মিথ্যা আজ সব গেছে গুলিয়ে একাকার হ'য়ে
সত্যের মাঝে মিথ্যে খুঁজি, মিথ্যের মাঝে সত্য।
হঠাৎ শুনি, হাঁক দিয়ে বলে বিস্ময়ে দয়াল, সে কি!
কে বলে তুই একাকী!? আমি ছিলাম, আমি আছি
তোর পাশাপাশি সকাল থেকে সন্ধ্যে, সন্ধ্যে থেকে রাত,
থাকবোও আমি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত।
সময়ের ওঠাপড়া আছে, আছে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো;
আছে মনের মাঝে মেঘের লুকোচুরি খেলা,
আছে সকাল থেকে রাত, রাত থেকে সকাল
প্রকৃতির পরিবর্তনের মতো পরিবর্তন
তোমার আমার সবার জীবন মাঝে এ বেলা ও বেলা।
শৈশব থেকে বার্ধক্য এ এক স্বাভাবিক জীবন মেলা।
শুনিসনি কি তুই রবিঠাকুরের একলা চলার গান,
যদি তোর ডাক না শোনে কেউ, দেয় না কেউ সাথ
তবে একলা গুন টেনে চল, লক্ষ্যে ঠিক যাবি পৌঁছে
একে একে দেখবি সবাই আসবে পিছে পিছে,
রাখবে তোর হাতে হাত, দেখবে তোর আন বান শান।
এখন ওঠ, চল, ধর আমার হাত।
ধরলে পড়ে দেখতে পাবি আস্তিনের নীচে তোর লুকোনো অজুহাত।
ধরলে পড়ে দেখতে পাবি কোথায় সত্য, কোথায় মিথ্যা।
অক্টোপাসের মতো পেঁচিয়ে জীবন মাথার 'পরে
নাচছে কেমন অবিদ্যা। যতই থাকুক না কেন বিদ্যা
দেখবি জীবন যাচ্ছে ঝলসে সামনে সমস্যার প্রখর ধূপ;
ধরলে পড়ে চোখ মেলে দেখতে পাবি প্রকৃতির আসল রূপ!
আলোময় সকাল, রসময় দুপুর, রূপময় সন্ধ্যে
আর মধুময় রাত! প্রাণভরে করো আনন্দ সুধা পান
মিশিয়ে প্রাণে প্রাণ আর হাতে রেখে হাত।