ফেসবুকে একটা পোষ্ট দেখলাম। ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ বিরতি ঘোষণার পরে পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ ক'রে নানারকম পোষ্ট হ'তে দেখলাম। ইউ টিউবেও পাল্লা দিয়ে তাঁকে নীচা দেখাতে ভিডিও প্রকাশ হ'য়ে চলেছে। পাঠকের বোঝার জন্য কয়েকটা হেড লাইন তুলে ধরলাম।
যেমন,
ভারত নাকি মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে এই যুদ্ধ শুরু করেছিল তাই ভুল বুঝে নরেন্দ্র মোদী যুদ্ধ বিরতি করেছে।
ভুল রাজনীতির জন্যেই নাকি বিশ্ব রাজনীতিতে ভারত ক্রমশ একলা হ'য়ে যাচ্ছে, একলা হয়ে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
নিজের দোষেই তিনি এখন একা, বন্ধুহীন মোদী।
জয়ের দ্বোরগোড়ায় এসেও ভয়ে পিছিয়ে গেল ৫৬ইঞ্চির মোদী।
আমেরিকার কাছে নতজানু মোদী।
আর, যে বিষয় নিয়ে আমি লিখতে বসেছি, সেটা ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিষয়। পোষ্টে দু'জনের শিরদাঁড়ার পার্থক্য তুলে কটাক্ষ করা হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে। সেখানে বলা হচ্ছে, "আমেরিকার মহাশক্তিশালী সপ্তম নৌবহর দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় আমেরিকার রাষ্ট্রপতির হুমকির সামনে মাথা না ঝুঁকিয়ে পাকিস্তান ভেঙে দু'টুকরো করেছিলেন।"
আর, "দুর্বল পাকিস্তানকে চার খন্ডে বিভক্ত করার সুবর্ণ সুযোগ, কিন্তু মাত্র আমেরিকার রাষ্ট্রপতির চাপে জেতা যুদ্ধ ছেড়ে দিয়ে এলেন।
এখানেই শিরদাঁড়ার পার্থক্য।
এই ছিল শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ও শ্রীনরেন্দ্র মোদী দুই প্রধানমন্ত্রীর ছবি দিয়ে পোষ্টের বিষয়বস্তু।
পোষ্টদাতাদের অনুরোধ, পোষ্টদাতারা এরকম বিতর্কিত নোংরা পোষ্ট করা থেকে সাবধান হ'ন! শিরদাঁড়া সোজা রাখুন।
এই পোষ্টে শিরদাঁড়ার পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে। একদিক থেকে ঠিকই বলেছে। সেটা কিরকম? আসুন পোষ্টদাতার শিরদাঁড়া সম্পর্কিত বক্তব্য কতটা সঠিক ও বাস্তবোচিত তা' বিশ্লেষণ ও সংশ্লেষণের মধ্যে দিয়ে দেখে নিই।
আজ থেকে ৫৬ বছর আগে তাদের নিজেদের ভিতরেই পাকিস্তানের অত্যাচারের হাত থেকে মুক্ত হওয়ার তাগিদে ও স্বাধীন বাংলাদেশের দাবীতে আলাদা বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল। সেদিন বাংলাদেশে পাকিস্তানের মুসলমান বাংলাদেশের মুসলমানকেই হত্যা করেছিল ও মুসলমান মা বোনেদের ওপর যৌন অত্যাচার করে কাম লালসা ভোগ করেছিল ও পরে নির্ম্মম ও নৃশংস ভাবে অত্যাচার ক'রে ক'রে হত্যা করেছিল। ফলে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশীদের স্বাধীনতার যুদ্ধ।
