যখনই কোনও ভালো ভালো কথা শুনি ভালো লাগে! একটা অপার আনন্দে ভরে ওঠে মনটা। তখন শরীরে কোনও ভর অনুভূত হয় না! হালকা পাখির পালকের মত নিজেকে লাগে শরীরে-মনে! কিন্তু পরমুহূর্তেই একটা অবসাদ ঘিরে ফেলে মনটাকে! নিজেকে তখন অসহায় মনে হয়। কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারি না। কিছুই এবং কাউকেই ভালো লাগে না তখন। বদ্ধ খাঁচার এক অসহায় যন্ত্রণাবিদ্ধ জীব মনে হয় নিজেকে! উপলব্ধি করতে পারি তখন খাঁচা বন্দি পশুপাখির যন্ত্রণা! কথায় আছে, ঘুঘু দেখেছো ফাঁদ দেখোনি! অর্থাৎ ঘুঘু পাখির আনন্দে বিচরণই দেখেছো কিন্তু তাঁর ফাঁদে পড়ার যন্ত্রণা দেখোনি! ঠিক তেমনি আনন্দ আর আরামই ভোগ ক'রে এসেছো কিন্তু দুঃখ কষ্ট ভোগ করোনি! ভালো ভালো কথা শোনার পরে যে মানসিক অবস্থা হয় সেই অবস্থা দ্রুত উধাও হ'য়ে সূর্যকে মেঘ ঢেকে ফেলার মত দ্রুত অবসাদ মনকে ঢেকে ফেলে! শুধু মনে হয় সবাই কি মনের বিশ্বস্ত অনুচর, বিবেকের হন্তারক!? তখন অসহায় বিধ্বস্ত আমি ঠাকুরের কাছে এসে বসি! কিছুক্ষণ চুপ ক'রে বসে থাকার পর মনে ঠাকুরের কথা ভেসে ওঠে, "বিবেককে অবলম্বন করো, আর মনের অনুসরণ ক'রো না--------উদারতা তোমাকে কখনও ত্যাগ ক'রবে না।" তখন নিস্তব্ধ নিথর পরিবেশে মন ব'লে ওঠে, তাই তুমি এত উদার দয়াল!!
ভালো ভালো কথা শুনে আসছি সেই ছোটবেলা থেকে, এখনও শুনছি!! আর যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন শুনতেই থাকবো!!! আর যেদিন থাকবো না সেদিনও চলতে থাকবে ভালো ভালো কথার ঢাক পেটানো!!!! কথাটা রূঢ় শোনালো কি!? মন কি বাত বললাম! ছোটবেলা থেকে যা দেখে আসছি আজ পর্যন্ত তাই-ই বললাম। অন্যদের কথা ছেড়ে দিলাম; এই যে ভালো ভালো কথা আমরা সৎসঙ্গীরা বলি, যাজনের নামে বলি, ব'লে বেড়ায়, যা বলি তা নিজে মানি তো!? করি তো!? নিজের আচরণে ফুটিয়ে তুলি তো! নিজের চরিত্রে তার প্রতিফলন হয় তো!? আমি ঠাকুরের প্রাণের সৎসঙ্গের ঠাকুরের স্বপ্নের সোনার সৎসঙ্গী হ'য়ে উঠতে পেরেছি নাকি ওঠার চেষ্টা করেছি বা করছি!? নাকি ঠাকুরের বলা মত তাত্ত্বিক আমেজে শুধু ডুবেই থাকি!? ডুবে ডুবে জল খাই!? ভালো ভালো কথা শুধু বলার জন্য!? লোকের কাছে ভালো মানুষ, জ্ঞানী মানুষ সাজার জন্য!? করার জন্য নয়!? এই রোগ সবার মধ্যে! সৎসঙ্গীদের মধ্যেও!?
কে যেন ব'লে উঠলো, কেন সৎসঙ্গীরা কি ভিনগ্রহের মানুষ!? পৃথিবী নামক গ্রহের নয়!? জানি না এটাকে সাড়া পাওয়া বলে কিনা! যাই হ'ক এইজন্যই বোধহয় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বিবেকানন্দের বলা Man making education কথাটাকে খোসা ছাল ছাড়িয়ে একেবারে উলঙ্গ ক'রে দিয়ে সরাসরি বললেন, Character making education! যার অভাবে গোটা বিশ্ব আজ হ'য়েছে নিঃস্ব, পৃথিবী হয়েছে আজ রোগী! সৎসঙ্গীদের মধ্যেও ঠাকুরের বলে যাওয়া এই চরিত্র গঠনের শিক্ষার অভাব কি আজ করোনার মত ভয়ঙ্কর প্রকট!?
