Powered By Blogger

Thursday, July 31, 2025

বিচিত্রা ১৭৪

কালিতে তুলিতে বাদ প্রতিবাদ নিরাপদ এক ফ্যাশন!
এসো ফাগুন, জ্বালো আগুন, জ্বালাও অন্তরে প্যাশন!!
( লেখা ৩১শে জুলাই'২০১৭)

অবতার ও অবতারি: ১
প্রশ্ন: অবতার ও অবতারি মানে কি?
উত্তর: যে এই মর্তভূমিতে অবতরণ করে সে অবতার আর যিনি অবতরণ করান তিনি অবতারি।

প্রশ্ন: অবতার কে? আর অবতারিই বা কে? 
উত্তর: আমি আপনি ও আমরা আপনারা যারাই এই মর্তভূমে অবতরণ করেছি তারাই অবতার। আর যিনি আমাদের এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন অর্থাৎ অবতরণ করিয়েছেন তিনি অবতারি। অবতারি হলেন শ্রীশ্রীরাম, শ্রীশ্রীকৃষ্ণ, শ্রীশ্রীবুদ্ধ, শ্রীশ্রীযীশু, শ্রীশ্রীহজরত মহম্মদ, শ্রীশ্রীমহাপ্রভু, শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণ ও বর্তমান সর্বশেষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্র।

অবতার ও অবতারি: ২
প্রশ্ন: শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র কে? অবতার না অবতারি?

উত্তর: তিনি অবতার হ'য়েও অবতারি। তিনি আমাদের যেমন অবতরণ করিয়েছেন ঠিক তেমনি নিজেকে নিজে অবতরণ করিয়েছেন আমাদের বাঁচাবার ও বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য। 

প্রশ্ন: তাহ'লে রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, মহম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ ইনারা কি? ইনাদেরও তো অবতার বলা হয়। 

উত্তর: ইনারাও অবতার হ'য়েও অবতারি। ইনারাও যুগে যুগে অবতরণ করেছেন তাঁর সৃষ্টিকে বাঁচাতে ও বৃদ্ধি পাওয়াতে। ইনাদের শুধু অবতার বলা হয় তা ভুল। 

প্রশ্ন: তাহ'লে ইনারা বাদে জীবকোটি ও ঈশ্বরকোটি যারাই অবতরণ করেছে সবাই অবতার? 
উত্তর: হ্যাঁ।
( লেখা ৩১শে জুলাই'২০২৩)

Wednesday, July 30, 2025

উপলব্ধিঃ শ্রাবণ মাস ও মহাশিব!

শ্রাবণ মাস। এই মাস নাকি মহেশ্বর শিবের জন্মমাস। তাই শিবের ভক্তরা সবাই এই মাসে বাবার মাথায় জল ঢালতে যায়। আবার সমুদ্র মন্থনে উঠে আসা বিষে নাকি সারা শরীর নীল হ'য়ে গেছিল তাই শরীরের সেই ভয়ঙ্কর জ্বালা জুড়োনোর জন্য নাকি জল ঢালা হয়! আবার দেখা যায় জল ঢালা হয় শিবলিঙ্গের মাথায়! কেন!? তারও ব্যাখ্যা আছে।

যাই হ'ক, এই যে বলা হ'য়ে থাকে শিবের সারা শরীর নীল হ'য়ে গেছিল! তা কে বললো!? যদি সারা শরীর নীল হ'য়ে গিয়ে থাকে তা হ'লে তাকে নীলকন্ঠ বলবে কেন!? বলা উচিত নীলশরীর! তাই না!? নীলকন্ঠ নামের পিছনে তো কারণ আছে! সারা শরীর নীল অথচ বলা হচ্ছে নাকি কন্ঠ নীল! তা' কেমন ক'রে হয়!? এমনি এমনি তো নাম হয় না, তাও আবার ঈশ্বরের!!!

আর বিজ্ঞান কি বলে? সারা শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গে, শরীরের প্রতিটি পার্টসে বিষ ছড়িয়ে গেলে কেউ বেঁচে থাকতে পারে!? তাও আবার সমুদ্র মন্থনের মত ভয়ংকর বিষ! যে বিষের ছিটেফোঁটা মন্থনের সময় ছড়িয়ে পড়েছিল সৃষ্টির বুকে আর ছড়িয়ে পড়েছিল ব'লে এই সৃষ্টির বুকে যে সমস্ত জীব ঐ ছিটেফোঁটা বিষ পান করেছিল তারাই এত 
ভয়ঙ্কর বিষধর তাহ'লে সারা শরীরে ওই মহাবিষের ভয়ঙ্কর তীব্রতা নিয়ে কেউ বেঁচে থাকতে পারে!? তাহ'লে আসল রহস্য কোথায়!?
সময় এসেছে আবেগে ভেসে না গিয়ে আর বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এই রূপকের আড়ালে লুকিয়ে থাকা হাজারো মহাসত্য অনুসন্ধানের!!!!!!!!!

( লেখা ৩০শে জুলাই' ২০১০)

উপলব্ধিঃ ময়লা জমেছে মনে।

কাল একটা লেখা চোখে পড়লো। লেখাটা কার মনে নেই। যাই হ'ক লেখাটা ভালো লাগলো। লেখা রয়েছে; "উন্নতি আর শত্রুর সংখ্যা একসাথে বাড়ে।"

লেখাটা পড়ে মনে হ'লো, বাস্তব। একেবারে বাস্তব। বাস্তবের মধ্যে আরও বাস্তব হ'লো কারও উন্নতি হ'লে পাশাপাশি বাড়ে অপরের হিংসা আর নিজের অহঙ্কার। উন্নতি তা সে শিক্ষা, ক্ষমতা, সামাজিক অবস্থান ইত্যাদি যে উন্নতিই হ'ক না কেন সংগে সংগে বাড়ে আত্ম অহংকার আর আর্থিক উন্নতি হ'লে তো কথাই নেই। তখন তার ব্যবহারে, তার আচার আচরণে, কথাবার্তায়, হাবেভাবে, তার চলাফেরায়, তার চাউনি, মুখ ভঙ্গী, শরীরী ভাষায় যে অহংকার ঝলকে ঝলকে ফুটে ওঠা, ছিটকে পড়া দেখে কেউ যদি বলে তা' সে স্বাভাবিকভাবেই হ'ক আর হিংসা, পরশ্রীকাতরতা থেকেই হ'ক, 'তোর অহঙ্কার হয়েছে।' 
তখন অহঙ্কারী মন আরও উদ্ধত হ'য়ে ব'লে ওঠে, 
'হ, হ, হইছেই তো; প্রয়োজন হইলে বুকের ওপর দিয়া হাইট্টা যামু।'

আর তার ফলে উন্নতির সাথে পাল্লা দিয়ে দ্বিগুণ হাড়ে বাড়ে শত্রুতা। তাই বলি, ময়লা জমেছে মনে! কোণে কোণে!!

এই ময়লা থেকে মুক্তি পাওয়ার একটাই উপায় তা হ'লো জীবনে জীবন্ত আদর্শ গ্রহণ আর আদর্শের প্রতি অটুট অস্খলিত অচ্যুত আদর্শপ্রাণতা। অবশ্য যদি আমি ময়লা মনের ডাষ্টবিন থেকে মুক্তি পেতে চাই।
( লেখা ৩০শে জুলাই' ২০২১)


বিচিত্রাঃ ১৭৩

বর্তমান সময়ঃ 

যে আগে ঝাঁপ দেয়নি, আগে পথ দেখায়নি, সেই নেতা; 
শুধু লেকচার আর তেল দিলেই নেতা ও নেতার 
কাছের লোক হওয়া যায়।

আগে নিজের জন্য যথাসর্ব্বস্ব ঢেলে নাও 
আর দশের মাথায় পা রাখো,
আর, সবার দোষ দেখা শুরু ক্রে দাও,
সেবা নিতে আত্মহারা হও,
তবে নেতা, তবে দেশের হৃদয়, 
তবে দেশের রাজা।

যে চোখ খুলে দেয় তার চোখ আগে খুবলে নাও,
যে সাহায্যের হাত বাড়ায় তার হাত কেটে নাও; 
পথের কাঁটা সাফ হবে।
( লেখা ৩০শে জুলাই'২০১৮)





















প্রশ্ন ও উত্তর। মুক্তির উপায়, বাঁচার উপায়।

হে দয়াল! 
শেষমেশ তোমায় ধ'রে ভাঙ্গার কারিগর হ'লাম!? গড়ার কারিগর হ'তে পারলাম না? ঘরে-বাইরে অর্থাৎ পরিবারে, হাটে-মাঠে-বাটে সব জায়গায় হ'লাম সংহতিতে ভাঙ্গন ধরানোর ছেদক!? 
আমি কি ভুলে গেলাম পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীদাদার সাবধান বাণীঃ 
"তোর খেয়াতে মাঝিই যে নেই, শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর!"
দয়াল প্রভু আমার, মুক্তির উপায়, বাঁচার উপায় ব'লে দাও।

এর উত্তর পাওয়ার একমাত্র উপায় নাম আর ধ্যান। 

জীবন্ত ঈশ্বর পুরুষোত্তম, পরমপিতা শ্রীশ্রীঠাকুরের দেওয়া বীজ নাম যা সৃষ্টির মরকোচ অর্থাৎ কৌশল, তুক সেই বীজ নাম উষানিশায় সাধনা করলে আর চলাফেরা সবসময় তাঁর দেওয়া সেই বীজ নাম জপ করলে মানুষ তীক্ষ্ণ হয়। শয়নে, স্বপনে, জাগরণে, ভোজনে, স্নানে সবসময়, ঘরে-বাইরে উঠতে, বসতে, ঘুমোতে, চলতে, ফিরতে, সকালে ঘুম থেকে উঠে আবার রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত এবং শুয়ে শুয়ে তাঁর দেওয়া বীজ নাম স্মরণ করতে হয়, ভাবতে হয়, করতে হয়। এই অভ্যাসের ফলে নাম করতে করতে ঘুমের মধ্যে চলতে থাকে সেই নাম। আর এইভাবে ধীরে ধীরে নাম সাগরে অবগাহন করতে হয়। ফলে ঘরে-বাইরে অর্থাৎ পরিবারে, হাটে-মাঠে-বাটে সব জায়গায় কৃত কর্মের ঠিক ভুল সমস্ত কিছু নিজের কাছে নিখুঁত ভাবে ধরা পড়ে। এটা বিজ্ঞান। এই বিজ্ঞান বিজ্ঞানীদের কাছে ধরা পড়ে না, ধরা পড়বে না। 

আর যে কোনও একটা নির্দিষ্ট সময় একান্তে বসে তাঁর মুর্তি ধ্যান করতে হয়, তাঁকে ভাবতে হয়, তাঁর দীর্ঘ জীবনের প্রতিমূহুর্তের দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা, আনন্দময় ঘটনাগুলি ভাবতে হয়, তাঁর বলা কথাগুলি, তাঁর বাণীগুলি যে কোনও একটা ধ'রে নিয়ে ভাবতে হয়। একাকী নিভৃতে চুপ ক'রে ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ ক'রে ভাবতে হয় তিনি আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন। ভাবতে হয় তিনি আমাকে কি করতে বলছেন, তিনি আমাকে কেমন দেখতে চাইছেন।
 
আর, কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছোবার আগে তাঁকে মাথায় নিয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের মুখ স্মরণ ক'রে অনবরত ভাবতে হয় ঘরে-বাইরে অর্থাৎ পরিবারে, হাটে-মাঠে-বাটে সব জায়গায় চলার পথে আমি যেটা দেখলাম, যেটা জানলাম, যেটা শুনলাম, যেটা পড়লাম, যেটা ভাবলাম, যেটা বললাম, যেটা করলাম, সেটা ঠিক না বেঠিক। যদি ঠিক হয় তাহ'লে ঠিকের আরও নিখুঁতে পৌঁছে যাওয়া যায় কিনা, আর যদি বেঠিক হয় তাহ'লে তাকে কি ক'রে, কত তাড়াতাড়ি ঠিক করা যায় এই উভয় দিক ভাবা। এইভাবে অনবরত ধারাবাহিকভাবে ভাবাকে ধ্যান বলে। এই ধ্যানে ধীরে ধীরে ঠিক বেঠিক, সত্যি-মিথ্যা, সত্য-অসত্য সবকিছু চোখের সামনে উদ্ভাসিত হয়, ফলে বিবেক জেগে ওঠে এবং সমস্ত অনুকূল ও প্রতিকূল পরিবেশ-পরিস্থিতি, ঘটনা, কথা, ব্যবহার ইত্যাদি গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়ে। এটা বিজ্ঞান, ফলিত বিজ্ঞান। এই বিজ্ঞান অর্থাৎ বিশেষ ফলিত জ্ঞান তথাকথিত অহংকারী জ্ঞানী-বিজ্ঞানীদের কাছে ধরা পড়ে না। ধরা পড়ে জীবন্ত ইষ্টের প্রতিষ্ঠা ও ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠাকারী অটুট অচ্যুত অস্খলিত ইষ্টপ্রাণ ভক্তের অকপট, সহজ সরল বোকা ভালোবাসাময় প্রাণে।
( লেখা ৩০শে জুলাই' ২০২১) 

Tuesday, July 29, 2025

প্রশ্ন ও উত্তরঃ কোনটা মাথায় রাখবো।

কোনটা মাথায় রাখবো।
প্রথম সূত্রটা মনে রেখো বাকি দু'টো ভুলে যাবার চেষ্টা করো। ভুলে যাবার চেষ্টা করা মানে ওই মানুষগুলোকে ভুলে যাওয়া নয়, মানুষগুলোকে জড়িয়ে ঘটনাগুলোকে বারবার মনে না করা, বরং ওই মানুষগুলো থেকে সাবধান থাকা। তা নাহ'লে সামনে এগিয়ে চলার পথে বাধা হয় দাঁড়াবে ওই ভয়ঙ্কর স্মৃতিগুলো। মনে প্রতিশোধ আসতে পারে যা কিনা সত্যিকারের প্রতিশোধ নেবার ও সফলতা লাভের পথে বাধা হয় দাঁড়াবে। ওই দ্বিতীয় ও শেষ সূত্র অর্থাৎ স্মৃতিগুলি তোমার মূলধন হক সাফল্যের চুড়ায় পৌঁছোবার, ব্যর্থতার পদতলে আশ্রয় পাওয়ার জন্যে নয়। আর প্রথম সূত্রটাকে মাথায় তুলে রেখো ঈশ্বরের মতো মৃত্যুর দিন পর্যন্ত। প্রথম সূত্রটা-ই ভগবানের নীতিনিধি।
( লেখা ৩০শে জুলাই'২০২৩)


উপলব্ধিঃ দ্বিতীয় কোনও পথ নেই।

জীবন্ত ঈশ্বরের স্পর্শে বুকের ভেতরের ঈশ্বরকে জাগিয়ে নিজেকে দুঃখ কষ্ট জ্বালা যন্ত্রণা অকালমৃত্যু ও পতন থেকে রক্ষা করো। এছাড়া দ্বিতীয় কোন পথ নেই। প্রবি।

Monday, July 28, 2025

প্রশ্ন ও উত্তর।

"যার জীবনে যত ভুল তার আনন্দে, সুখে থাকা তত দূরে। কারণ ঠাকুর নেই তার অন্তরে।" প্রবি।

আমার এই পোষ্টের উত্তরে
Pratima Karmakar প্রশ্ন করেছেন: "মানুষের তো ভুল থেকেই শিক্ষা হয়। ভুল আছে বলেই না ঠিকের এতো কদর।"

উত্তর: এসব কথা হয়তো বা ঠিক। কিন্তু আমার কাছে ঠিক বেঠিকের কদর অনাদরের কোনও মূল্য নেই। কারণ ভুল হ'লেই তার ফল ভোগ আমাকেই করতে হবে, দিতে হবে ভুলের ওজন অনুযায়ী খেসারত। তাই এসব কথা ব'লে পাশ কাটিয়ে যাবার ও নিজেকে আড়াল করার কোনও উপায় নেই। ভুল থেকে যতই শিক্ষা নিই না কেন ভুলের যনত্রনা ভোগ তাকেই করতে হবে যে ভুল করবে। এখানে ঠাকুর অসহায়। তাই সাবধান থাকতে হয়। সাবধানে ছেলেমেয়েদের মানুষ করতে হয়। ছোট্টো বেলা থেকে ছেলেমেয়েদের ধ'রে ধ'রে শেখাতে হয় ধৈর্য্য ধ'রে। নিজের জীবনের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ছোটো শিশুদের ভুল সম্পর্কে সচেতন করতে হয়। Pratima Karmakar যা বলেছেন তা সত্য বলেই আমি তা মেনে নিয়ে হাত গুটিয়ে বসে থেকে আমার ছেলেমেয়েদের ভুলের ভুলভুলাইয়ার অন্ধকার গহ্বরে জেনে-বুঝে ফেলে দিতে পারি না। তার পাশে থেকে তাকে শিখিয়ে পড়িয়ে বৃহত্তর সমাজে এগিয়ে দিতে যাতে পারি তার জন্য তার প্রতি তীক্ষ্ণ নজর রেখে তাকে এগিয়ে দিতে হবে যাতে সন্তান ভুল করলে সঙ্গে সঙ্গে তা'কে ধ'রে ফেলতে পারি পতন থেকে। সেই ভুল থেকে সে শিখবে। কিন্তু সেই ভুল তাকে বিরাট বিপদে ফেলবে না। কারণ তার জীবনে মাথার ওপর আদর্শ আছে, আছে মাথার ওপর আদর্শ প্রাণ মা-বাবা।
আমাদের মাথায় রাখতে হবে ঠাকুরের কথা। শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, "তুমি যা করছো বা ক'রে রেখেছো ভগবান তাই-ই গ্রাহ্য করবেন আর, সেগুলির ফলও পাবে ঠিক তেমনি।" ঠাকুর ছড়ার মধ্যে দিয়ে আমাদের আরও সাবধান ক'রে দিয়ে বললেন, "যা ইচ্ছা তাই করবে তুমি তা' করলে রে চলবে না, ভালো ছাড়া মন্দ করলে পরিস্থিতি ছাড়বে না।"