আর, বর্তমানে বালুচিস্তান, পাসতুনিস্তান সব জায়গার মানুষ পাকিস্তানের অত্যাচারের হাত থেকে স্বাধীন হ'তে চাইছে। আজাদ কাশ্মীর পাকিস্তানের অত্যাচারে ভারতের সাথে যুক্ত হ'তে চাইছে। তারা প্রায় সবাই মুসলমান। ফলে সেখানে পাকিস্তানের ভাঙন, তাদের চার টুকরো কি হাজার টুকরো সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ জনগণের বিষয়। সেখানে শ্রীনরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপের কি প্রয়োজন? সেখানে তাঁর ব্যর্থতা কোথায়? আমেরিকার চাপে নতি স্বীকার কোথায়? কেন ভারত অন্য কোনও দেশকে টুকরো টুকরো করার নোংরা খেলায় অংশগ্রহণ করবে? হাজার বছরের ভারতের ইতিহাস কি তাই বলে? ভারত কি কখনও কোনও দেশ আক্রমণ করেছে? নাকি ভারতের ওপর আক্রমণ হয়েছে বারবার বর্হিশক্তি দ্বারা? বালুচিস্তান, পাসতুনিস্তান যদি বাঁচার জন্য, আত্মরক্ষার জন্য সাহায্য চায় সেটা বিবেচনা করা যেতে পারে। সেটা সম্পূর্ণ অন্য ও পরবর্তী বিষয়। জঙ্গি হামলার বদলা আর এই দেশ ভাগ বা টুকরো করা এক বিষয় নয়। এসব ঘর ভাঙ্গা ব্রিটিশের কৃষ্টি-সংস্কৃতি। অখন্ড ভারতবর্ষকে কে ভাগ করেছিল? কেন ভাগ করেছিল? কি উদ্দেশ্যে ভাগ করেছিল? সেই ভাগের পরিণতি কি? কারা ভোগ করছে এই ভাগ করার ফল? কারাই বা সেই অভিশপ্ত নির্ম্মম ভয়ংকর ক্ষমাহীন ঘৃণ্য ভাগের সংস্কৃতি জান্তে-অজান্তে চর্চা ক'রে চলেছে? কেন ক'রে চলেছে? কাদের প্ররোচনায় ক'রে চলেছে? তাদের শিক্ষা, চেতনা, বোধ, বুদ্ধি, মনুষ্যত্ব কি লুপ্ত হ'য়ে গেছে? তারা কি রোবোট? এটা যেন ভুলে না যায় ভাঙ্গার কৃষ্টি-সংস্কৃতির চর্চাকারীরা, কারিগরেরা, প্রচারকেরা এই ল্যাংড়া খোঁড়া ভারতের অধিবাসী তারাও, তাদের পরিবার পরিজন। অভিশপ্ত দেশভাগের ফলে হওয়া এই ল্যাংড়া খোঁড়া যদি আরও ল্যাংড়া খোঁড়া হয় সেই বিষফোঁড়ার বিষাক্ত ঘায়ের বিষে সর্ব্বাঙ্গ জর্জরিত হ'য়ে তারাও নিকেশ হ'য়ে যাবে প্রকৃতির নির্ম্মম কষাঘাতে। এটাই প্রকৃতির নিখুঁত বিচার।
তাই এই ধরনের উস্কানিমূলক বিষাক্ত পোষ্ট দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করে, দেশের ও দেশের জনগণের পক্ষে এই পোষ্ট বিপদজনক। দেশকে ও দেশের জনগণকে বিপদে ফেলবেন না। দেশকে দুর্বল করা ও ধ্বংস করা এবং দেশের জনগণকে মৃত্যুর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়ার চক্রান্ত থেকে বিরত থাকুন, নিজেকে প্রকৃত দেশপ্রেমী ক'রে তুলুন। তাই পোষ্টদাতারা বিতর্কিত পোষ্ট করা থেকে সাবধান!
