কথাটা আপাত সত্য; তবে সাময়িক। যা চিরন্তন নয় তা' কখনো সত্য হয় না। আর যা সত্য নয় তা' কিন্তু কখনো জগতে পূজনীয় হ'য়ে ওঠেনা এবং ওঠেনি। ইতিহাস বড় নির্ম্মম। সে কারও ঔদ্ধত্ব কখনো মেনে নেয়নি সে যতবড় পন্ডিত বা ক্ষমতাসীন হ'ক না কেন? যিনি দায়িত্বহীন, স্বেচ্ছাচারী, স্বার্থপর তারা জগতে পূজ্য হন নিজের বাহুবল, অর্থবল ও মূর্খ, বেকুব, দুর্বল, ভীরু, ধান্দাবাজ, লোভী ইত্যাদি গুণে গুণান্বিত লোকবলের জোরে। আর ধমনীর আগুন নিভিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা যারই থাক যিনি দায়িত্বহীন, স্বেচ্ছাচারী, স্বার্থপর সে আর যে ক্ষমতাই রাখুক নারীর ধমনীর আগুন নিভিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা ঐ সমস্ত নপুংসকরা রাখে না। আর এটা মনে রাখতে হবে ঐ সমস্ত নপুংসকরা জানে না, 'সময় সবসে বড়া বলবান' কিন্তু বুদ্ধদেব বাবু (বসু)র মত পন্ডিত লোকেরা সেটা জানেন না এটাই আশ্চর্যের!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
প্রেক্ষিতের প্রয়োজনে কোথাও কোনও উক্তি করা যেতেই পারে কিন্তু তা' চিরকালীন সত্যে পরিণত হ'তে পারে না এবং হয়ও না। আর প্রেক্ষিতের প্রয়োজন হ'লেই আমাকে আধা সত্যের জয়ঢাক পেটাতেই হবে পূর্ণ সত্যের ভঙ্গীতে তাহ'লে তা' হবে লেখকের পক্ষে মিথ্যাচার। আচ্ছা অম্বিকা কি এই উক্তির মধ্যে দিয়ে নারী হিসাবে নিজে গর্ব বোধ করে না-কি দুঃখবোধ, অপমানবোধ করে? বুদ্ধদেব বাবু কি বলেন? আমি বলি, নারীর নিজের মান-সম্মান রক্ষা হয় বা পায় এমন প্রেক্ষিতের প্রয়োজনে লেখককে একটু ভেবেচিন্তে সতর্কতার সঙ্গে সম্মানজনক উক্তি করা উচিত যাতে তা সার্বজনীন না হ'য়ে যায়। অনেক মানুষে একসঙ্গে একই কথা বললেই সেটা সত্য হ'য়ে যায় না; তাই যদি হ'তো তাহ'লে পাঁঠাকে কুকুর মনে ক'রে ত্যাগ করার সাথে সাথে পাঁঠা কুকুর হ'য়ে যেতো। কেউ তার কপটতার জন্য সাময়িক সফল হ'তে পারে কিন্তু তাই ব'লে মিথ্যা সত্য হ'য়ে যায় না আর তা' গ্রহণযোগ্য হয় না। সাদৃশ্য থাকতেই পারে আর তাই ব'লে সাদৃশ্যের দোহাই দিয়ে সমষ্টিকে যেন গ্রাস না করা হয়। আর সংবাদপত্রে যা' প্রতীয়মান হচ্ছে বা হয় তা প্রায়শই আধা সত্য নাহয় অসত্য কিম্বা ভুল।
আর সফলতার পিছনে যেমন করাপশানের উল্লাস থাকে ঠিক তেমনি "Success makes success, as money makes money"--- সফলতা আসে সফলতার হাত ধরেই যেমন টাকা আসে টাকার হাত ধরে" ঠিক তেমনি সফলতার পিছনে থাকা সাময়িক মিথ্যা, কুৎসা, নিন্দা ইত্যাদি প্রচারকে পদদলিত ক'রে সফলতা একদিন সত্যকে তুলে ধরতেও সফল হয়ই কি হয়।
এগুলি হতাশার কথা। কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ বা যেকোনও লেখাই হ'ক না কেন কিম্বা ছবি ইত্যাদি যাই হ'ক না কেন বিষয়বস্তু লেখক বা শিল্পীর মানসিকতার প্রতিফলন। এ ধরণের হালকা লেখা লেখকের ভিতরের অস্থির অবস্থাকে তুলে ধরে, না পাওয়ার যন্ত্রনাকে প্রকাশ ক'রে দেয়। নেগেটিভ দৃষ্টিভঙ্গি সত্যের হাতিয়ার নয়। আবার অন্যদিক দিয়ে দেখতে গেলে যে পুরুষের ধমনীর আগুন নারীর স্পর্শে নিভে যায় সে পুরুষই নয়; সে আকৃতিতে পুরুষ হ'লেও প্রকৃতিতে নপুংসক। কারণ পুরুষের ধমনীর আগুন নিভে যায় তখনই যখন