Powered By Blogger

Wednesday, April 30, 2025

কবিতাঃ বিভেদের মাঝে মিলন মহান।

অনুকূল পদ্মার বুকে শিক্ষা-ধর্ম-রাজনীতির কালো ছায়ায়
বাংলার কুৎসিত রূপ দেখেছিল, অমরেন্দ্রও একদিন বাংলায়
গঙ্গার বুকে হতাশা নিয়ে বৃথা বাঁচার গান শুনেছিল।
সেদিন ফিরিয়ে নিয়েছিল মুখ দুই বাংলার কৃতি ভীষ্মেরা
লজ্জায় ঢেকেছিল মুখ জীবনানন্দ, রবিঠাকুরের সোনার বাংলা।
তবুও দয়াল প্রভু একবুক ব্যথা নিয়ে বেসেছিল ভালো বাংলারে,
বলেছিল, বাংলা বাঁচলে ভারত বাঁচবে, ভারত বাঁচলে বাঁচবে বিশ্ব।
তুমি কি দেখিয়াছো সেই শরমের মুখ? দেখিয়াছো সেই কুৎসিত রূপ?
তুমি কি শুনিয়াছো সেই কথা? অনুভব করিয়াছো সেই দয়ালের ব্যথা?
তুমি কি নিজেরে ক্ষমা করিয়াছো? তুমি কি বেসেছো ভালো দয়াল প্রভুরে?

আমরাও আশায় মরে চাষার মত আজও বেঁচে আছি হেথায়----
পৃথিবীর নিকৃষ্টতম জাত হ'য়ে বাঙালির বুকে এঁকে দিয়ে
কলঙ্কের ছবি---যে বাংলায় এসেছিল নেমে দয়াল প্রভু যেচে,
এসেছিল এ বাংলায়ও এক ঝাঁক আশা বুকে নিয়ে, সেদিন
চিনতে পারেনি তাঁরে দুই বাংলার কৃতি সেরা বাঙ্গালীরা, কিন্তু
ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই ব'লে গেয়ে উঠেছিল কৃতি বাঙালির প্রাণ নেচে।

বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফুল ফল
বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ ঘাট
আজ নীরবে নিভৃতে একাকী প্রভুর বিরহ বেদনায় ফেলে
চোখের জল পাপে পরিপূর্ণ হৃদয়ে অপরাধকে ক'রে সাথী।
বাঙালির পণ, বাঙালির আশা, বাঙালির কাজ, বাঙালির ভাষা
বাঙালির প্রাণ, বাঙালির মন, বাঙালির ঘরে যত ভাই বোন
সেদিন আশাহত দয়াল প্রভুকে করেছিল ব্যথিত,
করেছিল উপেক্ষা ও অবহেলায় ক্ষতবিক্ষত, লাঞ্ছিত।

পদ্মা গঙ্গার দুই পাড়ের কাছে নিজেকে মনে হয়েছিল অবাঞ্ছিত,
তাই ছুটে গিয়েছিল বর্ষার জলে স্ফীত গ্রীষ্মের শুখা দারোয়ার তীরে
ভগীরতের মতো চেয়েছিল গঙ্গাকে বইয়ে দিতে দারোয়ার বুকে।
মিলনের তীব্র আকাঙ্কায় অশ্রুসজল চোখে ব্যথাহত কন্ঠে অবিরত
নীরবে নিভৃতে গেয়ে উঠতো গান প্রভু একাকী আপন মনে,
মিলন হবে কতদিনে আমার গঙ্গা-দারোয়া সনে।

আজও দয়াল আছে বসে আচার্য মাঝে সেই মধুর মিলন
দেখবে ব'লে, আমরাও আছি বসে যত হিন্দু, মুসলমান,
শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, বসে আছি আচার্যের সাথে বিশ্ব জুড়ে
আছে যত সব সম্প্রদায়ের সৎসঙ্গী সবাই হাতে নিয়ে
'সৎসঙ্গ'-এর নিশান আর স্বপ্ন নিয়ে বুকে
বিভেদের মাঝে মহান মিলনের তরে। 

No comments:

Post a Comment