এই পোষ্টে শিরদাঁড়ার পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে। একদিক থেকে ঠিকই বলেছে। সেটা কিরকম? আসুন পোষ্টদাতার শিরদাঁড়া সম্পর্কিত বক্তব্য কতটা সঠিক ও বাস্তবোচিত তা' বিশ্লেষণ ও সংশ্লেষণের মধ্যে দিয়ে দেখে নিই।
দেশের ক্রাইসিস পিরিয়ডে দেশের ঐক্যকে মজবুত করার মানসিকতা ও চরিত্রের মানুষগুলোর সঙ্গে দেশকে টুকরো টুকরো করার মানুষগুলোর মানসিকতা ও চরিত্রের মধ্যে শিরদাঁড়ার পার্থক্য কোথায় দেখে নিই।
এই মুহুর্তে দেশের বর্তমান ক্রাইসিস পিরিয়ডে কারা তৈরী করছে এই ধরণের পোষ্টার? আর কারাই বা প্রচার করছে? এরা কি দেশপ্রেমিক? এরা কি দেশের নাগরিক? এরা কি ঘর শত্রু দুর্যোধন নয়?
যারা এই ধরণের বিতর্কিত মিথ্যে ভুল প্রচারের মাধ্যমে আমার দেশের দুই মহান প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে শিরদাঁড়ার তফাৎ দেখিয়ে একজনকে তথাকথিত বড় করে, বড় ক'রে দেখাতে গিয়ে কলঙ্কিত করে, দোষী করে এবং অন্যজনকে ছোটো ও অসম্মান করতে দ্বিধা করে না, ঘৃণা ছড়াতে, নীচা দেখাতে, কলঙ্কিত করতে জনগণকে বিভ্রান্ত করে, বিষিয়ে তোলে জনগণের পরস্পরের মধ্যে, যারা দেশের শত্রুদের সরকারের বিরুদ্ধে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে, যারা বর্হিশক্তির এজেন্ট হ'য়ে কাজ করে এবং দেশের ঐক্যকে ধ্বংস করে, দেশকে টুকরো টুকরো হওয়ার জন্য ইন্ধন যোগায় তাদের চিহ্নিত করার কি সময় আসেনি? জনগণের কি এখনও ঘুম ভেঙে জেগে ওঠার সময় হয়নি?
দেশ যখন সংকটে তখন এই ধরণের মানুষদের তা' সে যে দলেরই সদস্য হ'ক না কেন, যত বড় কবি, সাহিত্যিক, গায়ক, বুদ্ধিজীবী পন্ডিত ব্যক্তিত্ব হ'ক না কেন, যত বড় ধনী হ'ক না কেন দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে তাদের জনজীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করা কি অনুচিত বা অযৌক্তিক?
আজ সময় এসেছে ভেবে দেখার শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী কি পাকিস্তানকে দু'টুকরো করার জন্যই দু'টুকরো করেছিলেন? নাকি একেবারে গায়ে গায়ে লাগানো পার্শ্ববর্তী দেশের ৩০লক্ষ জনগণের উপর পাকিস্তান দরিন্দাদের নারকীয় অত্যাচার, হত্যালীলা এবং প্রায় ৪ লক্ষ মা-বোনেদের উপর নৃশংস যৌন অত্যাচার শেষে নির্ম্মম অট্টহাস্যে উন্মত্ত উল্লাসে পাশবিক হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ভয়ঙ্কর মা দূর্গা, ভয়াবহ মা কালী রূপে আবির্ভূত হয়ে রক্ষা করেছিলেন অবশিষ্ট বাংলাদেশীদের? কোনটা?
ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী যে মহান বাঁচা ও বাড়ার ধর্ম পালন করেছিলেন তা' আজ ৫৪ বছর পর অবৈধ ও অনৈতিকভাবে চোরের মত পিছনের দরজা দিয়ে শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী ড মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে আবার ভয়ঙ্কর সংকটের মুখোমুখি। শান্তির নোবেল হাতে তিনি বাংলাদেশের দায়িত্বে এসেই ভারতের বিরুদ্ধে ভারতকে টুকরো করার হুমকি দিলেন। ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণকে বিদ্রোহী ক'রে তুললেন, ঘৃণার জন্ম দিলেন। এটাকে কি বলবো? ড মহম্মদ ইউনুসের মানবতা ও শিক্ষার মহান পরিচয়? এই শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার পরিচয়? নোবেল পুরস্কারের এই মহিমা? নোবেল কমিটির এই প্রজ্ঞা?