সৎসঙ্গীরা ১% কি সত্যিই ঠাকুরের প্রাণের সৎসঙ্গী হ'য়ে উঠতে পেরেছে নাকি ওঠার চেষ্টা আদৌ শুরু করেছে সেই ঠাকুরের সময় থেকে আজ ঠাকুরের ১৩২ বছর পার হয়ে যাওয়ার পরেও!? পরমপ্রেমময়ের ছাতার তলায় আমরা সৎসঙ্গীরা কি প্রেমের আধার হ'য়ে উঠতে পেরেছি নাকি আধার নাবিয়ে আনার প্রক্রিয়ায় যুক্ত আছি!? সৎসঙ্গীরা কি একে অন্যকে সত্যি ভালোবাসি!? নাকি নতুন নতুন প্রেমময়ের প্রেমের সাগরে ভাসতে ভাসতে কিছুদিন পরেই ঠাকুরের কথা শুনতে শুনতে চোখকান খুলে যাবার পর নিজের অজান্তে আবার প্রেমস্রোতের মূল ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হ'য়ে সেই হিংসার ঘোর অন্ধকারের চোরাস্রোতে ডুবে গেছি!? রিপু তাড়িত ছুটে বেড়াচ্ছি পাগলা ঘেয় কুকুরের মতন!? এর জন্য কে দায়ী!? আমি? আমার স্বভাব? প্রথম থেকেই আমার আত্মপ্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতা লাভের লোভ!? সচেতনভাবেই আমার বৃত্তি-প্রবৃত্তি পূরণের আকাঙ্খার চোরাস্রোত!? নাকি পুরোনো কপট নষ্টপ্রাণ সঙ্গীর সংশ্রব ও প্রভাব!? বোঝে সে, প্রাণ বোঝে যার!
এছাড়া আর এক শ্রেণীর মানুষ আছে যারা প্রতিবাদের খড়্গ অস্ত্র হাতে বাড়া! এর প্রবণতা ইয়ং জেনারেশনের মধ্যে প্রবল। তারা জানেই না বা জানার আদৌ চেষ্টা করেনা যে, ঠাকুরের সেই লক্ষণের গন্ডির মত একটা ইচ্ছের গন্ডি আছে! আর সেই ইচ্ছের গন্ডির মধ্যে থেকেই ঠাকুরের ইচ্ছের হাত ধ'রে আমাদের হাঁটতে হবে, চলতে হবে! আর ঠাকুরের সেই ইচ্ছের গন্ডির বাইরে বেরিয়ে গিয়ে ঠাকুরের ইচ্ছের হাত ছেড়ে দিয়ে নিজের বৃত্তি-প্রবৃত্তি দ্বারা জারিত ইচ্ছের দ্বারা প্রভাবিত হ'য়ে হাঁটতে থাকি তাহ'লে মা সীতার যা হ'য়েছিল তার চেয়েও ভয়ঙ্কর ভয়ানক আমারও ভবিষ্যৎ! তখন তো একটা রাবণ ছিল, আর ছিল পরম শিবভক্ত শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণ আর এই ঘোর কলিযুগের রাবণ হাজার হাজার ঘরে ঘরে আর শয়তানভক্ত বর্ণহীন!
কে কাকে কোথায় কি বললো, কি নিন্দা করলো, কি সমালোচনা আর অপমান, অশ্রদ্ধা করলো আমার প্রিয়পরমের, সেদিকে তাকাবার সময় আছে নাকি সৎসঙ্গীদের এই কঠিন সময়ে!? আমার প্রিয়পরম শ্রীশ্রীঠাকুর তাঁর জীবদ্দশায় সীমাহীন লাঞ্ছিত, অপমানিত, নিন্দিত হয়েছেন আর তার সাধের 'সৎসঙ্গ'কে কতরকম ভাবে কলঙ্কিত করার চেষ্টা হয়েছে, আক্রমণ করা হয়েছে তাঁর আশ্রমের উপর, পরিবারের উপর তখন ঠাকুর কি করেছিলেন, ঠাকুর পরিবার কি করেছিলেন!?
