বাংলাদেশীদের সাম্প্রতিক লেখা ও কমেন্ট পড়ে হ'লো ভারত বাংলাদেশীদের শত্রু। পড়ে মনে হ'লো সেদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে যখন পাকিস্তানের দানবীয় অত্যাচারে পূর্ব পাকিস্তান নরকে পরিণত হয়েছিল তখন ভারতের সাহায্য করাটা অন্যায় হয়েছে।
বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য ভারত শুধু সাহায্য করেনি সেদিন, পাকিস্তানের সৈন্যদের দ্বারা নারকীয় ৩০,০০,০০০ লক্ষ নাগরিকের হত্যা যজ্ঞ ও ৩-৪ লক্ষ বাংলাদেশী মা-বোনেদের ওপর নারকীয় যৌন অত্যাচার, দানবীয় নৃশংসভাবে বলাৎকার ও হত্যার বিরুদ্ধে মানবিকতাকে সর্বাগ্রে সবকিছুর ওপরে গুরুত্ব দিয়েছিল, ইজ্জৎ দিয়েছিল, শ্রদ্ধা সম্মান জানিয়েছিল, মায়েদের ইজ্জত ও জীবন রক্ষা এবং বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ নাগরিকদের মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছিল সেদিন ভারত। ১ কোটি বাংলাদেশের হিন্দু নাগরিক ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল সেদিন, তিন কোটি বাংলাদেশী বাংলাদেশে উদ্বাস্তু হয়।
এইটা যেন ভুলে না যায় বাংলাদেশ সেই দিন ভারত যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিত তাহ'লে পৃথিবীর মানচিত্রে আজকের বাংলাদেশের মানচিত্র থাকতো না, আজকের ৫৩ বছর পরের সাজানো নিরাপদ বাংলাদেশে বসে এই কথা বলতে পারতো না আজকের বাংলাদেশের শাসক ও জনগণ। ভারত আজ বাংলাদেশের শত্রু! আর, পাকিস্তান বাংলাদেশের মিত্র!!!! যে যে দেশ সেদিন পাকিস্তানের সীমাহীন অত্যাচারের পক্ষে ছিল, পাকিস্তানের মদতদাদা ছিল, বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে ছিল, বাংলাদেশকে সেদিন সাহায্য করার অপরাধে ভারতের বিরুদ্ধে ভয়ংকর রক্তচক্ষু দেখিয়েছিল সেই সেই দেশ আজ আপনাদের বন্ধু!!!!!!?
বেঈমানি, নেমকহারামী, অকৃতজ্ঞতা; এর থেকে ঈশ্বরের রাজ্য বড় অপরাধ আর কি হ'তে পারে? ঈশ্বর বা আল্লা বা গডের রাজ্য বেঈমানি, নেমকহারামী, অকৃতজ্ঞতা সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে ঘৃণ্য ও ক্ষমাহীন অপরাধ এই কথা যেন ভুলে না যায় বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের শাসক।
আজ বাংলাদেশের শাসক ভারতের বিরুদ্ধে মণিপুরের আন্দোলন নিয়ে মানবতা ধ্বংসের কথা ব'লে বিচ্ছিন্নতাবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদদ দিতে চাইছে এবং একইসঙ্গে নিজের দেশের অভ্যন্তরে ঘটে চলা ঘটনা থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে চাইছে। ফলে বিশ্বের কাছে নিজেদের দেশকে ও নিজেদের হাস্যকর দেশে ও হাস্যকর মেধার অধিকারীতে পরিণত করেছে।
ভারত মণিপুরের ওপর সেদিনের পাকিস্তানের মত বাংলাদেশের ওপরে চালানো ঐতিহাসিক নারকীয় কোনও যৌন অত্যাচার ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়নি। এই সমস্ত আন্দোলন বাংলাদেশে সদ্য ঘটে যাওয়া গভীর ষড়যন্ত্রমূলক আন্দোলনের মত ভারতকে টুকরো টুকরো করার আন্দোলন, ষড়যন্ত্র ছিল। এরকম বহু আন্দোলন ষড়যন্ত্র বৈদেশিক শক্তির সাহায্যে ভারতে আগেও হয়েছে, এখনও হ'য়ে চলেছে। এবং বর্তমান বাংলাদেশের অবৈধ শাসক মহম্মদ ইউনুস ভারত থেকে সেভেন সিস্টার্সকে ছিন্ন করার কথা প্রকাশ্যেই বলেছিল ৮ই আগষ্ট'২৪ বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতা অন্যায়, অনৈতিক ও অবৈধভাবে গ্রহণ করার দিনে। ভারত জানে কি ক'রে এইসব শক্তির মোকাবিলা করতে হয়। ১৯৭১ সালে সেইদিনের বিদেশী শক্তিধর রাষ্ট্রগুলি বাংলাদেশের ভিতরে তলে তলে যেমন পাকিস্তানকে সাহায্য করেছিল ঠিক তেমন এবং আজ যেমন বাংলাদেশের ৫৪ বছরের স্থিতিশীলতাকে ধ্বংস ক'রে ছদ্ম ছাত্র রাজনীতি, ছদ্ম ছাত্র আন্দোলন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নামে যে ষড়যন্ত্র সংগঠিত হ'লো এবং পরিবর্তন হ'লো ঠিক একইরকম ছিল ভারতের বুকে বহু আন্দোলন রাজ্যে রাজ্যে।
তাই কে কার শত্রু তা' সময় দেখিয়ে দেয়, দেখিয়ে দেবে। সময় সবসে বড়া বলবান। ( লেখা ১০ই সেপ্টেম্বর' ২০২৪ )

No comments:
Post a Comment