দাদরির বিশারা গ্রামে মুহাম্মদ আকলাখ
হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা করে বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে
সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার জোয়ার নেমেছে। প্রথম ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট লেখিকা তথা স্বাধীন
ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর ভাইঝি নয়নতারা সেহগাল। তারপর একে একে বিশিষ্ট কন্নড় যুক্তিবাদী এম এম কালবার্গি ও গোবিন্দ
পানাসারের হত্যা ও দাদরির ঘটনার
প্রতিবাদে এখনও পর্যন্ত মোট ২১ জন অকাদেমি পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন।
নয়নতারা সেহগাল বলেন, কোন ক্ষেত্রেই ন্যায় বিচার পাওয়া যাচ্ছে না। এই ধরনের সন্ত্রাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও আশ্চর্যজনক ভাবে চুপ রয়েছেন। এই সরকার ফ্যাসিবাদী মতাদর্শে বিশ্বাসী। তাদের এই মনোভাবে আমি উদ্বিগ্ন।
দাদারি-কাণ্ডের প্রতিবাদে এবারে সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়ে কবি এবং লেখিকা মন্দাক্রান্তা সেন বললেন, যে ভাবে সমাজের সর্ব স্তরে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে পড়ছে, তা মোটেই কাম্য নয়। মানুষের পক্ষে কথা বলাটা কবি, লেখক, শিল্পীদের একটা সামাজিক দায়িত্ব। অথচ, এ দেশে সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই তাঁরা খুন হচ্ছেন। অত্যাচারিত হচ্ছেন। এর জোরালো প্রতিবাদ জানানোটা খুব দরকার বলে অনেক দিন ধরেই মনে করছিলাম। পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন নিজেকে অনেকটা হাল্কা লাগছে।
কন্নড় লেখক এবং গবেষক অরবিন্দ মালাগাত্তি বলেন, বিশিষ্ট কন্নড় যুক্তিবাদী এম এম কালবার্গির হত্যার ঘটনায় সাহিত্য আকাদেমির চুপ করে থাকার নিন্দা করে সাহিত্য আকাদেমির সাধারণ পরিষদ থেকে পদত্যাগ করলাম।
পঞ্জাবি লেখক ভুল্লার বলেন, যে ভাবে মানুষের মূল্যবোধের অবক্ষয় হচ্ছে, তা নিয়ে আমি প্রচন্ড বিরক্ত।
আবার দেশের সম্প্রীতি রক্ষা করতে
কেন্দ্রীয় সরকার কিছুই করছে না বলে মনে করেন প্রখ্যাত পাঞ্জাবি নাট্যকার ঔলাখ।
পুরস্কার গ্রহণ ও বর্জন নিয়ে কবি লেখকদের রয়েছে আবার ভিন্ন মত।
তাঁরা নিজেরাই দ্বিধাবিভক্ত। আর তারাই আম আদমীকে দেখাবেন বাঁচার পথ!!!!!!!!!
সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার প্রাপ্ত বাংলা সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, যারা ইন্দিরা গান্ধীর আমলে সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার পেয়েছিলেন তারা কি সেসব পুরস্কার ফিরিয়ে দেবেন? আর পুরস্কার পেয়েছেন এরপর এটা ফিরিয়ে দেয়া অর্থহীন। কারণ রেকর্ড বুকে পুরস্কার প্রাপকের নাম লেখা থাকবে।
কবি সুবোধ সরকার বলেন, আমরা ইলিশ উৎসবের মত গোরুর মাংসের উৎসব করি চলুন।
কি দারুণ পরামর্শ কবির! চমৎকার সমাধানের পথ!!!!!!
রাষ্ট্রপতির কাছে বুদ্ধিজীবীদের খোলা চিঠি পাঠানো, মিছিল, প্রতিবাদী সমাবেশ, জমায়েতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুল পোড়ানো ইত্যাদি নানা ঘটনার সাক্ষী থেকেছে বুধবারের কলকাতা।
বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে সঙ্গে শুক্রবার আবার প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছে বাম দলগুলি। সরব হয়েছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিও।
সব প্রতিবাদ, আন্দোলনের মোড়কে ক্ষমতা দখলের পাশা খেলা। ভাঁড় মে যায় সমাজ, সভ্যতা, শিক্ষা, সংস্কৃতি।
সব তীর গিয়ে বিঁধেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তার সরকারের ওপর। ঘোর সংকটে ভারতীয় জনতা পার্টি।
ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আপনি কি আপনার হাতে তৈরি এই পার্টিই তৈরি করতে চেয়েছিলেন?