আমরা কিসের যাজন আর কার, কিসের প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নামবো!? মাথার ঘায়ে তো কুকুর পাগল!!!!! কান পেতে নিজের বিবেকের কথা শুনেছি কখনও নাকি মনের পিছনে ছুটে বেড়িয়েছি!? সবাই তো চারদিকে শুধুই বলেই যাচ্ছে; শুধুই গরম কড়াইয়ে কলাই ফোটার ফট ফটাফট ফট আওয়াজ!!! বলা চরিত্রে ফুটে উঠছে কই!? শুধুই কথার খই আর খই, খই আর খই!!!!!
তাই হ'ক যাজন! হ'ক প্রতিবাদ!! চরিত্র গঠন-ই হ'ক যাজন, চরিত্র গঠন-ই হ'ক প্রতিবাদ!!!
(লেখা ২৮শে এপ্রিল'২০২০)
ভালো ভালো কথা শুনে আসছি সেই ছোটবেলা থেকে, এখনও শুনছি!! আর যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন শুনতেই থাকবো!!! আর যেদিন থাকবো না সেদিনও চলতে থাকবে ভালো ভালো কথার ঢাক পেটানো!!!! কথাটা রূঢ় শোনালো কি!? মন কি বাত বললাম! ছোটবেলা থেকে যা দেখে আসছি আজ পর্যন্ত তাই-ই বললাম। অন্যদের কথা ছেড়ে দিলাম; এই যে ভালো ভালো কথা আমরা সৎসঙ্গীরা বলি, যাজনের নামে বলি, ব'লে বেড়ায়, যা বলি তা নিজে মানি তো!? করি তো!? নিজের আচরণে ফুটিয়ে তুলি তো! নিজের চরিত্রে তার প্রতিফলন হয় তো!? আমি ঠাকুরের প্রাণের সৎসঙ্গের ঠাকুরের স্বপ্নের সোনার সৎসঙ্গী হ'য়ে উঠতে পেরেছি নাকি ওঠার চেষ্টা করেছি বা করছি!? নাকি ঠাকুরের বলা মত তাত্ত্বিক আমেজে শুধু ডুবেই থাকি!? ডুবে ডুবে জল খাই!? ভালো ভালো কথা শুধু বলার জন্য!? লোকের কাছে ভালো মানুষ, জ্ঞানী মানুষ সাজার জন্য!? করার জন্য নয়!? এই রোগ সবার মধ্যে! সৎসঙ্গীদের মধ্যেও!?
কে যেন ব'লে উঠলো, কেন সৎসঙ্গীরা কি ভিনগ্রহের মানুষ!? পৃথিবী নামক গ্রহের নয়!? জানি না এটাকে সাড়া পাওয়া বলে কিনা! যাই হ'ক এইজন্যই বোধহয় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বিবেকানন্দের বলা Man making education কথাটাকে খোসা ছাল ছাড়িয়ে একেবারে উলঙ্গ ক'রে দিয়ে সরাসরি বললেন, Character making education! যার অভাবে গোটা বিশ্ব আজ হ'য়েছে নিঃস্ব, পৃথিবী হয়েছে আজ রোগী! সৎসঙ্গীদের মধ্যেও ঠাকুরের বলে যাওয়া এই চরিত্র গঠনের শিক্ষার অভাব কি আজ করোনার মত ভয়ঙ্কর প্রকট!?