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কি পাকিস্তানকে দু'টুকরো করার জন্য যুদ্ধ করেছিলেন? একটা দেশকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করার ঘৃণ্য মানসিকতা কি প্রশংসার কাজ, গৌরবের কাজ? প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ১৯৭১ সালের বাংলাদেশে মানবতা, মানবিকতা ও মনুষ্যত্ব রক্ষার পক্ষে উৎসর্গিত জীবনকে আজ কলঙ্কিত করা হচ্ছে প্রশংসার মোড়কে পাকিস্তান নামক দেশকে দু'টুকরো করার দায় চাপিয়ে তাঁকে নরেন্দ মোদীর তুলনায় বড় দেশপ্রেমিক হিসেবে তুলে ধরে? মানবতার পক্ষে তাঁর গৌরবান্বিত ভূমিকাকে ছোটো করা হচ্ছে, পদদলিত করা হচ্ছে শিরদাঁড়ার পার্থক্যকে প্রচার করে?
আর, বর্তমান ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে? পাকিস্তান নামক দেশটিকে চার টুকরো করার নোংরা খেলায় নেমেছে? নাকি ভারতের নিরীহ সাধারণ নাগরিককে হত্যার প্রতিবাদে পাকিস্তানের জঙ্গীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে? পাকিস্তান নামক দেশটি একদিন ভারতেরই অংশ ছিল। ব্রিটিশের প্ররোচনায় মুসলিমদের একাংশের মুসলিমদের জন্য আলাদা রাষ্ট্রের দাবীতে পাকিস্তান নামক দেশটির জন্ম হয়েছিল। জন্ম হয়েছিল অদ্ভুত ভাবে। ভারতের একেবারে পশ্চিমদিকের একটা অংশ ও পূর্বদিকের ভারত দিয়ে ঘেরা মধ্যবর্তী একটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয়েছিল রিকেট পাকিস্তানের। কিন্তু সেদিন কেউ দেশের কোনও নেতৃবৃন্দ এ নিয়ে সোচ্চার হননি বা বাধা দেননি। শুধু দূরদ্রষ্টা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আন্তরিক শুদ্ধ পবিত্র প্রচেষ্টায় অখন্ড বাংলা থেকে পশ্চিমবঙ্গকে ভাগ ক'রে, পাকিস্তানের থেকে আলাদা ক'রে ভারতের সঙ্গে যুক্ত রাখতে পেরেছিল।
দেশ যখন সংকটে তখন এই ধরণের মানুষদের তা' সে যে দলেরই সদস্য হ'ক না কেন, যত বড় কবি, সাহিত্যিক, গায়ক, বুদ্ধিজীবী পন্ডিত ব্যক্তিত্ব হ'ক না কেন, যত বড় ধনী হ'ক না কেন দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে তাদের জনজীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করা কি অনুচিত বা অযৌক্তিক?
আজ সময় এসেছে ভেবে দেখার শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী কি পাকিস্তানকে দু'টুকরো করার জন্যই দু'টুকরো করেছিলেন? নাকি একেবারে গায়ে গায়ে লাগানো পার্শ্ববর্তী দেশের ৩০লক্ষ জনগণের উপর পাকিস্তান দরিন্দাদের নারকীয় অত্যাচার, হত্যালীলা এবং প্রায় ৪ লক্ষ মা-বোনেদের উপর নৃশংস যৌন অত্যাচার শেষে নির্ম্মম অট্টহাস্যে উন্মত্ত উল্লাসে পাশবিক হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ভয়ঙ্কর মা দূর্গা, ভয়াবহ মা কালী রূপে আবির্ভূত হয়ে রক্ষা করেছিলেন অবশিষ্ট বাংলাদেশীদের? কোনটা?
ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী যে মহান বাঁচা ও বাড়ার ধর্ম পালন করেছিলেন তা' আজ ৫৪ বছর পর অবৈধ ও অনৈতিকভাবে চোরের মত পিছনের দরজা দিয়ে শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী ড মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে আবার ভয়ঙ্কর সংকটের মুখোমুখি। শান্তির নোবেল হাতে তিনি বাংলাদেশের দায়িত্বে এসেই ভারতের বিরুদ্ধে ভারতকে টুকরো করার হুমকি দিলেন। ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণকে বিদ্রোহী ক'রে তুললেন, ঘৃণার জন্ম দিলেন। এটাকে কি বলবো? ড মহম্মদ ইউনুসের মানবতা ও শিক্ষার মহান পরিচয়? এই শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার পরিচয়? নোবেল পুরস্কারের এই মহিমা? নোবেল কমিটির এই প্রজ্ঞা?
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কি পাকিস্তানকে দু'টুকরো করার জন্য যুদ্ধ করেছিলেন? একটা দেশকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করার ঘৃণ্য মানসিকতা কি প্রশংসার কাজ, গৌরবের কাজ? প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ১৯৭১ সালের বাংলাদেশে মানবতা, মানবিকতা ও মনুষ্যত্ব রক্ষার পক্ষে উৎসর্গিত জীবনকে আজ কলঙ্কিত করা হচ্ছে প্রশংসার মোড়কে পাকিস্তান নামক দেশকে দু'টুকরো করার দায় চাপিয়ে তাঁকে নরেন্দ মোদীর তুলনায় বড় দেশপ্রেমিক হিসেবে তুলে ধরে? মানবতার পক্ষে তাঁর গৌরবান্বিত ভূমিকাকে ছোটো করা হচ্ছে, পদদলিত করা হচ্ছে শিরদাঁড়ার পার্থক্যকে প্রচার করে?
আর, বর্তমান ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে? পাকিস্তান নামক দেশটিকে চার টুকরো করার নোংরা খেলায় নেমেছে? নাকি ভারতের নিরীহ সাধারণ নাগরিককে হত্যার প্রতিবাদে পাকিস্তানের জঙ্গীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে? পাকিস্তান নামক দেশটি একদিন ভারতেরই অংশ ছিল। ব্রিটিশের প্ররোচনায় মুসলিমদের একাংশের মুসলিমদের জন্য আলাদা রাষ্ট্রের দাবীতে পাকিস্তান নামক দেশটির জন্ম হয়েছিল। জন্ম হয়েছিল অদ্ভুত ভাবে। ভারতের একেবারে পশ্চিমদিকের একটা অংশ ও পূর্বদিকের ভারত দিয়ে ঘেরা মধ্যবর্তী একটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয়েছিল রিকেট পাকিস্তানের। কিন্তু সেদিন কেউ দেশের কোনও নেতৃবৃন্দ এ নিয়ে সোচ্চার হননি বা বাধা দেননি। শুধু দূরদ্রষ্টা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আন্তরিক শুদ্ধ পবিত্র প্রচেষ্টায় অখন্ড বাংলা থেকে পশ্চিমবঙ্গকে ভাগ ক'রে, পাকিস্তানের থেকে আলাদা ক'রে ভারতের সঙ্গে যুক্ত রাখতে পেরেছিল।