পুরুষ আদর্শহীন জীবন যাপন করে। যে পুরুষ আদর্শকে লক্ষ্য করে ছুটে চলে, সপারিপার্শ্বিক জীবন বৃদ্ধির পথে এগিয়ে যায় সেই আদর্শবান পুরুষের ধমনীর আগুনকে নিভিয়ে দেয় এমন নারী সৃষ্টির বুকে জন্মায়নি আর যদি কোনও নারী সেই চেষ্টা করে কোনও আদর্শবান পুরুষের উপর তাহ'লে তাকে অপমানিত হ'তেই হবে নিজের নারী সত্ত্বার উপর নিজের কারণে বলাৎকার হওয়ার জন্য। আর বুদ্ধদেব বাবু যে পূজনীয় (!?) মানুষগুলোর কথা লিখেছেন তাদের দোষ কোথায়? তারা তো ঐ ধরণের চারিত্রিক বৈশিষ্টসম্পন্ন! বৈশিষ্টই তো মানুষকে চালিত করে। এখানে আবার এই ধরণের মানুষদের নিয়ে আক্ষেপ কেন? কিসের জন্য? বুদ্ধদেব বাবুর কথানুযায়ী বলতে পারি; প্রথম কথা, পূজনীয় কখনোই দায়িত্বহীন, স্বেচ্ছাচারী, স্বার্থপর হয় না। দ্বিতীয়ত, ব্যাপারটাকে তিনি খিচুড়ি বানিয়ে দিলেন। এই খিচুড়ি বানিয়ে দেবার পিছনে জীবনে অনেক কিছু না পাওয়ার যন্ত্রণায় মুহূর্তের অন্যমনস্কতা তাকে গ্রাস করে আর তখনই জন্ম নেয় এই বিতর্কিত অথচ হালকা লেখা; এটা আমার ধারণা বা বিশ্বাস। গ্রহণ বা বর্জন ব্যক্তিগত। অবশ্য অনেকে ইচ্ছে করেই বিতর্কিত হ'য়ে উঠতে চায় সেখানে নিজের ভাবমূর্তির কোনও ক্ষতি হচ্ছে কিনা সেদিকে নজর দেবার প্রয়োজন মনে করে না প্রচারের লোভে।
যাই হ'ক এবার বলি, ঐ যে পূজনীয় (!?) যারা নারীকে হাতিয়ার ক'রে ধমনীর আগুন নিভিয়ে দেয় বা নিভিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে তারা আদপেই কোনও ক্ষমতার অধিকারী নয়। তারা কখনোই কারও ধমনীর আগুন নিভিয়ে দেয় না বা নিভিয়ে দেওয়ার বিন্দুমাত্র ক্ষমতা রাখে না। কারণ বুদ্ধদেব বাবু যাদের কথা বলেছেন সেই উভয় পক্ষই অর্থাৎ যিনি ধমনীর আগুন নেভান ও যাদের ধমনীর আগুন নেভে তারা উভয়তই রত্ন! আর কথায় আছে রতনে রতন চেনে। উভয়েই দায়িত্বহীন, স্বেচ্ছাচারী ও স্বার্থপর। এদের উভয়ের কারও ধমনীতে কোনওকালে কোনোদিনই আগুন ছিল না যে আগুন নিভিয়ে দেওয়ার বা নিভে যাবার প্রশ্ন উঠবে! আর এই ধমনীর আগুনহীন পুরুষকে সে যতই নষ্টা নারী হ'ক না কেন সেই নারী কখনোই শ্রদ্ধার আসনে, স্নেহ, মায়া-মমতা, ভালোবাসার আসনে বসায়নি ও বসায় না।কারণ সেই নষ্টা নারীও জানে মূল্যবোধহীন নেইআগুন পুরুষ মাত্রেই নপুংসক। আর নপুংসক পুরুষকে আনাড়ি নারীও ঘৃণা ও অশ্রদ্ধার চোখে দেখে। এদিক দিয়ে দেখতে গেলেও নারী এতটাই মহান!!!!!! আর যথার্থ যোগ্যা নারীর কথা আলাদা তারা প্রাথঃস্মরণীয়া! সে সামাজিক, সাংসারিক,পারিবারিক ব্যবস্থার কারণেই হ'ক বা নিজের কারণেই নষ্টা হ'ক বা নষ্টা নারী না-হ'ক!!!! পুরুষের থেকে নারী সবদিক দিয়ে এগিয়ে এই সমস্ত কারণেই।
আর, নারীকে এতই সস্তা মনে করার মানসিকতা কখনোই সুস্থ মস্তিষ্কের লক্ষণ নয় সে নারী যতই সস্তা ও সহজলোভ্যা হ'ক না কেন। লেখকদের এই ধরণের লেখা বা লেখার মানসিকতা অজান্তে ঐ আশ্চর্য পূজ্যদের(!?) হাতকেই শক্ত করে এবং নারীকে করে তোলে আরও অসহায় ও দিশেহারা এবং ঐ তথাকথিত ধমনীতে বয়ে চলা মিথ্যে আগুনধারীদের লড়াকু যোদ্ধা হিসাবে তুলে ধরার ব্যর্থ ও ভুল প্রয়াস মাত্র। (লেখা ২৮শে আগষ্ট'২০১৭)
Projukti Bondyopadhyay
আগষ্ট ২৮' ২০১৭
No comments:
Post a Comment