তাই যার জীবনে যত ভুল বেশী তার তত আনন্দে থাকা, সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকা তত কঠিন ও কম। তা সে যতই ঠাকুর ধ'রে লম্ফঝম্ফ করুক না কেন। ঠাকুরের কাজ, ঠাকুরের গান, কীর্তন, বক্তৃতায় পাহাড় ভাঙুক না কেন, একটা ভুলও ভুল, দশটা ভুলও ভুল।
মানুষ নানারকম ভাবে জীবনে শেখে। কেউ পড়ে শেখে, কেউ শুনে শেখে, কেউ দেখে শেখে, কেউ ঠেকে শেখে। যদি কেউ মনে ক'রে ভুল ক'রে, ঠেকে শিখবো তাহ'লে তাকে কিছু বলার নেই। আর যদি কেউ মনে করে, "মহাজ্ঞানী মহাজন যে পথে করে গমন" আমিও সেই পথে গমন করবো, সেই পথে চলবো তাহ'লে তার আর ভয় নেই। কারণ সেই পথ পরিক্ষিত পথ। সেই পথের কোথায় গর্ত আছে, আছে খানাখন্দ, কোথায় বিপদ পথের বাঁকে ওত পেতে বসে আছে তা সেই একমাত্র জানে। কারণ, সেই পথের ওপর দিয়ে মহাজ্ঞানী মহাজনেরা হেঁটে এসেছেন, হোঁচট খেয়ে, বিপদকে চিনে, ভয়ংকর খানাখন্দভরা পরিবেশ পরিস্থিতিকে মোকাবিলা ক'রে পরীক্ষা নিরিক্ষার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন ক'রে তবেই জ্ঞানার্জন করেছেন আর তাই আমাদের করতে বলেছেন। তাই বলে, Knowledge rules the world. Knowledge is the wing wherewith we fly to heaven. জ্ঞান পৃথিবীকে শাসন করে। জ্ঞান একমাত্র ডানা যার সাহায্যে আমরা স্বর্গে উড়ে যেতে পারি।

তাই বলি, শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র হ'লেন সেই জ্ঞান, সেই জ্ঞানের ডানা। সেই ডানায় ভর ক'রে আমি পৃথিবীর ওপর আধিপত্য বিস্তার লাভ করতে পারি, স্বর্গ কি ও কোথায় তা জানতে পারি, লাভ করতে পারি।

শ্রীশ্রীঠাকুর হ'লেন জ্ঞানীর জ্ঞানী মহাজ্ঞানীর গুরু সর্বজ্ঞ, সর্বদর্শী, সর্বব্যাপী জীবন্ত ঈশ্বর। এক ও একমাত্র তাঁকে জীবনে জড়িয়ে নিয়ে তাঁর বলা, তাঁর চলা আমার জীবনে যদি গেঁথে নিয়ে চলি তাহ'লে আমার জীবনে কখনোই কোনোদিনই ভুল হবে না। আর, যখন আমার জীবনে ভুল হবে না তখন আমি নিজে আনন্দে থাকতে পারবো ও যত মানুষের জীবনে আমার জীবন যুক্ত হবে সবাইকে আনন্দে রাখতে পারবো।

আসুন পথ পেয়েছি, আনন্দে থাকি, সবাইকে আনন্দে রাখি। 
( লেখা ২৮শে জুলাই'২০২৪)

কবিতাঃ বনসাই ও শিশু!

বনসাই ক'রে রেখেছো যারে
চার দেওয়ালের বদ্ধ ঘরে
তার বোবা বেদনা কে বুঝিতে পারে!
ড্রয়িংরুমের বাড়াও শোভা
অতি আধুনিকা আর বিরাট শিক্ষিতা তুমি
খেয়ালখুশির জাহাজে চড়ে!
বনসাই ক'রে রেখেছো যারে তুমি
সে যে চায় যেতে ছুটে খোলা আকাশের তলে
মাটির 'পরে চায় মাটিরে করিতে চুমি!
তা কি বুঝিতে পারো তুমি?
সে যে জড়াতে আকাশেরে চায়
শাখে শাখে পাতায় পাতায়
ক্লান্ত শ্রান্ত পথিকেরে চায় দিতে শান্তি
কলকাকলিতে ভরা ডালে ডালে যারা
গুঞ্জনে গুঞ্জনে তোলে তান জাগায় প্রাণ
সুরে সুরে আনে ক্রান্তি সেই তাদেরি দিতে চায়
অসহায় বনসাই তার বুকের 'পরে বসার আসনখানি!

ঠিক তেমনি তোমার ছোট্ট শিশুটিরে
ভুলভুলাইয়ার ঘুলঘুলির ছোট্ট নীড়ে
জানালার ধারে রেখেছো দাঁড় করায়ে
বাহিরের জগত হ'তে দূরে অনেক দূরে
একাকি অনেক খেলনার ভিড়ে!
জানালা দিয়ে দৃষ্টি যায় ছুটে দূরে অনেক দূরে
সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকা ফ্ল্যাট বাড়ি আর
নারিকেল সুপারি গাছের মাথার পরে
নীচে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা আপন মানুষটিরে
হাত দিয়ে ডেকে বলে, ডাদু, ঐ নাকেল গাছ!
দাদু মাথা নেড়ে হাত বাড়িয়ে কাল্পনিক
কোলে তুলে বলে, যাবে নাকি ডাদুভাই
ঐ নাকেল সুপুরি গাছের তলে?
'আচ্চি দাঁড়াও' ব'লে জানালা থেকে যায় নেবে নীচে
অতঃপর কিছু সময় কেটে ভেসে আসে কান্নার স্বর
'ডাদু ডাদু' বোল সাথে অবশেষে চাপা পড়ে যায়
থেমে যায় স্বর বনসাই হ'য়ে অন্ধকার ঘরের কোণে!
( লেখা ২৮শে জুলাই'২০২১)

প্রবন্ধঃ শ্রীশ্রীঅবিনদাদা সম্পর্কে ভিডিওতে কাজুদার সাম্প্রতিক বক্তব্য।।

বিশ্বে কার প্রতিষ্ঠা করবো শ্রীশ্রীঠাকুরের নাকি শ্রীশ্রীঅবিনদাদার?
একটা ভিডিও দেখলাম। সেখানে একজন গুরুভাই (কাজু দা) বক্তব্য রাখছেন। তিনি বলছেন, উনাকে শ্রীশ্রীদাদা কাছে ডেকে বললেন,
"ঠাকুরের থেকে আমার বাবার (শ্রীশ্রীবড়দা) বেশি ক্ষমতা ছিল, আমার বাবার থেকেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমি একটু বেশি ক্ষমতা রাখি, আর বাবাই আমার থেকেও বেশি ক্ষমতা রাখে, আর আমাদের সবার সম্মিলিত যত ক্ষমতা তার থেকেও কিছু বেশি ক্ষমতা অবিন রাখে। ---আর, অবিনকে যদি প্রতিষ্ঠা করতে চাস সারা বিশ্বে তবে অবিনের কাছেই তোকে প্রার্থনা করতে হবে। আর কোথাও প্রার্থনা করলে হবে না।"

এছাড়া আরও কিছু আছে পরবর্তী সময়ে তা আলোচনা করবো।
শ্রীশ্রীদাদা যা বলেছেন ব'লে উনি দাবী করেছেন তার বিশ্বাসযোগ্যতা কোথায়? এই দাবীর স্বপক্ষে উনি রেফারেন্স দেননি কেন? আর, শ্রীশ্রীদাদা শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করতে ব'লেও গেছেন? শ্রীশ্রীঠাকুরকে নয়? এই প্রশ্নের উত্তর একটু দেবেন কাজুদা?
উনি বক্তব্য রাখার মাঝে বলছেন, আমার কথা বিশ্বাস করুন তখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে যায় The greatest phenomenon of the world SriSriTHakur Anukulchandra-এর কথা যেখানে কেউ বিশ্বাস করছে না--------দীক্ষিতদের মনেও অনেক প্রশ্ন আছে। কারণ তারা ঠাকুরকে ও ঠাকুরের জীবন দর্শন স্টাডি করেনি ও করে না।----------সেখানে উনি কে যে উনার কথা মানুষ বিশ্বাস করবে? এই প্রশ্নটা ওঠা কি সৎসঙ্গীদের অপরাধ হবে? নাকি ঠাকুরবাড়ির বিরোধীতা হবে? এই নিয়ে চাপান উতোর ইতিমধ্যেই শুরু হ'য়ে গেছে। এই ভিডিও ভাইরাল হ'য়ে গেছে।
এছাড়া উনার কথা অনুযায়ী শ্রীশ্রীদাদা নাকি বলেছেন, "সারা বিশ্বে অবিনদাদাকে প্রতিষ্ঠা করতে হ'লে অবিনদাদার কাছে প্রার্থনা করতে হবে, অন্য কোথাও প্রার্থনা করলে হবে না।" এই কথা তিনি সগর্বে বললেন। উনাকে আমার বিনীত প্রশ্ন, আপনি এই প্রচার করার জন্য অবিনদাদার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন? এরকম প্রচার করার জন্য অবিনদাদার অনুমতি নিয়েছিলেন বা তাঁকে জানিয়েছিলেন?
আর, কেউ কেউ উনার (কাজুদা) ব্যক্তিগত সাধন পদ্ধতির মাধ্যমে অবিনদাদা সম্পর্কে লব্ধ উপলব্ধির কথা বলছেন। শ্রীশ্রীঅবিনদাদা সম্পর্কে উনি উনার সাধন পদ্ধতির মাধ্যমে লব্ধ উপলব্ধির কথা বলতেই পারেন, সেই স্বাধীনতা তার আছে। তবে সেই বাক স্বাধীনতা শ্রীশ্রীঠাকুরের মিশন প্রতিষ্ঠায় কতটা সাহায্য করছে বা কতটা বাধা সৃষ্টি করছে সে সম্পর্কে সাধারণ দীক্ষিতদের কিংবা সাধন ভজন করেন এমন সৎসঙ্গীদের মনেও প্রশ্ন আসতেই পারে। প্রশ্ন আসতে পারে, আবেগ ভালো কিন্তু বেসামাল ভিত্তিহীন আবেগে ভেসে যাওয়া ও ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া কি ভালো? ভালো নয়, তাই না?। আবেগকে কন্ট্রোলে রাখতে হয়, রাখতে জানতে হয় নাকি লাগামছাড়া ক'রে দিতে হয়?। আবেগকে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বোধে চালনা করতে হয়। এই সব প্রশ্ন আসাটা তাদেরও স্বাধীনতার পর্যায়ে পড়ে। তাদেরও সাধন ভজন দ্বারা লব্ধ উপলব্ধি হ'তে পারে এইসব প্রশ্ন।

আর, ব্যক্তিগত সাধন পদ্ধতিটা কি রকম পদ্ধতি? আমরা যখন ঠাকুরের দীক্ষা নিয়েছিলাম তখন কি আমাদের বলা হয়েছিল যার যার নিজের মতো ক'রে সাধন পদ্ধতি ঠিক ক'রে নিও? নাকি আমাদের একটা সাধন পদ্ধতি ব'লে দেওয়া হয়েছিল? এবার সেই ব'লে দেওয়া সাধন পদ্ধতি কে কতটা মেনে চলেছে, ও মেনে চলছে নিখুঁতভাবে সেটা আলোচ্য বিষয় হ'তে পারে। কিন্তু যার যার নিজের নিজের মত সাধন পদ্ধতি হ'লে তাহ'লে ঠাকুরের কথায় বলতে হয় "খেয়াল মাফিক ভজলি গুরু হ'তে মানুষ হ'লি গরু।" তা আমরা মানুষ হ'তে গিয়ে গরু হচ্ছি নাতো? যাজন করার আগে, মন্তব্য করা বা ভাষণ দেওয়ার আগে ভেবে দেখার কি এখনো সময় আসেনি?
কেউ কেউ বলছেন ঋত্বিক সম্মেলনে উনি এই বক্তব্য তুলে ধরলে সারা বিশ্ব জানতে পারতো। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ঋত্বিক সম্মেলনে তিনি এই বক্তব্য রাখার অধিকার পেলে তো বক্তব্য রাখবেন। তাই নয় কি? উনার বক্তব্যের ভিডিও তো ঠাকুরবাড়ি দেখছে! নিশ্চয়ই পরবর্তী সময়ে উনি সুযোগ পাবেন এই উপলব্ধি তুলে ধরার শ্রীশ্রীআচার্যদেবের কিংবা শ্রীশ্রীঅবিনদাদার উপস্থিতিতে। নিদেনপক্ষে ঠাকুরবাড়ির অন্যান্য দাদাদের উপস্থিতিতে তিনি এই বক্তব্য তুলে ধরার নিশ্চিত সুযোগ পাবেন। শুধু সময়ের অপেক্ষা।
আর যারা এই ভিডিও শেয়ার কেন করেছে, শেয়ার ক'রে একটা ব্যাপার কেন ছড়াচ্ছে ব'লে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন তাদেরকে বলি, কেন? কেউ একজন (কাজু দা) শ্রীশ্রীঅবিনদাদা সম্পর্কে তাঁর উপলব্ধি ব্যক্ত করেছেন আর শ্রীশ্রীদাদা কি কি বলেছেন তা প্রকাশ্যে বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে ভিডিও-র মাধ্যমে রেফারেন্স ছাড়া ছড়িয়ে দিতে পারেন বিশ্বব্যাপী সেটাতে দোষ বা গুণ নেই অথচ সেই ভিডিও এবং কাজুদার বলা শ্রীশ্রীদাদার কথাগুলি (?) ক্যাপশান ক'রে পোষ্ট করেছে তা'তে অসুবিধা কোথায়? যদি কথাগুলি সত্য হয় তাহ'লে প্রচার করতে অসুবিধা কোথায়? কথাগুলি কাজুদা আবেগসর্বস্ব হ'য়ে চড়া গলায় অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বলতে পারবেন আর কেউ ভিডিও ক'রে পোষ্ট করলেই দোষ? তাহ'লে কি এই বক্তব্য সম্পর্কে সৎসঙ্গীদের কোনও সন্দেহ আছে? কাজুদার বক্তব্যকে সমর্থন ক'রে মন্তব্যের বন্যা বইছে আবার ভিডিও শেয়ার ক'রে ছড়াচ্ছে কেন তা'তে ক্ষিপ্ত হচ্ছে, বিরক্ত বোধ করছে এরকম দু'মুখি সাপের অবস্থান কেন? কেন এমন পরস্পর বিরোধী বক্তব্য? আমাদের এত লম্ফ দিয়ে ঝম্প মারার কি আছে? দেখা যাক এই ভিডিও কতদিন থাকে? দোষ থাকলে অটোমেটিক ডিলিট হবে নতুবা বহাল তবিয়তে রমরম ক'রে চলবে। আর তাছাড়া এই ভিডিও তো ঠাকুরবাড়ি দেখছে। তাই নয় কি?

আর, অনেকে এই বক্তব্যে হতাশ হ'য়ে পড়েছেন, ভেঙে পড়েছেন, বিশ্বাস হারাচ্ছেন ঠাকুরের প্রতি, আচার্যদেবের প্রতি, অবিনদাদার প্রতি, আর যত দোষ নন্দ ঘোষের মতো সব দোষ আর উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ের মতো সব দায় চাপিয়ে দিচ্ছেন বুঝে, না-বুঝে, রেগে ও বিরক্তিতে শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীদাদা, শ্রীশ্রীআচার্যদেব ও শ্রীশ্রীঅবিনদাদার উপর। কেন?

কারও বক্তব্যে হতাশ হবো বা হবেন কেন? ভেঙে পড়বো বা পড়বেন কেন? বিশ্বাস হারাবো বা হারাবেন কেন? এই ধরণের আবেগসর্বস্ব রাজনৈতিক ময়দানের হাততালিতে ও হৈচৈ-এ ভরপুর জনসভার বক্তৃতার মতো বক্তৃতা ও হৈ হৈ আর হাততালি শুনে অবিশ্বাসী হ'য়ে উঠবো বা উঠবেন কেন? রেগে গিয়ে কন্ট্রোল হারাবো বা হারাবেন কেন?