সৎসঙ্গীরা ১% কি সত্যিই ঠাকুরের প্রাণের সৎসঙ্গী হ'য়ে উঠতে পেরেছে নাকি ওঠার চেষ্টা আদৌ শুরু করেছে সেই ঠাকুরের সময় থেকে আজ ঠাকুরের ১৩২ বছর পার হয়ে যাওয়ার পরেও!? পরমপ্রেমময়ের ছাতার তলায় আমরা সৎসঙ্গীরা কি প্রেমের আধার হ'য়ে উঠতে পেরেছি নাকি আধার নাবিয়ে আনার প্রক্রিয়ায় যুক্ত আছি!? সৎসঙ্গীরা কি একে অন্যকে সত্যি ভালোবাসি!? নাকি নতুন নতুন প্রেমময়ের প্রেমের সাগরে ভাসতে ভাসতে কিছুদিন পরেই ঠাকুরের কথা শুনতে শুনতে চোখকান খুলে যাবার পর নিজের অজান্তে আবার প্রেমস্রোতের মূল ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হ'য়ে সেই হিংসার ঘোর অন্ধকারের চোরাস্রোতে ডুবে গেছি!? রিপু তাড়িত ছুটে বেড়াচ্ছি পাগলা ঘেয় কুকুরের মতন!? এর জন্য কে দায়ী!? আমি? আমার স্বভাব? প্রথম থেকেই আমার আত্মপ্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতা লাভের লোভ!? সচেতনভাবেই আমার বৃত্তি-প্রবৃত্তি পূরণের আকাঙ্খার চোরাস্রোত!? নাকি পুরোনো কপট নষ্টপ্রাণ সঙ্গীর সংশ্রব ও প্রভাব!? বোঝে সে, প্রাণ বোঝে যার!
এছাড়া আর এক শ্রেণীর মানুষ আছে যারা প্রতিবাদের খড়্গ অস্ত্র হাতে বাড়া! এর প্রবণতা ইয়ং জেনারেশনের মধ্যে প্রবল। তারা জানেই না বা জানার আদৌ চেষ্টা করেনা যে, ঠাকুরের সেই লক্ষণের গন্ডির মত একটা ইচ্ছের গন্ডি আছে! আর সেই ইচ্ছের গন্ডির মধ্যে থেকেই ঠাকুরের ইচ্ছের হাত ধ'রে আমাদের হাঁটতে হবে, চলতে হবে! আর ঠাকুরের সেই ইচ্ছের গন্ডির বাইরে বেরিয়ে গিয়ে ঠাকুরের ইচ্ছের হাত ছেড়ে দিয়ে নিজের বৃত্তি-প্রবৃত্তি দ্বারা জারিত ইচ্ছের দ্বারা প্রভাবিত হ'য়ে হাঁটতে থাকি তাহ'লে মা সীতার যা হ'য়েছিল তার চেয়েও ভয়ঙ্কর ভয়ানক আমারও ভবিষ্যৎ! তখন তো একটা রাবণ ছিল, আর ছিল পরম শিবভক্ত শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণ আর এই ঘোর কলিযুগের রাবণ হাজার হাজার ঘরে ঘরে আর শয়তানভক্ত বর্ণহীন!
কে কাকে কোথায় কি বললো, কি নিন্দা করলো, কি সমালোচনা আর অপমান, অশ্রদ্ধা করলো আমার প্রিয়পরমের, সেদিকে তাকাবার সময় আছে নাকি সৎসঙ্গীদের এই কঠিন সময়ে!? আমার প্রিয়পরম শ্রীশ্রীঠাকুর তাঁর জীবদ্দশায় সীমাহীন লাঞ্ছিত, অপমানিত, নিন্দিত হয়েছেন আর তার সাধের 'সৎসঙ্গ'কে কতরকম ভাবে কলঙ্কিত করার চেষ্টা হয়েছে, আক্রমণ করা হয়েছে তাঁর আশ্রমের উপর, পরিবারের উপর তখন ঠাকুর কি করেছিলেন, ঠাকুর পরিবার কি করেছিলেন!?
আমরা কিসের যাজন আর কার, কিসের প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নামবো!? মাথার ঘায়ে তো কুকুর পাগল!!!!! কান পেতে নিজের বিবেকের কথা শুনেছি কখনও নাকি মনের পিছনে ছুটে বেড়িয়েছি!? সবাই তো চারদিকে শুধুই বলেই যাচ্ছে; শুধুই গরম কড়াইয়ে কলাই ফোটার ফট ফটাফট ফট আওয়াজ!!! বলা চরিত্রে ফুটে উঠছে কই!? শুধুই কথার খই আর খই, খই আর খই!!!!!
তাই হ'ক যাজন! হ'ক প্রতিবাদ!! চরিত্র গঠন-ই হ'ক যাজন, চরিত্র গঠন-ই হ'ক প্রতিবাদ!!!
(লেখা ২৮শে এপ্রিল'২০২০)
No comments:
Post a Comment