ধর্ম্মের মূর্ত রূপ হ'লো জীবন্ত আদর্শ। ধর্ম মূর্ত্ত হয় জীবন্ত আদর্শে এবং শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হলেন ধর্মের মূর্ত্ত আদর্শ। তিনি হলেন fulfiller the best. তিনি কোন সম্প্রদায়-বিশেষের নন, বরং সব সম্প্রদায়ই তাঁর। শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছেন-“একজন মানুষের বিনিময়ে আমি একটি সাম্রাজ্য ত্যাগ করতে পারি, কিন্তু একজন মানুষকে ছাড়তে পারি না।"
তিনি বললেন, "হিন্দু ধর্ম্ম, মুসলমান ধর্ম্ম, খৃষ্টান ধর্ম্ম, বৌদ্ধ ধর্ম্ম ইত্যাদি কথা ভুল, বরং ও-সবগুলি মত।"
আমরা হিন্দু, মুসলমান, খৃষ্টান, বৌদ্ধ ইত্যাদি ধর্মের মানুষেরা যারা ধর্মের প্রকৃত অর্থ না বুঝেই, প্রকৃত অর্থে ধর্ম পালন না করেই ধর্ম নিয়ে মাতামাতি করি তারা জানিই না, জানার ইচ্ছাও নেই আমাদের যে "মত বহু হ'তে পারে, এমন কি যত মানুষ তত মত হ'তে পারে, কিন্তু তাই ব'লে ধর্ম বহু হ'তে পারে না।"
আমরা যারা ধর্ম নিয়ে হানাহানি করি তারা জানিই না, "কোনও মতের সঙ্গে কোনও মতের প্রকৃতপক্ষে কোনও বিরোধ নেই, ভাবের বিভিন্নতা, রকমফের-----একটাকেই নানাপ্রকারে একরকম অনুভব।" অর্থাৎ হিন্দু, মুসলমান, খৃষ্টান, বৌদ্ধ ইত্যাদি মতের কোনওটার সঙ্গে কোনও মতের বিরোধ নেই। সব আলাদা আলাদা ভাব, আলাদা আলাদা রকমফের অর্থাৎ একই বস্তু বা বিষয়ের ভিন্নরূপ। ঐ এককেই নানাভাবে শেষে এসে একইরকম অনুভব করা।"
আমরা ধর্ম বিরুদ্ধবাদীরা জানিই না, "সব মতই সাধনা বিস্তারের জন্য। তবে তা' নানাপ্রকারে হ'তে পারে; আর যতটুকু বিস্তারে যা হয় তাই অনুভূতি, তাই জ্ঞান। তাই ধর্ম্ম অনুভূতির ওপর।"
এসব কথা আমাদের চোখ খুলে দেবার জন্য, অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর ক'রে, কয়লা থেকে হীরেকে বের ক'রে আনার মত আমাদের সামনে ব'লে গেলেন সেই fulfiller the best অর্থাৎ পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীরাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ আবার আমাদের মাঝে যুগ পুরুষোত্তম পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র রূপে এসে। সেই এক ও অদ্বিতীয় একজনই রক্তমাংসের নোতুন রূপে এসে ব'লে গেলেন আমাদের পারস্পরিক হানাহানি, কাটাকাটি, ঘৃণা, বিদ্বেষ থেকে রক্ষা করার জন্য। আমরা হিন্দু, মুসলমান, খৃষ্টান, বৌদ্ধ ইত্যাদি ইত্যাদি সব সম্প্রদায়ের মানুষ যে সেই এক ও অদ্বিতীয় পুরুষোত্তম পরমপিতার সন্তান, আমরা যে সবাই যুগের প্রয়োজনে ভিন্ন ভিন্ন রূপে আসা সেই একজনেরই আশ্রিত, দীক্ষিত, অনুসারী তা' মনে করিয়ে দেবার জন্য তিনি বারবার আসেন আর আমাদের যুগ অনুযায়ী বলে যান, সত্যকে তুলে ধরেন।
এবার এই কলিযুগের কালো ঘুটঘুটে ঘোর অজ্ঞানতার অন্ধকার মাঝে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র রূপে এলেন এবং সব ডিস্ক্লোজ ক'রে দিয়ে গেলেন আর আমাদের সামনে রেখে গেলেন আমাদের মাঝে তাঁরই প্রতিনিধিস্বরুপ শ্রীশ্রীআচার্যদেবকে, যাতে আমরা কাল এবং কর্মের জালে জড়িয়ে দমবন্ধ অবস্থায় হাঁসফাঁস করতে থাকা মানুষ বুকভরে ফ্রেস অক্সিজেন নিতে পারি, প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে আবার উঠে দাঁড়াতে পারি, ঘুরে দাঁড়াতে পারি, বাঁচতে পারি, পারি বেড়ে উঠতে আবার নোতুন উদ্যমে হতাশাকে, জীর্ণতাকে, দুঃখ, কষ্ট, জ্বালা, যন্ত্রণাকে ঝেড়ে ফেলে আত্মবিশ্বাসকে মূলধন ক'রে।