এরকম শ্রীশ্রীবড়দাকেও ঠাকুর বানাবার চেষ্টা হয়েছিল এবং সেই চেষ্টার পরিণতি স্বরূপ সেই ভক্তর কি হয়েছিল সেটাও মোটামুটি যারা খবর রাখে তারা জানে। আর সেই চেষ্টাও ভক্তির নামে আবেগসর্বস্ব ভক্তি ছিল নাকি ভক্তির নামে চক্রান্ত ছিল কিনা এবং কাজুদার এই ভক্তিও আবেগসর্বস্ব বেসামাল ভক্তি নাকি ভক্তির আড়ালে কোনও চক্রান্ত কিনা সেটাও সময় বুঝিয়ে দিয়েছিল ও বর্তমানেও তাই দেবে। কোনও দুশ্চিন্তার কারণ নেই।

আপনি, আমি বা আপনারা, আমরা শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীদাদা ও শ্রীশ্রীবাবাইদাদার সঙ্গ করা লোক তাহ'লে আপনি, আমি বা আপনারা, আমরা বিশ্বাস হারাবো বা হারাবেন কেন? কেন সন্দেহ করবো বা করবেন?
আমরা যেন ভুলে না যাই আমাদের মাঝে শ্রীশ্রীআচার্যদেব আছেন, আছে আচার্য পরম্পরা। স্বয়ং আচার্যদেব শ্রীশ্রীবাবাইদাদা আছেন আমাদের সামনে পথপ্রদর্শক রূপে। ভয় কি? আচার্যদেবের প্রতি আছে আমাদের গভীর বিশ্বাস, নিষ্ঠা ও নির্ভরতা।

তাই সবাই একটু ধৈর্য ধ'রে অপেক্ষা করি ও করুন এই ভিডিওর কি প্রতিক্রিয়া হয় তা ধৈর্য সহকারে দেখবার জন্য।
( লেখা ২৮শে জুলাই'২০২৩)

Saturday, July 26, 2025

প্রবন্ধঃ আমার ইষ্টপ্রাণ সৎসঙ্গীরা।

সাত্বত কথার পোষ্টের বিষয়বস্তু পড়লাম। আপনারাও পড়ুন। নীচে তুলে দিলাম।

এরকম কয়েকটা বিরাশী সিক্কার সপাটে থাপ্পড় আবার দরকার তাদের জন্য যারা শ্রীশ্রীবড়দাকে ও বড়দার পরিবারকে অশ্রদ্ধা, অপমান, লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, সমালোচনা করেছে ও ক'রে চলেছে উত্তরাধিকার সূত্রে সেই শ্রীশ্রীঠাকুর দেহ রাখার পর থেকে অদ্যাবধি। কিন্তু মারবে কে? সেই শিক্ষা তো শ্রীশ্রীঠাকুর, শ্রীশ্রীবড়দা ও শ্রীশ্রীদাদা দিয়ে যাননি ও বর্তমান আচার্যদেবও তা কখনো দেননি, দেননা। তাই বিরাশী সিক্কার থাপ্পড়ের ভার পরম দয়ালের হাতেই থাকুক। শুধু দুঃখ হয় যাদের জন্য শ্রীশ্রীবড়দা এত কষ্ট, যন্ত্রণা পেয়েছিলেন তারা সবাই সেদিন সৎসঙ্গী(?) ছিল ও বর্তমানে আছে!!!!! যদি এত কষ্ট, যন্ত্রণা না পেতেন তাহ'লে তিনি আরো বহুদিন আমাদের মাঝে থাকতেন। শ্রীশ্রীরাঙা মা একবার আমাকে বলেছিলেন, "তোদের বড়দা আরও অনেকদিন থাকতো যদি এত নিদারুণ কষ্ট, যন্ত্রণা না পেতেন।" সেই কষ্ট, যন্ত্রণার ট্রাডিশান এখনো সমানে চলেছে ব'য়ে চলেছে অপমানকারীদের উত্তরসূরীদের দ্বারা বংশপরম্পরায় শ্রীশ্রীবড়দার পরিবারের প্রতি।

আর, এই পোষ্টের এখন আর কোনও মূল্য নেই। মূল কেন্দ্রের কোটি কোটি সৎসঙ্গী শ্রীশ্রীবড়দাকে তাদের আদরের বড়ভাই ও শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রধান ও পরম ভক্ত ব'লেই জানে। সেই শিক্ষা সৎসঙ্গীরা পেয়ে গেছে। এছাড়া শ্রীশ্রীঠাকুর ছাড়া ঠাকুর যে আর কেউ নয় এটা অতি মূর্খও এখন জানে; প্রচারকারী ষড়যন্ত্রীরা এখন আর সফল হয় না তাদের উদ্দেশ্যমূলক নোংরা বিষাক্ত প্রচারে।
আর সেদিন ঐ ভক্তকে থাপ্পড় মারার পিছনেও কারণ ছিল। শ্রীশ্রীবড়দার বারবার বারণ করা ও বিরক্ত হওয়া সত্ত্বেও যখন সে বারণ শোনেনি উপরন্ত লক্ষ লক্ষ সৎসঙ্গীদের মাঝে ঐ ফেস্টুন লাগিয়ে এনেছিলেন তা কি প্রমাণ করে? প্রমাণ করে না কি তার পিছনে ভালোবাসার নামে ছিল ঐ গুরুভাইয়ের বদ উদ্দেশ্য ও চক্রান্ত? সে ইচ্ছে করেই পরিকল্পনামাফিক সর্বসমক্ষে শ্রীশ্রীবড়দাকে হেয় করার জন্য, ছোটো করার জন্য, অপদস্ত, অপমান, বদনাম করার জন্যেই ঐ ভালোবাসার নাটক রচনা করার চক্রান্ত করেছিল যে নাটক শ্রীশ্রীঠাকুরের পরম ও প্রধান ভক্ত দূরদৃষ্টির অধিকারী অন্তর্যামী শ্রীশ্রীবড়দার সতর্ক চোখ এড়ায়নি। তিনি ধ'রে ফেলেছিলেন সেই ভক্তের নোংরা বিষাক্ত চক্রান্ত।

আর, আজও সেই শ্রীশ্রীবড়দাকে ভালোবাসার নামে একই নাটকের ট্রাডিশান ব'য়ে চলেছে। মূল কেন্দ্রের বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ইষ্টপ্রাণ সৎসঙ্গীদের এখন আর কাউকে শেখাতে হয় না, 'ঠাকুর কেউ হ'তে পারে না আর শ্রীশ্রীবড়দা কে?' শেখাবার জন্য আমাদের শ্রীশ্রীআচার্যদেব আছেন, আছে আচার্য প্রথা ও আচার্য পরম্পরা। আর কাউকে দরকার নেই। 'সাত্বত কথা'-র এই পোষ্টের নোতুন ক'রে কোনও প্রয়োজন নেই।

কি বলেন সৎসঙ্গীরা?
( লেখা ২৬শে জুলাই;' ২০২৩)
_______________________________________________________

ফেসবুকে 'সাত্বত কথা' পেজে প্রকাশিত। 
তারিখঃ ২৬শে জুলাই' ২০২৩
ঠাকুর কেউ হতে পারে না।
 ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄
নাটমণ্ডপে বসে বিভিন্ন মানুষের সাথে তাঁর কথোপকথন, উপদেশ -নির্দেশগুলো শুনতাম। এগুলো থেকে পরবর্তীকালে বুঝতে পেরেছি তাঁর দূরদর্শিতা ছিল কত গভীর, প্রতিভা কত বহুমুখী।...তাঁর প্রবল ক্রোধের প্রকটও নিজের চোখে দেখেছি অনেকবার। একবারের ঘটনা, এক বহু চর্চিত গুরুভাই ফিল্ডে নানা ভাবে শ্রীশ্রীবড়দার মাহাত্ম্য প্রচার করা শুরু করেন। তাতে তিনি বেশ বিরক্ত ছিলেন, তাকে ডেকে কয়েকবার বারণও করেছিলেন। সেই গুরুভাই বারণ তো শোনেনই নি, উল্টে একবার উৎসবে আগত গুরুভাইদের জন্য যে বাস নিয়ে এসেছিলেন, সেই বাসে টাঙানো কাপড়ের ফেস্টুনে একজায়গায় লিখিয়েছিলেন ‘শ্রীশ্রীঠাকুর অমরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী'। খবরটা বড়দার কানে গেল। কি প্রচণ্ড রেগে গেছিলেন সেটা একটু পরেই বুঝতে পারলাম। নাটমণ্ডপ থেকে উঠে বাড়ি যাওয়ার সময় জেনারেটর ঘরের সামনে রাস্তায় সেই গুরুভাই সামনাসামনি হতেই সপাটে কয়েকটা থাপ্পড়। রাগে হাঁফাতে হাঁফাতে বলেছিলেন— "আমার ওপর খুব ভক্তি দেখাচ্ছিস, ঠাকুর কেউ হতে পারে না, ঠাকুর একজনই, এটাই যদি না বুঝলি তবে তুই কিসের সৎসঙ্গী?"

শ্রীগুরুদেবন মিত্র
আলোচনা পত্রিকা, আষাঢ় ১৪২৯

প্রবন্ধঃ ধার্মিক ও মানুষ।

ধার্মিক ধার্মিকই হয় আর মানুষ মানুষই হয়। আমরা সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ধার্মিক ও মানুষ শব্দের আগে প্রকৃত ও তথাকথিত শব্দ যোগ করিয়া থাকি। এই যোগ করিবার কারণ তার বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ আচরণের আকাশ পাতাল তফাৎ। তাই আমরা যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃত ধার্মিক, তথাকথিত ধার্মিক এবং প্রকৃত মানুষ, তথাকথিত মানুষ বলিয়া থাকি। যেমন ঘিয়ের শিশির গায়ে লেখা থাকে খাঁটি ঘি। ঘিয়ের আগে খাঁটি শব্দ লিখে ঘিয়ের জাত চেনাইতে হয়। কিন্তু ঘি ঘি-ই হয়। ঘি তার আভিজাত্য, মর্যাদা, কৌলীন্য হারাইয়া এই দু'নম্বরী চোরুয়া দেশে আজ 'খাঁটি' শব্দের দ্বারস্থ হইয়া তার ইজ্জত রক্ষার্থে ব্যতিব্যস্ত। কিন্তু শত চেষ্টাতেও ঘি তার আভিজাত্য, বংশ মর্যাদা, বংশ কৌলীন্য, তার মহামূল্যবান কুমারিত্ব রক্ষা করিতে পারে নাই। আর এই সমস্ত কিছু হারাইয়াছে সে মানুষের দ্বারা ধর্ষিত হ'ইয়া। এবার প্রশ্ন উঠিবে কোন মানুষ? যখন মানুষের হাতে কেউ লাঞ্ছিত, অপমানিত ও ধর্ষিত হয় তখন সে কি আর মানুষ নামে অভিহিত হয়? তখন সেই মানুষের আগে অমানুষ, নীচ মানুষ ইত্যাদি নানা বিশেষণ যোগ হয়। তথাকথিত মানুষ নামে তখন সে খ্যাত হয়। ঠিক তেমনি ধার্মিক যখন তার আচার আচরণে, কথাবার্তায়, তার চরিত্রে অধর্মীয় কার্যকলাপ ফুটাইয়া তোলে তখন তাকে অধার্মিক, ভন্ড ইত্যাদি নানা সম্বোধনে আমরা সম্বোধিত করি।
তাই আমরা ধার্মিকের আগে ও মানুষের আগে প্রকৃত শব্দ যোগ করিয়া আলাদা পরিচিতি তৈরী করিয়াছি। মানুষের সঙ্গে ধার্মিক শব্দ যোগ করিয়া ধার্মিক মানুষ নামে একশ্রেণীর নোতুন জাতের মানুষ তৈরী করিয়াছি। কিন্তু আমাদের মাথায় রাখিতে হইবে প্রকৃত ধার্মিক মাত্রই প্রকৃত মানুষ আর যে প্রকৃত মানুষ অর্থাৎ মানুষ অর্থে মানুষ সে প্রকৃত ধার্মিক অর্থাৎ ধার্মিক অর্থে ধার্মিক। প্রকৃত ধার্মিক আর প্রকৃত মানুষের মধ্যে প্রকৃতপক্ষে কোনও বিরোধ নাই। অহেতুক আমরা প্রকৃত বা তথাকথিত শব্দ যোগ করিয়াছি ধার্মিক বা মানুষের পিছনে ঐ ঘিয়ের পিছনে খাঁটি শব্দের তকমার মতো।

মানুষ মানে মান আর হুঁশ নিয়ে মানুষ। সৎসঙ্গের বর্তমান শ্রীশ্রীআচার্যদেব বাবাইদাদা আমাদের শ্রীশ্রীঠাকুরের দৃষ্টিতে আমাদের সামনে নোতুন অর্থ শেখাইলেন মানুষ অর্থের। মান মানে তিনি বলিলেন, অস্তিত্ব আর হুঁশ মানে হুঁশ অর্থাৎ চৈতন্য, চেতনা, জ্ঞান, সতর্কতা।

তাহ'লে মানুষ মানে হ'লো অস্তিত্ব সম্পর্কে, অস্তিত্বের রক্ষা ও শ্রীবৃদ্ধি সম্পর্কে জ্ঞান ও সতর্ক থাকা। ঠিক তেমনি ধর্ম মানে ধ'রে রাখা। এই জগতের যা কিছুর অস্তিত্ব আছে সেই সমস্ত অস্তিত্বকে যা যা ধরিয়া রাখে ও শ্রীবৃদ্ধির দিকে লইয়া যায় তাই-ই ধর্ম। আর এই অস্তিত্বকে রক্ষা করা ও শ্রীবৃদ্ধির দিকে লইয়া যাওয়ার জ্ঞান বা ক্ষমতা যাহার মধ্যে আছে সেই ধার্মিক বা মানুষ।

তাই ধার্মিক ও প্রকৃত ধার্মিক এবং মানুষ ও প্রকৃত মানুষের মধ্যে কোনও বিরোধ নাই। ঠিক তেমনি প্রকৃত ধার্মিক ও প্রকৃত মানুষের মধ্যেও কোনও বিরোধ বা ফারাক নাই। সবটাই আচার আচরণ, কথাবার্তা, চিন্তাভাবনার উপর নির্ভরশীল।

তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বারবার কাতর কন্ঠে বলিতেন, "আমায় তোমরা কেউ মানুষ ভিক্ষা দিতে পার?"
( লেখা ২৬শে জুলাই'২০২৩)

গানঃ প্রেমময় কারে কয়।

বন্ধু, কামনা কাহারে বলে? বন্ধু, বাসনা কাহারে বলে?
তোমরা যে বলো দিবস রজনী 'প্রেমময়, প্রেমময়'--
বন্ধু, প্রেমময় কারে কয়? সে কি কেবলই ছলনাময়?
সে কি কেবলই কথার ঢল? সে কি কেবলই কথার চাষ?
লোকে তবে করে কি সুখেরই তরে এমন কথার চাষ?।

আমার চোখে তো সকলই দয়াল শান্ত স্নিগ্ধ নরম সকাল,
সুমিষ্ট সুবাস মধুময় বাতাস আলোময় রুপময় রসময় বিকাল
সকলই দয়াময় দয়াল মত।
দয়া আকাশের গায় বাতাসে বায় শাখে শাখে হাসে পাতায় পাতায়
নাইরে দুঃখ নাইরে কষ্ট নাইরে জ্বালা যন্ত্রণা ক্ষত।

হাসিতে মুক্তো রাশি রাশি ঝরে নয়নে আলোক ঝর্ণা বায়
বাঁচিতে বাড়িতে পরতে পরতে দয়ালের ছোঁয়া লাগে যে গায়।
আমার মত নসিবি কে আছে আয় ছুটে আয় দয়ালের কাছে
আমার মত নসিবি কে আছে আয় ছুটে আয় আমার কাছে
আমার হৃদয়ে দয়ালের গান দয়ালের সুর দয়ালের তান।
প্রতিদিন যদি জিতিবি কেবল একদিন নয় হারিবি তোরা
একদিন নয় মিলিয়া মিশিয়া দয়ালের গান গাহিবো মোরা।

গানঃ চল সখি দেওঘর যাবো।

 প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে ৪
চল সখি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে২
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
প্রাণমন ভরিয়া। ২


প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে ৪
প্রাণ বলে রাম রাম
মন বলে পলায় যাম
বিবেক বলে, দিব প্রাণারাম!
ও রাধেশ্যাম আঁখি দিয়া কাঁদাইলি আরাম!
চল সখি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
প্রাণমন ভরিয়া।২


প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে।২
বাঁচাবাড়া যেমন তেমন
নেপোয় মারা কাম গো
হায় রাধেশ্যাম! দয়া করি বাঁচাইলি পরাণ।
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে ৪
চল সখি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
মনপ্রাণ ভরিয়া।২


প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে।২
দয়াল আমার বাঁচার আশ
বেড়ে ওঠার তাল গো
পরম বাপে মাঙ্গে যদি
সঁপে দিব প্রাণ গো।২
চল সখি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
প্রাণমন ভরিয়া।২


প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে।২
হাওয়া বয় ঝির ঝির
পরাণ কাঁপে তির তির
দয়াল মুখে মিষ্টি হাসির ঝিলিক!
হায় দয়াল বাপরে
হাসি দিয়া জড়াইলি আমায়
আমার দয়াল বাপরে!


