আজ গোটা 'সৎসঙ্গ' পরিবারে বিশ্ব জুড়ে যতই মতান্তর থাকুক না কেন এই কঠিন জটিল ভয়ঙ্কর বিপদজনক সময়ে সামনে দাঁড়িয়ে ঠাকুরের জীবন দর্শন নিজ জীবনে আচরণ ক'রে ও আমাদের করিয়ে গোল বা লক্ষ্যে পৌঁছে দেবার জন্য, আমাদের নিখুঁত পথ দেখাবার জন্য, ঠাকুরকে প্রত্যেকের জীবনে ফুটিয়ে তুলে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্যে, সমাজ, দেশ, বিশ্বকে ঠাকুরময় ক'রে তোলার জন্য একজন মালিক আমাদের সামনে আছেন। আমরা যতই যাই-ই করি সদিচ্ছা ও চেষ্টা থাকলে আমরা পথভ্রষ্ট হবো না। ১০০তে ২০০, ৪০০, ৮০০ ভাগ এ গ্যারান্টি। চন্দ্র সূর্যের মত এ সত্য! সত্য এ ইশ্বরের উপস্থিতির মত! আচার্য পরম্পরায় মালিক শ্রীশ্রীআচার্যদেব বাবাইদাদার নির্দেশে এক হ'য়ে চলেছে 'সৎসঙ্গ' পতাকার তলায় বিশ্বজুড়ে সংগঠিত প্রায় দশ কোটি লক্ষ্যে ছুটে চলা সৎসঙ্গীবৃন্দ।। শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণী "এক আদেশে চলে যারা তাদের নিয়ে সমাজ গড়া" আজ মূর্ত হ'য়ে উঠেছে ও আরো থেকে আরোতর হ'য়ে মূর্ত হ'য়ে চলার পথে এগিয়ে চলেছে। শত হাজার বাধা বিপত্তি কোন্দল উপেক্ষা ক'রে এগিয়ে চলেছে এক হ'য়ে কোটি কোটি সৎসঙ্গী সমাজ আচার্য পরম্পরাকে মাথায় নিয়ে আচার্য নির্দেশিত পথে ঠাকুরের বলা "প্রশ্ন তোমার অস্ত যাউক, রহুক যুক্তি সরে তোমার আজ্ঞা করবো পালন মরণ স্তব্ধ ক'রে" বাণীকে বাস্তবায়িত ক'রে; এগিয়ে চলেছে 'সৎসঙ্গ'-এর রথ।
এ থামায় কার সাধ্য?
কিন্তু তা সত্বেও আমাদের ভাবতে হবে এই তাত্ত্বিক আমেজে কি আমরা ডুবে থাকবো? ঠাকুরের কাজ ঠাকুর করেন এই ভাবের ঘোরে ডুবে থেকে আমরা আর কতকাল নিজেদের মধ্যে ইষ্টপ্রতিষ্ঠা ও ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠার নামে আত্মপ্রতিষ্ঠা ও আত্মস্বার্থপ্রতিষ্ঠা্র লড়াইয়ে মতান্তর থেকে মনান্তরের পথে যাত্রা করতেই থাকবো!? রিপুর উদ্দামতা ও উচ্ছৃঙ্খলতাকে থামতে বলবো না? অনিয়ন্ত্রিত বৃত্তি-প্রবৃত্তির লাগাম টেনে ধরবো না!? সব দয়াল দেখছে, দয়াল বিচার করবে ব'লে অজুহাত দেখিয়ে আমার গায়ে আঁচ না লাগে ফুরিয়ে যাবে মামলা মানসিকতায় হাত পা গুটিয়ে বসে থাকবো!?
এ তো গেল আমাদের কথা। আর যারা প্রতিনিয়ত 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান খুলে নানা নামে নানা দল সৃষ্টি ক'রে শ্রীশ্রীবড়দা, শ্রীশ্রীবড়মা, শ্রীশ্রীদাদা, শ্রীশ্রীআচার্যদেব বাবাইদাদা, শ্রীশ্রীঅবিনদাদা ও ঠাকুরবাড়ির বিরুদ্ধে বিষাক্ত নিঃশ্বাসের কামান দেগে চলেছে তাদের সম্পর্কে কি বলবো? তাদের সামনে দাঁড়িয়ে তাদের পথ দেখাবার কে আছে? কে সে? কে তিনি?
তারা কি ইষ্টপ্রতিষ্ঠা ও ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠা করছে?
তারা কার বা কাদের নির্দেশে চলছে?
ঠাকুরের বাণী "এক আদেশে চলে যারা তাদের নিয়ে সমাজ গড়া" তাদের ক্ষেত্রে কি প্রযোজ্য?
তারা কি 'সৎসঙ্গ' আচার্যদেবের পরিচালনায়, তাঁর নির্দেশ মেনে পথ চলছে বা ইষ্ট পথে চলছে?
