করোনার প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার হয়নি। করোনার বর্তমানে একমাত্র প্রতিষেধক গৃহবন্দী থাকা, জনসংযোগ এড়িয়ে চলা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এককথায় স্বাস্থ্য ও সদচারের প্রতি মনোযোগী ও শ্রদ্ধাশীল হওয়া। যে সদাচার পালনের কথা শ্রীশ্রীঠাকুর তাঁর বিভিন্ন বাণী, ছড়া ও কথোপকথনের মাধ্যমে বারবার বিভিন্ন দিক দিয়ে বিভিন্ন ভাবে, রকমে বলে গেছেন; যা ঠাকুর পরিবারের প্রত্যেকের মধ্যে প্রতিনিয়ত প্রতিধ্বনিত হ'য়ে চলেছে! এই সদাচার পালন শুধু শারীরিক নয়, মানসিক, আত্মিক ও আধ্যাত্মিক সদাচার পালনের কথা শ্রীশ্রীঠাকুর জোর দিয়ে পালন করার কথা বলেছেন। আসুন আমরা দেখে নিই করোনার বর্তমান জনসংযোগ বিচ্ছিন্নের সঙ্গে তাঁর বাণীর মিল কোথায়! শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন,
রোগ হ'লে তুই থাকিস স'রে
কিছুতেই তা' ছড়াবি না,
ছোঁয়াছুঁয়িতে নাকাল হ'বি
সাবধান ওটা চারাবি না।১৬
স্পর্শ-দোষে জীবাণু ধায়
সংস্রবেতে মন------
এই বুঝে তুই চলিস-ফিরিস
বুঝলি বিচক্ষণ?৬৭
যা' ছুঁলে যা' ধরলে রে তোর
শরীর-জীবন বিষাক্ত হয়,
সেই ধরা, সেই করাগুলিতেই
অস্পৃশ্যতার নীতি রয়।"------শ্রীশ্রীঠাকুর।
এ তো গেলো সদাচার নামক প্রতিষেধকের কথা। এই সদাচার পালন শুধু করোনা কেন্দ্রিক নয়, এই সদাচার চিরকালীন শারীরিক, মানসিক, আত্মিক ও আধ্যাত্মিক সমস্ত রকম রোগ, শোক, গ্রহদোষ, বুদ্ধি বিপর্যয় ও দারিদ্রতা দূরীকরণ ও মুক্তির প্রতিষেধক!
এবার অন্য প্রসঙ্গে যাওয়া যাক।
আচ্ছা এই যে করোনা নামক একটা ছোট্ট কীট সমস্ত বিশ্বকে লন্ডভন্ড ক'রে দিল, ত্রাহি ত্রাহি রব তুলে দিল বিশ্বের সমস্ত দেশের সমস্ত শক্তিমান নেতৃবৃন্দের মনে এর থেকে কি শিক্ষা পেলাম আমরা!? কি শিক্ষা পেল শক্তিমান দেশের শক্তিমান নেতৃত্ব!? কি শিক্ষা পেল বিশ্বের তাবড় তাবড় বিজ্ঞানী, গবেষক, চিকিৎসক, বুদ্ধিজীবী ও সমাজসেবীরা!? আদৌ কি কিছু শিক্ষা পেল!? নাকি এর থেকে উদ্ধার পাওয়ার পর আবার সেই অহংকারের গড্ডালিকায় ব'য়ে যাবে সমাজ ও সভ্যতা!?
একটা সমীক্ষা ক'রে দেখা যেতে পারে!
আচ্ছা বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকা, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চীন, ইতালি, জাপান, ভারত ইত্যাদি ইত্যাদি সমস্ত রাষ্ট্রের হাতে এই পৃথিবীকে ধ্বংস ক'রে দিতে পারে এমন কি কি ভয়ঙ্কর শক্তিশালী অস্ত্র আছে?