চল সখি দেওঘর যাবো
ঘরে বড় দুঃখ রে
দেওঘর গেলে শ্বাস নিবি
প্রাণমন ভরিয়া।২
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে
প্রভুরে প্রভুরে প্রভু রে।২

( লেখা ২৬শে জুলাই'২০২১)

গানঃ আলোকঝর্ণা।

আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
প্রভুর স্পর্শে কত আনন্দরস বহিয়া যায় ডুবন্ত জীবনে।
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
মিউজিক
পান করে আমার আমি প্রাণ (পরাণ) ভরিয়া
সদা সুপ্ত রহে যৌবন গতি
নিত্য প্রেম বহে জীবনে যৌবনে।
আনন্দধারা বহিছে জীবনে
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে।
মিউজিক
বসিয়া আছি আমি প্রভু তোমারি ধ্যানে
আত্মনিমগন তোমারি কারণে
চারিদিকে বাজে শুনি তোমারি বাঁশরী
আমার আমি তাতে ডুবে মরি
জীবন ভরিয়া লই অমৃত সুরা পানে
আনন্দধারা বহিছে জীবনে।
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে।
মিউজিক
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
মিউজিক
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে
প্রভুর স্পর্শে কত আনন্দরস বহিয়া যায় ডুবন্ত জীবনে।
আলোকঝর্ণা ঝরিছে জীবনে।

(আনন্দধারা বহিছে ভুবনে' গানের সুরে)
( লেখা ২১শে জুলাই' ২০২১)

বিচিত্রা ১৭২

বর্তমান সময়ঃ

কখনো সত্য ব'লো না,
সর্বদা মিথ্যা ব'লো আর
সংহার এনো প্রতিপদে।

হাসো, কিন্তু বিদ্রুপে;
কাঁদো কিন্তু আসক্তিতে, 
ভালোবাসায় বা প্রেমে নয়।

অনুতাপ ক'রো না,
করতে যেও না।
অনুতাপ করা বা অনুতপ্ত হওয়া 
ওসব বোকা ও দুর্বল লোকের কাজ।

যা করছো বা ক'রে রেখেছো
বেশ করেছো, করবেই তো।
তুমি স্বাধীন, স্বাধীনতা তোমার অধিকার।

মহাত্মাদের নিয়ে খিল্লি করা
সর্বশ্রেষ্ঠ মহান শিল্প!
প্রতিষ্ঠিতরাই সেই মহান শিল্পের পথপ্রদর্শক।
সম্মান জানানোর নেই এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ বিকল্প।
করো অনুসরণ বুকে নিয়ে দৃঢ় বিকল্প।

সংযত হইয়ো না,
আর সাহসী নয় দুঃসাহসী হও।

দুর্বিনীত হও আর বিনয়কে কখনো প্রশ্রয় দিও না; 
সবল হৃদয়ে প্রত্যাখ্যান ক'রো।

নিষ্ঠার ধার ধেরো না,
কিন্তু গোঁড়া হ'য়ে গোঁড়ামি ক'রো।
কারণ নিষ্ঠা বিষ্ঠা।

সাধু হ'তে যেও না, না খেয়ে মরবে; 
সাজা সাধু হও আর মানুষকে ঠকাও; 
ফুলে ফেঁপে উঠবে, সিদ্ধকাম হবে।

ইশ্বরের পূজা করো,
সাথে ভন্ডামীর অস্ত্র ধরো
আর কপটতা তোমার অলঙ্কার হ'ক;
সফলতা তোমার পদচুম্বন করবে।

অযোগ্য, অদক্ষ ও অশিক্ষিতকে করো
ভারতীয় কৃষ্টির ধারক ও বাহক।
তুলে দাও হাতে বিচারের মানদন্ড।
করো তারে ঈশ্বরের বার্তা প্রচারের প্রতিভু।

সময় অনুযায়ী চলো, সময় অনুযায়ী করো, বলো
কলি যুগে এ টিকে থাকার শ্রেষ্ঠ বিধান
পরিশেষে যাই-ই হ'ক, এখন তো বাঁচো;
ভেবে চলো।
( লেখা ২৬শে জুলাই'২০১৮)

বিবেক শর্মা পরিচালিত সিনেমা 'ভুতনাথ' দেখেছিলাম। 
সেদিন গল্পের মূল বিষয় চোখে জল এনেছিল, লুকিয়ে কেঁদেছিলাম।
আজ একাত্মা হ'লাম।
( লেখা ২৬শে জুলাই'২০২১)
















Friday, July 25, 2025

প্রবন্ধঃ বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের আড়ালে ছিল ভারত বিরোধীতা।

আজ বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন ভারত বিরোধী আন্দোলনে ঘুরে গেল। আর ঘুরে গেল স্বাভাবিক ভাবেই ছাত্র আন্দোলনের আড়ালে থাকা ভারত বিরোধীদের হাত ধরেই। একটা শ্লোগান "ভারত যাদের মামাবাড়ি বাংলা ছাড়ো তাড়াতাড়ি" বুঝিয়ে দিল ছাত্র আন্দোলনের আড়ালে কি ছিল।
একজন ভারতীয় ও সৎসঙ্গী হিসেবে বিষয়টাকে বোঝার চেষ্টা করলাম ও নিজের ভাবনা তুলে ধরলাম।
বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয় মুক্তিযুদ্ধের পরিবারের সদস্যদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ বাতিলের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন আজ ভারত বিরোধী আন্দোলনে রূপ নিল অবশেষে প্রত্যাশা অনুযায়ী এবং সেই ভারত বিরোধী আন্দোলনের ঢেউ এসে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে। ভাবতে অবাক লাগে আমরা কতটা নপুংসক হ'লে আজ অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে আন্দোলন ঘুরে যায় আমার দেশের বিরুদ্ধে এবং আমারই দেশের মাটিতে তা সমর্থন করে ফণা তুলে যারা তারা কি ভারতীয়? প্রশ্ন জাগে মনে?।

বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার, ছাত্রদের নিজস্ব দাবীদাওয়ার ব্যাপার, সরকারের ব্যাপার। আমার দেশের মাটিতে আমার দেশের বিরোধীতার সঙ্গে সেই আন্দোলনের সম্পর্ক কি? কেন আমরা তাদের ব্যাপারে নাক গলাবো? কেন আমাদের দেশে তার বীজ বপন হ'তে দেবো? যদি সেই আন্দোলন ও আন্দোলনের বিরোধীতা অমানবিক হয়, আমার দেশের পক্ষে ক্ষতিকর হ'য়ে ওঠে তখন ভারত মানবতা বা মানবিকতা রক্ষা ও প্রতিষ্ঠার স্বার্থে, তার নিজের স্বার্থে, আত্ম্রক্ষার স্বার্থে হস্তক্ষেপ করতে পারে, কিন্তু তার আগে নয়।

অবাক লাগে আমার দেশের বিরুদ্ধে আমারই দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে আমার দেশকেই বলাৎকার করে কারা?! আজ আমরা কোথায় কোন সর্বনাশের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছি তা সম্ভবত ভারতের মানুষ ও পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ জানে না। জানলে এমন হ'তো না। ভারতের বুকে দাঁড়িয়ে ভারত বিরোধীতার বিরুদ্ধে ভারতীয় নাগরিকদের অন্তত প্রতিবাদ হ'তো। অন্তত ফেসবুক জুড়ে নেটিজেনরা প্রতিবাদ করতো স্বাভাবিকভাবেই 'আমি ভারতীয়' এই বোধ থেকে। এর থেকে বোঝা যায় যখনি কোনও আন্দোলন সংঘটিত হয়, তা স্বতস্ফুর্ত পবিত্র আন্দোলন নয়, তা পরিকল্পিত আন্দোলন। তার রাশ ছাত্র যুবদের হাতে থাকে না। ১৮ বছর বয়সের ছাত্রছাত্রী, যুবকযুবতীরা অদৃশ্য হাতের খেলার পুতুল মাত্র।

তাই ভাবি,
আজ যখন বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ ক'রে দরদে বুকের বরফ গলে ঝর্ণা হ'য়ে ঝ'রে পড়ছে আন্দোলন কারী ছাত্রদের মাথার ওপর আশীর্বাদ হিসেবে মানবতা রক্ষার প্রশ্নে শক্তিমান দেশ আমেরিকার, তখন প্রশ্ন জাগে মনে, সেইদিন ৭১ সালের বাংলাদেশের বুকে বিশ্বের ইতিহাসে নৃশংসতম ঘটনার সময় কি ভূমিকা ছিল আমেরিকার? আমেরিকা ভুলে গেছে সেদিনের তার অমানবিক মুখ? আজ আবার মানবিক মুখ বেড়িয়ে এসেছে? যেদিন চীনের তিয়েনয়ানমেনের ছাত্র আন্দোলনের ওপর নৃশংস ঘটনা ঘটেছিল সেদিন কারও মানবিক মুখ কেন দেখা যায়নি? সেদিন কি আন্দোলন সঠিক ছিল? আজকের বাংলাদেশের আন্দোলন কি সঠিক ছিল? এসব প্রশ্ন কি ছাত্রদের মনে আসবে না? মানবিক মুখ স্থান, কাল, সময়, ক্ষেত্র বিশেষে পাল্টে যায় নাকি?

এমন কেন হয়? সবসময় কেন মানবিক মুখ থাকে না রাষ্ট্র নায়কদের?
সেদিন ৭১ সালের পাকিস্তানী মিলিটারি বাহিনীর বাংলাদেশের নারীদের ওপর নৃশংস মর্মান্তিক নারকীয় অত্যাচার আর লক্ষ লক্ষ নির্বিচারে নারীপুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধবৃদ্ধা হত্যার বিরুদ্ধে ভারতের উদার সহযোগিতার আজ আর কোনও মূল্য নেই বাংলাদেশের জনগণের একাংশের কাছে। কেন? কেন তাদের মনে এমন ভাবের সৃষ্টি হ'লো? আজকের ইয়ং জেনারেশনের মনে ভারত বিদ্বেষের বিষ বপন করলো কে? কারা? দূরের তথাকথিত বন্ধুদের হাত ধ'রে পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে শত্রুতা ক'রে কি নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা যায়? দূরের বন্ধুরা তো নিরাপদ দূরত্বে বসে সহজ সরল ছাত্রদের আগুনের মুখে ঠেলে দিচ্ছে, দিচ্ছে ফেলে মৃত্যু মুখে ১৮-২০ বছর বয়স কি কোনওদিন তা বুঝতে চাইবে না? ১৮-২০ বছর বয়স ব'লে বুঝবে না? 'আমার গাঁয়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা'মানসিকতায় 'এ বয়সের ধর্ম' ব'লেএড়িয়ে যাবে, পাশ কাটিয়ে যাবে বীর, মহাবীর, শহীদ, শহীদের রক্ত, হবে না কোনোদিন ব্যর্থ, তোমায় ভুলছি না, ভুলবো না ইত্যাদি মিথ্যে বাহবা দিয়ে, স্তোকবাক্য শুনিয়ে আবু সাঈদের নামের আগে বিশেষণ যোগ ক'রে? আবু সাঈদ কি আর কোনওদিন ফিরে আসবে? আবু সাঈদের মৃত্যু কি কাম্য ছিল? আবু সাঈদের মৃত্যু কি কেউ মনে রাখবে? ৭১-এর লক্ষ লক্ষ ছাত্রীদের ওপর, মা-বোনেদের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও রাজাকারদের নারকীয় যৌন অত্যাচার ও মানুষের ওপর নির্মম ভয়াবহ মৃত্যু যখন আজকের ছাত্রছাত্রী, যুবকযুবতী মনে রাখেনি তখন আবু সাঈদকে কে মনে রাখবে? ধীরে ধীরে সময় ব'য়ে যাবে বাংলাদেশের বুকে আর সবাই সব ভুলে যাবে, শুধু আবু সাঈদের ঘরে, আবু সাঈদের নির্জন ঘরে একাকী মায়ের ফাঁকা হাহাকার ভরা শূন্য বুকে করুণ আর্তনাদ শোনা যাবে, 'শূন্য এ বুকে মোর পাখি ফিরে আয়, ফিরে আয়' হৃদয়বিদারক কান্না। আর, সেই করুণ চাপা যন্ত্রণার কান্না বুক চিরে, ঘরের দেওয়াল ভেদ ক'রে গিয়ে কানে পৌঁছোবে না আন্দোলন শেষে আন্দোলনকারীদের কানে।

এটাও সত্য আন্দোলনকারীদের একাংশ আবু সাঈদকে মৃত্যুর আগে চিনতো কিনা এ প্রশ্ন থেকেই যায়।

এই যে ৭১-এর পর থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশে ভারতের বিরুদ্ধে বিরোধীরা সোচ্চার যা আজ ৫৩ বছরে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বাংলাদেশে্র বুকে এটাকেই বলে বেইমানী, নেমক হারামী, অকৃতজ্ঞতা। এই বেইমানী, নেমক হারামী, অকৃতজ্ঞ চরিত্র রক্তে থাকে। এ রক্তের দোষ। আর, এটাই রক্তের দোষের স্বাভাবিক পরিচয়। এর মধ্যে বহু ছাত্রছাত্রী আছে যারা বেইমানদের দ্বারা বিপথে চালিত, এদের কথায় বিভ্রান্ত, চিন্তাভাবনায় বিপর্যস্ত, বিধ্বস্ত। বিশ্বজুড়ে ছাত্র সমাজকে আজ নিজের স্বাধীন আইডেন্টিটি গড়ে তুলতে হবে। কোনও রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় যে ছাত্র আন্দোলন তা'তে নিজের আইডেন্টিটি থাকে না। ছাত্রদের আজ বুঝতে হবে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য। জ্ঞান অর্জনের রাস্তা ছেড়ে উত্তেজিত মস্তিষ্ক ও বৃথা আড়ম্বরযুক্ত কল্পনায় ভরা নানা অর্থহীন, ভিত্তিহীন, দিশাহীন, লক্ষ্যহীন আন্দোলনের নামে কলুর বলদের মত অজ্ঞানতার ঘানি টেনে যেতে হবে সারাজীবন, ঘানি টেনে যেতে হবে রাজনৈতিক দলের ও নেতাদের ছত্রছায়ায় তাদের উদ্দেশ্য পূরণের বোড়ে হ'য়ে।

এখন মনে পড়ে সেই সত্তর দশকের কথা। সেদিন আমিও ছিলাম ১৬ বছরের ছাত্র। সব চোখের সামনে ভেসে ওঠে ছবির মত। বাংলাদেশের ঘরে ঘরে, কলেজ হোস্টেলে রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তান মিলিটারির হাতে হাজার হাজার ছোটবড় ছাত্রী ও মাবোনেদের ওপর প্রতিদিনের নির্মম বলাৎকারের খবর, সেনা ক্যাম্পে হাজার হাজার নারীদের উলঙ্গ ক'রে রাখা আর নির্মম নিষ্ঠুর পশুর মত একে একে একের পর এক বলাৎকারের পর নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করার ছবি, হাজার হাজার সাধারণ নাগরিক থেকে বুদ্ধিজীবী নির্বিশেষে নৃশংস হত্যা ভেসে ওঠে চোখের সামনে। আর ভেসে ওঠে সেই সময়ের পূর্ব পাকিস্তান বর্তমানে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে উত্তাল ভারত, উত্তাল ভারতের পার্লামেন্ট ও সমস্ত রাজ্যের বিধানসভা, ভেসে ওঠে উত্তাল সমস্ত রাজনৈতিক দল, ভারতের জনগণের ছবি। সেদিন ভারতের প্রধান মনত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক ভয়ঙ্কর চাপ উপেক্ষা ক'রে, আমেরিকার চোখ রাঙানিকে পদদলিত ক'রে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে বুক দিয়ে আগলে রেখেছিলেন বাংলাদেশকে পাকিস্তানের বর্বর জংলী দরিনদা সেনাবাহিনী ও রাজাকারদের হাত থেকে। সেদিন পাকিস্তানের সেনাবাহিনী যখন আত্মসমর্পণ করেছিল সেই বন্দী সেনাবাহিনীর ওপরও মানবতাকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন প্রধানমনত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও সেনাপ্রধান জেনারেল মানেকশ।

এখন ভাবি, আজকের আধুনিক ছাত্রছাত্রীরা কি সেই দিনের ইতিহাস জানে না? সেই দিনগুলিতে পাকিস্তানি সেনা ক্যামপগুলিতে সেনারা আর রাজাকারেরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নারী মাংস ভোগের সময় কি মুসলিম আর হিন্দু নারী ভেদ করেছিল? সেদিন ঐ পাকিস্তানি মুসলিম দরিনদা সেনাবাহিনী ও রাজাকারদের হাত থেকে কে রক্ষা করেছিল মুসলিম নারীদের? কে রক্ষা করেছিল বাংলাদেশের অসহায় জনগণকে? বিশ্বের কোন দেশ সেদিন পাশে দাঁড়িয়েছিল? কি বলবে আন্দোলনরত আজকের ছাত্রছাত্রীরা? ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে গেছে সেই কলঙ্কিত ইতিহাস? এর পরেও বলবে ছাত্র আন্দোলন জিন্দাবাদ?
আজ আরও ভাবি যদি সেদিন,
১) ইন্ডিয়া 'অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয় অতএব আমরা নাক গলাবো না ব'লে' মানবতার গলা টিপে ধ'রে চুপ ক'রে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের নৃশংস অত্যাচার দেখতো আর বাদাম ভাজা খেতো? তাহ'লে কি হ'তো? যদি সেদিন ইন্ডিয়া 'আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতায় অন্য বৃহৎ শক্তির মত মানবতাকে বলাৎকার ক'রে মুখ ঘুরিয়ে নিত আর নিশ্চিন্তে নাকে তেল দিয়ে ঘুমোতো তাহ'লে কি হ'তো?

২) যদি সেদিন ভারত আমেরিকার বাংলাদেশকে সাহায্য না করার অর্ডার মেনে নিতো তাহ'লে আজ বাংলাদেশের ইতিহাস কি হ'তো?

৩) যদি সেদিন আমেরিকার অর্ডার না মানার অপরাধে ভারতের উদ্দেশ্যে পাঠানো ভয়ংকর যুদ্ধ জাহাজ সপ্তম নৌবহর ভারতের ওপর আঘাত করতো তখন কি হ'তো? তখন কি ভারত নিজেকে রক্ষা করা ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশকে সাহায্য করা নিয়ে মেতে থাকতো?
৪) নিজের বিপদ হবে জেনেও, ঘাড়ের ওপর ভয়ংকর শক্তিশালী বিষাক্ত সাপ (আমেরিকা) তার গরম বিষ নিশ্বাস ফেলছে ফলে নিজের অস্তিত্ব ধ্বংস হবে, বৃহৎ শক্তির শত্রু হ'য়ে যাবে, ফলে প্রধানমন্ত্রীর প্রাণ বিপন্ন হবে জেনেও ভারত বাংলাদেশকে সাহায্য করেছিল নিজের স্বার্থে?

৫) সেদিন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ আমেরিকার চোখ রাঙ্গানি উপেক্ষা করা বুদ্ধিমানের কাজ ছিল?

৬) সেদিন আমেরিকার চিরশত্রু রাশিয়া এসেছিল ভারতকে সাহায্য করতে, সেদিন রাশিয়ার যুদ্ধ জাহাজও এসে ভিড়েছিল ভারত মহাসাগরে আমেরিকার মোকাবিলা করার জন্য ফলে বিশ্বযুদ্ধ লেগে যাওয়ার যে ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সেদিন যদি বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ লেগে যেত আর চারপাশে বড় বড় দেশ দিয়ে ঘেড়া বাংলাদেশের পরিস্থিতি কি হ'তো? আর, আজ কোথায় থাকতো ভারত বিদ্বেষ?