দেশভাগের পর থেকে হিন্দু মুসলমানের মধ্যে শত্রুতার লড়াই তীব্র থেকে তীব্রতর হ'তে লাগলো। পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র দেশভাগের ভয়ংকর ভচিষ্যত পরিণতি সম্পর্কে বারবার সাবধান করেছিলেন এবং দেশ নেতৃত্বের কাছে আবেদন করেছিলেন। তখন তিনি হিন্দু মুসলমানের সমস্যা দেশ ভাগ ক'রে সমাধান করার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বলেছিলেন, "Dividing compromise is the hatch of animosity " অর্থাৎ ভাগ ক'রে সমাধান করার অর্থ তা' দিয়ে দিয়ে শত্রুতার ডিম ফোটানো। যা' আজ স্বাধীনতার ৭৮বছর ধ'রে ও পরেও প্রমাণ হ'লো ধর্মের ভিত্তিতে ২৬ জন হিন্দু পর্যটককে পাকিস্তানের মুসলিম জঙ্গীরা নির্ম্মম নৃশংসভাবে হত্যা করলো।
আর, সেই ২৬ জন হিন্দু পর্যটকের হত্যার প্রতিশোধ নিতে, সেই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর ক্ষমাহীন বদলা নিতে যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী জঙ্গি নিধনে নারীদের সিঁথির পবিত্র সিঁদুরকে স্মরণ ক'রে 'অপারেশন সিন্দুর' নামে শপথ নিলেন এবং জঙ্গীদের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর ভয়াল নির্ম্মম প্রত্যাঘাত করলেন তখন এই কালবৈশাখী অভিযানকে, এই দয়ামায়াহীন প্রত্যাঘাতকে, এই সাফল্যকে, এই উদ্যোগকে কলঙ্কিত করতে ময়দানে নেমে পড়েছে ভারতে অবস্থানকারী ভারত বিরোধী শক্তি ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে দু'জনের সাফল্যের তুলনামূলক নোংরা আলোচনায়।
আর, সেই ২৬ জন হিন্দু পর্যটকের হত্যার প্রতিশোধ নিতে, সেই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর ক্ষমাহীন বদলা নিতে যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী জঙ্গি নিধনে নারীদের সিঁথির পবিত্র সিঁদুরকে স্মরণ ক'রে 'অপারেশন সিন্দুর' নামে শপথ নিলেন এবং জঙ্গীদের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর ভয়াল নির্ম্মম প্রত্যাঘাত করলেন তখন এই কালবৈশাখী অভিযানকে, এই দয়ামায়াহীন প্রত্যাঘাতকে, এই সাফল্যকে, এই উদ্যোগকে কলঙ্কিত করতে ময়দানে নেমে পড়েছে ভারতে অবস্থানকারী ভারত বিরোধী শক্তি ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে দু'জনের সাফল্যের তুলনামূলক নোংরা আলোচনায়।
আলোচনায় তারা শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে শ্রী নরেন্দ মোদীর চেয়ে বড় ক'রে দেখাতে গিয়ে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের জনগণকে রক্ষা ও মা-বোনেদের ইজ্জৎ রক্ষায় তাঁর মহান অবদানকে, তাঁর মানবিক মুখকে, তাঁর মনুষ্যত্বকে চরম অপমান ক'রে তাঁকে পাকিস্তান দেশ ভাঙ্গার কলঙ্কিত নায়িকা রূপে প্রতিষ্ঠা করলো। এই তথাকথিত ইন্দিরা প্রেমী নরাধমরা ১৯৭১ সালে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর আমেরিকার চোখে চোখ রেখে লড়াই করার অদম্য সাহস ও বীরত্বকে, ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ভারতকে কৃতিত্ব দিতে গিয়ে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ও তাঁর নেতৃত্বে চলা ভারত সরকার তথা ভারতবর্ষকে অন্য দেশকে টুকরো টুকরো করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করলো। তারা এও চেয়েছিল বর্তমান ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীও 'অপারেশন সিন্দুর' প্রত্যাঘাতের মধ্যে দিয়ে এই একইরকম দেশ ভাঙ্গার নোংরা খেলার ট্রাডিশান বজায় রাখুক। নরেন্দ্র মোদীও পাকিস্তানকে এই সুযোগে চার টুকরো করে দিক।