তারা যে সরাসরি বিষাক্ত নিঃশ্বাস উগলে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত 'সৎসঙ্গ'-এর বিরুদ্ধে, কদর্য ভাষায় বিষোদ্গার করছে ঠাকুর আত্মজদের বিরুদ্ধে, সংঘাতের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে দীক্ষিত-অদীক্ষিত নূতন প্রজন্মের কাছে দয়াল ঠাকুর প্রেমের ঠাকুরের জীবন দর্শন কি তাই ছিল?
তারা যে বেছে বেছে ঠাকুরের বাণী নিয়ে নোংরা আক্রমণ শানাচ্ছে 'সৎসঙ্গ'-এর বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ৫০ বছরের অধিক সময় ধ'রে এর ভবিষ্যত পরিণতি কি?
আমি এদের ভবিষ্যত পরিণতির কথা জানতে চাইনি চেয়েছি এদের জন্য ভবিষ্যত পৃথিবী কতটা ক্ষতিগ্রস্থ হবে? কতটা ক্ষতি হবে ও হ'য়ে চলেছে ভবিষ্যত ও বর্তমান প্রজন্ম?
এরা কি ভেবে দেখে? নাকি এদের কর্মকর্তারা তা ভেবে দেখছে বা দেখেছে? আগামীতে কি এই ভেবে দেখার আদৌ কোনও সম্ভাবনা আছে?
এদের কি কোনও দায় বা বিন্দুমাত্র চিন্তা নেই ভবিষ্যত পৃথিবীকে অতীতের পুরুষোত্তম রামের রাজ্যের মতন এ যুগের রাম পুরুষোত্তম অনুকূল রাজ্যে পরিণত করার?
দীর্ঘ ৫০ বছরের অধিক 'সৎসঙ্গ' বিরোধী সৎসঙ্গীরা (?) 'সৎসঙ্গ'-এর বিরুদ্ধে যে ঘৃণ্য প্রচার চালাচ্ছে ইষ্টপ্রতিষ্ঠা ও ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠার নামে তা কি সত্যি সত্যিই ইষ্ট ও ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠা? নাকি ইষ্ট বা ইষ্টস্বার্থপ্রতিষ্ঠার আড়ালে আত্ম ও আত্মস্বার্থপ্রতিষ্ঠার কোদাল চালিয়ে চলেছে? কমল নাইডু এটাকে কি বলবে? ইষ্টপ্রতিষ্ঠা নাকি আত্মপ্রতিষ্ঠা? দেবব্রত তুমি কি শুনতে পাচ্ছো তারা তো একগুঁয়ে গুরু বা আদর্শকেন্দ্রিক মানুষ? তারা 'সৎসঙ্গ' প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন মানে না বা স্বীকার করে না। তারা ঠাকুর ছাড়া অন্য কিছু বা কারও উপস্থিতি মানে না, স্বীকার করে না, উপরন্তু কুৎসা করে। তারা কি তাহ'লে আত্মপ্রতিষ্ঠা ও আত্মস্বার্থপ্রতিষ্ঠা করছে না? তাহ'লে ক্ষমতা দখলের লোভে মৌরসি পাট্টা জমিয়ে বসা কায়েমী স্বার্থ রক্ষাকারী তথাকথিত বৃত্তি-প্রবৃত্তিতে ডুবে থাকা রিপু তাড়িত কতিপয় ভন্ড সৎসঙ্গী নামধারী মানুষ যারা সাধারণ মূর্খ অল্পজ্ঞানী অজ্ঞানী মানুষদের সরলতার সুযোগ নিয়ে সৎসঙ্গী বানিয়ে ভুল বুঝিয়ে মগজ ধোলাই ক'রে চলেছে তারা কি এদের সহায়তায় নিজেদের আখের গুছিয়ে চলছে না ও তারা কি আগামী ভবিষ্যতকে নরকে পরিণত ক'রে চলছে না?
তাহ'লে কি ভবিষ্যত পৃথিবীর ভবিষ্যত 'সৎসঙ্গ' জগতে মূল ধারার সঙ্গে বিকেন্দ্রিকদের সঙ্ঘাত অনিবার্য? আজকের ধর্মজগতের বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন মতাবলম্বীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের মত আগামী দিনে 'সৎসঙ্গ' ও সৎসঙ্গ বিরোধী বিকেন্দ্রিক সৎসঙ্গীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত অবশ্যম্ভাবি?
এর জন্যে কে বা কারা দায়ী???????
এই প্রশ্ন সবার উদেশ্যে রেখে গেলাম এবং ঐ ভবিষ্যত ভয়ঙ্কর নারকীয় দিনের কথা আশঙ্কা ক'রে লেখা আমার চিঠি কমল নাইডু ও দেবব্রত সোমকে আর একবার ধন্যবাদ ও জয়গুরু জানিয়ে শেষ করলাম।
ইতি,
প্রবি।
( লেখা ১১ই মে' ২০২২ )
No comments:
Post a Comment