৭) এক তো পাকিস্তানের নৃশংসতায় প্রায় শেষ হ'য়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ তার ওপর বাংলাদেশকে ঘিরে যদি বিশ্বযুদ্ধ লেগে যেত কিংবা ভারত একেবারে চোখ উল্টে দেওয়ার কৌশল নিত আর পাকিস্তানের আগ্রাসনের সাথে সাথে যদি চীনও হাত মেলাতো বাংলাদেশের জমিতে ঢুকে পড়ার (যা চীন হাসিনা সরকারের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি ক'রে চলেছে নানা বিষয়ে), যদি রাশিয়া ঘাঁটি গেড়ে বসতো, ভারত সরে যেত ও নিজেকে রক্ষায় ব্যস্ত থাকতো তাহ'লে ৭১ সালের সেদিনের ঘরে-বাইরে বিপর্যস্ত বিধস্ত বাংলাদেশের আজকের মত ভারত বিদ্বেষ তো দূরের কথা বাংলাদেশের মত ছোট্ট দেশের কি স্বাধীন অস্তিত্ব থাকতো?

৮) সেদিন ভারতের সাহায্য ছাড়া পাকিস্তানের ছোট্ট দুর্বল একটা অংশ পূর্ব পাকিস্তান বর্তমানে বাংলাদেশ পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে লড়াইয়ে পেরে উঠতো?

৯) আর যদি ভারতের কোনও সাহায্য ছাড়াই লড়াই চালাতো একা সেই সময়ের পূর্ব পাকিস্তান বর্তমানের বাংলাদেশ পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাহলে এত তাড়াতাড়ি স্বাধীন হ'তে পারতো? আদৌ পারতো? ভারতকে বাদ দিলে কার সাহায্য নিত? চীনের? রাশিয়ার? নাকি দূর 'দ্বীপবাসীনি তোমাকে চিনি গো চিনি' আমেরিকার? কার? নাকি পাকিস্তানের কাছে শেষমেশ আত্মসমপর্ণ? কোনটা?

১০) ভারত সরাসরি লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পাকিস্তানের সঙ্গে লড়াই যদি না করতো তাহ'লে বাংলাদেশ কতদিন যুদ্ধ চালাতো? কোনও রকম সাহায্য ছাড়াই সেনা আর রাজাকারদের দ্বারা তৈরী নরকে পরিণত হওয়া পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশ কি উঠে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারতো আর কোনোদিন? নাকি প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাহায্য ছাড়াই এত দ্রত উন্নতি করতে পারতো?

যাই হ'ক, সম্ভাবনার সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে কিন্তু বাড়ালাম না। বাড়িয়ে লাভ নেই। প্রতিবেশীর সঙ্গে লড়াই করে মুর্খরা। আখেরে লাভ হয় সুযোগ সন্ধানী শত্রুদের। ধ্বংস হয় নিজেরাই। যেমন পাকিস্তান ক'রে চলেছে অন্যের উস্কানিতে আজ ৭৮ বছর ধ'রে। আর, সেই স্রোতে গা মেশাতে চাইছে বাংলাদেশের নাগরিকদের এক বৃহৎ অংশ। আজ ভারতকে শত্রু হিসেবে দেখছে তারা।

এই সমস্ত কিছু ভেবে দেখতে হবে আজ নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বাংলাদেশের সমস্ত ছাত্রছাত্রী সমাজকে। ছাত্র সমাজকে সংঘবদ্ধ ভাবে চোখ কান খোলা রেখে সত্যের ওপর দাঁড়িয়ে প্রকৃত আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে দেশেরই বৃহত্তর স্বার্থে। মনে রাখতে হবে ছাত্র আন্দোলন যদি করতেই হয় ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ মঙ্গলের জন্য, দেশের মঙ্গলের জন্য, দেশের শান্তি, শৃঙখলা, সহিতাবসতা বজায় রাখার জন্য, আভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রুর হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য, দেশের শ্রীবৃদ্ধির জন্য, অর্থনৈতিক শক্তিতে শক্তিশালী হওয়ার জন্য, ব্যবসাবাণিজ্য, শিল্প, শিক্ষা, বিজ্ঞান সবদিকেই উন্নতির জন্য প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে, সমস্ত ক্ষেত্রে উন্নত দেশ গুলির সঙ্গে কূটনৈতিক সুসম্পর্ক গড়ে তোলা ইত্যাদি ইত্যাদি বিযয় সম্পর্কে সচেতন হতে হবে, দূরদৃষ্টি দিয়ে বিচার করতে হবে। নতুবা হঠকারী ছাত্র আন্দোলন ছাত্রদের সুইসাইড আন্দোলন করা ছাড়া আর কিছুই বাকী থাকবে না। ব্যাপারটা যেন "জেনেশুনে বিষ করেছি পান' না হ'য়ে যায় শেষে। 
( লেখা ২৫শে জুলাই'২০২৫)

বিচিত্রা ১৭১

ঈশ্বর যতবার নেমে এসেছেন মানুষের রূপ ধরে ততবারই তাঁর তথাকথিত শিষ্যরা তাঁর বিধান পাল্টে দিয়ে নিজেদের বিধান প্রতিষ্ঠা করেছেন।

ঈশ্বর স্বয়ং মানুষের রূপ ধরে মানুষের মাঝে নেমে এলেও তাঁকে গ্রহণ করে না ঈশ্বর পূজারীরা। অমূর্ত ভগবানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।

ধর্ম ও ঈশ্বর একটা মোক্ষম ও নিরাপদ মুখোশ শয়তানদের জন্য। এদের হাসি ও কথা ভগবানের চেয়েও মিষ্টি।

আমি সৎসঙ্গী! পরমপিতার কাছে শুধু প্রার্থনা করতে পারি যখনি নিজের ও নিজের প্রিয়জনের দেশে বিদেশে সংকট আসে আর কিছু করতে পারি না।

মিডিয়ায় গীতা নিয়ে কথা বলে যারা তাদের কথাবার্তা ব'লে দেয় তারা সব কাকায়ুর দল। এদের দৌড় মোল্লার মসজিদের মত। ক্ষনিকের অতিথি।
( লেখা ২৫শে জুলাই'২০২৪)


যত তাড়াতাড়ি বাবা-মায়েরা আদর্শকেন্দ্রিক দিব্যজীবনের প্রয়োজনীয়তা বুঝবে তত তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর ও সুরক্ষিত থাকবে। দয়ালের চরণে আমার একান্ত প্রার্থনা ঐ সমস্ত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ শিশুদের জন্য যে তাদের তুমি রক্ষা করো ও তাদের বাবামায়েদের বন্ধ চোখ খুলে দাও।

দিব্যজীবনের যদি অধিকারী হ'তে চাও
তাহ'লে জীবন্ত ঈশ্বরের চরণাশ্রিত হও ও
তাঁর চলন পুজোয় মগ্ন হও, মাতাল হও। 
অর্থ-মান-যশ-সফলতা ও প্রতিষ্ঠা সব পাবে।

রিপুতাড়িত প্রবৃত্তিমুখর জীবন যদি চাও তবে আদর্শহীন জীবন বেঁচে নাও ও আকাশের ভগবান, বোবা ভগবানের প্রতি নিবেদিত প্রাণ হও।

দিব্যজীবন নাকি রিপুতাড়িত প্রবৃত্তিমুখর জীবন?
কোনটা চাও তোমার জন্য ও তোমার সন্তানের জন্য?

কেউ তোমায় বুঝবে না।
নিজের ভুলে সবারই তোমার মতো মাথার ঘায়ে কুত্তার অবস্থা। এ নির্ম্মম সত্য। তাই যদি বাঁচতে চাও এখনো সময় আছে জীবন্ত ঈশ্বরের স্মরণ নাও আর তাঁর চলন পুজো করো।
( লেখা ২৫শে জুলাই'২০২৩)


মনকে বলি, মন! আনন্দধারা বহিছে ভুবনে, আনন্দ নিংড়ে নাও।
কে কোথায় কি করছে দেখার দরকার নেই এমনকি ঠাকুর নিয়েও। শুধু নিজেকে দেখো মনের আয়নায় তুমি যা করছো, যা বলছো, যা দেখছো, যা শুনছো তা ঠাকুরের বলার সংগে মেলে কিনা। আর সেইভাবেই মন নিজেকে ঠাকুরের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলো।
( লেখা ২৫শে জুলাই'২০২১)















Thursday, July 24, 2025

প্রবন্ধঃ সৎসঙ্গ/অধিবেশন ও কিছু দৃষ্টিকটূ আচরণ।

প্রথমদিকে সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানকে অধিবেশন বলা হ'লেও পরবর্তী সময়ে আমরা সৎসঙ্গ ব'লে থাকি। প্রবীণ সৎসঙ্গীরা অধিবেশন বলাতে অভ্যস্ত। যদিও এখন প্রবীণরাও 'সৎসঙ্গ' বলাতে সড়গড় হ'য়ে গেছে। নবীনরা কেউ কেউ 'অধিবেশন' নয় 'সৎসঙ্গ' ব'লে ভুল ধরিয়ে দেয়। মনে মনে হাসি। মুখে কিছু বলি না। অনেক কিছু দেখতে দেখতে , শুনতে শুনতে গায়ের চামড়া শুয়োরের চামড়া হয়ে গেছে। এই 'সৎসঙ্গ'-এ ছোটোবেলা থেকে যাচ্ছি। আজও যাই, যুক্ত থাকি। কত সময় কত কিছু দেখি যা মূল কেন্দ্র থেকে এবং কেন্দ্রের নির্দেশ থেকে তফাৎ চোখে পড়ে। যেমন কালকে একটা সৎসঙ্গে গেলাম। সেইবাড়ির গৃহকর্তার মৃত্যু উপলক্ষে সৎসঙ্গ আয়োজন হয়েছিল। পরিবারের সবাইকে নিয়ে গিয়েছিলাম বরাবরের মতো। সেখানে যেগুলি চোখে পড়লো তা এখানে তুলে ধরলাম সকলের অবগতির জন্য।
১) সৎসঙ্গে দেখলাম ঋত্বিকের জন্য আলাদা দু'টো আসন রাখা আছে।
২) যে বাড়িতে সৎসঙ্গ হয়েছে সেই বাড়ির মৃত গৃহকর্তার ভাইকে যখন দাদার সম্পর্কে ঋত্বিক বলতে বললো তখন ঋত্বিকের সঙ্গের লোকেরা বিরক্ত বোধ করলো। একজন ব'লে উঠলো গৃহকর্তার ভাই বললে নাকি সৎসঙ্গের ভাব নষ্ট হবে। কারণ উনি কথা বলতে পারেন না ও ঠাকুর সম্পর্কে কিছু জানেন না। অথচ যিনি বললেন এই কথা ঘর ভর্তি লোকের সামনে সেই ব্যক্তির এইরকম আচরণে যে ঠাকুরের ও সৎসঙ্গের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে সে কথা কিন্তু তিনি ভেবে দেখলেন না। অথচ তিনি নিজে না বলতে পারেন, না গাইতে পারেন। তিনি উদোম কাঁসর বাজিয়ে বেসুরে ও অতিরিক্ত কথা সংযোগে 'জয় রাধে' গাইলেন।
৩) সৎসঙ্গের শেষে 'জয় রাধে' গানের সুর যে অসুরে পরিণত হয়েছে সেদিকে সেই কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ঋত্বিক ও অন্যান্য ঘনিষ্ঠ গুরুভাইয়েদের কারও কোনও হেলদোল নেই দেখে অবাক।
৪) 'জয় রাধে' গান যিনি গাইছেন তিনি গানের সঙ্গে সঙ্গে জোরে জোরে কাঁসা বাজিয়ে গান গাইছেন দেখে মনে প্রশ্ন এলো এখন কি কাঁসা বাজিয়ে 'জয় রাধে' গান হয়?

৫) 'জয় রাধে' গানের সঙ্গে 'হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, হরে রাম হরে রাম, রাম রাম হরে হরে' গাওয়া হ'লো। ভাবলাম, 'জয় রাধে' কি নোতুন ভাবে সংযোজন হয়েছে?

৬) বক্তব্য রাখার জন্য অনুরোধ রাখায় যখন বক্তব্য রাখতে উঠলাম তখন প্রথমেই শর্ত চাপিয়ে দিল 'সময় ৫ মিনিট'। আর, দু'মিনিট শেষ হ'তে না হ'তেই ঋত্বিক হাত জোড় ক'রে 'জয়গুরু' ইঙ্গিত দিয়ে বুঝিয়ে দিল যে বক্তব্য শেষ করুন। আমিও বুঝে গেলাম কি করতে হবে। এইভাবে কি কেউ বক্তব্য রাখতে পারে? এটা কি বক্তাকে অপমান নয়?
৭) যখন এলাকায় কোনও সৎসঙ্গে বাইরের এলাকার সৎসঙ্গী আসেন যদি তাদের মধ্যে কোনও বক্তা ও গায়ক-গায়িকা থাকেন তখন সৎসঙ্গের প্রতিদিনের একঘেয়েমি ও বিরক্তিকর অবস্থা দূর করার জন্য ও নোতুন স্মেল পাওয়ার জন্য তাদের প্রায়োরিটি দেওয়া উচিৎ নাকি প্রতিদিন যারা সৎসঙ্গে এলাকার গুরুভাইবোনেরা গান গাইছে, সাপ আর ব্যাঙ্গের গল্প শুনিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছে তাদেরই বরাবরের মতো আসর জাঁকিয়ে বসে থাকা উচিৎ?

৮) সৎসঙ্গ শেষে ঋত্বিক ও মন্দিরের সাথে যুক্ত সক্রিয় সৎসঙ্গীদের বাড়ির ইয়ং ছেলেমেয়েদের সাথে যারা বাড়ির সৎসঙ্গে অংশগ্রহণ করে না, ভিতরের ঘরে ব'সে টিভি দেখে কিংবা মোবাইলে ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদিতে মগ্ন থাকে তাদের সঙ্গে একটু সহানুভুতির সংগে ডেকে কথা বলা, একটু ঠাকুর নিয়ে কি আলোচনা করা, যাজন করা, তাদের উৎসাহ ও প্রেরণা দেওয়া কি উচিৎ নয়? নাকি সৎসঙ্গ শেষে p3 নিয়ে বাড়ি যাবার তাড়া পেয়ে বসাটা যাজন?

৯) সৎসঙ্গে যখন কেউ গান, কীর্তন করছে ও কেউ ঠাকুরের আলোচনা করছে তখন সৎসঙ্গে বসে মোবাইলে কোনও গুরুভাইবোনের কথা বলা কি শোভনীয়? তাও আবার ঋত্ত্বিকের কাছে কি এহেন আচরণ আশা করা উচিৎ কি?

যাই হ'ক, যখন সৎসঙ্গ শেষে আলাদাভাবে জিজ্ঞেস করলাম ঋত্বিকদাদাকে তখন তিনি ও অন্য আরও দু'জন গুরুভাই বললেন, সবাইকে নিয়ে চলতে হবে দাদা। আর, আপনি যাদের কথা বলছেন তারা কারও কথা শোনার লোক নয়। স্বয়ং আচার্যদেব বললেও ওরা শুধরাবার নয়। আর অনেক অপমান অত্যাচার সহ্য করতে হয় প্রতিদিন।
এইসব কথা শুনে ভাবলাম, ঋত্ত্বিকদের জন্য আলাদা আসন রাখা দেওঘর মূল কেন্দ্র দ্বারা অনুমোদিত? গৃহকর্তার বাড়ির কেউ বলতে পারুক আর না-পারুক তাকে নীচা দেখানো সৎসঙ্গীদের কালচার? তাহ'লে যে যেমন ইচ্ছা সৎসঙ্গে আচরণ করবে? নিজত্ব হারিয়ে সৎসঙ্গীদের অন্যায্য ব্যবহার সহ্য ক'রে তাদের খুশী করতে হবে? যে যেখানে যেমন খুশী যেমনতেমন ভাবে বেসুরে প্রার্থনা ও অতিরিক্ত কথা সংযোগে আসুরিক হিক্কারে কাঁসা বাজিয়ে 'জয় রাধে' গাইবে? বহিরাগত কাউকে বলতে দিয়ে তার সম্মানের ধার না ধেরে আগে থেকে সময়ের শর্ত চাপিয়ে দিয়ে পরে হাত জোরের ভঙ্গিতে তাকে জয়গুরু জানিয়ে ইঙ্গিতে বসে যেতে বলা কি পরিচালকের শালীনতাপূর্ণ আচরণ? সৎসঙ্গে যোগ্য, দক্ষ, শিক্ষিত, ঠাকুরের দর্শন সম্পর্কে জ্ঞানী প্রবীণ গুরুভাই ও গায়ক গায়িকা থাকতে তাঁকে অবাঞ্ছিত ক'রে রাখা ও নামকা ওয়াস্তে ব্যবহার করা কি সৎসঙ্গের শিক্ষা? সৎসঙ্গ কি কুস্তির আখড়া? হরিহরের গোয়াল ঘর? ভেবে দেখার কি সময় আসেনি?
( লেখা ২৪শে জুলাই' ২০২৩)

প্রবন্ধঃ অশনি সংকেত!

বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নে বর্ণিত ঠাকুরের এই বাণী কতটা নির্ম্মম সত্য তা আজ ফেসবুক ব্যবহারকারী তা সে দীক্ষিত হ'ক আর না হ'ক বুঝতে পারছেন! কিন্তু দুঃখ এই, ভয়ঙ্কর যে ভবিষ্যতের অশনি সংকেত দেখা যাচ্ছে এর মধ্যে দিয়ে সেই সংকেত বা ইঙ্গিত দেখতে পেয়েও সমাজের এলিট সমাজ আজ চুপ! বাংলার কৃষ্টি, বাংলার সংস্কৃতির যে ভয়াবহ বিপর্যয় নেবে আসতে চলেছে তার ইঙ্গিত পাওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন মস্তিস্ক থাকা সত্ত্বেও তারা 'আমার গায়ে আচঁ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা' মানসিকতা নিয়ে দিব্যি আরামে তাত্ত্বিক আমেজে ডুবে আছে!

শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে একশ্রেণীর বিপদগামী বিকৃত মানসিকতাসম্পন্ন নারীপুরুষ বিশেষতঃ বাঙালি যুবসমাজ অশ্লীল ভাষায় ঠাকুরকে গালিগালাজ ক'রে মানসিক তৃপ্তি খুঁজে নিচ্ছে! ভিটামিন প্রোটিন সমৃদ্ধ গালাগালিতে আকাশ বাতাস বিষাক্ত ক'রে তুলে নিজেকে ও নিজের পরিবারের ও পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎকে নরকের দোরগোড়ায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে! এইজন্য তারা বিন্দুমাত্র ভীত চিন্তিত নয়! সাধারণ অবিবাহিত যুবকযুবতী যৌবনের পাগলা ঘোড়ায় চেপে উচ্শৃঙ্খল বিশৃঙ্খল জীবনের অধিকারী হ'য়ে একের পর এক অকথ্য কুকথ্য ভাষায় ঠাকুরের, ঠাকুর পরিবারের চৌদ্দগুষ্টির শ্রাদ্ধ ক'রে চলেছে ফেসবুক নামক মিডিয়ায়! যার থেকে কানে গরম সীসা ঢেলে দেওয়া আরামদায়ক!!!! আর এরা সবাই বাঙালি!

আবার এর মধ্যে কিছু আছে যারা নিজেদের বলছে তারা নাকি সৎসঙ্গী!!!!! প্রকাশ্যে শ্রীশ্রীঠাকুরের জ্যেষ্ঠ আত্মজকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ক'রে তাঁর পরিবারকে কলুষিত ক'রে ঠাকুরপ্রেমী সাজতে তাদের এতটুকু দ্বিধা নেই!

এছাড়া ভাবলেও অবাক লাগে এক মা ঠাকুরকে অবলীলায় অবহেলায় বীভৎস ভাষায় গালাগালি ক'রে আমাকে কমেন্টে লিখছেন যে তার সন্তানকে হত্যা ক'রে নিজের হাতে মাটিতে পুঁতে দেবেন যদি সে কখনো সৎসঙ্গী হয়! এক মা বলছেন, সৎসঙ্গী হওয়ার থেকে মরে যাওয়া ভালো তার সন্তানের! এক বাবা বলছেন, আমি ও আমার ছেলে একসঙ্গে দুজনে মিলে বোকা----- অনুকূলের ------টিপি, ----------মারি!!!!!!! কয়েকটা মাত্র উদাহরণ তুলে দিলাম শুধু অনুভব ও উপলব্ধির জন্য। আর এই তুলে দেওয়ার জন্য ঠাকুর ও আপনাদের সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।

স্তম্ভিত হ'য়ে যেতে হয় এদের বায়োলজিক্যাল মেক আপ দেখে! স্তম্ভিত হ'য়ে যেতে হয় এদের চারপাশের পরিবেশ দেখে? কোন পরিবেশে এরা বড় হচ্ছে!? এরকম বায়োলজিক্যাল মেক আপ কি ক'রে হ'লো!? এর কি কোনও বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা আছে!? জন্মবিজ্ঞানের বিজ্ঞানীরা কি বলেন!? কৃষ্টিগত ভয়ঙ্কর পরাভবের জন্য পন্ডিত সমাজ কি বলেন!? এই বীভৎস পরাভবের ফলে চারপাশের উদ্ভূত কুৎসিত সংস্কৃতির পরিবেশের জন্য পরিবেশবিদরা কি বলেন!? কোন পরিবেশ এরা রচনা করছে আগামী পৃথিবীর ও আগামী প্রজন্মের জন্য!? সমাজের এলিট সমাজের কি কোনও দায় নেই!?

এদের নোংরা মুখের নোংরা ভাষায় পাল্লা দিতে না পেরে জড়িয়ে যাচ্ছে কিছু সৎসঙ্গীও! এলাকায় এলাকায় উৎসবের নামে কোনও কোনও উৎসব মণ্ডপে দেখা গেছে সৎসঙ্গ শেষে গান বাজনার নামে বেলেল্লাপনা! দেখা গেছে উৎসব কর্তাদের উৎসবের মূল অনুষ্ঠান শেষে আর তাদের কোন দায় বা দায়িত্ব নেই উৎসব শেষের অনুষ্ঠান নিয়ে! কারণ তাদের হাত পা বাঁধা শেষের অনুষ্ঠানের আয়োজকদের কাছে! কিসের জন্য হাত পা বাঁধা!? এমনও দেখা গেছে উৎসব হয়েছে, মূল অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে, তারপর শুরু হয়েছে বাউল গানের অনুষ্ঠান! সেই অনুষ্ঠানের দেহতত্ত্বের দোহাই দিয়ে দ্বৈত অর্থের অজুহাতে পরিবেশন হচ্ছে শ্রীশ্রীঠাকুরের আদর্শ বর্জিত অশ্লীল ইঙ্গিতপূর্ণ যৌন সুড়সুড়ি-তে ভরপুর মাতাল গান! আর সেই গান উপভোগ করছে নারীপুরুষ নির্বিশেষে! মঞ্চের সামনে মাল খেয়ে উদোম নৃত্য করছে ছেলেছোকরা! সামনে চেয়ারে বসে লাল চোখে তা উপভোগ করছে দাদা ও সাঙ্গপাঙ্গরা! আর মঞ্চে সাজানো ফটো থেকে শ্রীশ্রীঠাকুর, শ্রীশ্রীবড়মা, শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীঅশোকদাদা ও শ্রীশ্রীবাবাইদাদা তা দেখছেন সৎসঙ্গের সকাল থেকে অনুষ্ঠিত বাঁচাবাড়ার অনুষ্ঠানের সমাপ্তি!

কথায় আছে শেষ ভালো যার সব ভালো তার। কিন্তু শেষে ভালো হচ্ছে কি মন্দ হচ্ছে তা দেখার আর দরকার পড়েনি অনুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত, অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত দায়িত্বপূর্ণ সৎসঙ্গী ঋত্বিক, যাজক, অধ্বর্যু, বক্তা, গায়ক এবং সৎসঙ্গী দাদা ও মায়েদের! এরা সবাই তখন ততক্ষণে নিরাপদ আশ্রয় ঘরে পৌঁছে হাতপা ধুয়ে খেয়েদেয়ে নিশ্চিন্ত নিদ্রাসুখের ব্যবস্থায় ব্যস্ত অনুষ্ঠান আয়োজনের, গান ও বক্তৃতার তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে তুলতে!!!! এর কি প্রতিক্রিয়া হ'তে পারে তার জন্য কোনও মাথাব্যথা নেই এদের! বিশেষ ক'রে ইয়ং সৎসঙ্গী জেনারেশনের! তারা অনুষ্ঠান থেকে শরীরে-মনে-আত্মায় অক্সিজেন, ভিটামিন, প্রোটিন নিয়ে ঢুকে পড়েছে ঘরে অতএব আর কোনও দরকার নেই!

এরকম বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে চলেছে সৎসঙ্গীদের মধ্যে আমিত্ব প্রতিষ্ঠার প্রতিযোগিতায়! আর এদের সুযোগ নিয়ে শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢুকে পড়ার মত সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিচ্ছিন্নতাবাদী ঠাকুর বিরোধীরা সৎসঙ্গী সেজে ঢুকে পড়ছে ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারকে কলঙ্কিত করার জন্যে! আর 'কালকের যোগী ভাতকে বলে অন্ন' প্রবাদের মত কাল দীক্ষা নিয়েই আজ বি-শা-ল ঠাকুরপ্রেমী, ঠাকুরভক্ত হ'য়ে পাগলের মত আবেগে ভেসে পড়ছে! এরা জানে না আবেগ ভালো, আবেগে ভেসে যাওয়া ভালো নয়! এরা আবেগে ভেসে গিয়ে ঢুঁশ দিয়ে বেরোচ্ছে বকনা বাছুরের মত সমাজের এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত ঠাকুরের আদর্শ, ঠাকুরের মিশন, ঠাকুরের কথা, ঠাকুরের বলা, ঠাকুরের ইচ্ছা, ঠাকুরের স্বপ্ন, ঠাকুরের কান্না, ঠাকুরের বুকের ব্যথা, ঠাকুরের চাহিদা, ঠাকুরের নির্দেশ, ঠাকুরের আদেশ, ঠাকুরের বিধান, ঠাকুরের নীতি ইত্যাদি কিছুই বিন্দুমাত্র না জেনে মূর্খের মত আর তারপরে ঝিমিয়ে পড়ছে কিছুদিন পরে, নইলে নিজেদের মধ্যে জড়িয়ে পড়ছে বাকবিতণ্ডাতে! জড়িয়ে পড়ছে জিলিপির প্যাঁচহীন সরল সাধাসিধেভাবে চলা আবেগে ভেসে যাওয়া কিছু সৎসঙ্গী! জড়িয়ে পড়ছে আমিত্ব প্রতিষ্ঠাতে উন্মাদ কিছু সৎসঙ্গী! জড়িয়ে পড়ছে ক্ষমতা দখলের লোভে লোভী কিছু সৎসঙ্গী! জড়িয়ে পড়ছে সমাজে অর্থ, মান, যশ, শিক্ষা, সভ্যতায় পিছিয়ে পড়া অবস্থা থেকে সামাজিক প্রতিষ্ঠা ও এলাকায় পরিচিত ব্যক্তিত্ব হওয়ার লোভে পাঞ্জা হাতিয়ে বিশেষ সৎসঙ্গী হওয়ার নীচ মানসিকতায়! জড়িয়ে পড়ছে ঠাকুরকে আয়ের উপকরণ ক'রে নিয়ে রোজগারের মানসিকতায়! আর এই সুযোগে সুযোগসন্ধানীরা হ'য়ে উঠেছে সক্রিয়।
সুযোগ সন্ধানীরা সাধারণ সরলমতি সম্পন্ন সাদাসিধে মানুষকে বিপথগামী ক'রে তুলবার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে ফেসবুকে গালাগালির অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রে রে ক'রে! তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছে বাংলার বুকে বাঙালি হ'য়ে হিন্দুধর্ম, সনাতন ধর্ম্ম, ঈশ্বর, দেবদেবী, নারী জাতির মর্যাদা রক্ষা করবার মহান দায়িত্ব নিয়ে! তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছে মুষ্টিমেয় কয়েকজন বাঙালি (তার মধ্যে কিছু সাজা বাঙালিও আছে) ফেক আইডি খুলে, মুখ লুকিয়ে, নাম ভাঁরিয়ে ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবারের বিরুদ্ধে সীমাহীন গালাগালি ও অশ্লীল শব্দের মালা গেঁথে কুৎসা, নিন্দা, অশ্রদ্ধা, অপমানের বান ডাকার মহান ব্রত নিয়ে! আর লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি সৎসঙ্গীরা যারা ফেসবুক করেন তারা দেখছেন তা নীরবে! আর ফেসবুকে যারা ঠাকুর ও ঠাকুর পরিবার, ঠাকুরের আদর্শ, ঠাকুরের মিশন নিয়ে কিছু লেখালেখি করেন সেখানে তারা আসেন আর সেই লেখার সঙ্গে পোস্ট করা ঠাকুরের ফটোতে প্রণাম, জয়গুরু জানিয়ে আর লাইক দিয়ে দায় সারেন! পড়েনই না! জানার চেষ্টায় করে না এই লেখায় বাঘ-ভাল্লুক কি আছে! পড়ার, জানার, চেনার, বোঝার ইচ্ছা, চেষ্টা যতদিন না হবে ততদিন ঐ শয়তানের দল, কুচক্রী সুযোগ নিয়ে যাবে ঠাকুরকে আক্রমণ করতে। এই লেখার ক্ষেত্রেও তাই হবে! জয়গুরু আর লাইকের বন্যা বইবে! কিন্তু মতের আদানপ্রদান হবে না নিজেদের মধ্যে উল্টে দেখা যাবে এই লেখাতেও চলে আসবে গালাগালির ফেরিওয়ালারা অশ্লীল দুর্গন্ধযুক্ত গালাগালি ফেরি করার জন্য! আর সৎসঙ্গীরা মিনিমাম পজিটিভ মন্তব্য করতেও এগিয়ে আসবে না! ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে!
তাই শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন,

অমিয়বাণী।
"যা'রা ধর্ম্মের মর্য্যাদা রক্ষা করতে জানে না,
গুরুজনের মর্য্যাদা রক্ষা করতে জানে না,
নারীর মর্য্যাদা রাখতে জানে না,
অসহায়, শিশু ও নিরাশ্রয়দিগের
আশ্রয় হ'তে জানে না,
তা'রা ঈশ্বর ও প্রেরিতদিগকে অবজ্ঞা করে,
তা'রা ঈশ্বরদ্রোহী,
প্রেরিতদ্রোহী,
দেশদ্রোহী ও গণদ্রোহী,
বিষাক্ত তা'দের সংশ্রব,
এর অপনোদন যদি না কর----
দুর্দ্দশা দুর্ম্মদ আলিঙ্গনে
তোমাদের অবসান
অতিসম্ভব ক'রে তুলবে।" ৪৪।
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র।
(আচার-চর্য্যা)
( লেখা ২৪শে জুলাই'২০২০)

গানঃ থাকবো না গো আর কোনোদিন।

থাকবো নাগো আর কোনোদিন
তোমায় ভুলে ঘোর আঁধারে।
করেছিলে যে দয়া আমারে
ভুলেছি তা আমি, ভুলেছি তোমারে।
বৃত্তি আঁধারে, বৃত্তি আঁধারে।
থাকবো নাগো আর কোনোদিন
তোমায় ভুলে ঘোর আঁধারে।

ভুলে গিয়ে তোমারে ধরেছি যে হাত,
তা শয়তানেরই, করেছি প্রেমালাপ, 
হায়! প্রেমালাপ,
রিপুর প্রলাপ, বৃত্তি প্রলাপ।
থাকবো নাগো আর কোনোদিন 
তোমায় ভুলে ঘোর আঁধারে। 

করেছিলে যে দয়া আমারে
ভুলেছি তা আমি, ভুলেছি তোমারে।
থেকেছি আঁধারে, বৃত্তি আঁধারে।
থাকবো নাগো আর কোনোদিন 
তোমায় ভুলে আঁধারে।


ভালোবেসে আমারে নিয়েছিলে জড়ায়ে
সেই প্রেম ভুলে গিয়েছি হারায়ে,
আঁধারে হারায়ে, আঁধারে হারায়ে।
থাকবো নাগো আর কোনোদিন 
তোমায় ভুলে ঘোর আঁধারে।
পাই যদি তোমারে।

Tuesday, July 22, 2025

অপ্রিয় সত্য।

 


বিচিত্রা ১৭০

সৎসঙ্গীরা কি ক্রমশ অলৌকিকতার ওপর নির্ভরশীল হ'য়ে পড়ছে?
সৎসঙ্গীদের শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে নিয়ে এত অলৌকিক ঘটনার প্রচার কেন সোশ্যাল মিডিয়ায়? 
কি উদ্দেশ্যে?

শ্রীশ্রীঠাকুরকে নিয়ে অতি উৎসাহী সৎসঙ্গীরা অলৌকিকতার বাড়াবাড়ি শুরু করেছিল তারই ট্রাডিশান শ্রীশ্রীঅবিনদাদার বেলায় কেন?

শ্রীশ্রীঅবিনদাদা কি তাঁর গুণমুগ্ধ নারীপুরুষের তাঁকে নিয়ে অলৌকিকতার বাড়াবাড়ি সমর্থন ও পছন্দ করেন?

শ্রীশ্রীঅবিনদাদাকে একশ্রেণীর নারীপুরুষ সৎসঙ্গী আবেগে ভেসে গিয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের আসনে বসিয়ে দিচ্ছেন। এরা কি সৎসঙ্গী?

শ্রীশ্রীঅবিনদাদা ও তাঁর অমৃত তুল্য কথা কি তাঁর তথাকথিত ঘনিষ্ট (?) নারীপুরুষ সৎসঙ্গীদের একান্ত ব্যক্তিগত সম্পত্তি?

যারা শ্রীশ্রীঅবিনদাদার অমৃতময় কথার সংকলক ব'লে নিজেদের ফেসবুকে প্রচার করছেন তাদের সংকলিত কথার কি স্বীকৃতি আছে?

শ্রীশ্রীঅবিনদাদার প্রাণময় প্রেমময় কথা কেউ লিখে রাখলে তার হ'য়ে যায়? আর, সেই কথা বিশ্লেষণ ক'রে আর্টিকেল রচনা অন্যায়?

চন্দন গাছের সংস্পর্শে শেওড়া গাছও চন্দনত্ব প্রাপ্ত হয়, অবিনদাদার সংস্পর্শে ঘনিষ্ঠ (?) প্রাণে অবিনের বিনের সুর বাজে?

ভক্তি ভালো, অতি ভক্তি ভালো নয়। আবেগ ভালো, আবেগে ভেসে যাওয়া ভালো নয়, ভক্তি নয়।

শ্রীশ্রীঅবিনদাদা প্রেমী সৎসঙ্গীরা কি জানেন তাঁর লক্ষ্য, তাঁর উদ্দেশ্য ও মিশন কি? তিনি কি কুলুঙ্গির দর্শনীয় বস্তু?







Monday, July 21, 2025

বিচিত্রা ১৬৯

অপমান আর লাঞ্ছনা পেতে পেতে 
গায়ের চামড়া বলছে, আমি শুয়োর!
বেইমানী আর অকৃতজ্ঞতা
নেই রক্তে, বায়োলজিক্যালি আমি শিওর!!

নিশুতি রাত! ঘুম ভাঙে, ভাঙে স্বপ্ন, 
গুটি মেরে পড়ে থাকি বিছানায়। 
অপমান, লাঞ্ছনা দেয় হানা-----
মন করে মানা------মনের আয়নায়!

কে যেন এসে বলে যায় কানে কানে,
'ক'রো না দুঃখ, ক'রো না অভিমান'।
প্রেমময়ের তরে যাও সব সয়ে,
মহার্ঘ জেনো লাঞ্ছনা-অপমান!!