সৎসঙ্গের শ্রীশ্রীআচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদা এমনই একজন সুন্দর ভদ্র সভ্য সৎ জ্ঞানী মানুষ যার জীবনে ধর্ম মূর্ত হ'য়ে উঠেছে। অর্থাৎ ধর্ম তাঁর জীবনে, তাঁর চরিত্রে, আচারে, আচরণে, কথায় বার্তায়, ব্যবহারে, চেহারায়, চাউনিতে, হাসিতে জীবনের প্রতিমুহুর্তে মূর্ত হ'য়ে উঠেছে, জীবন্ত হ'য়ে উঠেছে।
পরমপূজ্যপাদ আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদা বললেন, "জল, ওয়াটার, পানী ভিন্ন ভাষায় ভিন্ন ভাবে বললেও জলের কাজ তৃষ্ণা মেটানো ।
ঠিক এমন ধর্মের ক্ষেত্রেও। মন কে স্থির রাখা, সরল মনের অধিকারী হওয়া আর সবাইকে ভালবাসতে পারাই হলো সব ধর্মের মূল বিষয়।"
সব ধর্মই যে এক আর প্রকৃতপক্ষে কারও সঙ্গে কারও যে কোনও বিরোধ নেই, ভাবের বিভিন্নতা, রকমফের----একটাকেই নানাপ্রকারে একরকম অনুভব আর ভালোবাসাই যে এক ও একমাত্র শক্তি তার এক সুন্দর উদাহরণ শ্রীশ্রীআচার্দেবের এই কথামৃত |
এরই নাম সৎসঙ্গ! শ্রীশ্রীআচার্যদেবের নেতৃত্বে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সৎসঙ্গ!!
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত 'সৎসঙ্গ' শৃঙ্খলার যে অপূর্ব সৌন্দর্য বহন করে তার প্রমাণ এই ঋত্বিক সম্মেলন! শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী "এক আদেশে চলে যারা, তাদের নিয়ে সমাজ গড়া" তার প্রমাণ জ্বলন্ত উজ্জ্বল সূর্যের মত জ্বলজ্বল করছে এই সৎসঙ্গ ঋত্বিক কনফারেন্স ও লক্ষ লক্ষ লোকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত নীরব সুশৃঙ্খল উৎসব স্থান।
শ্রীশ্রীআচার্যদেবের আদেশে শৃঙ্খলিত ঋত্বিক সম্প্রদায় ও বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি সৎসঙ্গীদের এই শৃঙ্খলিত মাধুর্যময় চলা আজ সমগ্র বিশ্বের কাছে সুখ শান্তির প্রতীক! আজ সৎসঙ্গীরা শ্রীশ্রীআচার্যদেবের সুযোগ্য সুদক্ষ নিখুঁত নেতৃত্বে বিশ্বজুড়ে ঐক্যবদ্ধ ভালোবাসাময় এক বৃহৎ সৎসঙ্গী পরিবার। এই বৃহৎ পরিবারের সৎসঙ্গী সদস্যদের একটাই লক্ষ্য, একটাই ধ্যান, একটাই জ্ঞান শ্রীশ্রীঠাকুরকে খুশী করা, খুশী করা, খুশী করা। পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুরের ইচ্ছেমতো প্রেমময়, ভালোবাসাময় এক সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলা।
প্রার্থনা করি দয়ালের রাতুল চরণে শ্রীশ্রীআচার্যদেব ও বিশ্বজুড়ে সমস্ত ঋত্বিক, যাজক, অধ্বর্য্যু ও সাধারণ সৎসঙ্গীরা ভালো থাকুক, আনন্দে থাকুক, সুস্থ থাকুক, আলোময়, রূপময়, মধুময়, রসময় হ'য়ে দীর্ঘজীবী হ'ক আর ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বময় হিন্দু, মুসলমান, খৃষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ইত্যাদি ইত্যাদি বিশ্বজুড়ে যত মত বা সম্প্রদায়ের জট মানুষ আছে সমস্ত মতের বা সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষের প্রাণে প্রাণে অমৃতময় ভালোবাসার ডালি নিয়ে । নেমে আসুক সত্য যুগ। জয়গুরু।
No comments:
Post a Comment