আজ, সারা পৃথিবীতে একটাই বোধহয় হিন্দু রাষ্ট্র নেপাল। তাও অন্ধ ধর্মীয় কুসংস্কারের আচ্ছাদনে ঢাকা দেশ। ভারতে হিন্দুদের আধিপত্য হওয়া সত্ত্বেও বুক টানটান ক'রে হিন্দুরা বলতে পারে না আমি হিন্দু। বললেও উগ্রতার দূর্গন্ধ ছড়ায় সেই হুঙ্কারে। আর, ধর্ম্মটর্ম্ম মানেটানে না, ভারতীয় মনীষী, ভারতীয় কৃষ্টি-সংস্কৃতির ধার ধারে না উদারতার ভঙ্গিতে সব সমান একাকার ক'রে দেওয়া সবজান্তা বিদেশী মনীষী, বিদেশী কালচারে আকৃষ্ট কিছু অতি বুদ্ধিজীবী হিন্দু (বিশেষতঃ বাঙ্গালী হিন্দু) যারা হিন্দুটিন্দু মানে না কিন্তু মুসলমান, খৃষ্টান ইত্যাদিদের ধর্মাচরণ মানে এমন হিন্দুর কু-হুঙ্কারে তটস্থ হিন্দুরা।
আবার একশ্রেণীর স্বঘোষিত সনাতনী হিন্দুরা নিজেদের সমগ্র হিন্দুদের বাপঠাকুর্দা মনে করে আর গালাগালি করে হিন্দুদের। তাদের সফট্ টার্গেট সৎসঙ্গীরা। শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে ও সৎসঙ্গীদের তারা গালাগালি করে। তারা ভাবে সৎসঙ্গীরা দুর্বল। কিন্তু তারা জানে না সারাবিশ্বে প্রায় ১০কোটির লক্ষ্যে ছুটে চলা সৎসঙ্গীরা ধর্মজগতে বিশ্বে একটা জীবন্ত ইষ্টে নিবেদিত সুশৃঙ্খল সভ্য ভয়ংকর শক্তি। ইচ্ছা করলেই তারা অনেক কিছু করতে পারে না। না, তারা তা করে না। কারণ সৎসঙ্গীরা জীবন্ত ইষ্ট শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রে নিবেদিত প্রাণ আচার্য আদেশে চলা সমাজ গড়ার দক্ষ যোগ্য সুশৃঙ্খল কারিগর। হিন্দু-মুসলমান-খৃষ্টান-বৌদ্ধ-শিখ ইত্যাদি ইত্যাদি মূল ও শাখা-প্রশাখা সমন্বিত সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ আজ সৎসঙ্গের পতাকার তলায় সম্মিলিত এক সৎসঙ্গী সম্প্রদায়। তাই, বহুনৈষ্ঠিক হিন্দুদের ঢাকার রাজপথের হরিসঙ্কীর্তন কোনও বার্তা পৌঁছে দেয় না কোনও সম্প্রদায়ের কাছে; তা সে হিন্দু সম্প্রদায় হ'ক আর যে সম্প্রদায়ই হ'ক।
শ্রীশ্রীঠাকুরের পরিস্কার বলা আছে, "একটু কাঁদলেই বা নৃত্যগীতাদিতে উত্তেজিত হ'য়ে লম্ফ-ঝম্পাদি ক'রলেই যে ভক্তি হ'ল তা নয়কো। সাময়িক ভাবোন্মাত্তাদি ভক্তের লক্ষ্মণ নয়কো।" যেদিন সব হিন্দু এক ও অদ্বিতীয় জীবন্ত আদর্শের তলায় এক হ'তে পারবে, মেনে নিতে পারবে সত্যকে, তাঁর আবির্ভাবকে, মেনে নিতে পারবে ভন্ডামি ছেড়ে ব্যক্তিগত নীচ স্বার্থকে দূরে ঠেলে দিয়ে তাঁর ব'লে যাওয়া প্রত্যেকবারের 'আমি আবার আসবো' এই পরিস্কার স্পষ্ট বার্তাকে সেদিন হিন্দুধর্মের পুনঃজাগরণ সম্ভব হবে। আর, সেদিন নিরাকার ঈশ্বরের সাকার রূপে রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ ও সর্ব্বশেষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র রূপে বারবার আসার যে উদ্দেশ্য তা পূরণ হবে। নতুবা বালখিল্য সমস্ত ভন্ডামি-ধান্দাবাজি ও আবেগ তাড়িত অজ্ঞান ভক্তির গুড়ে বালি। মহাভারতের মতো ধ্বংস অনিবার্য।
হে হিন্দু, সেদিনের ইঙ্গিত আমরা প্রতিদিনই দিনের আলোর মত স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু চোখ বন্ধ ক'রে ভাবছি ক'ই আমি তো কিছু দেখতে পাচ্ছি না। খরগোসের মতো ঝোপের মধ্যে মুখটা ঢুকিয়ে নিজেকে লুকিয়ে রাখছি আর খরগোশের পোঁদটা যে ঝোপের বাইরে বেরিয়ে আছে আর তা দেখতে পাচ্ছে খরগোশকে তাড়া করা শেয়াল আর এক্ষুনি যে খপ ক'রে এসে এক ভয়ংকর নিষ্ঠুর হিংস্র কামড়ে খাবলে নেবে পোঁদের মাংস তা বুঝতে পাচ্ছে না খরগোশরূপী হিন্দুরা ! সে ভাবছে সে নিরাপদেই আছে। আমাদের হিন্দুদের তথা জগতবাসীদের আজ খরগোশের দশা।
জানি না সত্যিই কোনওদিন এর থেকে মুক্তি হবে নাকি অপেক্ষা করছে মানবতার বুনিয়াদ ধ্বংস হ'য়ে নিশ্চিত বীভৎস মৃত্যুর ধ্বংসলীলা।
(লেখা ৬ই জুন'২০২৩)
প্রবি।
No comments:
Post a Comment