আমরা যেন ভুলে না যাই, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সংকটে পাকিস্তান জেরবার। ব্রিটিশ মুক্ত ভারতবর্ষকে জোর ক'রে ব্রিটিশের সহায়তায়, ব্রিটিশের ঘৃণ্য চক্রান্তে ও মুসলিম লিগের নেতাদের চক্রান্তে দেশ ভাগ করার ও ক্ষমতা ভোগ করার ফল আজকের এই পাকিস্তান।
আমরা যেন ভুলে না যাই, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সংকটে পাকিস্তান জেরবার। ব্রিটিশ মুক্ত ভারতবর্ষকে জোর ক'রে ব্রিটিশের সহায়তায়, ব্রিটিশের ঘৃণ্য চক্রান্তে ও মুসলিম লিগের নেতাদের চক্রান্তে দেশ ভাগ করার ও ক্ষমতা ভোগ করার ফল আজকের এই পাকিস্তান।
আজ থেকে ৫৬ বছর আগে তাদের নিজেদের ভিতরেই পাকিস্তানের অত্যাচারের হাত থেকে মুক্ত হওয়ার তাগিদে ও স্বাধীন বাংলাদেশের দাবীতে আলাদা বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল। সেদিন বাংলাদেশে পাকিস্তানের মুসলমান বাংলাদেশের মুসলমানকেই হত্যা করেছিল ও মুসলমান মা বোনেদের ওপর যৌন অত্যাচার করে কাম লালসা ভোগ করেছিল ও পরে নির্ম্মম ও নৃশংস ভাবে অত্যাচার ক'রে ক'রে হত্যা করেছিল। ফলে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশীদের স্বাধীনতার যুদ্ধ।
আর, বর্তমানে বালুচিস্তান, পাসতুনিস্তান সব জায়গার মানুষ পাকিস্তানের অত্যাচারের হাত থেকে স্বাধীন হ'তে চাইছে। আজাদ কাশ্মীর পাকিস্তানের অত্যাচারে ভারতের সাথে যুক্ত হ'তে চাইছে। তারা প্রায় সবাই মুসলমান। ফলে সেখানে পাকিস্তানের ভাঙন, তাদের চার টুকরো কি হাজার টুকরো সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ জনগণের বিষয়। সেখানে শ্রীনরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপের কি প্রয়োজন? সেখানে তাঁর ব্যর্থতা কোথায়? আমেরিকার চাপে নতি স্বীকার কোথায়? কেন ভারত অন্য কোনও দেশকে টুকরো টুকরো করার নোংরা খেলায় অংশগ্রহণ করবে? হাজার বছরের ভারতের ইতিহাস কি তাই বলে? ভারত কি কখনও কোনও দেশ আক্রমণ করেছে? নাকি ভারতের ওপর আক্রমণ হয়েছে বারবার বর্হিশক্তি দ্বারা? বালুচিস্তান, পাসতুনিস্তান যদি বাঁচার জন্য, আত্মরক্ষার জন্য সাহায্য চায় সেটা বিবেচনা করা যেতে পারে। সেটা সম্পূর্ণ অন্য ও পরবর্তী বিষয়। জঙ্গি হামলার বদলা আর এই দেশ ভাগ বা টুকরো করা এক বিষয় নয়। এসব ঘর ভাঙ্গা ব্রিটিশের কৃষ্টি-সংস্কৃতি। অখন্ড ভারতবর্ষকে কে ভাগ করেছিল? কেন ভাগ করেছিল? কি উদ্দেশ্যে ভাগ করেছিল? সেই ভাগের পরিণতি কি? কারা ভোগ করছে এই ভাগ করার ফল? কারাই বা সেই অভিশপ্ত নির্ম্মম ভয়ংকর ক্ষমাহীন ঘৃণ্য ভাগের সংস্কৃতি জান্তে-অজান্তে চর্চা ক'রে চলেছে? কেন ক'রে চলেছে? কাদের প্ররোচনায় ক'রে চলেছে? তাদের শিক্ষা, চেতনা, বোধ, বুদ্ধি, মনুষ্যত্ব কি লুপ্ত হ'য়ে গেছে? তারা কি রোবোট? এটা যেন ভুলে না যায় ভাঙ্গার কৃষ্টি-সংস্কৃতির চর্চাকারীরা, কারিগরেরা, প্রচারকেরা এই ল্যাংড়া খোঁড়া ভারতের অধিবাসী তারাও, তাদের পরিবার পরিজন। অভিশপ্ত দেশভাগের ফলে হওয়া এই ল্যাংড়া খোঁড়া যদি আরও ল্যাংড়া খোঁড়া হয় সেই বিষফোঁড়ার বিষাক্ত ঘায়ের বিষে সর্ব্বাঙ্গ জর্জরিত হ'য়ে তারাও নিকেশ হ'য়ে যাবে প্রকৃতির নির্ম্মম কষাঘাতে। এটাই প্রকৃতির নিখুঁত বিচার।