গবেষণা সংস্থাগুলোর মতে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে পরমাণু অস্ত্র আছে ৬ হাজার ৮০০', রাশিয়ার ৭ হাজার, ফ্রান্সের ৩০০', যুক্তরাজ্যের ২১৫, চীনের ২৭০, ভারতের ১৩০, পাকিস্তানের ১৪০, ইসরায়েলের ৮০, আর উত্তর কোরিয়ার আছে ২০টি ।
তবে যেটুকু জানা যায়, তা হলো - পৃথিবীর মাট ৯টি দেশের হাতে এখন ৯ হাজার পরমাণু বোমা আছে।
সবচেয়ে বেশি পরমাণু বোমা আছে যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়ার হাতে। এ দুটি দেশের হাতে আছে প্রায় ১৪ হাজার বোমা। এছাড়াও আরও হাজার বোমা মজুদ আছে অন্য সব দেশের হাতে। যদিও কোনও দেশ কখনোই সঠিক হিসেব পেশ করে না।
পরমাণু অস্ত্র আছে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ভারত, পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়ার হাতে। ইসরাইলের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র আছে বলে মনে করা হলেও তারা কখনো একথা স্বীকার বা অস্বীকার কোনটাই করেনি।
যাই হ'ক,
শুধুমাত্র প্রচলিত বোমার সমান আকারেই একটি পারমাণবিক বোমা দ্বারাই একটি শহরকে ধ্বংস করে দেয়া যায়। হাইড্রোজেন বোমা তার চেয়েও অনেক বেশি শক্তিশালী। একটা বিস্ফোরণে একটা ছোট হাইড্রোজেন বোমা একটা বড় শহরকে কয়েক মুহূর্তের মধ্যে একেবারে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করতে পারে। করে দিতে পারে ধু ধু মরুভূমি।
আর এইসব একটি বোমা বানাতে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা খরচ হয়!
এই পৃথিবী ধ্বংসের ভয়ঙ্কর হাতিয়ার তৈরি করার পিছনে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা, শরীর, মন, মেধা, প্রজ্ঞা, বুদ্ধি, জীবন-যৌবন সমস্ত কিছু খরচ হ'য়ে চলেছে শুধুমাত্র ক্ষমতা দখল ও প্রদর্শন করার অছিলায়! যুদ্ধাস্ত্র তৈরি ও গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে পাড়ি দেওয়ার পিছনেও সেই একই বা ততোধিক খরচ হ'য়ে চলেছে যুগযুগ ধ'রে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন কর্মকান্ডে! তৎপরতার সঙ্গে সব দেশ ব্যস্ত নিজের দেশের অস্ত্রভান্ডার বাড়িয়ে তোলার ব্যাপারে! সমস্ত দেশের বিজ্ঞানীরা মারণাস্ত্র তৈরির পিছনে তাঁদের মহামূল্যবাম শরীর-মন-বুদ্ধি-জ্ঞান ও সময় খরচ ক'রে চলেছে, ক'রে চলেছে নেশায় বুঁদ হয়ে!
এই যে বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিনের সাধনা, এই সাধনাকে কি বলবো!? বিজ্ঞানীদের এই সাধনা কি পারিপার্শ্বিক সবাইকে নিয়ে নিজের বাঁচা-বাড়ার সাধনা!? এই সাধনা কি জীবনবাদ বা অস্তিত্ববাদের সাধনা!? এই সাধনা কি সফল!? নাকি সবটাই লাগামহীন রিপুতাড়িত উচ্শৃঙ্খল-বিশৃঙ্খল বৃত্তি-প্রবৃত্তির তীব্র অম্ল বমন!
কেন বলছি এই কথা!?