তবুও অবাধ্য এ মন 
মানে না নীতি কথন,
মানে না তাঁর সাবধান বাণী
''শেষের সেদিন ভয়ংকর''
পরিণাম নিশ্চিত আমি জানি!!

"মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ।"
যাকেই করেছি বিশ্বাস
সেই দিয়েছে তীব্র তাপ-উত্তাপ!!
(২১শে জুলাই' ২০১৭)

সত্যের পথ বড় ভয়ংকর! 
এ পথে কেউ এগিয়ে আসে না সাথ দেবার, 
দেয় না বাড়িয়ে হাত; 
প্রতি মুহূর্তে এখানে বিষাক্ত ছোবল 
আর ঘন কালো রাত!

আপন যখন হয় পর
তখন ঘর থাকে না আর ঘর।
আর যদি পর হয় কখনও সত্যিই আপন 
তারে স্বর্গ জেনো জীবনভর!!
(২১শে জুলাই'২০১৮)

যে বা যারা তা সে তোমার যত আপনজন-ই হ'ক, যত প্রিয়জনই হ'ক এমনকি মা-বাবাও যদি হয় আর তারা তোমাকে, তোমার সন্তানকে জীবন্ত ঈশ্বর থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে চায় আর আকাশের ভগবানে, অমূর্ত ভগবানে, তাবিজ মাদুলী, লালনীল সুতো, বাবাজী-মাতাজী, জ্যোতিষী নির্ভর ক'রে তুলতে চায় তাহ'লে জেনো সে জান্তে-অজান্তে শয়তানের সহচর।

কিছু অতি বোদ্ধা আপনজন ও প্রিয়জন আছে যারা তোমার হিতাকাঙ্ক্ষী সেজে বলবে এই এত ছোট বয়স থেকে তোর ছেলে 'ঠাকুর' 'ঠাকুর' করছে? সৎসঙ্গে যাচ্ছে? সাবধান! পড়াশুনা লাটে উঠে যাবে। সাধু, সন্ন্যাসী হ'য়ে যাবে। তাদের থেকে দূরে থাকুন ও নিজেকে দূরে রাখুন। কারণ তাদের ঘরে ছেলেমেয়ে 'মানুষ' হয়নি। তাই জ্বালা। সে বা তারা চায় না অন্যের ছেলেমেয়ে মানুষের মত মানুষ হ'য়ে সমাজে মাথা উঁচু ক'রে বাঁচুক।
( ২১শে জুলাই'২০২৩)
























































































































..







Monday, July 14, 2025

বিচিত্রা ১৬৮

দিন যায় রাত আসে রাত কেটে দিন
অবাকেরা অবাক হ'য়ে চেয়ে থাকে বেবাক মনে
দিন কেটে যায়, শুধু থেকে যায় ঋণ!
শুধু থেকে যায় ঋণ!!

শাস্ত্রের দোহাই দিয়ে জনসাধারণের সীমাহীন অজ্ঞানতা আর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আর কতদিন ধর্মের আঙিনায় ধর্মীয় দাদাদের অশাস্ত্রীয় কাজ হ'য়ে চলবে! আর তাদের হাতে জীবন্ত ঈশ্বর বারবার এসে বারবার বাধা পেয়ে খালি হাতে ফিরে যাবে!? তা হ'লে কি আগামীতে ধ্বংস অনিবার্য! আর তারই নমুনা কি এই করোনার করুণা!?
(১৪ই জুলাই' করোনার সময়)

বিচিত্রা ১৬৭

রাত গভীর, সময় পৌনে দুটো, বাইরে অঝোর ধারায়
রিমঝিম রিমঝিম বরষা!ঝিঁঝিঁপোকা, 
ব্যাঙের ডাক, নিস্তব্দ রাত্রি
ঘরে একাকী প্রভু তুমি ভরসা!!

নিস্তব্ধ গভীর রাতে প্রভু
শুধু তোমায় মনে পড়ে!
রিমঝিম রিমঝিম বরষাতে মন তরঙ্গ নাচেরে,
মন তরঙ্গ নাচে!!

নিশুতি রাত, নিষুপ্ত পৃথিবী,
নিস্তব্ধ সময়!
আমি একাকী, মিলিবারে চায় প্রাণ,
প্রভু আমি তুমিময়!!

আজ সকালে রোদ হেসেছে, বৃষ্টি নিয়েছে ছুটি! 
জীবন বীণায় সুর জেগেছে, যত বাঁধন গেছে টুটি,
মোর বাঁধন গেছে টুটি;প্রভু তোমার চরণ তলে লুটি!
( লেখা ১৫ই জুলাই'২০১৭)

সময় সবসে বড়া বলবান
ভুল গ্যায়ে উও দিন
যব হর পল থা হয়রান!?
সময় কা থাপ্পড় পড়েগা বহুত ভারী 
ইয়াদ রাখনা মেরে প্যারে ইনসান।

ম্যাঁয় তো এক আম আদমি 
আউড় তু হ্যাঁয় বহত ভারী, বহত মহান।
ইয়ারোঁ পিছে মুরকে মত দেখ
পিছে হ্যায় ভবিষ্য
ভাগ, দোস্ত ভাগ, আগে ভাগ
নেহী তো বহত পড়েগা ভারী;
হো যাওগে পাগল ইনসান।

ক্যা করুঁ ঠাকুরজী? ক্যা করুঁ?
কৈ নেহী হ্যায় শুননে কে লিয়ে তৈয়ার।
তুম বাতাও কিসসে করুঁ প্যার
আউড় কিসে বানাও ইয়ার;
তুমসে বড়া কোই নেহী হ্যায় ইয়ার!!
( লেখা ১৫ই জুলাই'২০১৮)

যে যা ইচ্ছা করছে করুক তুমি লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ো না আর অন্যকে বিচ্যুত হ'তে সাহায্য ক'রো না।

যত পারো আখের নাও গুছিয়ে
ভাঁড় মে যায় ঈশ্বর, ভাঁড় মে যায় দেশ!
যে যাবে লঙ্কায় সেই হবে রাবণ
বিভীষণের রাজা হওয়ার দিন কিন্তু শেষ।

পড়েছো মোগলের হাতে খানা খেতে হবে একসাথে! 
ঠিক তেমনি মনে রেখো
দয়ালের সাথে খেলছো গেম বন্ধু!
দিনের শেষে ফল পেতে হবে হাতে হাতে!!
( লেখা ১৫ই জুলাই'২০১৯)

কাউকে শারীরিক বা মানসিক আঘাত ক'রে ঠাকুরকে ডাকলে ঠাকুরের কাছে সে ডাক পৌঁছোয় না যতক্ষণ না অনুতপ্ত হচ্ছো।
( লেখা ১৫ই জুলাই'২০২৪)







Sunday, July 13, 2025

গানঃ রাধাস্বামী রাধাস্বামী রাধাস্বামী গাওরে।

রাধাস্বামী রাধাস্বামী রাধাস্বামী গাওরে।২
রাধাস্বামী রাধাস্বামী রাধা রাধা ব'লে২
নেচে নেচে চলো সবাই অনুকূল ধামে।২

রাধা ধাম অনুকূল নাম নামে নামে প্রাণের আরাম।
নামে আছে এত মধু গাও অবিরাম।
রাধাস্বামী রাধাস্বামী রাধাস্বামী নাম।
গাইতে গাইতে চলো সবাই অনুকূল ধাম।

কলিযুগে অনুকূল নাম রাধাস্বামীর পরম ধাম
নামে আছে এত যাদু পুরায় মনস্কাম।
নাম করো নাম করো নাম করো নাম
রাধাস্বামী রাধাস্বামী রাধাস্বামী নাম।
নেচে গেয়ে চলো সবাই পরমপিতার ধাম।

নাম ছাড়া নামীর যাজন নুন ছাড়া যেমন মাখন
নাম ছাড়া নামীর যাজন নুন ছাড়া যেমন ব্যনজন
কপট সাধুর ভীড়ে নষ্ট যেমন গাজন রে।
নাম করো নাম করো নাম করো রে।
নামের ভেলায় চড়ে চলো অনুকূল ধামে।

রাধাস্বামী রাধাস্বামী রাধাস্বামী গাওরে। ২
রাধাস্বামী রাধাস্বামী রাধা রাধা ব'লে
রাধাস্বামী রাধাস্বামী রাধা রাধা ব'লে
নেচে নেচে চলো সবাই অনুকূল ধামে।৩
( লেখা ১৩ই জুলাই' ২০২৪)

Friday, July 11, 2025

বিচিত্রা ১৬৬

Believe it always that someone always watching you from high. Don't be afraid from anything. Keep farm belief in the core of heart that You are spring of might.
( Witten on 11i julai'2012)

ঈশ্বর ছাড়া কেউ আপন নয়; সবই স্বার্থের বন্ধন। 
ঈশ্বর জীবনে হ'লে প্রথম ও প্রধান
স্বামী, স্ত্রী, পুত্র, কন্যা সবাই হয় সবার আপন।

বীজমন্ত্র জ'পে জ'পে হ'লি নাকি মহাভক্ত!
সাজা সাধু হ'য়ে ঘুরে মলি অন্তরেতে মহাশক্ত!!

বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় ঠাকুরকে ধ'রেও আজ রয়ে গেলাম ভেসে চলা আম আদমি! বেকুব আর ধান্ধাবাজ ভক্তকুলের ফাঁদে ঠাকুর আজ বন্দী!

জ্ঞানের অহংকার জ্ঞানীকে ঈশ্বরের কাছে আসতে দেয় না। তাই ঈশ্বরও গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল হ'য়ে জ্ঞানীর কাছে ধরা দেয় না।

অহংকারী আর আধা জ্ঞান জ্ঞানীর জীবন্ত ঈশ্বরের কাছে আসার পথে বাধা। আম আদমী কুসংস্কার আর কুলুঙ্গিতে তুলে রাখা লাল শালুতে মোড়া আর সিঁদুরে মাখা দেবদেবীতে বাঁধা।

ঈশ্বর যে বারবার আসেন মানুষের রূপ ধ'রে মানুষের মাঝে তা' ঈশ্বর বিশ্বাসীরাই করে না বিশ্বাস! অবিশ্বাসী আর শয়তানের চেয়েও এঁদের বিষাক্ত আর গরম নিঃশ্বাস!!

ঈশ্বরের কাজে বাধা সৃষ্টি করেছে বা করছে কে বা কারা!?
তথাকথিত ঈশ্বর বিশ্বাসী যে বা যারা!!

হৃদয়ে নেই প্রেম ভালোবাসা আছে ভরা হৃদয় কপটতার বিষে; 
এই নিয়ে প্রেমময়ের কাছে আসা জীবন তাই ভরা থাকে তবু ক্লেশে।

যে সময় চলে যায় তা আসেনা আর ফিরে
যা করার এখনই করো নতুবা
নতুন সময়ে হাজারো সমস্যা নেবে ঘিরে।
( লেখা ১১ই জুলাই'২০১৮)

অন্ধকারে দাঁড়িয়ে আছো কেন বন্ধু !
আলোর বৃত্তে এসো!
হাতে হাত রেখে চলো মহাসিন্ধুর পারে যাই ; 
সেথায় মন খুলে হাসো!!
( লেখা ১১ই জুলাই'২০১৯)

অধ্যয়ন আর অধ্যাপনা দু'টো আলাদা বিষয়, 
আলাদা অধ্যায়। দু'টো একসঙ্গে চলে না।

অধ্যায়ন ছাড়া অধ্যাপনা, কানা তৈরী করে আরও কানা।
( লেখা ১১ই জুলাই' ২০২৪)






























































































































  



Wednesday, July 9, 2025

বিচিত্র ১৬৫

মনে পড়ে কত শত কথা,
মনে পড়ে যৌবন গাথা!
মনে পড়ে তোমার ছবি, 
মনে পড়ে ভুলতে না পারা ব্যথা!!
( লেখা ১০ই জুলাই' ২০১৭)

মানুষকে নিয়ে খিল্লি করা যাদের স্বভাব
নিশ্চিত জেনো রক্তে আছে তাদের শুদ্ধতার অভাব!
( লেখা ১০ই জুলাই' ২০১৮

জীবনটা যন্ত্রণাময়;
যদি না থাকে জীবনে দয়াময়।
যদি থাকে শয়নে-স্বপনে-জাগরণে দয়াময় 
জীবনটা হবে নিশ্চিত আনন্দময়।
জীবনের সব চাওয়া-পাওয়া কে যেন ভুতের মতো বয়।
( লেখা ১০ই জুলাই' ২০২৪)

যার যা লাগছে ভালো সাদা হ'ক
আর কালো, করুক। 
তুমি দাঁড়িয়ো না তার সম্মুখে হ'য়ে বাধাস্বরূপ
তুমি জ্বলো, জ্বালো হ'য়ে প্রভুর আলো। 
( লেখা ১০ই জুলাই' ২০২৪)










Monday, July 7, 2025

গানঃ তুমি আছো, তুমি আছো।

তুমি আছো, তুমি আছো,
ভাবতেই ভালো বাসায় মন ভরে যায়,
যেই ভাবি আজ সব খানে তুমি আছো।
তুমি আছো , তুমি আছো।

কারো মন ভরে গেছে,
চোখের প্রদীপ জ্বলে গেছে, ২
আজ তার পথ আঁধারের বুক চিরে শেষে
তোমাতে গিয়েছে মিশে।
তুমি আছো, তুমি আছো।

রঙে রঙে কত বাহার
রাঙিয়ে তোমার দরবার
আসে যায় কত
মানুষের পারাবার।
কেউ কাঁদে না কোনোদিন
কোনোদিন কখনো এখানে।
একটি নিমেষ কেউ হবে না ভীত, ভেবে
তুমি আছো, তুমি আছো।

( তোমার) স্মৃতি নিয়ে বাঁচি আজি
( তোমার) ছবি নিয়ে সুখে ভাসি
স্বপনের মাঝে আরো আজ সবার আছো তুমি
দিন কেন জানি যায় না ফুরিয়ে।

তুমি আছো, তুমি আছো,
ভাবতেই ভালো বাসায় মন ভরে যায়,
যেই ভাবি আজ সব খানে তুমি আছো।
তুমি আছো , তুমি আছো।

তুমি আছো, তাই আমি আছি।
( আমি নেই, আমি নেই গানের সুরে)

গানঃ আমি আছি, আমি আছি।

আমি আছি, আমি আছি,
ভাবতেই ভালো বাসায় মন ভরে যায়,
যেই ভাবি আজ সব খানে আমি আছি।
আমি আছি, আমি আছি।

কারো মন ভরে গেছে,
চোখের প্রদীপ জ্বলে গেছে, ২
আজ তার পথ আঁধারের বুক চিরে শেষে
আলোতে গিয়েছে মিশে।
আমি আছি, আমি আছি।

রঙে রঙে কত বাহার
রাঙিয়ে দয়ালের দরবার
আসে যায় কত
মানুষের পারাবার।
কেউ কাঁদে না কোনোদিন
কোনোদিন কখনো এখানে।
একটি নিমেষ কেউ হবে না ভীত, ভেবে
আমি আছি, আমি আছি।

স্মৃতি নিয়ে বাঁচি আজি
ছবি নিয়ে সুখে ভাসি
স্বপনের মাঝে আরো আজ সবার আছি আমি
দিন কেন জানি যায় না ফুরিয়ে।

আমি আছি, আমি আছি।
আমি আছি, আমি আছি,
ভাবতেই ভালো বাসায় মন ভরে যায়,
যেই ভাবি আজ সব খানে আমি আছি।
আমি আছি, আমি আছি।
( আমি নেই, আমি নেই গানের সুরে)

Sunday, July 6, 2025

গানঃ জয় জয় অনুকূল পুরুষোত্তম।

জয় জয় অনুকূল পুরুষোত্তম
পিতা শিবচন্দ্র মনোমোহিনী নন্দন।
হিমাইয়েতপুরে জন্ম নিলেন জগতের নাথ
অনুকূলই জগন্নাথ তিনিই জীবননাথ।
দেওঘরে লীলা করেন পরম ঈশ্বর
অনুকূল রূপে ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর।
দেবদেবী ত্রেত্রিশ কোটি যত ভগবান
চরণ বন্দনা ক'রে গায় রাধাস্বামী নাম।
রাধা রাধা ব'লে সবাই গাও জয়গান
রাধাস্বামী অনুকূল প্রাণের আরাম।
যে রাম সেই কৃষ্ণ সেই বুদ্ধ যীশু আর
মহাম্মদ, মহাপ্রভু, রামকৃষ্ণ রূপে অনুকূল আমার।
( লেখা ৬ই জুলাই'২০২৪)
(নাম করো নাম করো' গানের সুরে

কবিতাঃ স্বপ্ন আমার।

আমি রাজি! আমি রাজি!!
আজকে যদি বৃষ্টি নাবে
স্বপ্নার স্বপ্ন মাঝে হাঁটতে আমি আজি!
বৃষ্টি ভেজা পিছল পথে স্বপ্ন নিয়ে মাথে
রঙিন নেশায় মাতাল হ'য়ে হাঁটবো আমি
স্বপ্নমাখা স্বপ্নার সাথে স্বপ্নপুরীর পথে
হাতে হাত রেখে!
স্বপ্নার বুকে মাথা রেখে শুনবো আমি
স্বপ্নমাখা না বলা অনেক কথা
মায়ের মতো হাত বুলিয়ে নেবে শুষে
বুকের মাঝে অনেক জমে থাকা ব্যথা।
নদীর পাড়ে বসবো এসে ভাসিয়ে জলে দুখ
স্বপ্ন চোখে দেখবো স্বপ্নার মিষ্টি স্বপ্নমাখা মুখ!
বৃষ্টি ভেজা মাথায় আমি বৃষ্টি ভেজা রাতে
স্বপ্নার স্বপ্ন সাথে বসবো সেথায় রেখে হাত হাতে।
স্বপ্ন তুমি কোথায় থাকো? স্বপ্নার বুকের মাঝে?
নিটল স্বপ্ন দুই কুড়িয়ে নেবো, স্বপ্না মুখ লুকোবে লাজে!
স্বপ্না আমার স্বপ্ন দেখায় বলে, চলো স্বপ্নলোকে যাবে?
হাজার স্বপ্ন করে খেলা সেথায় স্বপ্নরাজার দেশে!
একদিন নয় দু’দিন নয় সারাটা জীবন নাহয়
করবো আমার কাজ মাটি
স্বপ্নার স্বপ্ন মাঝে ডুব দিয়ে মন বলে,
চলো স্বপ্নরাজার দেশে যাবো
স্বপ্ন আমার স্বপ্নসাথে হাঁটি
স্বপ্নার স্বপ্নসাথে হাঁটি!!!!!!!
( লেখা ৬ই জুলাই' ২০১৮)।
.

