Powered By Blogger

Friday, August 4, 2023

প্রবন্ধঃ ট্রেন দুর্ঘটনা ও আর্থিক সাহায্য।

করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত যাত্রীদের পরিবারের সদস্যদের দেওয়া হচ্ছে আর্থিক সাহায্য। আদালতের নির্দেশ মেনে জানাল রেল। দারুণ দুর্দান্ত সুখবর! যথোপযুক্ত ব্রিলিয়ান্ট সিদ্ধান্ত।
দুর্ঘটনার পরই নিহতদের পরিবার পিছু ১০ লাখ টাকা আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করে রেল। গুরুতর আহত যাত্রীদের ২ লাখ টাকা ও অল্প আহতদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
রাজ্য সরকারও আর্থিক সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসছে। বিপদের দিনে সবাই একই নৌকোর যাত্রী হিসেবে রণক্ষেত্রে উত্তীর্ণ।
যাই হ'ক, টাকা-ই শেষ কথা? সবসে বড়া রপাইয়া। কিন্তু টাকা দিয়েই কি সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়? হয়েছে আজ পর্যন্ত? সমস্যা তো বহু কিন্তু সমাধান ক'ই? স্বাধীনতার আজ পর্যন্ত যত সরকার কেন্দ্রে আর রাজ্যে এসেছে সবাই টাকা দিয়েই সমস্যার ও বিরোধীতার মুখ চাপা দিয়েছে, তারপর সব চুপচাপ। এটাই বর্তমানে ভারতের সমস্ত রাজ্যের অসহায় জনগণের কাছে ভিন্ন ভিন্ন মত ও পথের সরকারের পক্ষ থেকে পৌঁছে দেওয়া একই শিক্ষা-সংস্কৃতি? কি শিখেছে আমাদের পূর্বপুরুষ? কি শিখেছি আমরা? কি শিখছে আমাদের বর্তমান প্রজন্ম? কি শিখবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর থেকে? স্বাধীনতার পর থেকে যে নেতা যা ভুল শিখিয়ে গেল, সস্তা রাস্তায় হেঁটে দেখিয়ে দিয়ে গেল সমস্যা সমাধানের চটজলদি পথ, জ্বালাপোড়ায় আরামের তাৎক্ষণিক মলম সেই একই ভুল আর সস্তা রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছে সেই সস্তা ও ভুল রাস্তা দেখানোর নেতাদের হাত ধ'রে অতীত থেকে বর্তমান নেতৃত্ব স্বাধীনতার ৭৫ বছর ধ'রে!? এর থেকে মুক্তি কি কোনওদিনই নেই? জনগণের এমনই দূরবস্থা? কবে আসবে সেই ইউটোপিয়ার দিনগুলি? এর জন্যে কে দায়ী? নেতা নাকি জনগণ? যাক অন্তত চীনের জনগণের মতো আফিম ক্ষতিকারক জানা সত্ত্বেও আফিমের নেশায় আচ্ছন্ন থাকার মতো সস্তার তিন অবস্থা জানা সত্ত্বেও নেতানেত্রীদের সস্তার দর্শনে আসুন সবাই আচ্ছন্ন থাকি। কোনও কিচ্ছু দেখতে ও বুঝতে হবে না; যে ক'দিন বাঁচবো আসুন পোলট্রির মুরগীর মতো বাঁচি।
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের
"মানুষ আপন টাকা পর
যত পারিস মানুষ ধর।"--- বাণী বা তত্ত্ব কথা এখন চলবে না। তা যারা পাগল কিছু ঠাকুরের ইষ্টপ্রাণ তঁনিষ্ঠ, তঁত্তপা ভক্ত আছে তাদের এসব বাণী নিয়ে থাকতে দিন। তারা দয়ালের লোক দয়াল তাদের রক্ষা করবে, বাঁচাবে, ভরণ পোষণের সব দায়দায়িত্ব নেবে। এদের কথা ছাড়ুন।
এখন যুগ পাল্টেছে। এখন টাকা স্বর্গ, টাকা ধর্ম। টাকাহি পরমং তপঃ। তাই
এখন পাল্টে গেছে শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী। আমি অনেকবার বলেছি এই বাণীর নূতন সংস্করণ। এর আগে আমাকে অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ কিছু সৎসঙ্গী আমাকে ঠাকুরের "মানুষ আপন-----মানুষ ধর" বাণীর এই যুগোপযোগী আধুনিক সংস্করণ রচনা করার জন্য ফেসবুকে, ফোনে অনেক সমালোচনা ও কুৎসা করেছে। এতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। পরবর্তীতে অনেককে আমার এই আধুনিক সংস্করণ সৎসঙ্গে আউড়াতেও দেখেছি। যাই হ'ক, আবারও বলছি নূতন সংস্করণ, তা হ'লোঃ
টাকা আপন মানুষ পর
যত পারিস টাকা ধর।--প্রবি।
এই-ই মোক্ষম সুযোগ। রাতারাতি গরীব থেকে বড়লোক হওয়ার। প্রত্যেককেই একদিন মরতে হবে। কেউ আজ কেউ কাল কি পরশু। একদিন আগে পরে। তাই যারা মারা গেল তারা মরে গিয়ে পরিবারকে সুযোগ ক'রে দিয়ে গেল লক্ষপতি হওয়ার। এ সুযোগ হাতছাড়া হ'লেই আর আসবে না। অন্তত সারাজীবন পরিবারের জন্য কিছু করতে না পারলেও মরে তো পরিবারকে প্রিয়জনকে কিছু দিয়ে গেলাম। এবার সেই টাকা দিয়ে কি করবে আর না করবে পরিবারের সসস্যারা ভাববে। হয়তো এই টাকা নিয়ে ভাগাভাগির করণে পরিবারে লাগবে সংঘাত, জ্বলবে আগুন। তা যা হয় হ'ক। যার যার পাঁঠা তা সে মাথায় কাটুক আর ল্যাজায় কাটুক তার তার ঘরোয়া ব্যাপার। ভাঁড় মে যায় সেসব ব্যাপার। আমি মরে পাইয়ে দিয়ে গেছি পরিবারকে আর সরকার টাকা দিয়ে দায় সেরেছে। ব্যাস, এর থেকে বেশী কিছু দেখার দরকার নেই।
একটা অপ্রিয় সত্য কথা বলি, বেশ কিছুদিন পর যখন এর রেশ কেটে যাবে আর যারা এই দূর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে গেছে তাদের ঘরে কখনও কোনও অশান্তি হ'লে ক্রোধে উন্মত্ত হ'য়ে আবার এই পুরোনো স্মৃতি টেনে এনে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তির উদ্দেশ্যে বলা না হয়, "রোজগারের মুরোদ নেই আবার বড় বড় কথা বলে, জ্ঞান ঝাড়ে; সেদিন মরলেও দশ লক্ষ টাকা পাওয়া যেত।" যদিও হয়তো এ কথা মনের কথা নয়। তাই বোধহয় আমাদের দয়াল ঠাকুর অতি প্রত্যুষে ইষ্টভৃতির আগে স্মরণ করতে বলেছেন, আবৃত্তি করতে বলেছেন 'স্বতঃ অনুজ্ঞা'-র কথাগুলিঃ "আমি অক্রোধী, আমি অমানী, আমি নিরলস------"।
যাই হ'ক এবার থেকে রেলে চড়লেই সঙ্গে নাম ঠিকানা সহ পরিচয় পত্র বহন ক'রে চলা উচিত। পারলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে সেই পরিচয় পত্রের ট্যাটু ক'রে রাখা দরকার।
প্রবি।

No comments:

Post a Comment