এই কথা বলার কারণ করোনা! করোনা চোখে আঙুল দিয়ে খোঁচা মেরে বললো, চোখ খোলো! আর কত চোখকে বন্ধ ক'রে রাখবে!? আমার মতো ছোট্ট একটা কীটকে মোকাবিলা করতে গোটা পৃথিবী আজ লন্ডভন্ড, ঈশ্বর যদি এগিয়ে এসে রক্ষা না করে তাহ'লে এক লহমায় সাবার করে দেবো গোটা পৃথিবীর মানবজাতিকে! তামাম পৃথিবীর তামাম শক্তিধর রাষ্ট্রের কর্ণধারদের, তামাম বিশ্বের তাবড় তাবড় ডাক্তার, বিজ্ঞানীদের ক্ষমতা নেই আমাকে রোখার! আজ অপ্রতিরোধ্য গতিতে আমি এগিয়ে চলেছি এটা বোঝাবার জন্য যে বৃথা সময় নষ্ট করেছো তোমরা ওইসব অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করে! নষ্ট করেছো তামাম বিশ্বের সম্পদ! আজ এত লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা খরচ ক'রে তৈরি করা অস্ত্রভান্ডার দিয়ে যে ক্ষতি করার ক্ষমতা অর্জন করেছো আমি বিনা খরচায় মুহূর্তের যাদুতে তোমাদের সাজানো সংসার ধ্বংস ক'রে দিতে পারি! ফেলে দাও ঐসব বেকার অস্ত্রভান্ডার মহাসমুদ্রে! আমাকে রুখতে পারে এমন শক্তি তোমাদের নেই, আছে একমাত্র সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের! আছে তাঁর বিধানের! তাই বলি, এখনও সময় আছে তাঁর স্মরণাপন্ন হও! তাঁর কাছে প্রার্থনা করো আমাকে থামাবার জন্যে। আমার অপ্রতিহত গতিকে প্রতিহত করতে
পারে একমাত্র স্বয়ং ঈশ্বর! তোমাদের আকুল প্রার্থনায় তিনি দয়া পরবশ হ'য়ে কোনও বিজ্ঞানীর চোখে ধরিয়ে দেবেন আবিষ্কার করার জন্য তাঁর সৃষ্ট আমাকে মারার ঔষুধ! এতদিন মারণাস্ত্র তৈরি না করে ভবিষ্যৎ পৃথিবীকে রক্ষা করবার জন্য বিজ্ঞানীরা ল্যাবটরিতে জীবন উৎসর্গ করতে পারতো আগাম নানা জীবাণুর প্রতিষেধক তৈরিতে! তা করেনি, করার চেষ্টা করেনি! অহংকারের বশবর্তী হ'য়ে কে কতবড় মসিহা, মানুষের দুঃখ কষ্টের মুক্তিদাতা তার প্রতিযোগিতা ক'রে গেছে একে অন্যকে মেরে! আর উঠতে বসতে যত গালাগালি ক'রে গেছে অকারণে সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরকে নিজেকে ঈশ্বরের সিংহাসনে বসাবার লোভে! যত তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে থাকা রিপু তাড়িত চার অক্ষরের এলিট সমাজের সবজান্তা প্রতিনিধিবর্গ সাধারণ প্রান্তিক মানুষের মুক্তিদাতা মসিহা! কোথায় আজ মুখ লুকিয়ে বসে আছো ঘরের কোণে!? এসো আমাকে নিয়ে গল্প, উপন্যাস, কবিতা লেখো কিংবা আঁক ছবি, বানাও সিনেমা! চায়ের কাপে, সিগারেটের নিকোটিনে হলুদ করা ঠোঁটে তুফান তোলো আমাকে নিয়ে, আমার ক্ষমতা নিয়ে, আমার জন্ম ও মৃত্যু নিয়ে!
শালা মানুষ! অহংকারী লোভী মানুষ! ঈশ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি! এবারের মত বাঁচলেও শেষ রক্ষা করতে পারবি না! এবারে হেরে গেলেও
আবারও আসিব ফিরে চার অক্ষর মানুষের নীড়ে
ভয়ঙ্কর ভয়াবহ রূপে অহংকারী কপট বেঈমান
অকৃতজ্ঞ নেমকহারাম মানুষেরে করিতে ছারখার!
সেদিন কোনও ঈশ্বর আসিবে না কৃতঘ্ন মানুষেরে
বাঁচাইতে ফিরে আবার, নাবিবে কলির ঘোর অন্ধকার!!-------প্রবি।
No comments:
Post a Comment