তারা যেন ভুলে না যায়, কথায় আছে, Every action has opposite and equal reaction. অর্থাৎ ক্রিয়ার বিপরীত ও সমান প্রতিক্রিয়া আছেই।
আর, পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, "তুমি যা করছো বা ক'রে রেখেছো ভগবান তাই-ই গ্রাহ্য করবেন আর ফলও পাবে ঠিক তেমনি। যা ইচ্ছা তাই করবে তুমি তা করলে রে চলবে না, ভালো ছাড়া মন্দ করলে পরিস্থতি ছাড়বে না।"
আর, পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন, "তুমি যা করছো বা ক'রে রেখেছো ভগবান তাই-ই গ্রাহ্য করবেন আর ফলও পাবে ঠিক তেমনি। যা ইচ্ছা তাই করবে তুমি তা করলে রে চলবে না, ভালো ছাড়া মন্দ করলে পরিস্থতি ছাড়বে না।"
আর, অভিশপ্ত ঘৃণ্য ক্ষমাহীন ভয়ংকর ভাঙ্গনের সেই কৃষ্টি-সংস্কৃতির ধারক বাহক দেশভাগের কুশীলবদেরই রেখে যাওয়া এই প্রচারকারীরা, যারা ঘোলা জলে মাছ ধরার মতো এইধরণের ঘর ভাঙ্গা ভাঙির নোংরা প্রচারের খেলায় দুই মহান প্রধানমন্ত্রীর একজনকে কমজোরি, দুর্বল, ভীরু ব্যক্তিত্বের অধিকারী প্রমাণে মরীয়া। কিন্তু হাজার হাজার বছরের ঐতিহ্যময় ভারতের কৃষ্টি সংস্কৃতি এসব নোংরা ভাঙ্গাভাঙ্গির কৃষ্টি সংস্কৃতি নয়।
কিন্তু বর্তমান ভারত আর স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ের অতীতের ভারত এক নয়। অতীতের ভারতের ইতিহাস অন্য কথা বলে। শ্রীনরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে রাশিয়া ইউক্রেণ যুদ্ধের সময় রাশিয়ার পক্ষে না থাকার জন্য, রাশিয়ার সঙ্গে তেল চুক্তি না করার জন্য, রাশিয়ার অর্থনীতিকে দুর্বল করার জন্য, রাশিয়া থেকে তেল না কেনার জন্য আমেরিকার ভয়ঙ্কর চাপের সামনে সামনা সামনি মুখোমুখি এই ভারতই তার জোরালো শক্তিশালী ভূমিকা তুলে ধরেছিল। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আমেরিকা সেদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ৫৬ ইঞ্চি সিনার প্রমাণ পেয়েছিল। আর এই মুহুর্তের আন্তর্জাতিক খবর সবারই জানা। আর, ২০১৪ পরবর্তী সময়ে ২০১৬ (উরি) ২০১৯ (পুলবামা) সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ভুলে যায়নি ভারতবাসী।
তাই এই ধরনের উস্কানিমূলক বিষাক্ত পোষ্ট দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করে, দেশের ও দেশের জনগণের পক্ষে এই পোষ্ট বিপদজনক। দেশকে ও দেশের জনগণকে বিপদে ফেলবেন না। দেশকে দুর্বল করা ও ধ্বংস করা এবং দেশের জনগণকে মৃত্যুর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়ার চক্রান্ত থেকে বিরত থাকুন, নিজেকে প্রকৃত দেশপ্রেমী ক'রে তুলুন। তাই পোষ্টদাতারা বিতর্কিত পোষ্ট করা থেকে সাবধান!
( লেখা ১১ই মে' ২০২৫)
No comments:
Post a Comment