উপলব্ধিঃ দয়ালের সংবিধান।

ঈশ্বর দয়াল প্রভুর বাৎসল্যকে মানুষ টেকেন ফর গ্রান্টেড ক'রে নিয়েছে, বিশেষ ক'রে তাঁর তথাকথিত বিশেষ ভক্তরা। কেন জানি মনে হয় দয়ালের বাৎসল্য রসের আধিক্যে ভুল হ'য়ে চলেছে কোথাও। বাৎসল্য যে তাচ্ছিল্য সেটা তাঁরই কথা। তথাপি তিনি নিজেই ভুলে গেছেন বোধ হয় নিজের কথা। নিজেই তীব্র বাৎসল্য প্রেমের বেড়াজালে আবদ্ধ হ'য়ে তীব্র তাচ্ছিল্যের গহীন অন্ধকার গর্তে পড়ে গিয়ে অসহায় হাবুডুবু খাচ্ছেন। আর, সেই অসহায় অবস্থার সুযোগে সবাই তাঁকে ভাঙ্গিয়ে খাচ্ছে, যা ইচ্ছা হচ্ছে তাই করছে, যা ইচ্ছা হচ্ছে তাই বলছে। যেন গ্রহটার নাম 'যাচ্ছেতাই গ্রহ' এবং দেশটার নাম 'যা ইচ্ছা তাই' দেশ।

রাজনৈতিক নেতারা যা মুখে আসছে তাই ব'লে যাচ্ছে মাঠেঘাটে, নির্বাচনী জনসভায়, অনুষ্ঠান মঞ্চে, বিধানসভায়, লোকসভায়। মুখে কারও কুলুপ নেই। আর দলীয় প্রতিনিধি সদস্যরা বা সাপোর্টাররা টেবিল চাপড়ে বা মাঠ কাঁপিয়ে বাহবা, বাহবা ধ্বনি তুলে সাবাসী দিয়ে যাচ্ছে বুঝেই হ'ক আর না-বুঝেই হ'ক, দেওয়ার আছে দিয়ে যাচ্ছে কিংবা দিচ্ছে নিজ স্বার্থে বক্তাকে খুশী করতে। নেতারা, জনপ্রতিনিধিরা সর্ব্বজ্ঞের মত অশ্লীল ভাষায় অমৃত বাণী ছিটিয়ে যাচ্ছে, প্রকাশ্যে ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে, দিচ্ছে সাম্প্রদায়িক উসকানি। কারণ তাঁদের পিছনে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমর্থন আছে। আর, রাজনৈতিক তাত্ত্বিক নেতারা ক্ষমতা দখলের জন্য নোতুন নোতুন রসালো চোখ ধাঁধানো মন অবশ করা কথার ফুলঝুড়িতে ভরা নানা টক ঝাল মিষ্টি মতবাদের চাটনি ছড়িয়ে ছিটিয়ে জনগণকে বোকা বানিয়ে যাচ্ছে, আদর্শের আফিম খাইয়ে, পাইয়ের দেওয়ার তীব্র নেশায় ডুবিয়ে স্বপ্ন বিহ্বল ক'রে তুলে জীবন ক্ষয় ক'রে জনগণের পচা গলা মানসিক,আত্মিক মৃতদেহের লাশের ওপর প্রাসাদ রচনা ক'রে চলেছে। আর, তা ক'রে চলেছে প্রকাশ্যে ধর্মকে ও ঈশ্বরকে হাতিয়ার ক'রে ভাগ বাটোয়ারা ক'রে। ক'রে চলেছে ভগবান, ঈশ্বর, আল্লা, গড তাদের তাদের সর্বশক্তিমানের আশীর্বাদ ও ক্ষমতা মাথায় নিয়ে।

শিক্ষাক্ষেত্রে, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে, কৃষিক্ষেত্রে, কোলে কারখানায় ব্যবসায়ীরা, শিল্পপতিরা পিঁপড়ের পোঁদের মধ্যে লেগে থাকা গুড় পর্যন্ত পোঁদ কেটে নিয়ে নিচ্ছে, ছাড় দিচ্ছে না, এতটাই অর্থের লালসা। লোভ নামক তৃতীয় রিপু মারাত্মক বিষাক্ত জোঁকের মত ভয়ঙ্করভাবে জাঁকিয়ে বসে আছে লোভী মানুষের মাথার মধ্যে আর মাথার ঘিলু থেকে রস খেয়ে খেয়ে শুষে নিয়ে একেবারে ছিবড়ে ক'রে ফেলে দিচ্ছে মানুষকে। আর, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী মস্তিষ্কের সেই ছিবড়ে ঘিলু দিয়ে বেড়িয়ে আসা বিষাক্ত প্রোডাক্ট 'ওঁ গণেশায় নমঃ' ব'লে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিচ্ছে আম জনতার মধ্যে শান্তির জল ছেটানোর মত। আর আম আদমী বেঁচে থাকার জন্য সেই প্রতিটি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস তুলসী তলায় হরির লুটের বাতাসা কুড়োনোর মত ঝাঁপিয়ে পড়ছে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য বালখিল্য ভক্তদের মত।

দেশের শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা জানে যা দেব জনগণকে চার অক্ষর জনগণ তাই লুটেপুটে নেবে আর চেটেপুটে খাবে। আর, তা নেবে ও খাবে নিজের রক্ত জল করা পয়সায়, গলায় রক্ত ওঠা রোজগারে। ব্যবসায়ীদের এই রমরমা সাফল্যের পিছনে মজবুত মেরুদন্ড স্বরূপ আছে প্রথম ও প্রধান পৃষ্টপোষক রাজনৈতিক দল ও নেতারা আর তাদের হাই ভোল্টেজ আশীর্বাদ, যে আশর্বাদ সৃষ্টিকর্তা দয়ালের আশীর্বাদের চেয়েও লক্ষ কোটি গুণ শক্তিশালী ও কার্যকর। এদের আশীর্বাদের জৌলুস ও তীব্রতার কাছে দয়ালের চুঁইয়ে চুঁইয়ে আসা ফ্যাকাশে আশীর্বাদ ফিকে পড়ে যায় এবং লো ভোল্টেজ পাওয়ার ব'লে কিংবা কার্যকারীতাহীন মৃত যন্ত্র স্বরূপ ব'লে প্রমাণিত হয়।

লেখক, কবি, সাহিত্যিক, ডাক্তার, উকিল, জ্ঞানী, বিজ্ঞানী, মহাত্মা, মহাপুরুষ সবাই, সমস্ত বুদ্ধিজীবীরা সর্বজ্ঞ। তাঁরাই শেষ কথা। তারা সবজান্তা সর্বজ্ঞ। এই বিশাল সৃষ্টির পিছনে যদি বিজ্ঞানীদের কথা অনুযায়ী কোনও ঈশ্বর কণা থেকে থাকে, ধর্ম-ঈশ্বর-আধ্যাত্মিকতার জগতের কথায় যদি তমসার ওপারে, মহাসিন্ধুর ওপারে কোনও অচ্ছেদ্যবর্ণ মহান পুরুষ থেকে থাকে, কারণের কারণ পরমকারণিক কিছু থেকে থাকে তাহ'লে তা সর্ব্বৈব মিথ্যা, ইউটোপিয়া। মানুষের মধ্যে বুদ্ধিজীবীরা হলেন সত্য, এক ও একমাত্র সত্য। ঈশ্বর ব'লে যদি কিছু থেকে থাকে তা' তাঁরাই। তাদের হাতেই আছে সাধারণ মানুষের বাঁচা-বাড়ার চাবিকাঠি। তারাই মানুষের মাইবাপ, তাঁরাই রক্ষাকর্তা। ধর্মজগত, ঈশ্বরজগত, আধ্যাত্মিক জগত ইল্যুশান, কল্পকাহিনী, মিথ্যা, মিথ্যা, মিথ্যা।

আর, ধর্ম জগতে, ঈশ্বর জগতে, আধ্যাত্মিক জগতে অবস্থানকারী মুনি, ঋষি, যোগী, ধ্যানী, গোঁসাই, গোবিন্দ, বাবাজী, মাতাজি ব্যক্তিরা সবাই অমূর্ত ভগবান নিয়ে মেতে আছে। যাঁর বা যাঁদের বাস্তবে কোনও রক্তমাংস রূপে অস্তিত্ব নেই তাঁদের মাঝে মাতিয়ে রেখেছে সাধারণ মানুষকে। মাতিয়ে রেখেছে চরণপুজায়, না ক'রে পাওয়ার নেশায়। কিম্ভূতকিমাকার রূপে ভগবানের মূর্তি গড়ে তেল, সিঁদুর, চন্দন দিয়ে সাজিয়ে রেখে ও নিজেদেরও সাজিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরী ক'রে ঈশ্বর আরাধনার মহল তৈরী করেছে। যেখানে চলনপুজার কোনও ব্যাপার নেই, নেই কোনও চরিত্র সংশোধনের কথা লেশমাত্র, নেই জীবন গঠনের রূপরেখা। শুধু রিপুগুলিকে সুড়সুড়ি দিয়ে আরও বাড়িয়ে তুলে বাস্তব জগত থেকে সরিয়ে নিয়ে অদ্ভুত, ভয়ার্ত, আজগুবি, অলৌকিক, অযৌক্তিক, মিথ্যে এক কান্ড কারখানার ওপর নির্ভরশীল ক'রে তুলে চরণপূজায় মগ্ন ক'রে তুলছে কুসংস্কারাছন্ন দুর্বল, ভীরু, কাপুরুষ, লোভী, রিপুতাড়িত মানুষকে, যেখানে আচরণ গৌণ। যেখানে যে পারছে ধর্মগুরু হ'য়ে বসেছে, বসছে এবং তা বসেছে ও বসছে স্বয়ং ঈশ্বরের সিংহাসনে। আর, ঈশ্বর যখন মানুষের রূপে আসছে তখন তাঁকে অস্বীকার করছে, কিংবা তাঁকে গ্রহণ ক'রে পরবর্তীতে নিজেরাই গুরু হ'য়ে বসছে তাঁকে সামনে রেখে। গুরু হ'য়ে বসছে সাধারণ মামুষ, বোকা, সরল, বেকুব মানুষ, দুর্বল, ভীরু, অলস মানুষ, কুসংস্কারাছন্ন মানুষ, কিছু না ক'রে অলৌকিক উপায়ে পাওয়ার মানসিকতায় আচ্ছন্ন মানুষের সাহায্যে। জীবন্ত ঈশ্বরের সঙ্গে করছে বেইমানী, নেমকহারামি।

এ সমস্ত কিছু দেখছে দয়াল পরমপিতা আমার বছরের পর বছর, হাজার বছর ধ'রে। কি অসীম আশ্চর্য ধৈর্য্য ও সহ্য শক্তি দয়ালের!

তাঁকে নাস্তিকেরা অর্থাৎ ঈশ্বর অবিশ্বাসীরা মানে না, আর, ঈশ্বরবিশ্বাসীরা, আস্তিকেরা তাঁকে মানে নানারকম ভাবে তার সঙ্গে বেইমানি, নেমকহারামি ক'রে।

ঈশ্বর বিশ্বাসীরা, ধর্ম জগতের লোকেরা, আস্তিকেরা ঈশ্বরের প্রধান শত্রু।

এদের একটা অংশ তাঁকে অমূর্ত ভগবান (Unseen God)-এর মধ্যে বেঁধে রেখেছে নানারকম ভয়ার্ত মূর্তি ও ভয়ের পরিবেশ তৈরী ক'রে, বেঁধে রেখেছে যাগ, যজ্ঞ, পুজো, মানত, বলি, চন্দন, সিন্দুর, তিলক, গেরুয়া বসন, তুলসী মালা, লাল হলুদ সুতো, আম্নগটি, তাবিজ ইত্যাদির মধ্যে, বেঁধে রেখেছে নিজেদের অদভুতভাবে কিম্ভূতকিমাকার ভাবে সাজিয়ে রেখে, যাতে দেখলেই ভয় লাগে, ভয়ে মাথা নত করে মানুষ অমূর্ত মূর্তির চরণে ও তাঁদের চরণে এবং অমূর্ত ভগবানদের আর তাঁদের চরণ পুজা করে।

আর, একদল আছে, যারা জীবন্ত ঈশ্বরের অনুগামী, শিষ্য। তারা জীবন্ত ঈশ্বরের আরাধনা ক'রতে করতে জীবন্ত ঈশ্বরকে জীবন্ত ঈশ্বরের অবর্তমানে, দেহরূপ ছেড়ে চলে যাবার পর তাঁকে পিছনে ঠেলা দিয়ে নিজেরাই ভক্তদের কাছে এক একজন ভগবান সেজে বসে গেছে। জীবন্ত ঈশ্বর যা দেখে হতভম্ব।

মূর্ত-অমূর্ত ঈশ্বরকে সবাই বলাৎকার করছে। রাজনীতি, ধর্ম, সাহিত্য, বিজ্ঞান ইত্যাদি সমস্ত ক্ষেত্রে মূর্ত ও অমূর্ত ঈশ্বর হচ্ছে লাঞ্ছিত, অপমানিত ও ধর্ষিত। সবাই সমস্ত ধর্ম সম্প্রদায়ের ধর্মকথকেরা, অনুগামীরা আজ নিজ নিজ সম্প্রদায় ও নিজের নিজের স্বার্থে, নিজের নিজের প্রয়োজনে ঈশ্বরকে নিয়ে ব্যবসা করছে, এক সম্প্রদায় আর এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছে, জেহাদ করছে। ব'য়ে চলেছে রক্তের নদী। আর, ক'রে নিয়েছে তাদের আয়ের মোক্ষম বলিষ্ঠ উপকরণ।

পঞ্চভুতের ফাঁদে যেমন ব্রহ্মা পড়ে কাঁদে ঠিক তেমনি আস্তিক, ভক্ত ও শিষ্যকুল মাঝে জীবন্ত ঈশ্বর পড়ে কাঁদে আর শয়তান হাসে আর ভগবানকে, ঈশ্বরকে বলে, দ্যাখ শালা, কেমন লাগে। -

তাই ভাবি, শয়নে, স্বপনে, জাগরণে, ভোজনে, স্নানে, পায়খানায়, উঠতে, বসতে, চলতে, ফিরতে সবসময় দয়ালের কষে একটা ক'রে বিরাশি সিক্কার অদৃশ্য ভয়ংকর থাপ্পড় মারার দরকার ছিল ব'লে মনে হয় আমাদের সমস্ত ক্ষেত্রের সমস্ত মানুষকে অন্ততপক্ষে বিশেষ ক'রে ধর্মক্ষেত্রের ভন্ড ধার্মিকদের, কপট ঈশ্বর পূজারীদের। শীর্ষেন্দুবাবুর আজব গাঁয়ের গজব কথার দুখুরামকে যে ভুত কষে থাপ্পড় মেরে মেরে ক্রমাগত দৌড় করিয়ে করিয়ে তার দুঃখ রোগ সারিয়ে দিয়ে শরীরে মনে অবসাদ হতাশাকে খতম ক'রে তাকে দেশের সেরা দৌড়বিদে পরিণত করেছিল, ঠিক তেমনি ঈশ্বরের সময় এসেছে ঘোর এই কলিযুগের রাবণ, কংস, দুর্যোধন, দুঃশাসনদের দু'গালে বিরাশী সিক্কার এক একটা কষে ভয়ংকর থাপ্পড় মারার সকাল থেকে রাত, রাত থেকে সকাল নিরবচ্ছিন্নভাবে।

কিন্তু দয়ালের সংবিধান অন্য ধাতুতে গড়া। দেশের সংবিধান সংশোধনের মত দয়ালের দরবারের সংবিধানের ধারা সংশোধনের প্রয়োজন; পরিবর্তন ও পরিবর্ধন বোধহয় জরুরী। কারণ এটা ঘোর কলিযুগ। তিনি যেমন যুগে যুগে আসেন এক একটা মানুষের রূপে। যেমন, শ্রীশ্রীরামচন্দ্র, শ্রীশ্রীকৃষ্ণ, শ্রীশ্রীবুদ্ধ, শ্রীশ্রীযীশু, শ্রীশ্রীমহম্মদ, শ্রীশ্রী মহাপ্রভু, শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ ও বর্তমানে সর্বশেষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র রূপে। তিনি যেমন যুগে যুগে রূপ পালটান ঠিক তেমনি তাঁর শাসন ব্যবস্থা ও বিচার ব্যবস্থায়, তাঁর বিধানেও কিছু কিছু যুগানুযায়ী পরিবর্তন ও পরিবর্ধন প্রয়োজন, প্রয়োজন সংশোধনের।

আমি যখন দয়াল ধামে যাবো তখন দয়ালের দরবারে দয়ালের শাসন ব্যবস্থা ও বিচার ব্যবস্থায় সংবিধান সংশোধনের আর্জি জানাবো। সংবিধান পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করার প্রস্তাব দয়ালকে দেবো। এটা আমার একান্তই নিজের ব্যক্তিগত আর্জি। দয়ালের আদালতে আর্জি গ্রহণ বর্জন দয়ালের মর্জি।
প্রকাশ বিশ্বাস।
উত্তরপাড়া, ভদ্রকালী। ( লেখা ৬ই জুলাই' ২০২৪)।