এইসমস্ত ঘটনা আজ আর নূতন কিছু নয়। ভারতের বুকে বহু নারকীয় ঘটনা ঘটেছে, ঘটছে ও আগামীতেও ঘটবে এতে আর আশ্চর্যের কিছু নেই। বহু রোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে বা ঘটে চলেছে যার প্রতিবাদ হয়েছে বা হচ্ছে আবার বহু নারকীয় বীভৎস ঘটনার কোনও প্রতিবাদই হয়নি তাও দেখেছে ভারতবাসী। দেশের বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় যেন সেই রুপকথার রাজকন্যা। কখন জেগে উঠবে আবার কখন যে ঘুমিয়ে পড়বে তার দিশা পায় না চার অক্ষরের আম জনতা। রাজনৈতিক কোনও না কোনও দলগুলোর ছত্রছায়ায় নিরাপদে শুয়ে থাকা বুদ্ধিজীবী নামক ভীষণ বুদ্ধিমান মানুষগুলো কখন যে হঠাৎ করে সোনার কাঠি আর রুপোর কাঠির ছোঁয়ায় জেগে উঠবে আর ঘুমিয়ে পড়বে সেটা সম্ভবত নিজেরাও জানে না বিদ্যা আর বুদ্ধিকে ভাঙ্গিয়ে খাওয়া শক্তিমানের দল। বুদ্ধিজীবীরা আজ অসহায় কিনা জানি না, অসহায় হলেও আজ নিজেদের দোষেই আর নিজেদের স্বার্থেই তারা ঘুম ভেঙ্গে উঠতে চাইছে। কলমের নীল মূত্রপাত আজ গোটা মানব সভ্যতাকে হিজড়ে বানিয়ে ছেড়েছে। তবে আজ এটা বুঝতে পারছি দেশের সাধারণ মানুষ, লেখাপড়া না জানা সরল সিধাসাদা চরম ভাঙাচোরা মানুষ আজ অসহায়ের চরম কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে যেখানে অস্তিত্বের ধ্বংস ছাড়া আর ফিরে আসার কোনও উপায় নেই। আর এই অবস্থাও আম জনতার নিজেদের দোষেই। তাই মন বলে...............
বুদ্ধিজীবীর বুদ্ধি বেশী আম আদমীর কম
বুদ্ধি বেচে খায় বুদ্ধিজীবী শ্রমজীবী শ্রম।
কৃষিজীবী মাঠে ঘাটে ঘাম ঝরিয়ে খায়
সুক্ষ্ম বুদ্ধির ধার ধারে না কৃষিজীবী তাই।
শ্রমজীবীর শ্রম নিয়ে চলে বুদ্ধিজীবীর ব্যবসা
জ্বালানী যোগায় কৃষিজীবী নিয়ে কৃষি সমস্যা।
ছাত্র-যুবক, শ্রমিক-কৃষক বুদ্ধিজীবীর ভরসা
মাতিয়ে মন, তাতিয়ে পরাণ ভাগ্যাকাশ ফর্সা।
দেহের পসার সাজিয়ে দেখো দেহজীবী হাসে
চোখের জলে ডুবিয়ে কলম বুদ্ধিজীবী ভাসে।
কলম দিয়ে বুদ্ধিজীবীর ঝরে আগুন ক্রোধ
সেই আগুনে 'জীবন' পোড়ে, পোড়ে না 'মৃত্যু' বোধ।
বুদ্ধিজীবীর বুদ্ধি বেশী আম আদমীর কম
তার সাথে নেই আম আদমীর লড়াই করার দম।
যখন খুশী, যেমন খুশী আম আদমি খ্যাপাও
খেপিয়ে দিয়ে আম আদমি বুদ্ধিজীবী বাঁচাও।।
No comments:
Post a Comment